সিমের জগতের সেরা ম্যাগাজিন আনন্দলোক ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পিডিএফ Anandalok 12 February 2015 pdf ডাউনলোড করে পড়ুন এখনই। Anandalok 12 February 2015 pdf এ মিস শেফালি নিয়ে অজানা নানা তথ্য রয়েছে। Anandalok 12 February 2015 pdf ম্যাগাজিনটি আজই পড়ুন।
আনন্দলোক ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পিডিএফ Anandalok 12 February 2015 pdf সূচিপত্রঃ
কভার স্টোরি ১
আরতি থেকে মিস শেফালি
তিনিই ছিলেন কলকাতার সন্ধ্যা-রাতের রানি। উত্তমকুমার, অমিতাভ বচ্চন কিংবা সত্যজিৎ রায়, মিস শেফালির ডান্স দেখতে আসেননি এমন পুরুষ খুঁজে পাওয়া ভার! সেই মিস শেফালি এখন কেমন আছেন?
কভার স্টোরি ২
বচ্চন বচন
লিভিং লেজেন্ড, সুপারস্টার, শাহেনশাহ… সব বিশেষণই যেন তাঁর সামনে ফিকে।
আনন্দমেলা ২০ জানুয়ারি ২০২৩ পিডিএফ Anandamela 20 January 2023 pdf
ডাকঘর
মরগুজব, দিনকাল ও ইন্টারেস্টিং ৮ মুহূর্ত ২২ ফ্যাশনে ভূষণে ৩০ বাক্স রহস্য ৪8 টলিটুকি ৪৫ হারানো সুর ৪৬ গান FUN ৫১ প্রতিবেদন পেশা বদল এরেই কয় ৫৪ হলি বলি টলি ৩২
মুখোমুখি শুনতে পেলাম ৬৪ দীপিকা পাড়ুকোন ৩৮
সিনেমা যেমন ৬৬ ঋত্বিক চক্রবর্তী ৫২ স্পোর্টস নিউজ ৭০ শোয়ের খান ৬২ ভাগ্যক্রমে ৭১ ক্যাপশন কনটেস্ট ৭৩ স্মরণ ৪০ ক্লোজ আপ ৪২ সেরা পাঁচ ৭৪
Anandalok 12 February 2015 pdf নমুনাঃ
যেন এক রূপকথা। যে রূপকথার গল্প বিস্তৃত হয় এক উদ্বাস্তু পরিবারের এক চিলতে ঘরের দমবন্ধকর পরিবেশ থেকে সমাজের অতি উচ্চবিত্তের আমোদ-আহ্লাদে, নৈশজীবনে। যে গল্প সম্পৃক্ত হয়ে যায় ছ’-সাতের
দশকের শহর তিলোত্তমার সন্ধে-রাতের আবেশে।
রূপকথার ডানায় ভর করে উদ্বাস্তু আরতি দাস কখন যেন হয়ে ওঠেন দেশের প্রথম বাঙালি ক্যাবারে ডান্সার। সাঁঝবেলার মিস শেফালি। রাতের কলকাতায় তামাম পুরুষ সমাজে চলত যাঁর ‘শাসন’।
সত্যি, কোথায় বাবা-মা ও তিন বোনের সংসারে এক টুকরো রুটির জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকা সর্বকনিষ্ঠ মেয়েটি আর কোথায় বা সেই লাস্যময়ী রাতের তারা, যাঁর মেক আপ তুলতে এ্যান্ড হোটেলের রসুই থেকে আসত বাটিভর্তি মাখন! এ যেন পৃথিবীর দুই গোলার্ধ। সেলেব্রিটিদের জীবনযুদ্ধে এরকম বহু আখ্যান আমরা বিভিন্ন সময় শুনেছি বটে, কিন্তু মিস শেফালির জীবন কোথাও এসে যেন ছাপিয়ে যায় সব কাহিনিকে।
কীভাবে? আনন্দলোকের এই ‘ব্যতিক্রমী’ প্রচ্ছদকাহিনিতে আজ সেই গল্পই আমরা শুনব স্বয়ং মিস শেফালির জবানিতে…..
একটা সময় ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্র্যান্ড হোটেলের প্রত্যেকটি কোনায় চলত যে শেফালির ‘রোয়াব’, সার্কাস অ্যাভিনিউয়ে ৪,০০০ স্কোর ফিটের অতিকায় ফ্ল্যাটে রাজকীয় স্টাইলে গণ্ডাখ ‘পুষ্যি’কে নিয়ে থাকতেন যিনি, কল্লোলিনার যাবতীয় শক্তিপুঞ্জ যাঁর জন্য হতে চাইত নিবেদিত প্রাণ, সেই শেফালিকে বর্তমানে সাতগাছির এক এঁদোগলিতে সাড়ে চারশো স্কোয়্যার ফিটের ফ্লাটে সাধারণভাবে দিনগুজরান করতে দেখে পেশাদার সাংবাদিকের মনেও বিষাদ বাসা বাঁধে বইকী! কিন্তু মিস শেফালি এসবকে পাত্তাও দেন না! তাঁর না আছে কারও প্রতি কোনও অভিযোগ, না আছে কোনও আফসোস। এমনকী এখনও, যেটুকু পারেন, মুক্ত হাতে দান করে দেন। সদ্য ‘আনন্দ’ থেকে প্রকাশিত তাঁর
অনুমোদিত, অনুলিখিত জীবনী ‘সন্ধ্যা শেফালি’ পড়ে ইদানীং অনেক পুরনো বন্ধু ফোন করছেন তাঁকে। এতেই খুশি তিনি। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটালেই বুঝবেন, ‘মেজাজটাই আসল রাজা” শব্দবন্ধগুলি বুঝি তাঁর জন্যই লেখা হয়েছিল।
ওভার টু মিস শেফালি ….. Anandalok 12 February 2015 pdf
আহিরীটোলা থেকে ফিরপোজ হোটেল জানি না কেন, ছয়-সাত বছর বয়স থেকেই সন্ধে হলেই আমার মধ্যে একটু-একটু করে দুলুনি আসত। আর আমি নাচতে শুরু করতাম। মিউজিকের সঙ্গে নয় কিন্তু। নিজে- নিজেই। পাড়ায় মাইক বাজলে সেখানে গিয়ে নিজে নিজেই দুলতে থাকতাম। তাকে নাচ বলে কিনা জানি না, কিন্তু রিদমটা একটা দুলুনি আনত আমার ভিতরে। অনেকেই অনেক কথা বলত, “লজ্জা শরম নেই তোর?
পাগল হয়ে গিয়েছিস?” তারা তাদের মতো বলত, কিন্তু সে সব গ্রাহ্য করতাম না, আমি ঠিক আমার মতো নাচতাম। আমরা থাকতাম আহিরীটোলায়। বাবা ওখানেই বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে হিসেব তদারকির কাজ জুটিয়ে নিয়েছিলেন। পরিবারের অন্যান্যরাও তখন কাজের চেষ্টা করছে, পেটের চিন্তা করছে। বাড়ির সবাইকে দেখাদেখি আমিও ‘চাকরি’র সন্ধান করতাম। আমাদের পাড়ায় বাণীদি বলে একজন ছিল, নার্সের কাজ করত। রোজ তাকে বলতাম একটা কাজ দাও না গো বাণীদি, আমিও তোমাদের মতো কাজ করতে চাই।” তা সেই বাণীদির সূত্রেই একদিন একটা কাজ জুটে গেল আমার।
চাদনি চকের একটি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বাড়িতে পরিচারিকার মঙ্গলের কথায় বলে না, ভগবান যা করেন করেন…আমি সেটা পুরোপুরি বিশ্বাস করি।
এই বাড়িতে কাজ করতে গিয়েই নাচের প্রতি আগ্রহটা আমার কয়েকগুণ বেড়ে গেল। কী করে? আসলে ওই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান বাড়িতে প্রায় প্রত্যেকদিন পার্টি লেগেই
থাকত। খানাপিনার সঙ্গে সেখানে নাচানাচিও হত। ওদের দেখে আমি আশ্চর্য হতাম, জানেন। কী করে যে অত সুন্দর ভাবে নাচে। এই টেনে নিল, এই ছেড়ে দিল, লাট্টুর মতো ঘুরছে, পরক্ষণেই নিচু হয়ে গেল, ও আবার টেনে তুলল… আমি তো ওরকম আগে কখনও দেখিনি। ওদের বাড়িতে কাজ করতাম ঠিকই, কিন্তু আমার আসল চেষ্টাটা ছিল নাচের ঘরের কাছাকাছিই থাকার।
আর পর্দার আড়ালে দিন। মুখ দেখে বুঝছেন না, একেবারে বিচ্ছু মেয়ে।” তখন আর এক অফিসার বললেন, “বিষ্ণু না, একেবারে ঝানু মাল। তৈরি হয়ে গিয়েছে।” প্রথম প্রেম, রবিন রুটল্যান্ড আনু মাল ছিলাম কিনা জানি না, তবে ডান্সার হিসেবে নিজেকে তৈরি করছিলাম ধীরে-ধীরে। লিডোতে শো করার পাশাপাশি আমার ওয়েস্টার্ন ডান্সের ট্রেনিংও তখন চলছে পুরোদমে। গ্লোরিয়া বলে এক রাশিয়ান ডান্সার আমাকে নাচ শেখাত। ও, বলতে ভুলে গিয়েছি, ফিরপোজের মালিক রামনাথ কপূরের সঙ্গে যেদিন আমার প্রথম দেখা হয়, সেদিন আমি নিজের নাম আরতি দাস’ বলায় উনি বলেছিলেন, “আরতি? ইয়ে নাম নহী চলেগা।” আমি বললাম, “তা হলে আপনিই একটা নাম দিন। আমার।” কপুরসাহাব হেসে বললেন, “ইউ আর জাস্ট লাইক আ লিট্ল ফ্লাওয়ার। আজ থেকে তোমার নাম শেফালি।”
ফিরপোজের কাছ থেকে নতুন নামসহ আমি পেয়েছি অনেক কিছু। ফিরপোজের সুত্রেই তো আমার জীবনে এসেছিল রবিন। ফিরপোজ থেকে তিন মাসের কনট্যাক্টে বম্বে গিয়ে ওর সঙ্গে আলাপ। রবিন রুটল্যান্ড। মা আইরিশ খ্রিস্টান, বাবা মুসলিম। থাকত আমেরিকায়। ওদের কার্পেটের ব্যবসা ছিল ইউরোপ-আমেরিকায়। আমি যখন বঙ্গেতে, ও তখন সেখানে এসেছিল, ওর কিছু পৈতৃক সম্পত্তির সেটলমেন্টের সূত্রে। রিত্ত্ব কন্টিনেন্টালে ওর সঙ্গে আলাপ। রবিনই আমার জীবনের প্রথম পুরুষ। রবিন আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
আমি ওকে ভীষণ ভালও বেসেছিলাম। কিন্তু একটা ভয় আমাকে সবসময় ভাড়া করে বেড়াত। যদি ও কথা না রাখে, এই যে এত কষ্ট করে গড়ে তুলছি, সব তো ভেসে যাবে তা হলে। যদি ঠকে যাই, সেই তো রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে। এটা সত্যি, তখন ফিরপোজ হোটেলে নিয়মিত ডান্স করার সুবাদে মাসে ৭০০ টাকা মাইনে পাই, ১৯৬৬-৬৭ সালের নিরিখে সেটা বেশ মোটা অঙ্ক। মা-বাবার জন্য সোদপুরে ততদিনে একটা ছোটখাট বাড়িও তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু তা-ও সেই অর্থে সেট্লড তো আর নই। রতি? ইয়ে নহী চলেগা।’ আমি বললাম, ‘আপনিই টা নাম দিন।’
কপূরসাহাব বললেন, ‘ইউ আর জাস্ট ক আ লিট্ল ফ্লাওয়ার। আজ থেকে তুমি শেফালি।’ Anandalok 12 February 2015 pdf
জমানো পুঁজিই বা কত? এমনও হয়েছে যে খুচরো পয়সা জমিয়ে সেটাও মায়ের হাতে দিয়ে আসতাম। সাতশো টাকা বিরাট অক্ষ ঠিকই, কিন্তু ওই টাকা দিয়েই তো আমায় কস্টিউমও তৈরি করতে হত। যাতায়াত, খাওয়া- দাওয়া হোটেলই দিত। কিন্তু তার বাইরেও তো খরচ থাকে। আমি তো আর যেখান সেখান থেকে পোশাক বানাতাম না। মেটিয়াবুরুজে হারুন আর তার আগে ওর বাবা আমার নাচের পোশাক তৈরি করে দিত। তখনকার দিনে তিন-চার হাজার টাকা খরচ হত এই পোশাক বানাতে।
‘চা-চা-চা ভাগের জন্য ফেদারের ড্রেসের দাম ছিল আরও বেশি। একটা সময় হাওয়াইয়ান পোশাকের পাট আনা হত জাপান থেকে। যাইহোক, যা বলছিলাম, এত দিনের পারফরমিং কেরিয়ার, এতকিছু পেয়েছি, কোনও কিছু না- পাওয়ার জন্য দুঃখ তেমন একটা আমার নেই। তবে আজ আমি নিজেকে দোষী করি, জানেন। কিছু-কিছু জিনিস, যা পেয়েও আমি খুইয়েছি… তার মধ্যে অন্যতম রবিনের সঙ্গে প্রেম!
ফিরপোজ থেকে গ্র্যান্ডের প্রিন্সেস।
সোদপুরে নিজের বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে কিন্তু ফিরপোজ-এর মালিক আমাকে খুব সাহায্য করেছিলেন। আসলে তখন আমার নাচ দেখতে ক্রমশ ভিড় বাড়ছে, আগে থেকে টেবিল বুক হয়ে যাচ্ছে। লোকে তখন ইন্টারেস্টেড যে একটা বাঙালি মেয়ে, ভাল নাচে, দেখতে শুনতেও মন্দ নয়…স্বাভাবিক ভাবেই স্যার (রামনাথ কপুর) আমায় নিয়ে খুব খুশি ছিলেন। উনিই একবার আমায় জিজ্ঞেস করেন, “আরু, তোমার কোনও কষ্ট হচ্ছে না তো?” আমি বলেছিলাম, “স্যার, আমার খুব ইচ্ছে একটা বাড়ি বানাই।” উনি বলেছিলেন, “আমায় ঠিকানা দিয়ে দেবে। আমি লরি করে সব জিনিস পাঠিয়ে দেব।”
অথচ কর্পূরসাহেবের এই উপকারের প্রতিদান আমি দিতে পারিনি। একটা ভুল করে বসেছিলাম। একদিন টিটো (ওবেরয়দের ছোট ছেলে) আমায় অ্যান্ড হোটেলে ডাকল, খাতির করে বসিয়ে আমায় ওদের ওখানে নাচতে বলল। মাইনের কথা জিজ্ঞেস করায় বলল, মাসে তিন হাজার টাকা দেবে। Anandalok 12 February 2015 pdf
ভাবুন, কোথায় ৭০০, কোথায় ৩০০০। লোভে পড়ে রাজি হয়ে গেলাম। ফিরপোজ-এ কাউকে কিছু না জানিয়েই। স্বাভাবিক ভাবেই এটা নিয়ে প্রচণ্ড ঝামেলা শুরু হল গ্র্যান্ড এবং ফিরপোজের মধ্যে। তবে সে সব ঝামেলা সামলে আমি গ্র্যান্ড জয়েন করলাম। পরে অবশ্য একটা সময় আমি এ্যান্ডও ছেড়ে দিই, জায়ন করি এইচএইচআই। তখন আমার মাইনে ছিল মাসে ১৫ হাজার টাকা। Anandalok 12 February 2015 pdf পড়ুন।
অনেকেই ভাবতে পারেন, আমি প্রায় ফিরপোজ ছেড়ে গ্র্যান্ডে চলে গেলাম, এটা কি ফিরপোলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হল না? ওরাই তো আমাকে তৈরি করেছিল। একথা পরে আমি বহুবার ভেবেছি। কিন্তু কী জানেন, গ্র্যান্ড জায়গাটা আরও এলিট, বড় তো বটেই, ফ্লোরটা বেশি। সুন্দর, টাকাটাও অনেক বেশি…তাই কিছুটা নিজের স্বার্থে, লোভে পড়েই আমি ফিরপোজ ছেড়েছিলাম। তবে এ্যান্ডে আসার পর মাইনে একলাফে অনেকটা বাড়ল বটে, আমার খাটুনিও বহুগুণ বেড়ে গেল।
প্রত্যেকদিন পারফরম্যান্স তো ছিলই, তার উপরে বাইরে থেকে ডেলিগেটস এলে থাকত স্পেশ্যাল পারফরম্যান্স। রাত সাড়ে তিনটে চারটের সময় বাড়ি ফিরতাম। ততদিনে আমি চলে এসেছি সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের ৪,০০০ স্কোয়্যার ফিটের ফ্ল্যাটে। গ্র্যান্ডের জন্য বিভিন্ন শহর ঘুরে-ঘুরে শো করার পাশাপাশি নতুন মেয়েদের নাচও শেখাতাম। বুঝতেই পারছেন, এই ধকল সামলানোর জন্য কী চূড়ান্ত লেভেলের ফিটনেস দরকার… অনেকেই জানতে চান, আমার ওয়র্কআউট শেডিউল।
আসলে মাঝে মধ্যে একটু- আধটু এক্সারসাইজ হয়তো করতাম কিন্তু সেটা তেমন স্পেশ্যাল কিছুও নয়। আরে বাবা, রোজ নাচ করাটাই তো এক্সারসাইজ। হোটেল লিস্ট করে দিত, কবে ক’টা থেকে নাচ, কী নাচ। কী নাচ বললাম, কারণ একেকদিন এক-এক ডাঙ্গ ফর্ম ধরে এগোতাম। আমি সবচেয়ে বেশি নাম করেছিলাম হাওয়াইয়ান ডান্স করে। তাছাড়া চা-চাচা, ওরিয়েন্টাল, চার্লস ট্রেন… আরও অনেক ধরনের নাচ জানতাম। মজার ব্যাপারটা হল, তখন এই ক্যাবারে ডান্সিংয়ে আমিই একমাত্র বাঙালি।
পরে অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের প্রভাব বেড়েছিল ঠিকই, তবে আমি যখন ডান্সার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করি তখন সবই প্রায় বিদেশি ডান্সার, মানে পাক্কা ফরেনার। রোলা, অ্যানাবেলা… দু-একটা নাম এখনও মনে করতে পারি। Anandalok 12 February 2015 pdf পড়ুন।
তবে একটা সময়ের পর আর ওদের লাইসেন্স রিনিউ হয়নি। শুরুর দিকে ওরা আমাকে একেবারেই মেনে নিতে পারত না। অনেক অবহেলাও করেছে। কিন্তু তাতে কী? দর্শক তো আমাকে চাইত। আমার জন্যই তখন উপচে পড়ছে গ্র্যান্ডের প্রিন্সেস হল। দর্শকদের উন্মাদনা জিইয়ে রাখার একটা কায়দা আমি মিউজিশিয়ানদের কাছ থেকে শিখেছিলাম। ওঁরা আমাকে শিখিয়েছিলেন, নাচ শেষে বাও করার পর আর একমুহূর্ত স্টেজে থাকা যাবে না। তিনটে বাও হয়। সেগুলি করেই ভুট্টে স্টেজ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। তবেই না দর্শক আবারও পরেরদিন আসবে আমার নাচ দেখতে। সেই খিদেটা তাদের মধ্যে জিইয়ে রাখতে হবে।
সেসময় গ্র্যান্ড আমার ঘরবাড়ি হয়ে গিয়েছিল। ওখানকার ম্যানেজার ছিলেন সতীশকুমার, আমার এত আপন হয়ে গিয়েছিলেন যে, আমার সব আবদার রাখতেন। হয়তো বললাম, “স্যার, আজ আমার ছ’জন বন্ধু আসবে।” শুনেই উনি বলতেন, “লাঞ্চ করবে, তাই তো?” অবাক হয়ে বলতাম, “আপনি কী করে জানলেন ” বলতেন, “তোমার সব কথাই বুঝতে পারি।” জানেন, তখন গ্র্যান্ডের সব রেস্তোরাঁ, বার… সবজায়গায় আমার সই চলত। আমার একটা সই-ই তখন যথেষ্ট, তা হলেই সব বিল পাশ! আর হ্যাঁ, তখন কিন্তু আমার সব মেক আপ আসত প্যারিস
থেকে।
গ্র্যান্ডের কুকরা আমার এত ভালবাসতেন, যে মাখন দিয়ে যেতেন আমার মেকআপ তোলার জন্য। ফিগারের কথা সবসময় মাথায় রাখতে হত, এদিকে তো রোজ ভাত- মাছ ছাড়া আমার চলেই না! তাই রোজ বাড়িতে বিজলি বলে একজন আসত মাসাজ করাতে। কী যে সুন্দর মাসাজ করত মেয়েটা।
Anandalok 12 February 2015 pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.