Arshir Akash pdf | Sukanta Gangopadhyay আরশির আকাশ best pdf সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়

Arshir Akash pdf | Sukanta Gangopadhyay আরশির আকাশ best pdf সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়

সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় pdf বই আরশির আকাশ pdf Arshir Akash pdf – Sukanta Gangopadhyay book pdf download link

Arshir Akash pdf | Sukanta Gangopadhyay আরশির আকাশ best pdf সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় এর Arshir Akash pdf এর কিছু অংশ পড়ে দেখুনঃ
সাধারণত এত স্পিডে বাইক চালায় না শৌর্য। ফাঁকা হাইওয়ে পেলে বড় জোর ষাট। এখন চালাচ্ছে একশোর উপর। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলকাতায় ফিরতে হবে। বিকেলের দিকে একটা অ্যাসাইনমেন্ট আছে। পিঠোপিঠি দিনে দুটো কাজ নেওয়া ঠিক হয়নি। বিশেষ করে দুটো কাজের মাঝের দূরত্ব যেখানে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার। মহুলিয়াতে লোকেশন শুট করে এল শৌর্য। কলকাতায় ফিরে লুক টেস্টের ফোটো তুলতে হবে। দুটো কাজই সুমিতদার। সিনেমা এবং টিভি সিরিয়ালে স্টিল ফোটোগ্রাফির কাজ সুমিতদার হাত ধরেই শুরু করে শৌর্য। হিসেব মতো সুমিতদাকে ‘কাকা’ সম্বোধন করা উচিত। খুব ঘনিষ্ঠ না হলেও বাবার বন্ধু ছিল সুমিতদা। ক্লাসমেট। কিন্তু আর্টিস্ট পরিমণ্ডলে কাকা, মামা, জেঠা, পিসি চলে না। বড়রা যত বড়ই হোক সবাই দাদা-দিদি। শিল্পীদের ক্ষেত্রে এই বাড়তি সুবিধেটার যে কে বন্দোবস্ত করেছিল, কে জানে! তবে তিনিও যে একজন শিল্পী, এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।
হাইওয়ের দু’পাশে এখন জঙ্গল। দু’দণ্ড থামতে ইচ্ছে করছে শৌর্যর। উপায় নেই। চারটের মধ্যে কলকাতায় তাকে ফিরতে হবেই। তার আগে বাড়ি ঢুকে চান-খাওয়া সারলে মা মনে শান্তি পাবে, নিজেও ফ্রেশ মুডে লুকটেস্টের ছবিগুলো তুলতে পারবে। ডেলাইট থাকতে-থাকতে আউটডোর শুট সেরে নিতে হবে, সুমিতদার তেমনটাই নির্দেশ। বলেছিল তিনটের মধ্যে ঢুকে যেতে। ক’জন ক্যান্ডিডেট অডিশন দিতে আসছে, জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছে শৌর্য। অডিশনে সিলেক্ট হলে ফোটোশুট, তিনটের জায়গায় চারটেতে পৌঁছলে খুব লেট হবে বলে মনে হয় না। অত ঘড়ি ধরে চলে না টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু দিনের আলো তো লেট করবে না। হাইওয়ের লাগোয়া এই জঙ্গলটায় যখন বিকেলের হলুদ আলো ছড়িয়ে পড়বে, শৌর্য তখন ইউনিটের একগাদা লোকজনের মাঝে অতি ব্যস্ততায় ফোটো তুলে যাবে সুমিতদার নতুন সিনেমার সম্ভাব্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের।
প্রকৃতির ছবি তুলবে বলেই ফোটোগ্রাফি শিখেছিল শৌর্য। এখন সেই প্রকৃতিকে ফেলে রেখে ছুটতে হচ্ছে রোজগারের ধান্দায়। এমনটাই বোধ হয় বেশিরভাগ মানুষের জীবনে ঘটে। শৌর্যর বাবা হতে চেয়েছিল লেখক, অ্যাড এজেন্সির কপিরাইটার হিসেবে কাজ জুটল প্রথমে। তারপর সেই কোম্পানির প্রোডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট। বড় অসময়ে চলে গেল বাবা, শৌর্য তখন সবে কলেজে ঢুকেছে। বাবা বলত, “জেনারেল কোর্সে কলেজে পড়ছিস পড়। রোজগার করবি সেই কাজ করে, যেটাতে আনন্দ পাবি। তার জন্য যদি অন্য ধরনের লেখাপড়া করতে হয়, করবি। জীবনভর অপছন্দের কাজ করে যাওয়া যে কী শাস্তির, তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি!”
এই কথাটা শৌর্যর বেলায় খাটে না। যেহেতু ওর মাথার উপরের ছাদ যথেষ্ট পুরু। বাবা মোটা টাকার চাকরি করত, মা কলেজে পড়ায়। সংসারের প্রয়োজনে অপছন্দের রোজগারের রাস্তা বেছে না নিলেও চলবে। হাতে অনেকটাই সময় নিজের মতো কেরিয়ার গড়ার। ঘটনাচক্রে ছাব্বিশ বছরেই তা গড়ে উঠেছে। মা তাতে সন্তুষ্ট নয়। বলে, “যতই ইনকাম হোক, সেই তো ফোটোগ্রাফার। তোর বিয়ের জন্য ভদ্র-শিক্ষিত ঘরের মেয়ে পাওয়া যাবে না। এদিকে আবার প্রেম করার মুরোদও নেই। সে যেমন মেয়েই হোক, আমি বিয়েতে আপত্তি করতাম না।”
মা খুবই খোলামনের মানুষ। জীবনকে দেখতে জানে পজিটিভ অ্যাঙ্গেলে। শৌর্যর বাবা ছিল সংশয়ী, দ্বিধাগ্রস্ত। মা বহুবার বলেছে, “চাকরি ছেড়ে লেখালিখিই করো তুমি। আমার যা চাকরি, তাতে স্বছন্দে একটা সংসার টানা যায়। যে কাজে আনন্দ পাচ্ছ না, কেন করছ সেটা? তুমি তো নিরুপায় নও।”
বাবা বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উত্তর দিত। তবে সুর একই। যেমন, “লেখালিখি করতে গিয়ে হয়তো এক পয়সাও রোজগার হবে না। কতটা কী লিখতে পারি, তাই তো জানি না। লিখতে ভালবাসি বললেই তো আর চলবে না। ভাল লিখতে হবে।”
মা যুক্তি দিত, “কোনও স্রষ্টাই বুঝতে পারে না তার সৃষ্টি কতটা উৎকৃষ্ট। বিচার করে অন্যজনে। তুমি তো গল্প-কবিতা বেশ ভালই লিখতে। শুধু আমি নয়, বন্ধুবান্ধবরাও বলত।”
বাবার উত্তর হত, “ওই প্রশংসা নিরপেক্ষ নয়। নিকট সম্পর্ক হওয়ার জন্যই অজান্তে বেশ খানিকটা প্রশ্রয় মিশে থাকে। নামীদামি পত্রিকা বা প্রকাশকের কাছে আমি হয়তো পাত্তাই পাব না।”

সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের Arshir Akash pdf পড়ুন

সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় এর book Arshir Akash pdf আরশির আকাশ pdf download করুন এখান থেকে।

Be the first to comment

Leave a Reply