শেখ আবদুল হাকিম থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস Atmahattya pdf আত্মহত্যা pdf ডাউনলোড করুন ও Atmahattya pdf আত্মহত্যা pdf পড়ুন।
Atmahattya pdf আত্মহত্যা pdf কাহিনিঃ
Atmahattya pdf আত্মহত্যা pdf নমুনাঃ
সেদিন সৌর-রাজের দাপটে মেঘেরা সব দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সময়টা গ্রীষ্মকাল। উত্তপ্ত বাতাসের সর্বাঙ্গে চড়াও হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে ধুলো আর ধুলো। চোত মাসের প্রখর রৌদ্র-দগ্ধ কাঠফাটা দুপুর।
এশিয়ান হাইওয়ের একটা অংশ মীরপুর রোড। রোডের শেষ মাথায় আধভাঙা নড়বড়ে লোহার একটা পুল। পুলের ওপারে নয়ারহাটের বাস- স্ট্যান্ড। বাস-স্ট্যান্ডের পাশেই বুড়ো কসম আলীর বেড়া-ঘেরা হোটেল। হোটেলও বটে, চা-খানাও বটে। আবার মদ-তাড়িও মউজুদ থাকে। ঘটনার সূচনা হলো এখানেই। সেই ঘটনা, যা একাধারে কুৎসিত, ভীষণ, বিস্ময়কর এবং করুণ।
শোণিত উপাখ্যান বর্তমান pdf – সৈয়দ অনির্বাণ Shonit Upakhyan Bartaman pdf – Syed Aunirbaan
কয়েক মিনিট বাকি, বেলা একটা। রঙচটা একটা মোটর গাড়ি কসম আলীর হোটেলের পাশে এসে দাঁড়াল। গাড়িটার ছাদের রঙ হলুদ, বাকিটা কালো। ধুলোমাখা পুরনো গাড়িটার ভিতরে দু’জন লোক। দু’জনের একজন, সিদ্দিক মিয়া, ব্যাক-সিটে হেলান দিয়ে ঘুম মারছে।
পোকা, গাড়ির ড্রাইভার, দেখতে গোলগাল। ঘন ভুরুর নিচে অস্থির ছটফটে বড় বড় দুটো চোখ। নাকের ওপর একটা আঁচিল। কদমছাঁট। নোংরা খাকি শার্ট আর খাকি ঢোলা প্যান্ট পরনে। ধাঁধানো রোদের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো কুঁচকে গাড়ি থেকে নামতে নামতে গালি দিল ও, “শালার গরম! .গতরটাকে কাবাব বানিয়ে দিলে বানচোত!’
আসল কথা, কাল রাতে দু’তিন কলস তাড়ি গিলেছে পোকা। চামড়ার নিচে চর্বি, মাংস, রক্ত সব টগবগ করে সেই থেকে ফুটছে। তার ওপর এই গরম। পোকা ভুগছে বড়।
গাড়ি থেকে নেমে ঘুমন্ত সিদ্দিক মিয়ার দিকে চোখ ফেলে দাঁড়াল ও । থমথমে হয়ে উঠল ওর মুখ। তারপরই ঘাড় ফিরিয়ে পা বাড়াল হোটেলের দরজার দিকে।
বুড়ো কসম আলী টুলে বসে মাছি মারছে ঠাস ঠাস টেবিলে চাপড় মেরে। বুড়োর বুড়ি থলথলে বুকে আতিপাতি করে ঘামাচি খুঁজে খুঁজে টিপে টিপে মারছে। বুড়ো-বুড়ি ছাড়া হোটেল খালি। গোমড়া মুখো পোকা দু’জনার কারও দিকে না তাকিয়ে ভিতরে ঢুকেই বলে উঠল, ‘রুটি, তাড়ি আর গরু আনো চাচী, জলদি।’
বুড়ো কসম আলী পেট মোটা একটা মাছির ওপর থেকে চোখ তুলে প্রথমে পোকা, তারপর বুড়ির দিকে তাকাল। বুড়ি পানিভরা একটা ডাগর ঘামাচির উপর থেকে আঙুল সরিয়ে থলথলে বুকে কাপড় চাপা দিয়ে প্রথমে বুড়ো, তারপর পোকার দিকে তাকাল। পোকা ঘাম মুছছে, লোমশ হাতের। বুড়ো- বুড়ির চোখাচোখি হলো আবার। তারপর দু’জনেই উঠে দু’কোণে চলে গেল।
বুড়ো গেল মাটির কলস থেকে জগে তাড়ি ঢালতে। বুড়ি উনুনের পাশে নোংরা মিটসেফের কাছে গিয়ে দাঁড়াল। চামচ দিয়ে চটা ওঠা টিনের পিরিচে গরুর মাংস তুলতে তুলতে বুড়ি বলল, “হ্যাঁরে পোকা, এমন গরমে ওসব গিলিস কেমন করে তোরা!
বুড়ো জগ-ভর্তি তাড়ি আর এক গ্লাস পানি পোকার টেবিলে নামিয়ে রেখে ফোকলা গালে বলে উঠল, ‘রাতে বাপু একফোঁটা ঘুমুতে পারিনি গরমের ঠেলায়।’
কথাটা বলে পোকার দিকে তাকায় বুড়ো ভাল করে। তারপর বলে, “তা তাড়ি কি খাওয়া ভাল এই গরমে, দেশী মদ থাকতে! দেব নাকি পোকা, দাম কিন্তু বাপু ওই সাড়ে সাত টাকা।
‘এই বুড়ো, চুপ যা বলছি, পটাতে হবে না আমাকে,’ খেঁকিয়ে উঠল পোকা। বুড়ো চোখ পিটপিট করতে করতে ফিরে এল। বুড়ি রুটি আর মাংস পোকার টেবিলে রেখে নিঃশব্দে দূরে সরে গিয়ে বসল একটা টুলে।
ঢকঢক করে খানিকটা তাড়ি গলায় ঢেলে জগটা নামিয়ে রাখল পোকা। শার্টের হাতায় মুখ মুছে রুটি আর মাংস পুরল মুখে।
পোকা টাকার দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে আছে। গোপী তাড়াতাড়ি কোন একটা উপায় করে উঠতে না পারলে মুশকিলে পড়বে তারা। শেষ পর্যন্ত হয়তো, পোকা ভাবল, একটা ব্যাঙ্কের ওপরই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে টাকার জন্যে। ব্যাঙ্ক-ট্যাঙ্কের ব্যাপারে সাহসের চেয়ে ভয়ই বেশি পোকার। আগেও ভেবেছে তারা ব্যাঙ্ক লুঠ করার কথা। সে রাজি হয়নি অবশ্য। কাজটা বড় কঠিন, আর ধরা পড়ার ভয় ষোলো আনা। পুলিস যেন উন্মাদ প্রায় হয়ে ওঠে খবর পেয়ে। ঝামেলা পোহাতে জান বেরিয়ে যাবার যোগাড় হয়।
“পোকা জানালা দিয়ে গাড়ির সিটে ঘুমন্ত সিদ্দিক মিয়ার দিকে একবার তাকাল। আবার ভার হয়ে উঠল ওর মুখ। গাড়ি চালানোর কাজ ছাড়া লোকটা বেকার, কোনই কাজের নয়। এ লাইনের ধাত অনুযায়ী বয়সটা সিদ্দিক মিয়ার একটু বেশি। দু’বেলা খাওয়া জুটলে পড়ে পড়ে ঘুমানো ছাড়া আর কোন চিন্তা নেই ওর। গোপী আর তার ওপরই সব দায়। কোথা থেকে যোগাড় হবে টাকা তা ওদের দু’জনকেই খুঁজে বের করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? কোথা থেকে? “আরেকটা রুটি চাচী।’
Atmahattya pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.