
বাদাবনে আতঙ্ক pdf শিশির বিশ্বাস এর অনবদ্য রচনা। Badabone ananka pdf ডাউনলোড করুন। শিশির বিশ্বাস এর pdf books বাদাবনে আতঙ্ক pdf ডাউনলোড করুন। বাদাবনে আতঙ্ক pdf আপনাদের জন্য পড়ার ব্যবস্থা করা হলো।

বাদাবনে আতঙ্ক pdf Badabone ananka pdf ভূমিকা
ক্ষুদ্র এই গ্রন্থের জন্য ভূমিকার প্রয়ােজন হয় না। তবু লিখতেই হল। ‘বাদাবনে আতঙ্ক’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম অনেক দিন আগে, সেই নব্বইয়ের দশকের গােড়ায় আসামের এক শহরে বসে। চাকরির কারণে কিছুদিন থাকতে হয়েছিল তখন। তার আগে সুন্দরবনে ঘােরা হয়ে গেছে বেশ কয়েকবার। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখেও ফেলেছি কিছু গল্প। বিশেষ করে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায়। তাই প্রবাসে বসেও সুন্দরবনে বেড়াবার সেই দারুণ দিনগুলাে ভােলা যায়নি। লিখে ফেলেছিলাম উপন্যাসটি। মানসনেত্রে কয়েকটা দিন জল-জঙ্গলের দেশে বেশ ঘুরে নেওয়া গিয়েছিল।
তারপর পড়েই ছিল সেই পাণ্ডুলিপি। শেষে হঠাৎই খোঁজ পড়ল একদিন। ‘কিশাের ভারতী’ পত্রিকায় সুন্দরবনের উপর পর পর কিছু গল্প লিখছিলাম তখন। হঠাৎ মনে পড়ল, কিছু টাটকা গল্প তাে সেই পাণ্ডুলিপিতেই রয়েছে। খুঁজে নিয়ে একটি গল্প কপি করে পাঠিয়ে দিলাম। পরবর্তীকালে আরাে দুটো। গল্পগুলি পরে লেখকের সংকলন গ্রন্থেও গেছে। বহু পঠিত সেই গল্পগুলি যাদের পড়া, তাঁরা এই বই পড়ে নিশ্চয় বিস্মিত হবেন। লেখক একই গল্প এই উপন্যাসেও ঢুকিয়ে দিয়েছেন!
একবার ভেবেছিলাম, গল্প তিনটি বাদ দিয়ে দেব। কিন্তু প্রকাশের আগে সামান্য ঘষামাজা করতে গিয়ে মনে হল, তাতে উপন্যাসটির মেজাজ কিছু বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনা। অবিচার হবে নতুন পাঠকের প্রতিও।
এবার বলি, গল্পগুলি তখন যে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলাম, তার বড়াে কারণ, প্রবাসে পরিবার, পরিজনহীন অবস্থায় নিছক আনন্দের জন্য প্রায় ঝোঁকের বসে যে উপন্যাসটি লিখে ফেলেছিলাম, সেটি কোনােদিন প্রকাশের জন্য পাঠাব তখন তাে নয়ই, পরেও ভাবিনি। তবু যে সেটা সম্ভব হল তার প্রধান কারণ লেখক-প্রকাশক বন্ধু দেবজ্যোতি ভট্টাচার্যর ক্রমাগত তাগাদা।
পাঠকের ভাল লাগলে লেখকের সেদিনের সেই আনন্দ আরাে যে পূর্ণ হয়ে উঠবে, তা বলাই বাহুল্য।
শিশির বিশ্বাস
যে গত শতকের পঞ্চাশের দশক। স্কুলে পড়ি। সুন্দরবনে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ইন্দ্রদার সঙ্গে। ইন্দ্রদা অবশ্য বেড়াতে যায়নি। সুন্দরবনে নিছক বেড়াতে যাবর চল তখনো হয়নি। তার উপর দেশের অবস্থাও তেমন নয়। সদ্য দেশভাগ হয়েছে। ওপার থেকে আসা উদ্বাস্তু মানুষের ঢল। শিয়ালদহ স্টেশনে পা ফেলাই মুশকিল। প্ল্যাটফর্ম জুড়ে হাজার হাজার ছিন্নমূল মানুষের হাঁড়ি-কড়াই আর বোঁচকা-বুচকি নিয়ে সংসার। ব্লিচিং পাউডারের তীব্র গন্ধ। কোনোক্রমে মহামারি ঠেকাবার চেষ্টা। প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বাইরে এলে স্টেশনের মস্ত কম্পাউণ্ডের ফুটপাত জুড়ে সারি দিয়ে ঝুপড়ি। আরো কয়েক হাজার মানুষের অস্থায়ী অস্তানা। ছিন্নমূল উদবাস্তু বাঙালির সে এক অসহনীয় অবস্থা সুযোগ বুঝে কিছু রাজনৈতিক দল এই মানুষগুলোকে নিয়েও লেগে পড়েছে নিজ নিজ ফয়দা হাসিলে। অগত্যা টালমাটাল কলকাতা শহরও। যাই হোক আমি তখন ক্লাস নাইনের ছত্র। আমার কাছে তাই সেটা বেড়ানোরই নামান্তর।
আসলে সুন্দরবন তখন এককথায় ভয়ঙ্কর। সাতজেলিয়া পার হলেই নদীর দুইপাশে এমন ঘন জঙ্গল যে ছমছম করে উঠত শ্রীর। জলে কুমির ডাঙায় বাঘ, এসব তো ছিলই। আর ছিল ডাকাতের উপদ্রব আজকের মতো ইঞ্জিন লাগানো ভটভটি বোটও ছিল ন। দাঁড়ে টানা নৌকো। কলকাতা থেকে মূলত যাঁরা যেতেন, হয় দরকারি কাজ, নমতো বাঘ বা হরিণ শিকারের টানে। এসব শিকারের জন্য আলিপুর অফিস থেকে পারমিটও মিলত। ইন্দ্রদা অবশ্য শিকার নয়, গিয়েছিল মূলত কিছু সমীক্ষার কাজে।
গল্প শুরু করার আগে ভাই ইন্দ্রদার কথা একটু বলা দরকার। ইন্দ্রদা ওরফে ইন্দ্রনাথ রায় আমার মাসতুতো দাদা। বছর পনেরোর বড়ো। পড়াশোনার অসম্ভব ভাল। কলকাতায় প্রথম ডিভিশনে ফুটবলও খেলত একসময়। তবে পড়াশুনোর চাপে বেশিদিন হয়নি। সেই ইন্দ্রদা যখন অঙ্কসমেত চারটে লেটার পেয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেও আর্টস নিয়ে কলেজে ভর্তি হন, অবাক হয়েছিল সবই। আসলে সাহিত্য, ইতিহাস, এসবের উপর বরাবরই ঝোঁক ছিল ওর।
এই বিষয়গুলি নিয়ে পড়বার তাগিদেই যে ইন্দ্রদা আর্টস নিয়েছিল, সেটা বোঝা গিয়েছিল পরে। এই ইন্দ্রদাই বছরকয়েক পরে রীতিমতো কৃতিত্বের সঙ্গে ইতিহাসে পোস্ট গ্রাজুয়েশান কমপ্লিট করার পরে পি.এইচ.ডি করতে শুরু করল। গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন ইতিহাস।
এই বিষয়গুলি নিয়ে পড়বার তাগিদেই যে ইন্দ্রদা আর্টস নিয়েছিল, সেটা বোঝা গিয়েছিল পরে। এই ইন্দ্রদাই বছরকয়েক পরে রীতিমতো কৃতিত্বের সঙ্গে ইতিহাসে পোস্ট গ্রাজুয়েশান কমপ্লিট করার পরে পি.এইচ.ডি করতে শুরু করল। গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল দক্ষিণবঙ্গের প্রাচীন ইতিহাস।
কলকাতায় প্রথম ডিভিশনে একসময়ের স্ট্রাইকার ইন্দ্রদা বরাবরই ডানপিটে। এককথায় দুঃসাহসী মানুষ। এই গবেষণার তাগিদেই ও হঠাৎই ঠিক করল, সুবন যাবে। কারণ ওই সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের মধ্যে নিতান্ত অনাদরে পড়ে আছে ইটের ভাঙা দেবদেউল, প্রাচীরের অবশেষই শুধু নয়, কোথাও নরম মাটি খুঁড়লেই বের হয়ে পড়ে পাকা রাস্তার অবশেষ। ভয়ানক দুর্গম বলেই এসব নিয়ে তেমন কোনো কাজ এ যবৎ হয়নি। এসব অঞ্চলের ইতিহাস তাই অজানাই রয়ে গেছে।
Badabone ananka pdf download link
Download / Read Online
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.