জেমস হ্যাডালি চেজের থ্রিলার বিলিভ নট Believe Not পড়ুন।
থ্রিলার বিলিভ নট Believe Not পড়ুন
আমি আরম্ভ করতে যাচ্ছি যে কাহিনী তার মধ্যে কোনো মতবাদ উপস্থিত করা, বা বিরোধিতা করা বা তাকে সমর্থন করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আমি জানি বার্লিনের পুস্তক বিক্রেতার ইতিহাস, ভালভাবে আমি অনুধাবন করেছি সার ডেভিড ব্রুস্টার লিখিত জনৈক পরলোকগত রাজ জ্যোতিষীর পত্নীর ঘটনাটিও। বিস্তারিতভাবে আমি আলোচনা করেছি অনেক রকম ভৌতিক দর্শনের ঘটনা নিয়ে। একটি প্রসঙ্গ বলে নেওয়া দরকার এই সর্বশেষ ঘটনাটি প্রসঙ্গে। তিনি আমার কোনরকম দুরতম আত্মীয়া নন যিনি ভৌতিক দর্শনের শিকার হয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের একটি হত্যাকাণ্ড অনেককাল আগেই সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। হত্যাকাণ্ড অনেকই ঘটে, একটি হত্যাকাণ্ড গুরুত্বের দিক থেকে অন্যান্য অনেক হত্যাকাণ্ডকে ছাড়িয়ে যায়। সেই নরপশু যার স্মৃতিকে আমি সম্পূর্ণ ভুলেই যেতাম, কারণ তার মৃতদেহ নিউগেট জেলের কবরে শুয়ে আছে। কোনরকম বাক্তিগত পরিচয় তার আমি ইচ্ছা করেই দিচ্ছি না। প্রথম যখন আবিষ্কৃত হয় এই হত্যাকাণ্ডটি, তখন পরবর্তীকালে যে লোকটির বিচার হয়েছিল তার ওপর কোনো সন্দেহই পড়েনি। তখনকার সংবাদপত্রে এর কোনো বিবরণ প্রকাশিত হয়নি কারণ সংবাদপত্রে এর কোনো উল্লেখমাত্র ছিল না। মনে রাখা দরকার এই কথাটি।
লাস্ট ফর ডেথ – জেমস হ্যাডলি চেজ Last for Death bangla by James Hadley Chase
হত্যাকাণ্ডের প্রথম বিবরণটি আমার নজরে পড়েছিল সকালে প্রথম খবরের কাগজটি খুলতেই। যেহেতু ঘটনাটি খুবই আকর্ষনীয় সেহেতু খুবই মনোযোগ সহকরে পড়লাম। তিনবার পড়িনি কিন্তু দু’বার পড়েছিলাম। একটি শোবার ঘরে খুনটি আবিষ্কৃত হয়। চকিতে একটি ঘটনা ঘটে গেল, সেইমাত্র খবরের কাগজটা নামিয়েছি, তখন কি যে বলব তা বুঝতে পারছি না। চকিতে বিদ্যুৎচমকের মত বা জলস্রোতের মত সেই শোবার ঘরটা যেন আমার ঘরের ওপর দিয়ে চলে গেল এবং এটা যেন ছিল ঠিক একটা ছবির মত, যা খরস্রোতা নদীর বুকে আঁকা। আমি সব কিছুই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম যতই ছবিটা দ্রুত সরে যাক না কেন। তারপর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম এবং বুঝতে পারলাম যে বিছানার ওপর কোনো মৃতদেহই নেই।
কোনো রোমান্টিক পরিবেশে নয়, পিকাডিলির একটি বাসায় সেন্ট জেম্স স্ট্রীটের মোড়ে এ ঘটনাটি ঘটেছিল। আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন ছিল জায়গাটি। একটি আরাম কেদারায় তখন শুয়েছিলাম আমি। অনুভূতিটা আমাকে সাড়া জাগানোর সময় কেদারাটা সামান্য নড়ে গিয়েছিল চেয়ার সহজেই সরে যায় ক্যাস্টর পালিশ করা মেঝেতে এটা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তিনতলার ঘরে যাতে দুটো জানালা ছিল তার মধ্যে একটি জানালার কাছে এগিয়ে গেলাম চলমান সবকিছু দেখে চোখ দুটিকে একটি তাজা করে নিতে। খুশির মেলা ঝলমল রাস্তায় হেমস্তের উজ্জ্বল সকালে; বাতাস বইছে খুব জোরে।
বারো ভূতের গপ্পো pdf – সত্যজিৎ রায় Baro Bhooter Gappo pdf by Satyajit Ray
পার্কের ভেতর থেকে কিছু ঝরাপাতা এসে একটি ঘোরানো স্তম্ভ হয়ে গেল এটা দেখলাম যখনই আমি বাইরে তাকালাম। পাতাগুলো সরে গেল এবং তারপর স্তম্ভটাও ভেঙে পড়ল । রাস্তার ও পাশে দুটি লোক পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চলে যাচ্ছে। একজন আর একজনের পেছনে সামনের লোকটি। পেছনে তাকাচ্ছে মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে। দ্বিতীয় লোকটি ত্রিশ পা দূর থেকে তাকে অনুসরণ করছে বিপজ্জনক ভঙ্গীতে ডান হাতটা তুলে। সেদিকে কোনো লোকেরই নজর পড়ছে না এবং এটাই হচ্ছে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার।
লোকটা যেভাবে অনায়াসে অন্য যাত্রীদের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে তা ঠিক অন্য পথচারীর সঙ্গে খাপ খায় না। আমি এখান থেকে যতদূর দেখতে পাচ্ছি তা থেকে বলতে পারি কোনো যাত্রীই তাকে পথছেড়ে দিচ্ছে না বা স্পর্শ করছে না বা তাদের দিকে কোন ক্রমেই তাকাচ্ছে না। তারা দু’জনই আমার দিকে চোখ তুলে তাকাল জানলার নীচ দিয়ে যখন তারা চলে গেল। এতই স্পষ্ট দেখলাম দু’জনের মুখ যে এদেরকে যদি অন্য কোনো জায়গায় দেখি তাহলে অনায়াসে চিনতে পারব।
তাদের মুখে কিন্তু আমি উল্লেখযোগ্য কোনো কিছুরই লক্ষণ দেখতে পেলামনা; অস্বাভাবিক রকমে ঝুঁকে চলেছে শুধু সামনের লোকটি পেছনের লোকটির মুখের রং ভেজাল মোমের মত। অকৃতদার আমি। খানসামা এবং তার স্ত্রীকে নিয়েই আমার সংসার গড়েছি। আমি চাকরি করি বিভাগীয় প্রধান হিসাবে একটি শাখা ব্যাংকে, আমি খুশি হতাম যদি আমার কাজের চাপটা আর একটু হাল্কা হত। চাকরির খাতিরে আমি হেমন্তকালটা শহরেই কাটিয়েছি। যদিও আমার মধ্যে বায়ু পরিবর্তনের ইচ্ছা একটু ছিল। আমি ঠিক সুস্থ ছিলামনা তবে আমার কোনো রোগ ছিলনা। আমার একঘেয়ে জীবনযাত্রায় আমি অস্বস্তি বোধ করছিলাম কারণ আমার বিখ্যাত ডাক্তারটির মতে আমি ঈষৎ পেট রোগা। জনসাধারণের মন সংযোগ খুব বেশী করে আকৃষ্ট হচ্ছিল যতই বেশি করে প্রকাশ পাচ্ছিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি। আমি যতদূর সম্ভব নিজেকে দূরে রাখতে চেয়েছি এই সার্বিক ঘটনাটি সম্পর্কে।
খুনীর বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে এবং বিচারের জন্য তাকে নিউগেটে চালান করে দেওয়া হয়েছে এটাই আমি জানতাম। কেন্দ্রীয় ফৌজদারী আদালতে মামলার বিচার এক সেশনের জন্য মুলতুবি রাখা হয়েছে। সাধারণ অসুবিধা এবং আসামী পক্ষের সময়ের অভাবের জন্য এটা আমি ভাল করেই জানতাম। আমার জানা উচিত ছিল যে মুলতবি মামলার বিচার ঠিক কোন সময় নাগাদ শুরু হবে, কিন্তু আমি সেটা জানতাম না এটা ছিল আমার বিশ্বাস। একই তলায় অবস্থিত আমার সাজ ঘর, বসার ঘর এবং শোবার ঘর। সাজঘরে আসার জন্য শোবার ঘরের ভিতর দিয়ে ছাড়া কোন নেই এবং একটি দরজা দিয়ে আগে যাওয়া হত সিঁড়িতে।
দরজাটা এখন বন্ধ হয়ে গেছে কারণ আমি স্নানঘরে একটি নতুন আসবাব বসিয়েছি। সেই সময় দরজাটা পেরেক দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং তারপর চট দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। একদিন শোবার ঘরে দাঁড়িয়ে চাকরকে কিছু নির্দেশ দিচ্ছিলাম। সাজ ঘরের বন্ধ দরজার দিকেই আমার মুখটা করা ছিল। দরজার দিকে ছিল চাকরের মুখটা। দরজাটা খুলতেই দেখলাম কথা বলতে বলতে, আমাকে একটি লোক ডাকল এবং রহস্য জনক ইঙ্গিতে। সাজঘরের দরজা খুলে ভেতরে তাকালাম।
ঠিক যতটুকু সময় লাগে শোবার ঘর পেরিয়ে যেতে। একটি জ্বলন্ত মোমবাতি আমার হাতে ছিল আগে থেকেই কাউকে সাজঘরে দেখতে পেলাম না এবং সাজঘরে কাউকে দেখবার প্রত্যাশা আমার ছিলও না। চাকরটি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দেখে তার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললাম, “ঠাণ্ডা মাথায় তুমি কি বিশ্বাস করবে ডেরিক আমি কি দেখতে পেলাম। চাকরটি চমকে উঠল এবং ভীষণভাবে কাপতে লাগল, তার বুকের ওপর আমার হাতটা রাখতেই, “হ্যাঁ স্যার, হ্যাঁ প্রভু, আপনাকে ইশারায় ডাকল একটি মরা মানুষ।”
আমার কাছে চাকরি করছে এই জন ডেরিক বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। তাকে না ছোঁয়া পর্যন্ত এই মূর্তিটি আমার মনের মধ্যে অনুভূতি জাগিয়ে ছিল এটা আমি কোনোমতেই বিশ্বাস করতে পারি না। আমি যখন তাকে ছুঁলাম তখন সে এমন ভাবে চমকে গিয়েছিল যে আমার মনে হল কোনো অলৌকিক অনুভূতি তার মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল আমি তাকে ছোঁয়া মাত্রই।
এরপর জন ডেরিককে ব্রান্ডিটা আনতে বললাম। তাকে ঘুণাক্ষরেও কিন্তু বললাম না সে রাতের ঘটনার আগে কি ঘটনা ঘটেছিল। পিকাডিলিতে একবার ছাড়া সে মুখ আমি আগে কখনও দেখিনি। ওটা আমার নিশ্চিত ধারণা হল ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে বসে। তার মুখের চেহারার তুলনা করলাম যখন সে দরজা থেকে ইশারায় আমাকে ডাকছিল। প্রথমবারে দর্শনেই সে আমার মনে এমনভাবে দাগ কেটেছে যে তাকে যদি দ্বিতীয়বার দেখি সেই ব্যবস্থাও সে পাকা করে ফেলেছে।
রাতটা আমার খুব অস্বস্তি লাগল, জানি না কেন আমার বিশ্বাস হয়েছিল মূর্তিটা আর ফিরে আসবে না।আমি গভীর ঘুমের মধ্যে ঢলে পড়লাম দিনের আলোর সঙ্গে সঙ্গে। জন ডেরিক নিজে এসে একখানা কাগজ হাতে নিয়ে আমার সে ঘুম ভাঙাল। তখন আমার মনে হল পত্রবাহক ও আমার চাকরের মধ্যে কিছু বাদানুবাদ হয়েছে এই কাগজখানা নিয়ে। কাগজখানা তারই সমন আমি যাতে জুরি হিসাবে উপস্থিত থাকতে পারি ওল্ড বেখলিতে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ফৌজদারী আদালতের আসন্ন অধিবেশনে। জন ডেরিক সেটা ভালভাবেই জানে যে আমি আগে কখনও জুরি হবার ডাক পাইনি। প্রথমে সে সমনটা নিতে অস্বীকার করেছিল কারণ তার মনে হয়েছিল যে জুরিতে যাদের ডাকা হয় তারা আমার চেয়ে অনেক নিম্নশ্রেণীর মানুষ। গুণের দিক থেকে তা কারণেই হোক বা অকারণেই হোক।
সে ব্যাপারটাকে শাস্তভাবে নিয়েছিল যে সমন জারি করেছিল। সে বলেছিল, সমনটা রইল কিন্তু জুরিতে আমার উপস্থিত থাকাটা কিছু আসে যায় না। এই ঝুঁকিটা তার নয়। এটা আমার একটা ঝুঁকি।
দু-একদিনে সেটা স্থির করতে পারলাম না যে সে ডাকে সাড়া দেব কি দেব না। আমার মনে বিশেষ কোনো আকর্ষণ বিকর্ষণ ছিল না এই ব্যাপার নিয়ে। শেষ পর্যন্ত জীবনযাত্রার একঘেয়েমি ভাবটা কাটাতে হবে এটা ভেবে নিলাম তাই ঠিক করলাম যে জুরিতে উপস্থিত থাকব।
নভেম্বর মাসের একটি বাজে সকালে, ঘন বাদামী কুয়াশা নেমেছে পিকাডিলি জুড়ে, ঘন কালো হয়ে চেপে বসেছে টেম্পল বারের পূর্বদিকটা। আদালত কক্ষের মতই আদালত গৃহ ও বারান্দা ও সিঁড়ি গ্যাসের আলোয় স্বপ্নালোকিত। সেখানকার ভিড়টা আমি নিজের চোখে দেখলাম। যখন অফিসাররা আমাকে নিয়ে ওল্ড কোর্টে পৌঁছে দিল, এটা আমার ধারণা, খুনীর বিচার যে সেইদিনেই হবে তা আমি আগে জানতাম না।
আমাকে ওল্ড কোর্টে হাজির করা হল যথেষ্ট কষ্ট করে, আমার হাতের সমন দুটো আদালতের কোনটাতে নিয়ে যাওয়া হবে তা আমি জানতামই না। এ ব্যাপারে আমি নিজে খুব নিশ্চিত নই বলে আমার এই কথাগুলিকে আক্ষরিক অর্থে নেওয়া ঠিক হবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় আসন গ্রহণ করলাম যেটা অপেক্ষমান জুরিদের জন্য নির্দিষ্ট থাকে, তারপর আদালতের বাইরে কুয়াশার মেঘ ও বাতাসের ভিতর দিয়ে আদালতের চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম যতটা ভালভাবে সম্ভব। কালো বাষ্প অন্ধকার পর্দার মত ঝুলছে বড় বড় জানালার বাইরে : একটি চাকার চাপা শব্দ ভেসে আসছে, রাজপথে ছড়ানো খড় ও কাঠের টুকরোর ওপর দিয়ে।
গুঞ্জন ধ্বনি শোনা যাচ্ছে সমবেত লোকের আর মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে যা বুক চিরে ভেসে আসছে তা হল তীক্ষ্ণ শিস্ এবং উচ্চকণ্ঠের ডাকাডাকির শব্দ। দুজন জজ তাদের আসনে এসে বসলেন কিছুক্ষণ পর। হঠাৎ চুপ হয়ে গেল আদালতের গুনগুনানি। হুকুম হল খুনীকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসার জন্য। হাজির হল সে। আমি চিনতে পারলাম ঠিক সেই মুহূর্তেই তাকে যাদের আমি পিকাডিলির রাস্তা ধরে হাঁটতে দেখেছিলাম সেই দুই জনের মধ্যে একজন।
নামটা যদি তখনই আমার ডাকা হত, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে যে জবাবটা আমার শোনা যেত কিনা। ষষ্ঠ বা অষ্টম জুরি হিসাবে আমায় ডাকা হল। আর সেই সময় ‘এখানে’ বলে আমি কোনো রকমে জবাব দিতে পারলাম। শুনুন তার পরের ঘটনা, বন্দী হঠাৎ খুব উত্তেজিত হয়ে অ্যাটর্নিকে ডাকল যখন আমি কাঠগড়ায় এগিয়ে গেলাম।
কিছুক্ষণ কাজ বন্ধ থাকল কারণ আমার কাজে বাধা দিতে বন্দীর ইচ্ছাটা খুবই স্পষ্ট ভাষায় প্রকাশ পেল। অ্যাটর্নি তার মক্কেলের সঙ্গে কাঠগোড়ায় ফিসফিস করে কথা বলতে লাগল এবং মাথা নাড়তে থাকল। জেনেছিলাম পরে সেই ভদ্রলোকের কাছ থেকে, সভয়ে বন্দীই তাকে বলেছিল, “লোকটাকে বাধা দিন এবং তার জন্য যে কোন ঝুঁকি নিতে হয় নিন।” সে কোনো যুক্তি দেখায়নি কিন্তু তার বক্তব্যের সপক্ষে, আমার নাম শোনার আগে যে সে আমার নাম জানত না তা সে আগেই স্বীকার করেছে এবং সেই কারণেই তার কথামত কাজ করা হয় নি।
জুরির মুখপাত্র হিসাবে নির্বাচিত করা হল আমাকে। আমি দারুণ অসুবিধায় পড়লাম। দ্বিতীয় দিন, দুঘণ্টা সাক্ষ্য গ্রহণের পর, যখন সহযোগী জুরিদের দিকে চোখ পড়ল তখন তাদের সংখ্যা। বারবার শুনতে গিয়ে দেখলাম একই অসুবিধা হচ্ছে কারণ প্রত্যেকবারই এক জন করে বেশি হয়ে যাচ্ছে।
“যে জুরিটা আমার ঠিক পাশে বসেছিল, কানে কানে তাকে আমি বললাম,” দয়া করে গুণে দেখুন আমরা ক’জন আছি। তিনি অবাক হয়ে গেলেন এই প্রশ্ন শুনে তবু মাথা ঘুরিয়ে শুনতে লাগলেন। “আমরা তো তেরো, কিন্তু তা হতে পারে না, আমরা বারো” এই কথা তিনি বলে উঠলেন হঠাৎই। এক সঙ্গে গুনতে গেলে একজন বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সেদিন আমার গণনা অনুসারে একজন একজন করে ঠিক শুনেছি। কোনো হিসাব বা ব্যাখ্যা এর কিন্তু পাওয়া গেল না। প্রতিবারে এসে হাজির হতে লাগল একটি মূর্তি, সেই মূর্তিটি আমার মনের মধ্যে ক্রমেই গড়ে উঠছে।
লন্ডন টাভার্নে বাসা দেওয়া হয়েছিল জুরিদের। আলাদা আলাদা টেবিল রয়েছে যাতে আমরা সকলে ঘুমিয়েছি একটি বড় ঘরে। আমাদের ওপর নজর রাখতেন একজন অফিসার, আমাদের নিরাপদে রাখার জন্য। কোনো কারণ আমি দেখি না অফিসারটির আসল নাম চেপে রাখার। তিনি শহরের একজন শ্রদ্ধেয় মানুষ অত্যন্ত বুদ্ধিমান, বিনয়ী এবং সেবাপরায়ণ। (শুনে খুব খুশী হয়েছি) তার গম্ভীর কণ্ঠস্বর, ঈর্ষা করার মত গোঁফ এবং সুন্দর দুটি চোখ সব সময়ই স্বাগত। মিঃ হার্কার তার নাম।
মিঃ হার্কারের বিছানা পাতা হল দরজা বরাবর। রাত বারোটা নাগাদ আমরা যখন বিছানায় শুতে গেলাম, আমি মিঃ হার্কারের পাশে গিয়ে বসলাম তাকে বিছানায় বসতে দেখে নস্যির ডিবেটা তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম যেহেতু দ্বিতীয় দিন রাতে শুতে যাবার ইচ্ছা হল না।
মিঃ হার্কারের হাত আমার হাত স্পর্শ করল যখন আমার ডিবে থেকে তিনি এক টিপ নস্যি নিলেন। হঠাৎ তিনি ‘ওকে’ এই বলে শিউরে উঠলেন।
আবার সেই প্রত্যাশিত মূর্তিটাকে দেখতে পেলাম মিঃ হার্কারের দৃষ্টি অনুসরণ করে, সেই দ্বিতীয় জন যে পিকাডিলির রাস্তা ধরে হেঁটে গিয়েছিল। তারপর কয়েক পা এগিয়ে গেলাম হঠাৎ উঠে মিঃ হার্কারের দিকে ঘুরে দাঁড়ালাম। অবিচলিতভাবে তিনি হাসতে লাগলেন এবং বলে উঠলেন, “একজন ত্রয়োদশ জুরি এখানে ছিলেন, বিছানা না থাকলেও মুহূর্তের জন্য আমার মনে হয়েছিল, চাঁদের আলোয় কিন্তু এখন সেটা আমি দেখছি।”
দেখার ইচ্ছা হল মূর্তিটি। অনুরোধ করলাম মিঃ হার্কারকে কোনো কথা না বলে আমার সঙ্গে ঘরের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত হেঁটে যেতে। আমার এগারো জন সহযোগী জুরির পাশে এসে কয়েক মিনিট ধরে দাঁড়াল সে বিছানার ডানদিক ধরে গেল প্রতিবারই; সেটাকে পার হতে লাগল পরবর্তী বিছানাটার পায়ের দিক দিয়ে। সে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে শায়িত মূর্তির দিকে তাকাচ্ছে, একথা মনে হল তার মাথার ভঙ্গী দেখে। মিঃ হার্কারের বিছানার সবচাইতে কাছে ছিল আমার বিছানাটা। তার দৃষ্টি ছিলনা কিন্তু আমার দিকে বা আমার বিছানার দিকে। যেখান দিয়ে সে বেরিয়ে গেল একটা উঁচু জানালা দিয়ে সেখানে চাঁদের আলো পড়েছে। বাতাসের সিঁড়ি বেয়ে চলেগেল এটা মনে হল যেন। আমি, মিঃ হার্কার ছাড়া আর বাকি সকলেই গত রাতেই নিহত লোকটিকে স্বপ্নে দেখেছে একথা আমার মনে হল পরদিন সকালে প্রাতঃরাশের সময়।
পিকাডিলি ধরে যাওয়া দ্বিতীয় লোকটিই যে খুন হয়েছিল সে বিষয়ে আমার ধারণা আরও দৃঢ় হল। কিন্তু পরে এমন একটা ঘটনা ঘটল যে ঘটনার জন্য আমি কোনোদিনই প্রস্তুত ছিলাম না।
নিহত লোকটির একটি ছোট ছবি প্রমাণ হিসাবে উপস্থিত করা হল বিচারের পঞ্চম দিনে সরকার পক্ষের সওয়াল শেষ হওয়ার মুখে। লোকটি তার শোবার ঘর থেকে উধাও হয়ে যায় খুনের খবর জানার পর এবং সেখানকার একটি গুপ্ত স্থানে খুনীকে মাটি খুঁড়তে দেখা গেছে। সেখানকার গুপ্ত স্থানে পাওয়া গিয়েছে একটি মৃতদেহ। আদালতের হাতে ছবিটি তুলে দেওয়া হল সাক্ষী সনাক্ত করার পর এবং জুরিদের কাছে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সেখান থেকে। পিকাডিলির রাস্তা ধরে আমার দিকে যখন সেটি নিয়ে আসছিল কালো গাউন পরা অফিসারটি, তখন পিকাডিলির রাস্তায় সে হারিয়ে গিয়েছিল।
সেই দ্বিতীয় লোকটি ভিড়ের ভিতর থেকে উঠে এল এবং আমার হাতে দিল অফিসারের হাত থেকে ছবিটা নিয়ে দেওয়ার পর সে নীচু এবং ফাঁকা গলায় বলল- “আমার মুখটা এত রক্তশূন্য ছিল না যখন আমি ছোট ছিলাম।” মূর্তিটি তখন আমার ও তার মধ্যে গিয়ে দাঁড়াল আমার পরবর্তী যে জুরিকে ছবিটা আবার আমাকে এনে দিল এইভাবে সকলের হাত ঘুরিয়ে। এই ব্যাপারটা অবশ্য তারা কেউই ধরতে পারল না।
আমরা সকলে বন্ধ ঘরে মিঃ হার্কারের হেফাজতে এসে জমায়েত হলাম যখন টেবিলে ফিরে এলাম। মামলার দৈনন্দিন বিবরণ নিয়ে প্রথম থেকেই আমরা প্রচুর আলোচনা করতাম। সরকার পক্ষের সওয়াল শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে উঠল ঘটনার একটি মোটামুটি চেহারা। বেশ উত্তেজনাপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল আমাদের আলোচনা। একজন গির্জার লোক আমাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অকাট বোকা, এবং তিনি সব অদ্ভূত আপত্তি তুলতেন অতি পরিষ্কার সব প্রমাণ সম্পর্কে। আরও দুজন তাঁর পাদরি সমর্থক ছিলেন। এই তিনমূর্তি যারা একই জেলা থেকে আসত তারা সারাক্ষণ এমন হৈচৈ করত যে তাদের বিচার হওয়া উচিত পাঁচশ খুনের দায়ে। মাঝরাত নাগাদ গলা একেবারে সপ্তমে চড়ালেন এই তিন অপদার্থ নির্বোধ। আমি আবার সেই নিহত লোকটিকে দেখতে পেলাম। যখন আমাদের কেউ কেউ বিছানা পাততে শুরু করেছেন।
তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে সে আমাকে ইশারাতে ডাকল। তাদের কাছে গিয়ে আলোচনায় যোগ দিতেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল। তখন থেকে সেই লম্বা ঘরটায় পর পর তার আবির্ভাব ঘটতে লাগল। যখনই জুরীর তাদের মাথাগুলোতে একত্র করে আলোচনায় মেতে ওঠে তখনই আমি সহযোগী জুরীদের মাঝখানে সেই নিহত লোকটার মাথা দেখতে পাই। যখনই তাদের মতামত তার বিপক্ষে যায় সে গম্ভীর ভাবে আমাকে ইশারায় ডাকত।
এ কথাটা মনে রাখতে হবে যে বিচারের পঞ্চম দিনে ছবিটা হাজির করার আগে পর্যন্ত এই মুর্তিটি আদালতে দেখা যায়নি। আসামী পক্ষের সওয়াল আরম্ভ হতেই তিনটি পরিবর্তন হল।
একসঙ্গে উল্লেখ করব তার মধ্যে প্রথম দুটিকে। মূর্তি যে সওয়াল করেন তাকে লক্ষ্য করেই কথা বলে এবং সেখানে আমাকে কিছু বলে না। অথচ তাকে অনবরত আদালতে দেখা যাচ্ছে। বলা যায় এর দৃষ্টান্ত স্বরূপ : গলাটা সরাসরি কেটে ফেলা হয়েছিল নিহত লোকটির। নিহত লোকটি তার গলাটা নিজেই কেটে থাকতে পারে এবং এটিই বক্তৃতার গোড়াতেই বলা হয়েছিল। গলাকাটা বক্তার হাতের কাছে দাঁড়িয়ে মূর্তিটি বক্তাকে বোঝাতে চেষ্টা করল একবার ডানহাত এবং একবার বাঁ হাতে এপাশ-ওপাশ দেখিয়ে কোনো হাত দিয়েই এরকম ক্ষত সৃষ্টি করা সম্ভব। দৃষ্টান্ত আরও একটি জনৈক সাক্ষী যখন বলল, বন্দীর মত ভাল মানুষ হয় না তখন মুর্তিটি বন্দীর কুৎসিত মুখটাকে দেখিয়ে দিল মুখের দিকে সোজা তাকিয়ে একটা হাত এবং একটা আঙুল বাড়িয়ে।
আমার কাছে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্ব পূর্ণ বলে মনে হয়েছে তৃতীয় পরিবর্তনটাই। কোনো মতবাদ তৈরী করতে আমি চাইনা, আমি ছেড়ে দিচ্ছি এটা কেবলমাত্র সঠিক বিবরণ দিয়েই। মুর্তিটি অজ্ঞাত কোনো নিয়মের জন্য অপরের কাছে আত্মপ্রকাশ করতে পারে না একথা আমার মনে হয়।
সে নীরবে তাদের মনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে স্বয়ং অদৃশ্য থেকে। আত্মহত্যার সম্ভাবনার কথা তুললেন আসামী পক্ষের সুদক্ষ কৌঁসুলি। ভয়ঙ্কর ভাবে করাত চালানোর ভঙ্গীতে নিজের কাটা গলাটা দেখালে। একথা অস্বীকার করা যাবে না যে কৌঁসুলি থতমত খেয়ে গেলেন যখন মূর্তিটা বিজ্ঞ ভদ্রলোকের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে এই ঘটনাটা দেখাল। আলোচনার সূত্র হারিয়ে ফেললেন কৌঁসুলি এবং তারপর রুমাল দিয়ে কপাল মুছলেন এবং তিনি অত্যন্ত বিবর্ণ হয়ে গেলেন।
আরও দুটি দৃষ্টান্ত দেখালেই এটি যথেষ্ট হবে জজদের আসার একটু আগে অন্য জুরিদের নিয়ে আমি আদালতে ফিরে এলাম, বিচারের অষ্টম দিনে দুপুরের কয়েক মিনিট বিশ্রাম এবং জলযোগের বিরতির পরে। মূর্তিটি সেখানে যে নেই একথা আমার মনে হল চারদিকে তাকিয়ে। একটি সুদর্শনা নারীর গায়ে ভর দিয়ে সে সামনের দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে এটা আমি দেখলাম আমার গ্যালারীর দিকে যখনই চোখ পড়ল, জজরা তাদের আসন গ্রহণ করেছে কিনা একথা সে যেন নিশ্চিত ভাবে জানতে চাইছে। মহিলাটি আর্তনাদ করে উঠলেন এবং মূর্ছিত হয়ে পড়লেন এবং বাইরে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে।
তার বেলায়ও তাই ঘটল যে শ্রদ্ধেয়, প্রাজ্ঞ ও ধৈর্যশীল জজসাহেব বিচার পরিচালনা করেছিলেন। তিনি কাগজপত্র নিয়ে স্থির হয়ে বসে রয়েছেন বিচারের পর, ঠিক সেই সময় জজের দরজা দিয়ে ঢুকে লর্ডশিপের ডেস্কের দিকে এগিয়ে গেল নিহত লোকটি এবং তিনি কি লিখছেন সামনের কাগজে তা দেখার জন্য তাকাল তার কাঁধের দিকে। লর্ডশিপের হাত থেমে গেল এবং লর্ডশিপের মুখটা কেমন যেন বদলে গেল। দেহে খেলে গেল তার অদ্ভুত একটি শিহরণ। আমি ভাল করেই চিনি তার সেই শিহরণ। তিনি বললেন কাঁপা গলায় আমাকে ক্ষমা করুন ভদ্রমহোদয় কয়েক মুহূর্তের জন্য। আমার কষ্ট হচ্ছে এখানকার দূষিত বাতাসে।” এক গ্লাস জল না খাওয়া পর্যন্ত তিনি সুস্থ হলেন না।
একঘেয়েমির মধ্যে অন্তহীন দশ দিনের মধ্যে দুটি দিন কাটল – সেই একই বিচারক আদালতে সেই একই লোকজন, একই খুনী সেই কাঠগড়ায়, সেই উকিলের দল একই কাঠগড়ায় এবং সেই একই প্রশ্নোত্তর আদালতে ছাদ ফাটিয়ে দেওয়া, খমস্ সেই একই আওয়াজ জজদের কলমের, আসা যাওয়া একই লোকজনের, একই সময়ে একই আলো জ্বালানো যদিও দিনের আলো রয়েছে।
কুয়াশার পর্দা টাঙানো রয়েছে জানালার বাইরে যদি কুয়াশা পড়ে, ঝিরঝির শব্দ বৃষ্টিরও সেই একই রকম, একই তালা খোলার লোক দিনের পর দিন একই করাতের গুঁড়োর উপর এবং বন্দী সেই একই পায়ের দাগ, চাবি লাগানো ও খোলা সেই একই রকা ভারী দরজা-আমি যেন অনেককাল ধরে জুরিদের মুখপাত্র হয়ে আছি সেই ক্লান্তিকর একঘেয়েমির মধ্যে আমার মনে হতে লাগল, ব্যাবিলনের সমসাময়িক হয়ে জেগে উঠেছে যেন পিকাড়িলি, নিহত লোকটির স্পষ্টতা আমার চোখে একটুকু বা কোন সময়ই তাকে অন্য সকলের চাইতে কম স্পষ্ট মনে হয়নি। একটা কথা স্পষ্ট করে বলতেই হয় : একটি বারও খুনীর দিকে তাকাচ্ছে না সেই মূর্তিটি যাকে আমি নিহত লোক বলে ভাবছি। ভেবেছি অবাক হয়ে বার বার, “তাকাচ্ছে না নে সে?” কখনও কিন্তু তাকায় নি সে।
রাত দশটা বাজতে সাত মিনিট আগে আলোচনার জন্য আমরা সকলে একত্রে বললাম। গির্জার সেই বোকা লোকটি আর তার সহযোগীরা এমন অসুবিধার সৃষ্টি করতে লাগল যে জজ সাহেবের বক্তব্য নতুন করে পড়ে শোনাবার জন্যে আমাকে দু-বার করে আদালতে যেতে হল । আমাদের মধ্যে ন’জন একমত হয়েছিলাম কিন্তু বাকী তিনজন কারো কারোই আপত্তি তুলল। বাধা দেওয়া ছাড়া ওদের আর কোন কাজ ছিল না।
আমাদের মতানুসারে বারোটা বেজে দশ মিনিট আগে জুরীর আদালতে চলে গেল।
আদালতের অন্যদিকে জুরিদের আসনের ঠিক বিপরীতে দাঁড়িয়েছিল প্রিয় লোকটি। সে গভীর মনোযোগের সঙ্গে আমার দিকে তাকিয়ে বইল। বেশ সন্তুষ্ট মনে হল তাকে এই প্রথম সে একটি বড় মাপের ধূসর অবগুণ্ঠন হাতের উপর নিয়ে এসেছিল এই প্রথম। নিজের মাথা ও শরীর সে ঢেকে দিল সেটা দিয়ে ধীরে ধীরে। যখন আমি “দোষী” বলে রায় ঘোষণা করলাম তখন তাঁর অবগুণ্ঠন খসে পড়ল, তার জায়গাটা ফাঁকা, সব উধাও হয়ে গেল।
মৃত্যুদণ্ড দেবার আগে তার কিছু বলার আছে কিনা তা জজসাহেব খুনীকে জিজ্ঞাসা করলেন তাঁর প্রথানুসারে। সে কিছু বলল বিড় বিড় করে এবং পরদিন প্রধান সংবাদপত্রে তার যে ব্যাখ্যা ছিল তাতে বলা হল, সে কাটা কাটা অসংলগ্ন ভাবে যা বলেছে তাতে জানা যায় যে বিচারকরা তার প্রতি বিরূপ ছিলেন তাই তাঁর প্রতি সুবিচার করা হয়নি। সে যে উল্লেখযোগ্য কথাগুলি বলেছিল তা হল,
মাই লর্ড, জুরীদের মুখপাত্র যখন তাঁর আসনে বসলেন তখনই আমি জানি যে মৃত্যু অনিবার্য। রাতে বিছানায় পাশে এসে উনি আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন আর একটি দড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন আমার গলাতে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.