Bheja Barud pdf writen by Swapnamoy Chakraborty is available here. স্বপ্নময় চক্রবর্তীর ভেজা বারুদ pdf স্বপ্নময় চক্রবর্তী উপস্থাপন করেছেন একদম নিরাসক্ত ভঙ্গিতে। হরিপদ চক্রবর্তী এর মতো ভেজা বারুদ দিয়ে আমাদের সমাজ ঘেরা।
Bheja Barud pdf সম্পর্কে কিছু তথ্য
বইয়ের নামঃ ভেজা বারুদ pdf
লেখকঃ স্বপ্নময় চক্রবর্তী
সাইজঃ ১.৩ এমবি
পৃষ্ঠাঃ ৬৭
Bheja Barud pdf সারসংক্ষেপ
স্রোতের ভিতরে দাঁড়িয়ে স্রোতের চরিত্র বোঝা যায় না। তটে দাঁড়িয়ে বুঝে নিতে হয়। আলঙ্কারিকরা একেই বলেন তটস্থ বিচার। যে সময়ের মধ্যে আমরা স্থিত রয়েছি, সেই সময়কে কেন্দ্র করে কিছু লেখার মধ্যে একটা ঝুঁকি থেকে যায়। একটু দূরে সরে গিয়েই সময় বিচার করা রীতি সিদ্ধ। তবু, সময়কে এড়িয়ে গিয়ে চোখ বুঝে কোনও কোকিলের দিকে কান ফেরানোয় অন্তরের সায় থাকে না অনেকসময়। এই উপন্যাসটি সমসময়ের ঘটনাবলী নিয়ে লেখা, মূল চরিত্রে সাধারণ জন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। এই উপন্যাসটি ১৪২২ বঙ্গাব্দের একটি শারদ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে প্রাথমিক গুঞ্জরণ আলোড়নে পর্যবসিত হয়।
Bheja Barud pdf download করার আগে একটু পড়ে নিনঃ
রিপদ একজন বেঁটেখাটো ছোটমোটো লোক। হোয়াটস অ্যাপ, টুইট এসব শব্দ কানে আসে, `মানে বোঝে না। দেব, জিৎ, অঙ্কুশ, কোয়েল, শুভশ্রী এদের নামও জানে, কিন্তু কোনটা কে চেনে না। দেবকে চিনতে পারে, ভোটে দাঁড়িয়েছে, এম পি হয়েছে, কতবার কত রকমের ছবি দেখেছে ওর, মেট্রো স্টেশনে খোকা ৪২০, তা ছাড়া খোকাবাবু যায় লাল জুতো পায়… তারপর কী যেন…বড় বড় মেয়েরা সব উকি মেরে চায়… এই গানটা তো প্রায় মুখস্থই হয়ে গিয়েছিল।
এখন হরিপদর বগলে একটা ইংরেজি কাগজ ভাঁজ করা। এক হাতে বাজারের থলে, পুঁই ডগা উকি মারছে, অন্য হাতে একটা পলিথিনে হলুদ গেন্দা ফুল। বেলপাতা, তুলসীপাতা, দূর্বা এসবও আছে। বিশ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে এই ফুলটুকু কিনতে পেরেছে। বেস্পতিবার ফুলের হেবি চাহিদা। হরিপদ পাঁচ টাকার ফুল নেয় ফি বেস্পতিবার। লক্ষ্মী পুজো দেয় বউ। পাঁচ টাকা ফুলের খদ্দেরকে ফুলওয়ালা পাত্তাই দেয় না। সব বিশ-ত্রিশ পঞ্চাশ টাকার ফুল কেনে। মা কালীর জন্য জবার মালা, শিবঠাকুরের জন্য আকন্দর মালা, গুরুদেবদের জন্য সাদা মালা – এরকম সব নিয়ম আছে। হরিপদর বাড়িতে গুরুদেবের ছবি নেই।
বাবার একটা ছবি আছে, ওতে প্লাস্টিকের মালা ঝুলছে, পালটাবার দরকার নেই। ‘খড় পচে খড়কে পচে কথা পচে না, আর পেলাস্টিকের মালা পচে না। ট্রেনের হকার এটা বলতে-বলতে প্লাস্টিকের মালা বিক্রি করছিল, এক জোড়া কিনে নিয়েছিল। একটা জন্মদাতা বাবার গলায় আর একটা ভোলাবাবার গলায় দু-বছর ধরে ঝুলছে। ইংরেজি খবরের কাগজটাও ফি বেস্পতিবার কেনে হরিপদ। কারণ এই দিনটায় চাকরির খবর থাকে। দু-পাতা ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ বের হয়। পুত্রশ্রী চানু আজকাল আর ইংরেজি কাগজ-টাগজ কিনতে চায় না। বলে – ‘ধুস’। হরিপদ তবু কেনে। পুত্রস্নেহে কেনে। ইংলিশ পড়ার প্র্যাকটিস থাকাটা ভালো। চাকরির দরখাস্ত আজকাল আর করতে চায় না। সব জায়গায় নাকি কম্পিউটারে দরখাস্ত পাঠাতে হয়। বাড়িতে কম্পিউটার নেই, কিনে দিতে পারেনি, কম্পিউটারের কাজকর্ম করার দোকানে গিয়ে এসব করতে হয়, ওইজন্য আবার টাকাও দিতে হয়।
এরকম একটা দোকান দিয়েছে পরিতোষের ছেলে। এই দোকানটার নাম জানত সাঁইবাবার কাফে। দোকানে সাঁইবাবার ছবি লাগানো, পরিতোষ খুব সাঁইবাবার ভক্ত। পরে জেনেছে ওসব দোকানের নাম সাইবার কাফে। সাইবার মানে কে জানে কী, আর কাফে তো চায়ের দোকান। শেয়ালদায় একটা দোকান ছিল কেষ্টো কাফে। কম্পিউটারের কাজকর্মের দোকানের নাম কী করে চা দোকানের নামে হয় কে জানে। কত কী হচ্ছে। বিস্কুটের নাম হচ্ছে পারলে মারি। গুজিয়ার দাম হচ্ছে পাঁচ টাকা পিস। কোনও মানে হয়? বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর জন্য নকুলদানার বদলে মাঝে-মাঝে একটু স্পেশাল দিতে চায় চানুর মা। গুজিয়া তিন টাকা করে ছিল- —এক লাফে পাঁচ? হরিপদ প্রশ্নটা ছুড়ল বটে, গলায় জোর ছিল না। ওধার থেকে উত্তর এল— খুচরোর সমস্যা।
বাতাসা সাইজের সন্দেশও পাঁচ টাকা। সন্দেশই ভালো। ছোট্ট একটা বাক্স ফুলের পলিথিনে ভরল। ওই দোকানেই আর একজন একটা মোটা বাক্স পলিথিনে ভরেছে। ওর হাতেও ফুল ভরা, মালা ভরা ভারী পলিথিন। লোকটা হরিপদর কাঁধে টোকা দিল। হরিপদর কাঁধে অনেকেই অনেক সময় টোকা দেয়, খামচায়, ধাক্কায়। হরিপদ একজন বেঁটেখাটো ছোটখাটো লোক। লোকটা বলল – ও দাদা, একটু দাঁড়ান না।
লোক, নাকি ছোঁড়া? ছোঁড়া বলা যায় না, মোটাসোটা গড়ন, ফুলপ্যান্ট আর কলারওলা সবুজ গেঞ্জিতে ভুঁড়িটা পুরো ঢাকেনি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.