মনোজ সেনের দয়মন্তী সিরিজের আরেকটি মজার গল্প ভাবনা ভগ্ন অংশ ভাগ pdf পড়ুন এখান থেকে। দয়মন্তী সিরিজের প্রতিটি গল্পই বেশ মজার আর উপভোগ্য। দয়মন্তী সিরিজের চমৎকার বইটি মিস করবেন না।
ভগ্ন অংশ ভাগ pdf নমুনাঃ
শিবেন প্রশ্ন করল, ‘অশোকনাথ ঘোষালের নাম জানা আছে ?’
দময়স্তী বলল, ‘না।’
সমরেশ বলল, ‘হ্যাঁ, জানা আছে।
যদি প্রোগ্রেসিভ ফাৰ্মা সিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান এ এন ঘোষালের নাম হয়।’
শিবেন মাথা নাড়ল। বলল, ‘হ্যাঁ, ওই নামই বটে। এর সম্বন্ধে তুই কি জানিস ?’
‘তেমন কিছু নয়। অনেকগুলো কম্পানীর ডিরেক্টর, এককালে বোধ হয় বিখ্যাত বৃটিশ ফার্ম স্টুয়ার্ট অ্যাণ্ড লোম্যাক্সের চীফ ছিলেন, রায় বাহাদুর বা রায়সাহেব ধরনের খেতাব পেয়েছিলেন। ভালো লোক, কেবল ফার্মাসিউটিক্যালসই নয়, সব ইণ্ডাস্ট্রির লোকেরাই এঁকে ভক্তিশ্রদ্ধা করে থাকে। বয়সের গাছপাথর নেই, অথচ শুনেছি রোজ গল্ফ খেলেন। ‘
বাঃ, তুই তো অনেক কিছুই জানিস দেখছি। ভদ্রলোকের বাড়ি কোথায় জানিস ?’
‘নাঃ। চেয়ারম্যান কোথায় থাকেন সে সম্পর্কে আমার কিছুমাত্র ধারণা নেই।’
‘হাঁসপুকুর লেনের নাম শুনেছিস ? জোড়াসাঁকোয়। তার তিন নম্বর বাড়িতে।’
‘অত্যন্ত সুসংবাদ। তা, আমাদের কি করতে হবে ? তিনি কি ওই হাসপুকুর না কি বললি, সেখানে আমাদের নেমন্তন্ন করেছেন ?’ ‘হ্যাঁ।’ ভগ্ন অংশ ভাগ pdf
‘অ্যা ? হ্যা ? হ্যাঁ মানে কি ? সমরেশ আর দময়ন্তী সমস্বরে প্রশ্ন করল।
রহস্যময় উপত্যকা pdf – সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় Rohossomoy Uppotokka pdf – Sukanta Gangopadhyay
“হ্যা মানে হ্যাঁ। বড়কর্তাকে অনুরোধ করেছেন যেন আগামী কাল সন্ধ্যেবেলা আমি তোদের নিয়ে ওঁর বাড়িতে যাই। । বৌদির সঙ্গে ওঁর কি সব পরামর্শ আছে। মিস্টার ঘোষালের নিজেরই এখানে আসার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে সে ইচ্ছে নিতান্ত অনিচ্ছায় কার্যে পরিণত করতে পারছেন না। যদি আপনি যেতে না পারেন, তাহলে কাল সকালের মধ্যে লালবাজারে বড়কর্তাকে জানিয়ে দেবেন সেকথা। তবে, আপনি গেলে উনি খুব খুশি হবেন।’
দময়ন্তী ভয়ানক চিন্তিত হয়ে পড়ল। বলল, ‘সে তো বুঝতে পারছি। কিন্তু মিস্টার ঘোষাল আমার নাম জানলেন কোত্থেকে ?’
শিবেন সহাস্তে বলল, ‘আপনার যে বেশ নাম ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে কি কোন সন্দেহ আছে ? কাজেই, কোত্থেকে জানলেন সে প্রশ্ন বাহুল্য মাত্র।’ ভগ্ন অংশ ভাগ pdf
‘ইয়ার্কি করবেন না তো! এত বড় একজন মানুষ, আমার সঙ্গে- তাঁর কী সম্পর্ক থাকতে পারে ? আপনি কিছু জানেন ?”
‘একেবারেই না। কাল তো শনিবার, সন্ধ্যেবেলা ট্র্যাফিক বেশ বেশিই হবে। আমি সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আসব, তাহলে ঠিক সন্ধ্যের মুখে জোড়াসাঁকোয় পৌঁছে যাওয়া যাবে। তখনই সব ব্যাপারটা বোঝা যাবে।’
সমরেশ বলল, ‘এইরকম এঁদো গলিতে ভোর চেয়ারম্যান ঘোষালের বাড়ি ?’
শিবেন অত্যন্ত সাবধানে ওর ফিয়াট গাড়িটা গলিতে ঢোকাতে ঢোকাতে বলল, ‘তাখ সমরেশ, প্রথমত, এই ঘোষাল আমার চেয়ার- ম্যান নন। দু নম্বর, এটা গলি ঠিক, কিন্তু এদো নয়। দুপাশের বাড়িগুলো দেখেছিস? এখানকার লোকেরা লাখ টাকার নিচে চেক- লেখে না, বুঝলি। এই সব বাড়িগুলোর দলিলে ওয়ারেন হেস্টিংসের সই আছে। বন কেটে বসত।’
‘তা তো বুঝতেই পারছি। পলাশী যুদ্ধের আমলের যত বাড়ি। ভেতরে নিশ্চয়ই ওয়ারেন হেস্টিংসের ভূতও আছে।
‘তা থাকা অসম্ভব নয়। এই যে, তিন নম্বর এসে গেছে। বাপরে গেটের কী বাহার!’ ভগ্ন অংশ ভাগ pdf
এবং কালরাত্রি pdf – মনোজ সেন Ebong Kaloratri pdf – Monoj Sen
কেবল গেট কেন, সমস্ত বাড়িটাই দেখবার মত। অনেকটা সবুজ জমির মধ্যে ইংরেজি রূপকথার বইয়ে আঁকা দূর্গের মত দেখতে বাড়িটা। দেখলে যেমন বিস্মিত হতে হয়, তেমনি কেমন ভয়ও করে। মনে হয় সত্যি সত্যি যেন এর অন্ধকার ছায়া ছায়া আনাচে কানাচে এ বাড়ির পূর্বপুরুষদের জটলা চলেছে। যেন পুরোনো কলকাতা চলে যেতে যেতে এইখানে এসে থমকে দাড়িয়ে গেছে। আকাশে তখনও দিনের শেষ আলো, অন্ধকার নামতে কিছু দেরি আছে। সেজন্যে বাড়িটাতে তখনও আলো জ্বলে নি, কেবল গেটের হুপাশে থামের মাথায় কারুকার্য করা রট আয়রনের লণ্ঠনে আলো জ্বলছে। সেই আবছায়া আলোয় বাড়িটাকে রূপকথার দূর্গের মতই অবাস্তব বলে মনে হচ্ছে।
শিবেনের গাড়ি গেটের সামনে দাড়াতে বাড়িটার মতই এক অতি প্রাচীন দরোয়ান দরজা খুলে দিল। একমাত্র গেট খোলা ছাড়া জরোয়ানের আর কোন কর্তব্য যে থাকতে পারে সেরকম মনে হল না। কিন্তু গাড়ি-বারান্দার নিচে যে অতিথিদের অভ্যর্থনা করার জন্যে দাঁড়িয়ে ছিল, সে অবশ্য অতটা প্রাচীন নয়। তার পরনে সাদা পাজামা, সাদা গলাবন্ধ হাঁটু পর্যন্ত লম্বা কোট, মাথায় সাদা গান্ধী- টুপি। বিনয়ে আনত হয়ে সে অতিথিদের বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেল। ভগ্ন অংশ ভাগ pdf
সাদা গান্ধীটুপি অতিথিদের যে স্বপ্নালোকিত ঘরে ঢুকিয়ে বিনীত ভাবে দরজায় দাঁড়িয়ে রইল, সেটা একটা লাইব্রেরী। একপাশের দেওয়ালে তিনটে রঙিন কাচ বসানো খিলেন করা লম্বাটে জানলা আর বাকি তিনপাশের দেওয়ালে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত উঁচু বই- ভর্তি অতিকায় আলমারির সার। একটা আলমারির সামনে দিকের ওপরের তাকগুলো থেকে বই পাড়ার জন্যে তলায় চাকা লাগানো একটা ঘড়াঞ্চি রাখা আছে। মেঝেয় পুরু কার্পেট। জানলাগুলোর সামনে একটা প্রকাণ্ড সেক্রেটারিয়েট টেবিল। তার সামনে গোটা- তারেক কারুকার্য করা উঁচু ব্যাকরেস্ট-ওলা চেয়ার। টেবিলের উল্টোদিকে একটা রিভলভিং চেয়ারে একজন বসে ছিলেন। অতিথিদের দেখে উঠে দাড়ালেন।
ভগ্ন অংশ ভাগ pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.