বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf – গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo – Gabriel García Márquez

বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf - গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo - Gabriel García Márquez
বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf - গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo - Gabriel García Márquez

গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এর অনুবাদ উপন্যাস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo pdf বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf পড়ুন ও ডাউনলোড করুন।

বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf - গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo - Gabriel García Márquez
বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf – গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo – Gabriel García Márquez

Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf মুখবন্ধ

১৯৫৫ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি কলম্বিয়া নৌ-বাহিনীর একটি (ডেসট্রয়ার) জাহাজ ‘ক্যালডাস ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়ে। জাহাজটি আসছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, আলাবামা রাজ্যের মবিল বন্দর-শহর থেকে। এর লক্ষ্য ছিল কলম্বিয়ার কার্টাগেনা বন্দরে ফেরা। জাহাজটি ফিরেছিল, কিন্তু আটজন নাবিক সমুদ্রে নিখোঁজ হয়। বেঁচেছিল একজন। কুড়ি বছরের এক যুবক নাবিক। সে-ই গল্পের নায়ক।

মার্কেস ছিলেন তখন সাংবাদিক। দশ দিন ধরে দিশাহারা সমুদ্রে যুদ্ধ করে প্রাণ ফিরে পাওয়া সেই নাবিকটির সঙ্গে তিনি রোজ ছ’ঘণ্টা করে কুড়ি দিন ধরে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। কিন্তু লেখাটি প্রকাশ করার সময় মার্কেসকে বিপদে পড়তে হয়। কারণ তখন কলম্বিয়ায় সামরিক বাহিনীর শাসন। সংবাদপত্রের ওপর কঠোর সেন্সরশিপের খড়গ। তারা এই কাহিনী প্রকাশে আপত্তি জানাল। যদিও সেই নাবিককে নিয়ে দেশজুড়ে অনেক মাতামাতি হলো। তারপর যথারীতি একদিন মানুষ তাকে ভুলেও গেল। পনেরো বছর পর লেখাটি সম্পূর্ণ করলেন মার্কেস। বই করে ছাপারও সিদ্ধান্ত নিলেন।

কাহিনীর ভেতরে প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের মরণপণ লড়াই জীবনতৃষ্ণা আর মার্কেসের গল্প লেখার বিশেষ-কলাকৌশল সত্য ঘটনা-নির্ভর এই গল্পের অনুবাদে আমাকে উৎসাহ জোগায়।

Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo বিপন্ন জাহাজের এক নাবিকের গল্প pdf নমুনাঃ

কেমন করে আমার জাহাজের সহকর্মীরা সমুদ্রে মারা গেল

২২শে ফেব্রুয়ারি, আমাদের বলা হলো কলম্বিয়ায় ফিরব। আট মাস ধরে আমরা আলাবামার মবিলে ছিলাম। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি আর আমাদের জাহাজ কালডাসের কামান মেরামতের জন্য। স্বাধীনতা পেলে সব নাবিকরা পাড়ে নেমে যা করে, তাই করছি। মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখছি, বন্দরের ‘জো পালুকা’ ভাটিখানায় হুইস্কি খাচ্ছি, আর কখনো হাঙ্গামা লাগাচ্ছি।

আমার মেয়ে বন্ধুর নাম মেরি এড্রেস। ওর সঙ্গে আমার পরিচয় আর একজন নাবিকের মেয়ে বন্ধু মারফত। মবিলে দু’মাস কাটানোর পর মেরি খানিকটা স্পষ্ট, স্পেনীয় বলতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয়, বন্ধুরা যখন ঠাট্টা করে তাকে “মারিয়া ডাইরোসিঅন” বলে সে বুঝতে পারে না। যতবারই আমি বন্দরে নামি, ওকে সিনেমায় নিয়ে যাই, যদিও ও চায় কোথাও গিয়ে আইসক্রিম খেতে। আমার আধা ইংরেজি আর ওর আধা স্পেনীয় দিয়ে আমরা শুধু কোনরকমে পরস্পরকে বুঝতে পারি। কিন্তু সিনেমা দেখতে বা আইসক্রিম খেতে আমাদের বোঝাবুঝির কোনো অসুবিধে ছিল না।

মগের মুলুক – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত Moger Mulluk pdf – Achintya Kumar Sengupta

শুধু একবারই আমি মেরির সঙ্গে বেরোইনি, যে রাতে আমরা ‘দ্য কেন মিউটিনি’ নামে একটা ফিল্ম দেখলাম। আমার কিছু বন্ধু বলেছিল, যে মাইন সুইপার জাহাজে জীবনযাত্রা সম্পর্কে ভালো একটা ফিল্ম। এইজন্যেই দেখতে গেলাম। কিন্তু ফিল্মে সত্যি ভালো অংশটি হলো ঝড়ের, মাইন সুইপার জাহাজটি নয়। আমরা সবাই একমত হলাম, যে এই ধরনের অবস্থায় জাহাজের গতিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়াই দরকার। বিদ্রোহীরা যা করেছিল। কিন্তু আমাদের কেউই এরকম ঝড়ের মুখে পড়িনি, তাই সেই বিষয়টিই যেভাবে আমাদের প্রভাবিত করল, ফিল্মের আর কিছু তা করল না। সেই রাতে যখন জাহাজে ফিরে এলাম, একজন নাবিক, ডিয়েগো ভেলাসকোয়েস, সে-ও ফিল্মটি দেখে দারুণ প্রভাবিত হয়েছিল, আমাদের মনে করিয়ে দিল যে দু একদিনের মধ্যেই আমরা সমুদ্রে রওনা হচ্ছি। আর চিন্তিতভাবে বলল আমাদের ঐ ধরনের কিছু হয়?”

“যদি আমি স্বীকার করতে বাধ্য যে ফিল্মটা আমার ওপর বেশ ছাপ ফেলেছে। গত আট মাস সমুদ্রের অভ্যাস ভুলেছি। আমি ভীতু নই, একজন জাহাজের শিক্ষক আমাদের শিখিয়েও ছিল, জাহাজ ডুবলে কি করতে হবে। তবুও “দ্য কেন মিউটিনি” দেখার রাতে যে অস্বস্তি অনুভব করছিলাম তা স্বাভাবিক নয়।

সেই মুহূর্ত থেকেই আমি ভয়ঙ্কর পরিণাম আগাম বুঝতে পারছিলাম তা ঠিক নয়, কিন্তু কোনোবারই সমুদ্রে যাবার সময় এত সংশয় আমার ছিল না। বোগোতায় যখন আমি শিশু, বইয়ের ছবি দেখতে দেখতে আমার কখনও মনে হয়নি যে কেউ সমুদ্রে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারে। বরং সমুদ্রে আমার অগাধ আস্থা। দু’বছর আগে নৌবাহিনীতে যোগ দেবার সময় থেকে আমি কখনও সমুদ্রে যেতে উদ্বিগ্ন হইনি।

কিন্তু বলতে লজ্জা নেই যে “দ্য কেন মিউটিনি” দেখার পর ভয়ের মতন কিছু আমায় পেয়ে বসল। সবচেয়ে ওপরে আমার বাঙ্কে উপুড় হয়ে শুয়ে আমার বাড়ির লোঁকের কথা, আর যতদিন না কারটাগেনায় পৌঁছব ততদিন এই সমুদ্রে চলা নিয়েই ভাবতে লাগলাম। ঘুমোতে পারলাম না। হাতের ওপর মাথা গুঁজে জাহাজের মুখের দিকে জলের মৃদু ঝাপটার শব্দ, আর কুঠুরির মধ্যে ঘুমন্ত চল্লিশ জন নাবিকের শাস্ত নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে লাগলাম। আমার বাঙ্কের নিচেই প্রথম শ্রেণীর নাবিক লুই রেনগিফো বাঁশির মতো নাক ডাকছিল। আমি জানি না সে কি স্বপ্ন দেখছিল, যদি সে জানত আট দিন পরে সমুদ্রের তলায় মারা যাবে তাহলে এই গভীর ঘুম সে ঘুমোত না।

আনন্দলোক ১২ জুলাই ২০১৪ পিডিএফ Anandalok 12 July 2014 pdf

সারা সপ্তাহ ধরে আমার অস্বস্তি রয়েই গেল। যাবার দিনটা ক্রমশ ভয়ঙ্করভাবে এগিয়ে আসছে। নিজের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সহকর্মীদের সঙ্গে গল্পগুজব শুরু করলাম। বিশেষ করে আলোচনা করছিলাম আমাদের বাড়ির লোকদের নিয়ে, কলম্বিয়া সম্পর্কে, আর আমাদের ফিরে যাওয়া সম্পর্কে। জাহাজ ক্রমশ ভরে উঠছিল উপহারে, সব আমরা বাড়ি নিয়ে যাবো। রেডিও, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেসিন, স্টোভ। আমি একটা রেডিও কিনেছিলাম।

নিজের উদ্বেগ কাটাতে না পেরে, মনে মনে সিদ্ধান্ত করে ফেললাম যে কারটাগেনায় পৌঁছেই নৌবাহিনী ছেড়ে দেব। যাওয়ার আগের দিন রাতে মেরিকে বিদায় জানাতে গেলাম। ভাবলাম তাকে বলি আমার ভয়ের কথা আর নৌবাহিনী ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা। কিন্তু বললাম না, কারণ ওকে আমি কথা দিয়েছিলাম ফিরে আসব। সে আমাকে বিশ্বাস করত না। যদি বলেই দিই আর কোনোদিন সমুদ্রে পাড়ি দেব না। একমাত্র দ্বিতীয় শ্রেণীর নাবিক রেমন হেরেরাকেই আমার কথা বললাম। কারণ সে-ও ঠিক করেছিল যে কারটাগেনায় পৌঁছে নৌবাহিনী ছেড়ে দেবে। আমাদের আশঙ্কা ভাগাভাগি করে নিয়ে রেমন হেরেরা আর আমি দিয়েগো ভেলাসকোয়েসকে নিয়ে হুইস্কি খেলাম, আর জো পালুকা ভাটিখানাকে বিদায় জানিয়ে দিলাম।

Bipanna Jahajer Ek Nabiker Golpo pdf ডাউনলোড করুন

Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply