বিরাজ বৌ pdf – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Birajbou pdf – Sarat Chandra Chattopadhyay pdf

বিরাজ বৌ pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Birajbou pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay pdf
বিরাজ বৌ pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Birajbou pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay pdf

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর চিরায়ত উপন্যাস Birajbou pdf বিরাজ বৌ pdf ডাউনলোড করুন ও Birajbou pdf বিরাজ বৌ pdf পড়ুন।

বিরাজ বৌ pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Birajbou pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay pdf
বিরাজ বৌ pdf – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Birajbou pdf – Sarat Chandra Chattopadhyay pdf

Birajbou pdf বিরাজ বৌ pdf নমুনাঃ

হুগলি জেলার সপ্তগ্রামে দুই নীলাম্বর ও পীতাম্বর চক্রবর্তী বাস করিত। ও অঞ্চলে নীলাম্বরের মত মড়া পোড়াইতে, কীর্তন গাহিতে, খোল বাজাইতে এবং গাঁজা খাইতে কেহ পারিত না। তাহার উন্নত গৌরবর্ণ দেহে অসাধারণ শক্তি ছিল। গ্রামের মধ্যে পরোপকারী বলিয়া তাহার যেমন খ্যাতি ছিল, গোয়ার বলিয়া তেমনই একটা অখ্যাতিও ছিল। কিন্তু ছোটভাই পীতাম্বর সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির লোক। সে খর্বকায় এবং কৃশ। মানুষ মরিয়াছে শুনিলেই তাহার সন্ধ্যার পর গা ছমছম করিত। দাদার মত অমন মূর্খও নয়, গোঁয়ারভূমির ধার দিয়াও সে চলিত না। সকালবেলা ভাত খাইয়া দপ্তর বগলে করিয়া হুগলির আদালতের পশ্চিম দিকের একটা গাছতলায় গিয়া বসিত এবং সমস্ত দিন আর্জি লিখিয়া যা উপার্জন করিত, সন্ধ্যার পূর্বেই বাড়ি ফিরিয়া সেগুলি বাক্সে বন্ধ করিয়া ফেলিত।

বাবুই pdf – স্মরণজিৎ চক্রবর্তী Baboi pdf by Smaranjit Chakraborty

রাত্রে ঘরের দরজা-জানালা স্বহস্তে বন্ধ করিত এবং স্ত্রীকে দিয়া পুনঃপুন পরীক্ষা করাইয়া লইয়া তবে ঘুমাইত।আজ সকালে নীলাম্বর চণ্ডীমণ্ডপের একধারে বসিয়া তামাক খাইতেছিল, তাহার অনুঢ়া ভগিনী হরিমতি নিঃশব্দে আসিয়া পিঠের কাছে হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া দাদার পিঠে মুখ লুকাইয়া কাঁদিতে লাগিল। নীলাম্বর হুঁকাটা দেওয়ালে ঠেস দিয়া রাখিয়া আন্দাজ করিয়া এক হাত তাহার বোনের মাথার উপর রাখিয়া, সস্নেহে কহিল, সকালবেলাই কান্না কেন দিদি?
হরিমতি মুখ রগড়াইয়া পিঠময় চোখের জল মাখাইয়া দিতে দিতে জানাইল যে বৌদি গাল টিপিয়া দিয়াছে এবং ‘কানী’ বলিয়া গাল দিয়াছে।

নীলাম্বরী হাসিয়া বলিল, তোমাকে ‘কানী’ বলে? অমন দুটি চোখ থাকতে যে কানী বলে, সে-ই কানী। কিন্তু গাল টিপে দেয় কেন?
হরিমতি কাঁদিতে কাঁদিতে বলিল, মিছিমিছি।
মিছিমিছি? আচ্ছা, চল ত দেখি, বলিয়া বোনের হাত ধরিয়া ভিতরে আসিয়া ডাকিল, বিরাজবৌ?
বড়বধূর নাম বিরাজ । তাহার নয় বৎসর বয়সে বিবাহ হইয়াছিল বলিয়া সকলে বিরাজবৌ বলিয়া ডাকিত। এখানে তাহার উনিশ-কুড়ি। শাশুড়ীর মরণের পর হইতে সে গৃহিণী। বিরাজ অসামান্য সুন্দরী। চার-পাঁচ বছর পূর্বে তাহার একটি পুত্র-সন্তান জন্মিয়া আঁতুড়েই মরিয়াছিল, সেই অবধি সে নিঃসন্তান। রান্নাঘরে কাজ করিতেছিল, স্বামীর ডাকে বাহিরে আসিয়া ভাইবোনকে একসঙ্গে দেখিয়া জ্বলিয়া উঠিয়া বলিল, পোড়ামুখী আবার নালিশ করতে গিয়েছিলি?

নীলাম্বর বলিল, কেন যাবে না? তুমি ‘কানী’ বলেচ, সেটা তোমার মিছে কথা কিন্তু তুমি গাল টিপে দিলে কেন?
বিরাজ কহিল, অত বড় মেয়ে, ঘুম থেকে উঠে চোখেমুখে জল দেওয়া নেই, কাপড় ছাড়া নাই, গোয়ালে ঢুকে বাছুর খুলে দিয়ে হাঁ করে দাঁড়িয়ে দেখচে। আজ এক ফোঁটা দুধ পাওয়া গেল না। ওকে মারা উচিত।
নীলাম্বর বলিল, না। ঝিকে গয়লা-বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু তুমি দিদি, হঠাৎ বাছুর খুলে দিতে গেলে কেন? ও কাজটা ত তোমার নয়।

হরিমতি দাদার পিছনে দাঁড়াইয়া আস্তে আস্তে বলিল, আমি মনে করেচি দুধ দোয়া হয়ে গেছে।
আর কোন দিন না মনে করো! বলিয়া বিরাজ রান্নাঘরে ঢুকিতে যাইতেছিল, নীলাম্বর হাসিয়া বলিল, তুমিও একদিন ওর বয়সে মায়ের পাখি উড়িয়ে দিয়েছিলে। খাঁচার দোর খুলে দিয়ে মনে করেছিলে, খাঁচার পাখি উড়তে পারে না। মনে পড়ে?
বিরাজ ফিরিয়া দাঁড়াইয়া হাসিমুখে বলিল, পড়ে; কিন্তু ও বয়সে নয় – আরও ছোট ছিলাম। বলিয়া কাজে চলিয়া গেল।
হরিমতি বলিল, চল না দাদা, বাগানে গিয়ে দেখি, আম পাকল কিনা।
তাই চল দিদি।
যদু চাকর ভিতরে ঢুকিয়া বলিল, নারাণ ঠাকুরদা বসে আছেন।
নীলাম্বর একটু অপ্রতিভ হইয়া মৃদুস্বরে বলিল, এর মধ্যেই এসে বসে আছেন?

একাদশে সূর্যোদয় pdf – রূপক সাহা Ekadoshe Surjodoy pdf – Rupak Saha

রান্নাঘরের ভিতর হইতে বিরাজ এ কথা শুনিতে পাইয়া দ্রুতপদে বাহিরে আসিয়া চেঁচাইয়া বলিল, যেতে বলে দে খুড়োকে। স্বামীর প্রতি চাহিয়া বলিল, সকালবেলাতেই যদি ও-সব খাবে ত আমি মাথা খুঁড়ে মরব। কি সব হচ্ছে আজকাল!
নীলাম্বর জবাব দিল না, নিঃশব্দে ভগিনীর হাত ধরিয়া খিড়কির দ্বার দিয়া বাগানে চলিয়া গেল।

এই বাগানটির এক প্রান্ত দিয়া শীর্ণকায় সরস্বতী নদীর মৃদু স্রোতটুকু গঙ্গাযাত্রীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মত বহিয়া যাইতেছিল। সর্বাঙ্গ শৈবালে পরিপূর্ণ; শুধু মাঝে মাঝে গ্রামবাসীরা জল আহরণের জন্য কূপ খনন করিয়া রাখিয়া গিয়াছে। তাহারই আশেপাশে শৈভালমুক্ত অগভীর তলদেশে বিভক্ত শুক্তিগুলি স্বচ্ছ জলের ভিতর দিয়া অসংখ্য মাণিক্যের মত সূর্যালোকে জ্বলিয়া জ্বলিয়া উঠিতেছিল। তীরে একখণ্ড কালো পাথর সমীপস্থ সমাধিস্তূপের প্রাচীরগাত্র হইতে কোন এক অতীত দিনের বর্ষার খরস্রোতে স্খলিত হইয়া আসিয়া পড়িয়াছিল। এ বাড়ির বধূরা প্রতিসন্ধ্যায় তাহারই একাংশে মৃতাত্মার উদ্দেশে দীপ জ্বালিয়া দিয়া যাইত। সেই পাথরখানির একধারে আসিয়া নীলাম্বর ছোটবোনটির হাত ধরিয়া বসিল।

নদীর উভয় তীরেই বড়বড় আমবাগান এবং বাঁশঝাড়, দুইএকটা বহু প্রাচীন অশ্বত্থ বট, নদীর উপর পর্যন্ত ঝুঁকিয়া পড়িয়া শাখা মেলিয়া দিয়াছে। ইহাদের শাখায় কতকাল কত পাখি নিরুদ্বেগে বাসা বাঁধিয়াছে, কত শাবক বড় করিয়াছে কত ফল খাইয়াছে, কত গান গাহিয়াছে, তাহারই ছায়ায় বসিয়া ভাইবোন ক্ষণকাল চুপ করিয়া রহিল।
হঠাৎ হরিমতি দাদার ক্রোড়ের কাছে আরও একটু সরিয়া আসিয়া বলিল, আচ্ছা দাদা, বৌদি কেন তোমাকে বোষ্টমঠাকুর বলে ডাকে?
নীলাম্বর গলায় তুলসীর মালা দেখাইয়া হাসিয়া বলিল, আমি বোষ্টম বলেই ডাকে।
হরিমতি অবিশ্বাস করিয়া বলিল, যাঃ— তুমি কেন বোষ্টম হবে? তারা ত ভিক্ষে করে! আচ্ছা, ভিক্ষে কেন করে দাদা?
নেই বলেই করে।

হরিমতি মুখপানে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কিছু নেই? তাদের পুকুর নেই, বাগান নেই, ধানের গোলা নেই—কিচ্ছুটি নেই?
নীলাম্বর সস্নেহে হাত দিয়া বোনটির মাথার চুলগুলি নাড়িয়া দিয়া বলিল, কিচ্ছুটি নেই দিদি, কিচ্ছুটি নেই—বোষ্টম হলে কিচ্ছুটি থাকতে নেই। হরিমতি বলিল, তবে সবাই কেন তাদের কিছু কিছু দেয় না?
নীলাম্বর বলিল, তোর দাদাই কি তাদের দিয়েছে রে?

Birajbou pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply