ধুলোখেলা pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Dhulokhela pdf – Sourav Mukhopadhyay

ধুলোখেলা pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Dhulokhela pdf - Sourav Mukhopadhyay
ধুলোখেলা pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Dhulokhela pdf - Sourav Mukhopadhyay

সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস Dhulokhela pdf ধুলোখেলা pdf ডাউনলোড করুন ও Dhulokhela pdf ধুলোখেলা pdf  পড়ুন।

ধুলোখেলা pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Dhulokhela pdf - Sourav Mukhopadhyay
ধুলোখেলা pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Dhulokhela pdf – Sourav Mukhopadhyay

Dhulokhela pdf ধুলোখেলা pdf নমুনাঃ

দিল্লি রোড থেকে বাঁ-হাতি সরু রাস্তাটায় মোড় বেঁকে মিনিট তিনেক চলে এসেছে গাড়িটা, হঠাৎ অদিতি হাঁ হাঁ করে উঠল, ‘এই যাঃ! মালাটা নিতে ভুলে গেলাম যে…. বাজারের কাছে গাড়িটা দাঁড় করালে না?’
উলটোদিকের একটা সাইকেল ভ্যানকে পাশ দিতে দিতে মণিশঙ্কর নিরুত্তাপ গলায় বলল, ‘সামনে কোথাও দোকান পেলে নিয়ে নেওয়া যাবে।’
‘সামনে? সামনে আর কোথায় পাবে ফুলের দোকান?’ খিঁচিয়ে ওঠে অদিতি, ‘এখানে, এই পাড়ার রাস্তায় পান-বিড়ির দোকান ছাড়া আর কিছু নেই!”

‘সে কী কথা! এই যে বলো, তোমাদের এই এরিয়া নাকি ভীষণ কালচার্ড? বাতাসে নাকি রবীন্দ্র– র-নজরুলের গুঁড়ো ভেসে বেড়ায়। বোশেখ মাস, তার ওপর তোমাদের গুর্দেবের শ্রাদ্ধশতবর্ষ…।’
পিছনের সিট থেকে মেয়ে নৈর্ঝতা গলাটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে চাপা ধমক দিয়ে ওঠে, ‘বাবা! আবার সেই…।’
‘ওঃ হোঃ সরি, সরি। শ্রাদ্ধ নয়, সার্ধ, সার্ধ। উফ, এত শক্ত শক্ত বাংলা যে তোরা কোত্থেকে বের করিস টুলু–তিনরকমের “স” একসঙ্গে গুঁজে দিলে জিভ বেচারার দোষ কী?” মুখের একটা কপট অসহায় ভঙ্গি করে মণিশঙ্কর, তারপর আড়চোখে অদিতিকে দেখে নিয়ে বলে, ‘মানে, আমি বলছিলাম, এরকম একটা মোক্ষম সময়… এখন তো মোড়ে মোড়ে জুঁই-রজনীগন্ধার গোড়ে সাজানো থাকার কথা!’

ভূবন চরার কালো পেঁচা pdf – হিমানীশ গোস্বামী Vuban Charar Kalo Pecha pdf by Himanish Goshami

অদিতির চামড়াটা চিড়বিড় করছিল। এমনিতে রবীন্দ্রনাথ তুলে ঠাট্টা অদিতির ঘোর না-পসন্দ, তার ওপর মণিশঙ্করের ওই ‘গুর্দেব’ কথাটা যেন হাড়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সারাদিন অডিট ফার্মে বসে কলম পেষে আর মাউস চটকায় যে-লোক, কবিতার দৌড় বলতে ‘কুমোর পাড়ার গোরুর গাড়ি’—তার মুখে অষ্টপ্রহর এইরকম ট্যারাব্যাকা বচন! হ্যাঁ, অদিতি রবীন্দ্রসংগীতে একটা ডিপ্লোমা করেছে। অদিতি রবীন্দ্রনৃত্যেরও কোর্স করেছে খানিকটা। এবং হ্যাঁ, সঞ্চয়িতা পড়তে পড়তে অদিতিকে মাঝে মাঝে চোখ মুছতে হয়। এ লোকটা এগুলোকে অদিতির এক-একটা উইক পয়েন্ট বলে চিনে নিয়েছে, সেই বিয়ের পর থেকে। ব্লান্ডারটা অবশ্য সেই ফুলশয্যার রাতে অদিতিই করে ফেলেছিল।

‘তুমি নাকি দারুণ গান গাও?’ মণিশঙ্করের এই নিরীহ মুখের প্রশ্নের উত্তরে সে লজ্জা লজ্জা মুখে তা-না-না-না করতে পারত, কিন্তু তার বদলে ঠাসা আবেগ নিয়ে সে গেয়ে ওঠে, ‘ওগো কাঙাল, আমারে কাঙাল করেছ, আরও কি তোমার চাই’। ব্যস, আর মণিশঙ্করকে পায় কে? ঘটনাচক্রে, মণিশঙ্কররা হচ্ছে পূর্ববঙ্গের লোক। ঠাকুরদা ছিলেন খাস বরিশালি। বাঙালের ঘরে মেয়ে দেওয়া নিয়ে, ইন ফ্যাক্ট, একটু মৃদু আপত্তিও উঠেছিল অদিতির ফ্যামিলিতে। মণিশঙ্কর গানটাকে একেবারে লোপ্পা ক্যাচের মতো তালুবন্দি করে নিয়ে বলেছিল, আসলে আজকের রাতের কথা জানা থাকলে রবীন্দ্রনাথ অদিতির জন্য সামান্য এডিট করে দিতেন গানটাকে — ‘কাঙাল’ পালটে ‘বাঙাল’ লিখতেন।

ওগো বাঙাল, মানে মণিশঙ্কর… এই ঘটি কন্যাটিকে তুমি বাঙাল করে নিলে, আর কত সর্বনাশ তুমি করতে চাও?
তখনই অদিতির হৃদয়ঙ্গম হয়, তার শেষের কবিতা-গীতবিতান-চিত্রাঙ্গদায় সাজানো মানসলোকে এ এক মূর্তিমান রসভঙ্গ।

সাতাশ বছর অবশ্য একসঙ্গে কেটেও গেছে তারপর। মণিশঙ্কর লোক তো মন্দ কিছু নয়, দায়দায়িত্ব সবই নেয়, সংসারের জন্য হামলে পড়ে খাটে, মেয়েকে চোখের মণির মতো ভালবাসে—অদিতিকেও বাসে না কি? তবে ওই হুল ফোটানোর অভ্যেসটা যায়নি। যাবে, এমন আশা অদিতি আর করেও না।
‘গুদেব’ বক্রোক্তির উত্তরে পালটা একটা মুখঝামটা দিতে যাচ্ছিল অদিতি, পিছনের সিট থেকে নৈর্ঝতা আবার ধমক দিল, ‘আঃ, তোমাদের শুম্ভ-নিশুম্ভটা আপাতত মুলতুবি রেখে ঠিক করো মালার ব্যবস্থাটা কী হবে! আজকের দিনে মালা ছাড়া ঢোকা যায় নাকি ও বাড়িতে?’

গাড়িটা সামান্য স্লো করল মণিশঙ্কর। ‘সত্যিই সামনে আর নেই ফুলের দোকান ?” অদিতি ফুঁসে উঠতে গিয়ে গলাটাকে কাঁদোকাঁদো করে ফেলল, ‘পইপই করে বললাম বাজারের কাছে দাঁড় করাতে, কেয়ারই করল না, গাঁ গাঁ করতে করতে ঢুকে পড়ল!’
‘বাজারের কাছে তুমি মোটেই বলোনি ম্যাডাম। বলেছিলে বাজারের মোড়ে পৌঁছোনোর সাত মিনিট আগে, তারপর ফের বললে বাজার ফেলে চলে আসার সাত মিনিট পরে।’
‘সাত মিনিট! সাত মিনিট ! মিথ্যে কথা বলার একটা লিমিট রাখো!’

‘ব্যস ব্যস,’ ফের মেয়ের দাবড়ানিতে চুপ করে যায় দু’জনে। অদিতি মুখটাকে পাথুরে করে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে, মণিশঙ্কর এপাশ-ওপাশ সামনে-পেছনে একটু অসহায় চাউনি ছুড়ে বলে, ‘যা সরু রাস্তা, এখান থেকে তো ব্যাক করারও জায়গা নেই রে টুলু!
‘আমি জানি না। যেভাবে হোক মালা জোগাড় করো, শক্ত চোয়ালে একটা অনড় মুখভঙ্গি নিয়ে জানলার বাইরে তাকিয়ে আছে অদিতি, ‘বাবার বাৎসরিক, একমাত্র মেয়ে গিয়ে দাঁড়াবে, হাতে একটু ফুলও জুটবে না। ছি ছি, কার পাল্লায় পড়ে আছি, অ্যাঁ!’
“উফ মা, একটু থামো তো!’ নৈর্ঝতা ওরফে টুলু একটা চাপা ধমক দেয়, ‘মালা জোগাড় হবেই, অ্যাট এনি কস্ট। শোনো, তোমরা গাড়িতে এগোও, আমি এখানে নামছি। একটু হেঁটে পিছিয়ে যাব, মালা কিনে নিয়ে একটা রিকশা ধরে নেব।’

সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস Dhulokhela pdf ধুলোখেলা pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে ও Dhulokhela pdf ধুলোখেলা pdf এখান থেকে পড়ুন।

Be the first to comment

Leave a Reply