রূপক সাহার জনপ্রিয় সমকালীন উপন্যাস Ekadoshe Surjodoy pdf একাদশে সূর্যোদয় pdf ডাউনলোড করুন ও Ekadoshe Surjodoy pdf একাদশে সূর্যোদয় pdf পড়ুন।
Ekadoshe Surjodoy pdf একাদশে সূর্যোদয় pdf কাহিনিঃ
একশো বছর আগের বিস্মৃতপ্রায় একটা অধ্যায়কে তুলে আনার কাজটি খুবই কঠিন। তার কারণ, ভারতীয় ফুটবলের এই অত্যাশ্চর্য সাফল্য নিয়ে আমাদের পূর্বসূরিরা খুব বেশি কিছু লিখে যাননি। ১৯১১ সালে মোহনবাগান ক্লাবের সেই শিল্ডজয়ীদের মধ্যে সর্বপ্রথম মারা যান শিবদাস ভাদুড়ি ১৯৩২ সালে। সর্বশেষ রেভারেন্ড সুধীর চট্টোপাধ্যায় ১৯৬৬ সালে। মাঝের ৩৪ বছরে যদি কোনও সাংবাদিক উদ্যোগ নিতেন, তা হলে ওঁদের মুখ থেকে নিশ্চয়ই বহু অকথিত কাহিনী জেনে নিতে পারতেন।
শুকতারার ১০১ ভূতের গল্প pdf প্রথম খন্ড – দেব সাহিত্য কুটীর Shuktarar 101 Bhuter Golpo pdf 1st Part
তথ্য হিসেবে আমার সামনে ছিল, পুরোনো খবরের কাগজের কিছু কাটিং। ইংরেজ আমলে বেশিরভাগ সংবাদপত্রই অবশ্য মোহনবাগানের এই শিল্ডজয়কে বড় করে দেখায়নি। তাই আমাকে দ্বারস্থ হতে হয়েছিল, অমর একাদশের উত্তরসূরিদের কাছে। তাঁদের খুঁজে বের করার জন্য প্রচুর পরিশ্রমও করতে হয়েছিল। কেউ কেউ অবশ্য সযত্নে রেখেও দিয়েছিলেন এগারোর জার্সি, শিল্ড ও ট্রেডস জয়ের নজির পদকগুলো। বছর দেড়েক আগে হঠাৎ একদিন মনে হল, শিল্ডজয়ের কাহিনীতে, স্বাধীনতা আন্দোলনে মোহনবাগান ক্লাবের অবদানের কথা তেমনভাবে লেখা হয়নি। তাই ‘একাদশে সূর্যোদয়’ লিখতে বসলাম। এই কাহিনি তো শুধুমাত্র মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য নয়, এই কাহিনী তামাম ফুটবলপ্রেমীদের গর্বের।
Ekadoshe Surjodoy pdf নমুনাঃ
শিবদাসবাবু আচেন নাকি গো।”
রাস্তা থেকেই হাঁক পাড়ল নিবারণ। এদিক-ওদিক তাকিয়ে সে নিশ্চিত হয়ে গেল। এই সেই বাড়ি। ফটকের পাশে মার্বেল পাথরের গায়ে লেখা ‘বিপ্রদাস কুটির’। হ্যাঁ, নির্জন সার্কুলার রোডের কাছে এই বাড়িতেই থাকেন শিবদাসবাবু আর বিজয়দাসবাবু। বার বার বলে দিয়েছেন সেজকর্তা। ভুল হওয়ার কোনও উপায় নেই। বৈঠকখানার সিঁড়িতে পা দিয়ে, উঁকি-ঝুঁকি মেরে নিবারণ ফের হাঁক পাড়ল, শিবদাসবাবু, ও শিবদাসবাবু বাড়ি আচেন?’
কিন্তু তার গলার স্বর চাপা পড়ে গেল। শ্যামবাজার মিত্তিরবাড়ির বড় ঘড়িতে ঢং ঢং করে ঘণ্টা বাজতে শুরু করল। ঘণ্টার সেই আওয়াজ হাতিবাগান থেকেও শোনা যায়। নিবারণ বুঝতে পারল আটটা বেজে গেছে। পাস্তির মাঠ থেকে বাবুমশায়রা ফিরে এসেছেন প্র্যাকটিস সেরে। এই বেলায় ধরতে না পারলে বাবুমশায়রা আপিসে বেরিয়ে পড়বেন। সেজকর্তা তাও বলে দিয়েছেন।
ভাদুড়িবাড়ির কনিষ্ঠ পুত্র শিবদাস তখন বাড়িতেই ছিলেন। আপিসে যাওয়ার আগে জলখাবার খেতে বসেছেন। দোতলার ঘর থেকে নিবারণের ডাক শুনে তিনি একটু অবাকই হয়ে গেলেন। বোসবাড়ির কাজের লোক এই নিবারণ। সেজকর্তার খুব পেয়ারের লোক। কী এমন দরকার পড়ল, সেজকর্তা তাকে বাড়িতে পাঠালেন? দ্রুতপায়ে নীচে নেমে এলেন শিবদাস। বৈঠকখানায় পা দিয়েই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী ব্যাপার নিবারণ, এই সাতসকালে ?”
মাথা নিচু করে দু’হাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম জানাল নিবারণ। বলল, ‘আজ্ঞে, সেজকত্তাবাবু আপনাকে ডেকে পাঠ্যেচেন। এখুনি যেতে বলেচেন।”
সেজকত্তাবাবু মানে শৈলেন বসু। সুবেদার মেজর শৈলেন বসু। মোহনবাগান ক্লাবের সেক্রেটারি।
জননায়ক ভূপেন্দ্রনাথ বসুর ভাইপো। শিবদাস বুঝতে পারলেন, নিশ্চয়ই খুব জরুরি দরকার। এবং সেটা ক্লাব ও টিম সংক্রান্ত। না হলে শৈলেনবাবু লোক পাঠাতেন না। ওঁর সঙ্গে শেষ বার দেখা হয়েছিল দু’দিন আগে। ময়দানের মাঠে প্র্যাকটিসের সময়। দু’ একটা কথা বলেই উনি চলে যান। শিবদাস তখনই কানাঘুষোয় শুনেছিলেন, মোহনবাগান যাতে আইএফএ শিল্ডে খেলতে পারে, তার জন্য স্যার খুব চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঘরে-বাইরে মোহনবাগানের অনেক শত্রু। মোহনবাগান ক্লাব যাতে শিল্ডে খেলার সুযোগ না পায়, তার জন্য অনেকেই পিছনে লেগেছেন। দ্রুত এই সব চিন্তা করে নিয়ে শিবদাস বললেন, ‘ঠিক আছে নিবারণ, তুমি যাও। সেজকত্তাবাবুকে গিয়ে বল, আমি আসছি।’ ‘আজ্ঞে, কত্তামশাই ফিটন গাড়ি পাঠ্যে দিয়েচেন।’
ওহ, তার মানে এখুনি বোসবাড়িতে যেতে হবে। ‘চলো তা হলে। জলখাবারের কথা ভুলে শিবদাস বৈঠকখানা থেকে বেরিয়ে পড়লেন। ফিটনে ওঠার আগে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলেন, তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণভামিনী দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন। ছলছল চোখে।
বিপ্রদাস কুটির থেকে বলরাম ঘোষ স্ট্রিটে বোসবাড়ির দূরত্ব এমন কিছু নয়। হাঁটা পথে মিনিট সাতেক। শ্যামবাজারের ট্রাম ওমটির পিছনে বোসবাড়ির ফটকের কাছে পৌঁছতেই শিবদাস দেখতে পেলেন শৈলেনবাবু পায়চারি করছেন। মুখ গম্ভীর। রাশভারি মানুষ, সরাসরি প্রশ্ন করার সাহস শিবদাসের নেই। একটু দূরত্ব রেখে তিনি বিনম্রভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন।
‘ওদের হ্যান্ডবিলটা দেখেচ শিবদাস?’ নীরবতা ভঙ্গ করে বললেন শৈলেনবাবু। কীসের হ্যান্ডবিল, বুঝতে পারলেন না শিবদাস। বললেন, ‘না তো।’
পকেট থেকে একটা হ্যান্ডবিল বের করে, শিবদাসের দিকে এগিয়ে দিয়ে শৈলেনবাবু বললেন, ‘এই দেখো, কী লিখেচে আমাদের নিয়ে।
মোহনবাগান টিম টানা তিনবার ট্রেডস কাপ জেতার পর থেকে অনেক দেশি ক্লাবের চক্ষুশূল হয়ে গেছে। বিশেষ করে শোভাবাজার ক্লাবের। এত ঈর্ষান্বিত হওয়ার কারণ, দুটো ক্লাবই উত্তর কলকাতার। দু’বছর আগে মোহনবাগান ক্লাব আইএফএ শিল্ড ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রথম খেলার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সেই ম্যাচে শিবদাসরা হেরে যান। সেই হার নিয়ে কত ব্যঙ্গ। কেউ কেউ মোহনবাগান আর শৈলেনবাবুকে হেয় করে ছড়া লিখে, হ্যান্ডবিলও ছাপিয়েছিল। মূল কথা, বামন হয়ে চাঁদে যাওয়ার শখ কেন বাপু? এ বারের হ্যান্ডবিলও সে রকম কিছু হবে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাগজটা চোখের সামনে তুলে ধরলেন শিবদাস। বড় বড় অক্ষরে সব লেখা। বাগবাজারের গ্রাম্য ভাষায় কটাক্ষ। প্রথম দুটো লাইন পড়েই শিবদাস মারাত্মক চটে গেলেন।
Ekadoshe Surjodoy pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.