আহমদ ছফার সমকালীন উপন্যাস Gavi Bittanta pdf গাভী বিত্তান্ত pdf ডাউনলোড করুন। সমাজের নানা রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে বাস্তবধর্মী ও গবেষণামূলক লেখার জন্য আমের সোফার অনেক সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে অনেকেই তাকে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে অন্যতম লেখক ও গবেষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। লেখকের বেশ কিছু সমকালীন উপন্যাস লেখা পাঠক মনে জায়গা করে নিয়েছে ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে লেখককে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছে।
Gavi Bittanta pdf গাভী বিত্তান্ত বইয়ের ফ্ল্যাপঃ
আহমদ ছফার গাভী বিত্তান্ত উপন্যাসটি একেবারে আনকোরা নতুন স্বাদের। বিষয়বস্তু যেমন নতুন প্রকাশভঙ্গিও তেমনি নতুনত্বের দাবিদার। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে লেখা এটি একমাত্র উপন্যাস। এই উপন্যাসে ফ্যান্টাসি এবং নিখাদ বাস্তবতা একে অপরের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গিয়েছে যা শৈল্পিক নিরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হতে পারে। যদিও এটিকে প্রথম দৃষ্টিতে স্যাটায়ারিক উপন্যাস মনে হবে। তবুও অন্তলীন একটি বয়ে গেছে। এই অপরিসীম। বেদনা এবং মমত্তবোধের কারণে উপন্যাসটি কোথাও কোথাও সমুদ্রের গভীরতা অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণে দেশ সমাজ এবং জাতিকে নিরীক্ষণের মহামূল্য প্রমাণ হিসেবেও রচনাটির গুরুত্ব সকলের মনোযোগের দাবি রাখে। -লেখক
গাভী বিত্তান্ত review
লেখক অনেকেই হন, তবে মনীষী- তাদেরকেই বলি যাদের রচনায় একই সঙ্গে যুগ ও যুগোত্তরের স্বপ্ন ও সাধনা মূর্ত হয়ে ওঠে। সদ্যপ্রয়াত আহমদ ছফা ছিলেন আমাদের দেশের সেরকম এক বিরলদৃষ্ট মনস্বিতাসম্পন্ন লেখক। লিপিকুশলতার সঙ্গে মনীষার এমন মনিকাঞ্চন যোগ সচরাচর ঘটে না, সব লেখকের বেলায় তো নয়ই। আহমদ ছফার প্রজ্ঞা, মননশীলতা, অন্তর্দৃষ্টি, ইতিহাস বোধ, ঐতিহ্য-সচেতনতা, মানবপ্রীতি, সামাজিক দায়বদ্ধতা তাঁকে সাহিত্যিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে আমাদের কালের এক চিন্তানায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।
মৃত্যুজনিত শূন্যতা আমাদের মধ্যে এই বোধকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁর জীবদ্দশায় যাঁরা হয়তো অনেক বিষয়েই তাঁর সঙ্গে একমত ছিলেন না এমনকি তাঁদের পক্ষেও তাঁর চিন্তার প্রাতিস্বিকতা ও প্রতিভার মৌলিকত্বকে স্বীকার না করে উপায় ছিল না। একইভাবে আজ ও আগামী দিনেও তাঁর রচনার শরণাপন্ন আমাদেরকে হতে হবে।
আহমদ ছফার গাভী বিত্তান্ত উপন্যাসটি একেবারে আনকোরা নতুন স্বাদের। বিষয়বস্তু যেমন নতুন প্রকাশভঙ্গিও তেমনি নতুনত্বের দাবিদার বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে লেখা এটি একমাত্র উপন্যাস। এই উপন্যাসে ফ্যান্টাসি এবং নিখাদ বাস্তবতা একে অপরের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গিয়েছে যা শৈল্পিক নিরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন ু বলে বিবেচিত হতে পারে। যদিও এটিকে প্রথম দৃষ্টিতে স্যাটায়ারিক উপন্যাস মনে হবে তবুও অন্তলীন একটি বেদনাপ্রবাহ কাহিনীর ভেতর দিয়ে রক্তসূত্রের মতো বয়ে গেছে।
এই অপরিসীম বেদনা এবং মমত্তবোধের কারণে উপন্যাসটি কোথাও কোথাও সমুদ্রের গভীরতা অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণে দেশ সমাজ এবং জাতিকে নিরীক্ষণের মহামূল্য প্রমাণ হিসেবেও রচনাটির গুরুত্ব সকলের মনোযোগের দাবি রাখে।
গাভী বিত্তান্ত লেখক পরিচিতি
আহমদ ছফার জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন চট্টগ্রাম জেলার চান্দনাইশ থানাধীন গাছবাড়িয়া গ্রামে, এক কৃষিজীবী পরিবারে। বাবা-মার দ্বিতীয় সন্তান। স্কুল ও কলেজের লেখাপড়া যথাক্রমে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন, যদিও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। সমাজবিজ্ঞান নিয়ে কিছুদিন পদ্ধতিগত গবেষনা করেন। কিন্তু অচিরেই তা ছেড়ে দিয়ে মৌলিক রচনা ও চিন্তাচর্চায় আত্মনিবেশ করেন। মাঝে মাঝে স্বল্প সময়ের জন্য সাংবাদিকতা, পত্রিকা প্রকাশ, প্রেস ব্যবসা বা এনজিও কার্যক্রমকে পেশা হিসেবে নিলেও, আজীবন লেখালেখিই ছিল তাঁর মূল কাজ।
ছাত্রাবস্থায়ই লিখেছিলেন ‘সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাস,’ যদিও তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই একটি উপন্যাস ‘সূর্য তুমি সাথী’। প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ-কর্ম, শিশু-কিশোর সাহিত্য ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিরিশের অধিক। তাঁর ‘পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ’ উপন্যাসটি জাপানি ভাষায় ও ‘বস্তি উজার’ কবিতাটি জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এ ছাড়া ওষ্কার সহ বেশ কিছু লেখা ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ‘ওঙ্কার’ উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছে। তিনি বেশ কিছু গানও লিখেছেন। গ্যোতের ফাউস্ট কাব্যনাট্যের বঙ্গানুবাদ তাঁর এক অমর কীর্তি ।
প্রতিষ্ঠানবিরোধী ও প্রতিবাদী বক্তব্যের জন্য আজীবন তিনি ছিলেন আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রে। পাশাপাশি নতুন প্রতিভা আবিষ্কার ও তার লালন এবং নবীনদের মধ্যে চিন্তা উসকে দেওয়ার ব্যাপারেও তাঁর জুড়ি ছিল না। বাংলাদেশ লেখক শিবিরের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন, যদিও এই সংগঠনের দেওয়া পুরস্কারও তিনি গ্রহণ করেন নি। সমাজের বঞ্চিত শিশুদের জন্য শিল্পী সুলতান পাঠশালা প্রতিষ্ঠা তাঁর অন্যতম কীর্তি। মৃত্যু : ২০০১ সালের ২৮ শে জুলাই, ঢাকায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.