দেবারতি মুখোপাধ্যায় এর রুদ্র প্রিয়ম সিরিজ pdf download করে পড়তে চাইলে প্রথমেই পড়া শুরু করুন Glanibhabati Bharat pdf গ্লানির্ভবতি ভারত pdf download করুন আর পড়া শুরু করুন পড়া। Glanibhabati Bharat pdf এ রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা জড়িয়ে থাকলেও সুবিশাল ভৌগোলিক প্রেক্ষিত ও সুদীর্ঘ সময়পটে এই উপন্যাসে আঁকা হয়েছে ইতিহাস ও পুরাণের অদ্ভুত মেলবন্ধন।
Glanibhabati Bharat pdf নমুনাঃ
ভবানীপুরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘চৌধুরীভিলা’ যেমন বিশাল, তেমনই সুন্দরভাবে সাজানো। বাড়ির সামনে অনেকটা জায়গা জুড়ে কেয়ারি করা ফুলের বাগান, তার পাশ দিয়ে সবুজ লন ঢুকে গিয়েছে গাড়িবারান্দা পেরিয়ে। রুদ্র আর প্রিয়াঙ্কা ইচ্ছে করেই পুলিশ উর্দি পরেনি। সাধারণ পোশাকে বাড়ির পরিচারকের পিছুপিছু গিয়ে ওরা প্রকাণ্ড ড্রয়িং রুমে বসে হাঁ হয়ে গেল।
প্রিয়াঙ্কা চাপাস্বরে বলল, ” এ’ কোথায় এলাম ম্যাডাম! কোন মিউজিয়াম মনে হচ্ছে।” রুদ্রও বেশ অবাক হয়ে দেখছিল। গোটা ড্রয়িং রুমটাই নানারকম বহুমূল্য আসবাবপত্র ও শৌখিন জিনিসপত্রে সুসজ্জিত। দুর্মূল্য ঝাড়বাতি থেকে শুরু করে অ্যান্টিক ভাস্কর্য, কী নেই! দেওয়ালের একেবারে ওপরদিকে রয়েছে বেশ কিছু স্টাফ করা প্রাণীর মুখ। বোঝাই যাচ্ছে, এই পরিবার যেমন বনেদি, তেমনই বিত্তশালী।
কিছুক্ষণের মধ্যেই এক বয়স্ক ভদ্রলোক ঘরে ঢুকলেন। পরনে দামি পাজামা-পাঞ্জাবি। বয়স আন্দাজ পঁচাত্তর, পরিবারের ধারা মেনেই গৌরকান্তি ও অসম্ভব সুপুরুষ। রুদ্রর উলটোদিকে বসে নমস্কার করলেন, “আমি শেখর চৌধুরী। আমিই আপনার ফোন ধরেছিলাম।” Glanibhabati Bharat pdf
“নমস্কার।” রুদ্র বলল, “আমাদের হাতে সময় এতটাই কম যে আমি সরাসরি প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছি। আপনাদের আদি নিবাস তো হুগলীর বদনপুর গ্রামে ছিল?”
“হ্যাঁ।” শেখর চৌধুরী সম্মতি জানিয়ে মাথা নাড়লেন, ”অনেক বছর আগে আমার বাবা ওখানকার পাট চুকিয়ে কলকাতায় চলে আসেন। তখন আমি বাইশ বছরের যুবক, লন্ডনে পড়াশুনো করছি। আমাদের অন্যান্য শরিকেরা তারও আগে গ্রাম ছেড়েছিল। আমরাই অতদিন ছিলাম। তবে ওই গ্রামে আমাদের নাটমন্দির, জমিদারবাড়ি, সেসব এখনো আছে। মানে থাকার কথা।”
”আর আপনাদের মন্দির?” রুদ্র জিজ্ঞাসা করল। Glanibhabati Bharat pdf
শেখর চৌধুরী মনে পড়ে যাওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, ”ও হ্যাঁ। নদীর ধারে আমাদের পারিবারিক চণ্ডীমন্দির ছিল। পারিবারিক হলেও গোটা গ্রামই তার প্রসাদ পেত। পাশের দুর্গাদালানে দুর্গাপুজোও হত। আমাদের বংশ ঘোরতরভাবে শক্তির উপাসক।”
”সেই মন্দিরের পুরোহিত কে ছিলেন, মনে আছে ?”
শেখর চৌধুরী মনে করার চেষ্টা করে বললেন, ”না, মানে আমি তো স্কুলের পাট শেষ করেই বিলেতে পড়তে চলে যাই। আমার ঠিক মনে নেই।”
রুদ্র বলল, ”আপনার কানু চক্রবর্তী বলে কাউকে মনে আছে? আপনাদের ওই চণ্ডীমন্দিরের পুরোহিতের ছেলে। আপনাদেরই বাড়ির এক ছেলের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে পালায়?”
পিতৃপক্ষ – সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় Pitropokkho pdf : Sukanta Gongpadhay
”আমাদের বাড়ির ছেলে?” শেখর চৌধুরী অবাক হয়ে বললেন, ”আমি তো আমার বাবার একমাত্র পুত্র। আপনি যে সময়ের কথা বলছেন, সেইসময় তো এরকম কিছু
ঘটেনি! আর কোনো শরিকও সেইসময় গ্রামে থাকত না।” রুদ্রর মুখটা কালো হয়ে গেল। অনেক আশা করে ও এসেছিল আজ। ওর বারবার মনে হচ্ছিল, কানু চক্রবর্তীর সঙ্গে পালানো ওই ছেলেটির সঙ্গে এই ঘটনার কিছু যোগাযোগ আছে। কিন্তু ইনি বলছেন, তেমন কিছু ঘটেইনি। তবে কি লোকেশবাবুকে কেউ ভুল তথ্য দিয়েছে?
ভদ্রলোক তখন তাকিয়ে আছেন দেখে ও জিজ্ঞেস করল, “আপনি কী করেন?”
শেখর চৌধুরী বললেন, “আমার বাবা গ্রামে থাকার সময়েই কলকাতায় গার্মেন্টের ব্যবসায় লগ্নি শুরু করেছিলেন। আমি বিলেত থেকে ফিরে সেটাকেই বাড়িয়েছি। এখন হাওড়া, কলকাতা মিলিয়ে মোট তিনটে ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাক্টরি আমাদের। আমার ছেলেই সবকিছুর দেখাশোনা করে। স্ত্রী গত হয়েছেন।”
*আপনার ছেলেও এখানেই থাকে?”
শেখর চৌধুরী বললেন, ”না। ও বাইপাসের ধারে ফ্ল্যাট কিনেছে। সেখানেই স্ত্রীকন্যা নিয়ে থাকে। আমিই বলেছিলাম বিয়ের পর আলাদা থাকতে। দূরে থাকলে সম্পর্ক ভালো থাকে। ভালোই আছি। আর সে তো খুব ব্যস্ত, ব্যবসার নানা ডিলের জন্য দেশবিদেশ ট্যুর করতে হয়। তবে যতই ব্যস্ত হোক, এক দেড়মাস অন্তর বউ-মেয়েকে নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে।”
”কী নাম আপনাদের কোম্পানির ?”
”মৃন্ময়ী টেক্সটাইলস।”
রুদ্রর চোখ চলে গেল অদূরে রাখা একটা বিশাল শো-পিসের দিকে। কোম্পানির বার্ষিক সম্মেলনে বানানো একটি আবক্ষ দুর্গামূর্তি। নিপুণ হাতের কাজ। মূর্তির নীচে লেখা ‘গোল্ডেন জুবিলি সেলিব্রেশন — মৃন্ময়ী টেক্সটাইলস পরিবার।’ কোম্পানির লোগোটিও দুর্গার ধাঁচের।
রুদ্রর মনে পড়ে গেল, চৌধুরীরা বংশানুক্রমে মা চণ্ডীর সেবাইত। মৃন্ময়ী মানেও তো দুর্গা।
ও আগ্রহী চোখে তাকিয়ে আছে দেখে শেখর চৌধুরী বললেন, ”আমাদের কারখানা একটা আস্ত পরিবার। আমাদের কর্মচারীরা একেবারে নিজেদের মতো।”
রুদ্র জিজ্ঞেস করল, ”আপনি এত বড় বাড়িতে একাই থাকেন?” Glanibhabati Bharat pdf
শেখর চৌধুরী হাসলেন। বললেন, “হ্যাঁ। একাকীত্ব আমি বেশ পছন্দ করি। ঠিকে কাজের লোক আছে কয়েকজন, তবে তারা আসে চলে যায়।”
রুদ্র নমস্কার জানিয়ে উঠে পড়ল। এখানে আর সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।
বাইরে বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠে প্রিয়াঙ্কা বলল, “কী হবে বলুন তো, ম্যাডাম! এদিকে একটা একটা করে দিন কমছে।”
“কীসের দিন?”
Glanibhabati Bharat pdf link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.