মতি নন্দীর Golap Bagan pdf গোলাপ বাগান pdf ডাউনলোড করুন। মতি নন্দী বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি তার সাহিত্য দ্বারা পাঠক সমাজকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন। সাহিত্যের সকল শাখায় তার পদচারণা থাকলে ক্রীড়া সাহিত্যে তার অবদান অসামান্য।
Golap Bagan pdf গোলাপ বাগান pdf
ভগবতীচরণ আর্য বিদ্যালয়ের একশো বছর আজ পূর্ণ হচ্ছে সকাল দশটায়। স্কুলের উঠোনের একদিকে সামিয়ানার নীচে মঞ্চ বাঁধা। জাতীয় পতাকার তিন রঙা কাপড়ে মঞ্চটি ঘেরা। তার উপরে সাদা কাপড়ে ঢাকা জোড়া দেওয়া তিনটি টেবল। টেবলের উপর দুটি ফুলদানিতে লাল গোলাপ গুচ্ছ। টেবলের পিছনে পাঁচটি চেয়ারে এখন বসে আছেন চারজন, পঞ্চমটি খালি রয়েছে। চারজনের একজন হলেন আজকের সভাপতি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, অপর তিনজন, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ভগবতীচরণের নাতি, যিনি পরিচালন সমিতির প্রেসিডেন্ট; বর্তমান হেডমাস্টার এবং সব থেকে পুরনো জীবিত ছাত্র যার বয়স এখন নব্বুই। ইনি স্বাধীনতা সংগ্রামী। সরকারের দেওয়া তাম্রফলক পেয়েছেন; পঞ্চম চেয়ারে বসার কথা সব থেকে পুরনো জীবিত শিক্ষকের যিনি চল্লিশ বছর শিক্ষকতা করে কুড়ি বছর আগে অবসর নিয়েছেন।
সর্বনাশিনী pdf – সায়ন্তনী পূততুন্ড Sarbanashini pdf – Sayantani Putatunda best pdf
মঞ্চের ডানদিকে সাদা চাদরে ঢাকা চেয়ারে হেলান দিয়ে রাখা তেল- রঙে আঁকা শীর্ণ মুখ মাথায় শামলা মোটাগোঁফ আয়ত চোখ কৃষ্ণকায় ভগবতীচরণের প্রতিকৃতি। চেয়ারটির পাদদেশে জ্বলছে একগোছা ধূপ, প্রতিকৃতির দুপাশে দাঁড় করানো রজনীগন্ধার ছড়। মঞ্চের বাঁদিকে একটি টেবলের উপর হারমোনিয়াম ও ডুগিতবলা। চারটি ছাত্র এইমাত্র “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ” গানটি গেয়ে মঞ্চ থেকে নেমে গেল।
কাশীনাথ প্রতিদিন দশটায় স্কুল শুরুর ঘড়ি গত পঁয়ত্রিশ বছর ধরে নির্দিষ্ট একটা তালে যেভাবে বাজিয়ে আসছে আজও সেইভাবে বাজাল। মঞ্চে মাইক্রোফোনে এসে দাঁড়ালেন সহ-প্রধান শিক্ষক, হাতে অনুষ্ঠানসূচি লেখা কাগজ প্রাক্তন ছাত্র ব্রতীন রায়চৌধুরি স্কুলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে হাজির হতে, ত্রিশবছর আগে যেসব পথ দিয়ে নিত্য স্কুলে যেত সেই পথগুলি দিয়ে এখন হাঁটছে। বাড়ি থেকে স্কুল প্রায় এক মাইল।
শারদীয়া ভ্রমণ পূজাবার্ষিকী ১৪৩১ (২০২৪) পিডিএফ Bhraman Sharadiya Pujabarshiki 2024 PDF
আটটি লেন ও স্ট্রিট ধরে হেঁটে এবং একটি রাজপথ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনু পার হয়ে সে সাত বছর স্কুলে যাতায়াত করেছে, মাধ্যমিক পাশ করে বিজ্ঞানে, অঙ্কে ও ভূগোলে লেটার নিয়ে। মেধা তালিকায় তার স্থান হয়েছিল বারোজনের পরে। অতঃপর কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়নে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং ওই বিষয়েই পিএইচ ডি অর্জন করার পর পুণেয় এক ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে চার বছর থেকে গত চোদ্দ বছর মুম্বইয়ে রয়েছে এক জার্মান প্রতিষ্ঠানে চিফ অ্যানালিস্টের পদে।
বাড়ি থেকে এতদূরে স্কুলে পড়ার কারণ, এই ভগবতীচরণ স্কুল থেকেই তার পরলোকগত বাবা বগলাপ্রসাদ এবং কাকা ক্ষীরোদপ্রসাদ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছিলেন। ব্রতীনের শিক্ষা জীবন শুরু হয় মা অনসূয়ার কোলে এবং পাড়ার পাঠশালায়। অনসূয়া যখন বিধবা হন ব্রতীন তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। সেই বছরই তার জন্য প্রথম গৃহশিক্ষক নিযুক্ত করেন তার কাকা।
পাড়ায় নবাগত ভাড়াটিয়া উমাপদ পালকে শিক্ষকরূপে সুপারিশ করেন ব্রতীনদের প্রতিবেশী ও উমাপদর বাড়িওলা সতীকান্ত মল্লিক। উমাপদ সতীকান্তর ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া মেয়ে বাসন্তীকে বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান পাওয়াতে যে সাহায্য করেন সতীকান্ত সবিস্তরে তা ক্ষীরোদকে গল্প করেন। পরের দিনই ক্ষীরোদ হাজির হন অবিবাহিত উমাপদর ঘরে।
উমাপদ প্রথমে রাজি হননি ব্রতীনের শিক্ষক হতে যেহেতু তিনি জীবনবিমা অফিসে চাকরি করেন এবং অফিস থেকে ফিরে একটি মেয়েকে পড়াবার পর বিশ্রাম নিতে ও কিছু পড়াশুনা করতে চান । ক্ষিরোদ কথা বলে বুঝতে পারেন বেশি মাইনের টোপ ফেলে উমাপদকে গাঁথতে পারবেন না। প্রস্তাব দেন বাসন্তী ও ব্রতীনকে একসঙ্গে পড়াবার যদিও একজন সপ্তম ও অন্যজন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। এর সঙ্গে একটি মোক্ষম টোপ দেন, উমাপদ দুবেলা তার গৃহে আহার করবেন।
মহামায়া পাইস হোটেলের দুবেলার খদ্দের উমাপদ এই দ্বিতীয় টোপটি উপেক্ষা করতে না পেরে গিলে ফেলেন। এতদ্বারা প্রভূত উপকৃত হয় ব্রতীন। উমাপদর কঠোর শৃঙ্খলা ও সস্নেহ শাসনের বাতাবরণে তার পড়াশুনো এগিয়ে যায়। প্রায় সমবয়সী একটি ভাল ছাত্রীর সঙ্গে রেষারেষি করে পড়া এবং তার মতন বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান পাওয়ার জন্য উত্তেজিত হয়ে সে বই ও পরিশ্রমে ডুবে যায়। বছরের শেষে দেখা গেল দুজনেই প্রথম স্থান পেয়েছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.