বাপ্পী খানের উপন্যাস Har na mana ondhokar pdf free download এখান থেকে। বাপ্পী খানের সুপার ন্যাচারাল ধারার নোভেলা Har Na Mana Ondhokar pdfতে উঠে এসেছে অদ্ভুত কিছু ভয়ের উপাখ্যান। আলোর বিপরীতে অন্ধকার। সেই জগতে ক্রোধ, রাগ, অভিমান, অভিশাপ, ক্ষমার কোনো জায়গা নেই সেখানে। আসুন অন্ধকারের সুরঙ্গপথে যাওয়া যাক।
Har Na Mana Ondhokar pdf ভূমিকা
খুব ছোটোবেলা থেকেই অতিপ্রাকৃত নানা বিষয়ের ওপর আমার ঝোঁক। একটু বড়ো হয়ে যখন পড়তে, জানতে শিখলাম, তখন থেকে এ বিষয়গুলোর ওপর যখন যা পেয়েছি, গোগ্রাসে গিলেছি। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন এখানে মুখ্য নয়, ভালো লাগাটাই আসল। তারপর একটা সময় যখন লিখতে শুরু করলাম, তখন থেকেই মনের মধ্যে একটা সুপ্ত ইচ্ছে ছিল নিজের এ বিষয়ের চিন্তাধারাগুলো, নিজের ভাবনাগুলোকে লেখার মাঝে প্রকাশ করার। ‘হার না মানা অন্ধকার’ সে ইচ্ছেরই ফসল। চিরকাল তো আমরা ভালো তথা আলোর বিজয়গাথা শুনেছি। কিছু গল্প না হয় আঁধারেই লেখা হোক।
বাপ্পী খান
মেয়েটাকে চিনতে পারার বিস্ময়বোধটা মাত্র কাটাতে শুরু করেছি। ভাবছিলাম হয়তো কোনো গোপন ধর্মীয় আচারে ব্যস্ত মেয়েটা। আমি সেভাবেই আরও কিছু ছবি তুলে ফেলেছি এই ফাঁকে। তখনই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়ের দৃশ্যটা উঠে এল।”
বলা থামিয়ে জিকো জলের বোতলটা তুলে নিল আবার। বুঝতে পারছি কোনো ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিল সে। সেটাই জানার সুযোগ এসেছে আজ। তাই কাহিনির বাকিটুকু জানতেই ওকে আবার বলতে দিলাম। কয়েক ঢোক জল খেয়ে সে বলতে লাগল।
“মেয়েটার ততক্ষণে তিনবারের মতো চক্কর ঘোরা শেষ। তারপর আকাশের দিকে নিজের ডান হাতটা উঁচু করে ক্রমশ সেটা নামিয়ে আনল জলের ভেতর। তার এক মুহূর্ত পরে মেয়েটা হাত যেখানে ডুবিয়েছিল, সে জায়গাটা কেন্দ্র করে কিছু জায়গা জুড়ে একটা বুদের বৃত্ত জন্ম নিল।
গোলাকার একটা জায়গা জুড়ে মৃদু বুদবুদ উঠছে জলের ভেতর থেকে। যেন জলের ভেতরটা ফুটছে টগবগিয়ে। সঙ্গে ভেসে আসছে একটা চাপা, গম্ভীর, অনেকটা মেঘ ডাকার মতো এক শব্দ। বুদের পরিমাণ বাড়তে লাগল। সেই সঙ্গে বাড়ছে শব্দটাও। আর তারপরই একসময় মেয়েটি হাতটা জল থেকে উঠিয়ে নিল। সঙ্গে সঙ্গেই শব্দটা থেমে গেল।
মেয়েটার মুখে একটা শান্ত, স্নিগ্ধ হাসি ফুটে উঠল।
আমি ভাবছিলাম, এটা কী ঘটল এতক্ষণ। আসলেই আমি বাস্তবে আছি তো। আর তখনই আমার অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে দিয়ে সেই বুদের জায়গা থেকে উঠে আসতে লাগল একটা মাথা।
“মাথা।”, প্রায় চিৎকার করে বলে উঠলাম আমি।
“হ্যাঁ, একজন লোকের মাথা—” জিকো-র বলা থামছে না। “আস্তে আস্তে একটা গোটা শরীর খাড়াভাবে উঠে এল, পানির তল থেকে। শক্তিশালী, নগ্ন গায়ের এক বৃদ্ধ। চেহারায় অজস্র বলিরেখা ফুটে উঠেছে। হাতের পেশিগুলো কাঁপছে প্রতি নিশ্বাসের সঙ্গে। তবে সেটার চেয়েও বড়ো চমক সেই বৃদ্ধের গলায়।
বৃদ্ধ-র গলা জড়িয়ে রেখেছে একটা বিশাল অজগর সাপ। সেই সাপটা আবার মাথা দুলাচ্ছে এপাশ থেকে ওপাশে। সাপের মাথাটা এতবড়ো যে খানিকটা দূর থেকেও আমি স্পষ্টভাবেই সেটার জিহ্বার চেরা অংশ দেখতে পাচ্ছি।”
“সাপ। বৃদ্ধের গলায়! কী বলিস?” জিকো-র কথাগুলো শুনে আমার মাধ্যেও ভয়ের একটা হাওয়া বয়ে গেল। কিন্তু জিকো সম্ভবত এই মুহূর্তে ডুবে আছে স্মৃতির জগতে, তাই হয়তো আমার কণ্ঠের উত্তেজনা তাকে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করল না। সিদ্ধান্ত নিলাম কাহিনিটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি আর বাগড়া দেব না। জিকোও একনাগাড়ে বলে যেতে লাগল।
“বৃদ্ধটা পানি থেকে উঠে একটা হাত রাখল মেয়েটার মাথায়। আর সেই অজগরটা বৃদ্ধের গলার বাঁধন ছেড়ে এগিয়ে যেতে লাগল পাথরের ওপর রাখা সেই থালাটার দিকে। আমার ভেতর থেকে তখন কেউ যেন কথা বলে উঠল। আমি এক মুহূর্তে সব বুঝে গেলাম। এটা কোনো এক ভয়াল দেবতা। এই তরুণী থালায় করে ভেট নিয়ে এসেছে। আর এই গোপন আচারে এই মুহূর্তে আমার উপস্থিতি মোটেই তাদের কাম্য নয়, নিশ্চয়ই নয়। সেই ভেবেই আমি গোপনে পিছিয়ে যেতে লাগলাম এক-দুই পা করে।
কিন্তু বিধি বাম! একটা গাছের শেকড়ে হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লাম নরম মাটিতে। পতনের শব্দের চেয়ে খানিকটা জোরালো হল পড়ার আগমুহূর্তে আমার মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে যাওয়া ছোট্ট চিৎকারটি। মাটিতে পিঠ দিয়ে পড়লাম। এক-দুই সেকেন্ডের জন্য কোনো হুঁশ ছিল না। সচকিত হয়ে উঠে দাঁড়াতেই দেখি সেই বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে আমার মাথার কাছে। Har Na Mana Ondhokar pdf
এত দ্রুত সে নিঃশব্দে কীভাবে এখানে চলে এল এটা নিয়ে আমার মাথায় কোনো চিন্তা আসার সময় পেল না। এল শুধু ভয়।
বৃদ্ধের চোখজোড়া আগুন লাল। মনে হচ্ছে আমাকে অগ্নিদৃষ্টিতেই আজ ভস্ম করে দেবে। পেছনে ঝেড়ে দৌড় দেয়ার কথা মাথা এল, কিন্তু তাতে বাধ সাধল পেছন থেকেই ভেসে আসা পাতার ওপরে ঘষটে আসার খসখসে শব্দ। তাকিয়ে দেখি সেই অজগরটাও এগিয়ে আসছে, মেয়েটার ঠিক পাশ ঘেঁষে।
Har Na Mana Ondhokar pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.