হিরের আংটি pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Hirer Angti pdf – Shirshendu Mukhopadhyay

হিরের আংটি pdf - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Hirer Angti pdf - Shirshendu Mukhopadhyay
হিরের আংটি pdf - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Hirer Angti pdf - Shirshendu Mukhopadhyay

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অদ্ভুতুড়ে সিরিজ Hirer Angti pdf হিরের আংটি pdf ডাউনলোড করুন ও Hirer Angti pdf হিরের আংটি pdf পড়ুন।

হিরের আংটি pdf - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Hirer Angti pdf - Shirshendu Mukhopadhyay
হিরের আংটি pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Hirer Angti pdf – Shirshendu Mukhopadhyay

Hirer Angti pdf হিরের আংটি pdf নমুনাঃ

টিপকল পাম্প করে যে লোকটা ঘোঁত ঘোঁত করে জল খাচ্ছিল, তাকে আলগা চোখে লক্ষ করছিল ষষ্ঠী। লোককে লক্ষ করাই ষষ্ঠীর আসল কাজ। লোকটা বোকা না চালাক, সাহসী না ভিতু, গরিব না বড়লোক, এসব বুঝে নিতে হয়। তারপর কাজ।
ষষ্ঠীর কাজ হল দুনিয়ার বোকাসোকা লোকদের ট্যাঁক ফাঁক করা । চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, গুম আর জখম সে নেহাত কম করেনি, খুনটা এখনও বাকি। দিনকাল যা পড়েছে, তাতে এবার খুনটুনও করে ফেলতে পারে যে-কোনও দিন।
সময়টা ষষ্ঠীর বড় ভাল যাচ্ছে না। গত ছ’মাসে সে দু’বার ধরা পড়েছে। এক সোনার বেনের বাড়িতে ঢুকে তাদের অ্যালসেশিয়ান কুকুরের খপ্পরে পড়ে গিয়ে খুব নাকাল হয়ে পালানোর সময় ফটকের বাইরে পাড়ার নাইটগার্ডরা তাকে ধরে এবং পেটায়।

রক্ততৃষ্ণা pdf – মনীষ মুখোপাধ্যায় Roktotrishna pdf – Manish Mukhopadhyay

দ্বিতীয়বার এক বুড়ো মানুষের হাত থেকে ফোলিও ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় সেই বুড়ো লোকটা তাকে হাতের ছাতাটা দিয়ে খুব ঘা-কতক মেরে ঘায়েল করে ফেলে। সোনার বেনের বাড়িতে সে কিছু চুরি করতে পারেনি, আর ধরাও পড়েছিল বাড়ির বাইরে। আর বুড়ো মানুষটা কেন যেন শেষ অবধি তার বিরুদ্ধে কেসটা করতে চায়নি। তাই দু’বারই অল্পের ওপর দিয়ে রেহাই পেয়ে গেছে সে । থানার বড়বাবু তাকে ভালই চেনেন। রুল দিয়ে কয়েক ঘা মেরে বলেছেন, “ধরাই যদি পড়বি তো চুরি-ছিনতাই করতে যাস কেন ? এর পরের বার যদি বেয়াদবি দেখি, তা হলে তোরই একদিন কি আমারই একদিন।”
কিন্তু বড়বাবুর কথায় কান দিলে তো ষষ্ঠীর চলবে না। তারও খিদেতেষ্টা আছে, সংসার আছে।

মফস্বল শহরের গ্রীষ্মের দুপুর। গলিটা খাঁখাঁ করছে। পটলবাবুদের গাড়িবারান্দায় ছায়ায় বসে ষষ্ঠী চারদিকে নজর করতে-করতে লোকটাকে আবার দেখল। অনেকক্ষণ ধরে জল খাচ্ছে, চোখে মুখে ঘাড়ে জল চাপড়াচ্ছে। লোকটাকে দেখার অবশ্য কিছুই নেই। কুড়ি-বাইশ বছরের ছোকরা। গায়ের জামাকাপড়ের অবস্থা কহতব্য নয়। ঊর্ধ্বাঙ্গে একখানা রংচটা হলুদ পাঞ্জাবি, নিম্নাঙ্গে একখানা ময়লা আলিগড়ি পায়জামা । শুধু পায়ের জুতোজোড়া বেশ বাহারি নাগরা। পিঠে একটা ব্যাগ। মুখে দাড়িগোঁফ আছে, চুল লম্বা এবং রুক্ষ। তবে ছোকরা যে বেশ বনেদি বাড়ির ছেলে, তা চেহারায় মালুম হয়। ফর্সা রং রোদে মরে তামাটে হয়ে গেছে বটে, কিন্তু মুখখানা বেশ ধারালো। শরীরটাও বেশ বড়সড় হাড়সার, চর্বি নেই।

আমি রাইকিশোরী pdf – সুচিত্রা ভট্টাচার্য Ami Raikishori pdf – Suchitra Bhattacharya

জল খেয়ে ছেলেটা একটু এদিক-ওদিক তাকাল, তারপর হঠাৎ ষষ্ঠীচরণের দিকে চোখ পড়ায় গুটিগুটি এগিয়ে এসে বলল, “আচ্ছা এটাই কি কুমোরপাড়া?”
ষষ্ঠী খুব তাচ্ছিল্যের চোখে ছেলেটাকে একবার দেখে নিয়ে বলল, “হ্যাঁ, কার বাড়ি খুঁজছেন?”
ছেলেটা জবাব না দিয়ে ষষ্ঠীর পাশেই ধপ করে বসে পিঠ থেকে রুকস্যাকটা নামিয়ে রাখল। ষষ্ঠী আড়চোখে ব্যাগটা দেখে নিল একবার। ব্যাগটা পুরনো, রংচটা, ছেঁড়া এবং তাপ্পি মারা। সুতরাং ষষ্ঠীর আর দ্বিতীয়বার ব্যাগটার দিকে তাকাতে ইচ্ছে হল না। ছোকরা যে দুর্দশায় পড়েছে, তা এক পলক দেখলেই বোঝা যায়। সুতরাং ষষ্ঠী উদাসভাবে হাই তুলল।

দুপুর সময়টা নিশুত রাতের মতোই নিরিবিলি। ষষ্ঠীর কাজের পক্ষে সময়টা খুবই ভাল। কারও জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে কিছু তুলে নেওয়া, কোনও ছোট ছেলে বা মেয়েকে একা পেলে তার কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নেওয়া বা কোনও বুড়োবুড়ি পেলে ছোটোখাটো লাভ ষষ্ঠীর হয়েই যায়। কিন্তু আজ দুপুরটা তেমন জুতের নয়।

ষষ্ঠী আর-একটা হাই তুলে পাশে বসা ছোকরাটার দিকে তাকাল। দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে ঢুলছে। চোখেমুখে বেশ ক্লান্তির ছাপ। মাথা আর গায়ে রঙিন ধুলোর মিহি আস্তরণ পড়েছে। আঙুলে বড়-বড় নখ, গালে একটু দাড়ি, নাকের নীচে বেশ বড়সড় গোঁফ।
আচমকাই ষষ্ঠী একটু নড়েচড়ে বসল। ছোকরার বাঁ হাতখানা হাঁটুর ওপর রাখা, আঙুলগুলো ঝুলছে। অনামিকায় একখানা আংটি। নেহাত খেলনা আংটি নয়। ষষ্ঠীর পাকা চোখ হিসেব করে ফেলল, আংটিটায় কম করেও আধ ভরি সোনা আছে। আর পাথরখানাও রীতিমত প্রকাণ্ড। এমন সাদা আর ঝকঝকে পাথর ষষ্ঠী জীবনে আর দেখেনি। যদি হিরের হয় তো এই আকারের হিরের দাম লাখ টাকা হওয়াও বিচিত্র নয় । এরকম হাড়হাভাতের আঙুলে এরকম আংটি থাকাটা অস্বাভাবিক বটে, কিন্তু অসম্ভব নয়। ছোকরা সম্ভবত পড়তি বনেদি বাড়ির ছেলে। বনেদি ঘরের পতন হলেও দু’চারটে সত্যিকারের দামি জিনিস বংশধরদের কাছে থেকে যায়।

আংটিটা চোখে পড়তেই ষষ্ঠীর শরীরটা চনমন করে উঠল, আলসেমির ভাবটা আর রইল না।
ষষ্ঠী বোকা নয়। সে জানে এই ছোকরার কাছ থেকে আংটিটা হাতিয়ে নেওয়া বড় সহজ কাজ নয়। মাথা খাটিয়ে একটা কৌশল বের করতে হবে। গায়ের জোরে বা ভয় দেখিয়ে হবে না। ছোকরা অভাবে পড়েছে বোঝাই যায়। সুতরাং বিক্রি করতে রাজি হয়ে যেতে পারে। কালী স্যাকরার সঙ্গে ষষ্ঠীর খুব খাতির। চুরি করা সোনারুপো সে কালীর কাছেই বেচে। কালীর সঙ্গে সাঁট করে আংটিটা জলের দরে কিনে নেওয়া যেতে পারে।
সুতরাং ষষ্ঠী অপেক্ষা করতে লাগল। তারপর দেওয়ালে একটা ভেঁয়ো পিপড়েকে বাইতে দেখে সেটাকে সাবধানে তুলে এনে ছোকরার ঘাড়ে ছেড়ে দিল।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অদ্ভুতুড়ে সিরিজ Hirer Angti pdf হিরের আংটি pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে ও Hirer Angti pdf হিরের আংটি pdf পড়ুন এখান থেকে

Be the first to comment

Leave a Reply