জগুমামা রহস্য সমগ্র ২ pdf book – ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় Jagu Amar Rahasya Samagra 2 pdf by by Tridib Kumar Chattopadhyay book pdf download link
Jagu Amar Rahasya Samagra 2 pdf জগুমামা রহস্য সমগ্র ২ pdf বলতেই হয়।
জগুমামার রহস্য কাহিনিদের একত্রিত করে খণ্ডে-খণ্ডে প্রকাশ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটা যে। শুধু কিশাের-কিশােরী বন্ধুদের নয়, সৰবয়েসের পাঠকবন্ধুদের কাছে এমন আদৃত হবে, ভাবতে পারিনি। গত বছর থেকেই জোরালাে দাবি উঠতে শুরু করল, ‘জগুমামা সমগ্র ২’ কবে বেরুচ্ছে। এমনকী ফেসবুক খুললেই পরপর মেসেজ। ছােট-ছােট আলাদা বইয়ে জগুমামা-অনুরাগীদের আর মন ভরছে না। যথারীতি মুশকিলে পড়লাম। নিজের লেখার ব্যাপারে আমি একটু খুঁতখুঁতে। জগুমামার দ্বিতীয় খণ্ডে উপন্যাসগুলােকে কালানুক্রমিক সাজাতে হলে, কয়েকটি লেখাকে আগাগােড়া ঘষামাজা করা দরকার। প্রায় নতুন করে লেখা উচিত এই খণ্ডের প্রথম লেখাটাই। ‘সাগর পাহাড় মৌমাছি’।
এই সময় শারদীয়া ১৪৩০ (২০২৩) পিডিএফ Sharadiya Ei Somoy Pujabarshiki 1430 pdf
এই কঠিন কাজটা করতে প্রায় একবছর লেগে গেল। বাকি ছয়টি উপন্যাস, বিশেষত মূর্তি ও মৃত্যুফাঁদ (নামটাই পালটে গেছে), সাক্ষী ছিল ছবি, রহস্য রাতের পদ্মায়…সবক’টাকেই ভাষা, পরিচ্ছেদ, উপস্থাপনা। অনেকখানি পালটেছি। চেষ্টা করেছি, ওদের আরও টানটান, আরও বিশ্বাসযােগ্য করে তােলার। অবশেষে ‘জগুমামা রহস্য সমগ্র ২’। বন্ধুদের কাছে আমি অগ্রিম আপাদমস্তক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাখছি। আমি সত্যিই কৃতার্থ।
Jagu Amar Rahasya Samagra 2 pdf সূচিপত্র
সাগর পাহাড়
মৌমাছি আকাশে
মৃত্যুর বিষ রহস্য
রাতের পদ্মায়
মূর্তি ও মৃত্যুফাঁদ
সাক্ষী ছিল ছবি
আলেকজান্ডারের আংটি
আরবি পুঁথি রহস্য
ঘণ্টা পড়ল। সিগন্যাল সবুজ হয়েছে। উফ! শেষ অব্দি ছাড়ল তাহলে!
ঝাড়া পঁয়তাল্লিশ মিনিট। গতকাল চেন্নাই থেকে রওনা হয়ে ভালোই টানছিল মাদ্রাজ মেল। এখানে এসেই বারোটা বাজিয়ে দিল।
লাইনে নাকি গড়বড় ছিল। আজকাল ট্রেনে চাপতেই বুক ঢিপঢিপ করে। কখন কোথায় নাটবল্টু খোলা থাকবে, কি বোম-ফোম গুঁজে রাখবে – ব্যস! সটান ওপরে।
দুলতে-দুলতে এগোলুম নিজের বার্থের দিকে। বেরহামপুরে আমাদের কামরার অর্ধেকের বেশি লোক নেমে গেছে। আমার কুপের সামনের তিনটে বার্থ খালি হয়েছে। দেখি, কারা উঠল! একটাই ভয়, তেমন ‘রোরিং’ পাবলিক যদি ওঠে তো হয়ে গেল! সারাটা রাত প্যাট-প্যাট করে তাকিয়ে কাটাতে হবে।
রোরিং পাবলিক?—আমি বললাম, – সেটা কী? অনন্ত সরখেল করুণামাখা হাসলেন। বললেন, – সে কী টুকলু, রোরিং মানে জানো না? নাক ডাকা! শুদ্ধ বাংলায় যাকে বলে নাসিকা গর্জন।
আমাদের ড্রইংরুমে বসে কথা হচ্ছিল। শেষ রাজভোগটা মুখে ফেলে চোঁ চোঁ করে গেলাস সাফ করে দিলেন অনন্ত সরখেল। তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে ফের বলতে শুরু করলেন।….
স্বামী-স্ত্রী, বছর খানেকের বাচ্চা। উড়িয়া। বেশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে গেছে। টিফিন ক্যারিয়ার খুলে
বসেছে।
তিন নম্বর লোকটা বসেছে জানলার ধারে। লম্বা-চওড়া চেহারা, একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি, চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। সাদা ট্রাউজার সাদা শার্ট। কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত, মাথায় রামমোহনের পাগড়ি। কোন দেশি রে বাবা!
তুমি তো জানো হিন্দি ইংরিজিটা চালাতে পারলেও উড়িয়া-টুড়িয়া আমার আসে না। বুঝতে অবিশ্যি পারি। ভাবলুম, আলাপ করি।
সেই কাল থেকে কথা বলতে না পেরে হাঁপিয়ে উঠেছি। আমার তিন টায়ারের বাকি দুটো প্যাসেঞ্জারই ধরাছোঁয়ার বাইরে। আপারে এক মারোয়াড়ি, রোড রোলারের মতো চেহারা। সমানে ঘুমুচ্ছে। সারাদিনে বারতিনেক নেমেছে। খাওয়া আর বাথরুম সেরে আবার উঠে গেছে। মিডিলে এক বুড়ো, আনকা সাউথ ইন্ডিয়ান। হিন্দি-ইংলিশ কিস্যু বোঝে না। আমি গতকাল ইশারায় নীচের বার্থ অফার করেছিলুম, কটকট করে তাকাল।
পাগড়িকে বললুম, – আপ ক্যা ইহাসে উঠা?
পাগড়ি জানলা দিয়ে তাকিয়েছিল। মুখ না ঘুরিয়ে স্পষ্ট বাংলায় বলল, – আপনার কী মনে হয়?
— আরিব্বাস! আপনি বাঙালি। বেরহামপুরেই থাকেন নাকি?
– না।
– কলকাতায় ?
– না।
– তবে?
— গোপালপুর।
– বা: – বা! গোপালপুর অন সি! কী বিউটি, বলুন?
— আপনাকে দেখে বাঙালি ভাবতেই পারিনি। বিশেষ করে আপনার পাগড়িটা খুব ইন্টারেস্টিং! — আপনার অসুবিধে হচ্ছে?
— কী যে বলেন মশাই! অসুবিধে হবে কেন? বাঙালি পেলুম। প্রাণ খুলে দুটো কথা কওয়া যাবে।
— দয়া করে অকারণ বকবেন না, বকাবেন না।
এমন দড়াম করে মুখের ওপর কথাগুলো বলল, গা জ্বলে গেল। যাচ্ছেতাই লোক।
হ্যান্ডব্যাগ থেকে হ্যান্ডরাইটিং-এর বইটা বের করে পড়তে আরম্ভ করলুম। ভাগ্নে ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করে, ও-ই দিয়েছে।
বইটা দারুণ ইন্টারেস্টিং। যে-কোনও লোকের রাইটিং দেখে, লোকটা সম্বন্ধে বলে দেওয়া যায় অনেক কিছু। ছবি দিয়ে দিয়ে বুঝিয়েছে।
কখন যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, খেয়াল করিনি। পাগড়ি কাচ নামাচ্ছে। আমিও নামিয়ে দিলুম।
পাশে সাউথ ইন্ডিয়ান বুড়ো বোয়াল মাছের মতো হাই তুলছে। না, রাত কম হয়নি। দশটা। মিডল বার্থ তুলে দিলুম।
বেরহামপুরেই পুরি-তরকারি ঠেসে নিয়েছিলুম। টান হয়ে পড়েছি। ট্রেন চমৎকার ছুটছে।
বেশ জমাটি স্বপ্ন। থ্রিলিং। আফ্রিকা ফরেস্টে স্যারের সঙ্গে…পা টিপে টিপে এগুচ্ছি… স্যারের হাতে রাইফেল…লতাপাতা পা জড়িয়ে ধরছে ….
হঠঠাৎ — সাপ! ডাল থেকে ঝুলে আমার নাকের গোড়ায়।
চোখ মেলতেই – আইব্বাপ! সত্যিকারের সাপ! কামরার নাইটল্যাম্পের নীল আলো শরীরে চকচকিয়ে উঠছে! ওপরের বার্থ থেকে ঝুলছে। দুলছে নাকের ডগায়।
স্বর বেরুচ্ছে না…সা—-
তখনই পাগড়ি চেঁচিয়ে উঠল – ও মশাই কী হল? চেল্লাচ্ছেন কেন? ও মশাই, বোবায় ধরল নাকি? ও মশাই… ।
চোখের কোণ স্লাইট ফাঁক করলুম। যা থাকে কপালে, খপ করে ধরলুম।
যাচ্চলে! ধ্যাৎ—একটা ফিতে। ওপরের বুড়োর হোল্ডঅল থেকে ঝুলে পড়েছে। যাচ্ছেতাই ব্যাপার! আরটু হলেই মরে যেতুম।
ঘামে জবজব করছে শরীর। গলা শুকিয়ে কাঠ, ট্রেনও থেমেছে।
ভুবনেশ্বর। এই মাঝরাতেও স্টেশনে বেশ লোকজন।
দরজা খোলার শব্দ পেলুম। দু-চারজন নামল, উঠল।
আবার শুয়ে পড়লুম। ট্রেনও ছেড়ে দিল।
দুলুনিতে চোখটা বেশ লেগে এসেছে, এমন সময় কার খসখসে গলা, — এই যে গোলকপতি রায়। আমি এসে গেছি।
—ক কে?
—বা:, চমৎকার! নিজের গিনিপিগের গলা শুনেও চিনতে পারছ না? বেশ, বেশ!
Jagu Amar Rahasya Samagra 2 pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.