অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত এর সমকালীন উপন্যাস Jiosthor Jhor pdf জৈষ্ঠের ঝড় pdf ডাউনলোড করুন এবং অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের জৈষ্ঠের ঝড় pdf পড়ুন।
Jiosthor Jhor pdf জৈষ্ঠের ঝড় pdf নমুনাঃ
হুগলিতে থাকতে নজরুলকে বসিরহাট যেতে হল। কুতুবউদ্দিন আহম্মদ বসিরহাট এলাকা থেকে নির্বাচনের প্রার্থী, তার হয়ে কাজ করবে নজরুল। কাজ করবে মানে গান গাইবে, গান গেয়ে ভোট কুড়োবে।
এই কুতুবউদ্দিন আহম্মদ ও মুজফ্ফর আহমদকে নজরুল তার ‘ছায়ানট’ উৎসর্গ করে। এই দু’জনকে সে তার ‘শ্রেয়তম রাজলাঞ্ছিত বন্ধু’ বলে বর্ণনা করল। সেই বন্ধুর কাজে নজরুল যাবে না তো কে যাবে!
আর গেল আবদুল হালিম।
তারা আড্ডা নিল ডাকবাংলোয়। বেশ ক’দিন থাকতে হল সেখানে। ফলে নজরুলকে ম্যালেরিয়ায় ধরল।
প্রচণ্ড জ্বর, বলা যায় জ্বরের ঝাড়। মাথায় পাথর-ফাটা যন্ত্রণা, বলা যায় অগ্নিবীণা। কিন্তু মুখ দিয়ে এখন রক্ত উঠল তখন আর কিছু বলা যায় না, তখন এদিক-ওদিক ছুটতে হয় ডাক্তারের সন্ধানে।
জ্বরের ঘোরে বেইস নজরুল ককিয়ে ওঠে মা! মা!
গিরিবালা দেবী নিদ্রাহীনা শুশ্রুষা হয়ে সর্বক্ষণ তাকে আচ্ছাদন করে আছেন—এ যেন তাকে ডিঙিয়ে আর কারু জন্যে হাত বাড়ানো। না, চুরুলিয়ার দিকে নয়, কুমিল্লার দিকে। কই তিনি তো একবার এলেন না হুগলিতে। অনশন ভাঙিয়ে বাঁচালেন একদিন, এখন এই প্রতপ্ত কপালে রাখবেন না তাঁর মলমধব হাতখানি?
কী করে আসবেন! কত সামাজিক বিবেচনার সূক্ষ্ম শেকল দিয়ে তিনি ধাধা, তাঁর ঘর-সংসার, ছেলে-মেয়ে, তাদের সুখ-শান্তি, ভবিষ্যৎ! না, আসা সম্ভব নয়। কিন্তু ন এসেও নজরুল বুকের মধ্যে ঠিক অনুভব করতে পারে কত দয়া নিয়ে ক্ষমা নিয়ে, কী অতল পেনশান্তি নিয়ে বিরজাসুন্দীরর চোখ দু’টি তার দিকে অনিমেষে উন্মুখ হয়ে আছে। ‘এই তো আমি আছি—কী, জল খাবে? গিরিবালা এগিয়ে এলেন। “জাশা কোথায়?’
ঐ তো তোমায় শিয়রে বসে বরফ দিচ্ছে।
আরো একজনকে বুঝি বুঝি মনে পড়ছে। তার ফরিদপুরের অদেখা মাসিমা — বিরজাসুন্দরীর ছোট বোন। নাম কুমুদিনী রায়। তার মায়ের সম্পর্কে যে
যেখানে আছে সকলেই নজরুলের আত্মীর, সুদিনে-দুর্দিনে বান্ধব। আর তারাও ঐ পথে নজরুলের প্রতি স্নেহাভিমুখী।
ফরিদপুরের জসীমউদ্দিনকে নজরুল চিঠি লিখেছে, তার মাসিমার বিস্তৃত খবর এনে দিতে। মা অনেক দিন তাদের খবর না পেয়ে ব্যাকুল হয়েছেন।
সে বাড়ির একটি ছেলে জসীমউদ্দিনের সহপাঠী। জসীম তার নাম ধরে ডেকে অন্দরে ঢুকে একেবারে তার মায়ের কাছে গিয়ে উপস্থিত হল। ডাকল মাসিমা বলে আর মাসিমা তখুনি তাকে আপন ছেলের মত কাছে টানলেন।
‘নজরুল ইসলাম আপনাদের খবর জানবার জন্যে আমাকে চিঠি লিখেছেন। ‘কে লিখেছেন?’ নামটা যেন আবার শুনতে চাইলেন মাসিমা।
‘নজরুল ইসলাম’।
মুহূর্তে মাসিমার দু’চোখে আবেগে ও আনন্দে ছলছল করে উঠল। মুখে হাসি ফুটিয়ে বললেন, ‘দিদি জানতে চেয়েছেন বুঝি? হ্যাঁ, অনেক দিন তাকে চিঠি লেখা হয়নি—’
২৫টি সেরা ভূত pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় 25ti Sera Bhoot pdf – Shirshendu Mukhopadhyay
বলে, কোথায় তিনি নিজের কথা বলবেন, তা নয়, একরাশ নজরুলের কথাই বলতে লাগলেন। এত সব খবর যা জসীমও জানে না। নজরুল তো মাসিমাকে চিঠি লেখে না, দেখা হয়নি এখনো, তবে তিনি তার সম্বন্ধে এত কথা জানলেন কোথায় ?
‘সব দিদি জানিয়েছেন।’ বললেন মাসিমা। ‘তার চিঠি তো তার ছেলের কথাতেই ভর্তি।’
দিদির জানাতে আনন্দ, ছোট বোনের সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মনে রাখায় আনন্দ। আর এখন আনন্দ সে সব বলতে পারার সুযোগ পেয়ে।
শুধু খবরগুলিই মনে করে রাখেননি, নজরুলের অনেক কবিতা মুখস্থ করে রেখেছেন। শুনবে একটা?
মাসিমা ‘খেয়া পারের তরণী’ আবৃত্তি করতে লাগলেন
‘কাণ্ডারী এ তরীর পাকা মাঝি মাল্লা
গাড়ী-মুখে সারিগান লা শরীক আল্লাহ্
জসীম তো বিস্ময়ে নিশ্চল। এক রক্ষণশীল হিন্দু-পরিবারের গৃহস্থ বধূ এমন অকপটে কবিতাটা মুখস্থ করেছে আর সরবে আবৃত্তি করছে নির্ভয়ে।
“মহরম শুনবে?’
সাপ্তাহিক বর্তমান ১৯ আগস্ট ২০২৩ পিডিএফ Saptahik Bartaman 19 August 2023 pdf
বলে মাসিমা সেই দীর্ঘ কবিতা এক নিঃশ্বাসে আবৃত্তি করে শোনালেন। বইয়ের দরকার হল না, না বা প্রশ্নটিং-এর। আর বলা-গলা কী স্পষ্ট, কী নির্ভুল। আরবি-পারসি শব্দগুলিও কী নিরঙ্কুশ অনায়াসে উচ্চারণ করছেন। জসীম যেন নিজের চোখে দেখে নিজের কানে শুনেও বিশ্বাস করতে পারছে না।
‘নিঃশেষ দুষমন, ও কে রণ-প্রান্ত
ফোরাতের নীরে নেমে মুছে আধিশ্রান্ত?
কোথা বাবা আসগর? শোকে বুক ঝাঝরা পানি দেখে হোসেনের ফেটে যায় পাজরা। ধুকে মলো আহা তবু পানি এক কারা দেয়নি রে বাছাদের মুখে কমজাতরা। অঞ্জলি হতে পানি পড়ে গেল করার, লুটে ভূমে মহাবাহু
জসীমউদ্দিন লিখছে: ‘নজরুলের রচিত ‘মহরম কবিতাটি কত বার আমি মাসীমাকে আবৃত্তি করে শুনিয়েছি।
জৈষ্ঠের ঝড় pdf link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.