জহির রায়হান এর চিরায়ত উপন্যাস Koyekti Mritu pdf কয়েকটি মৃত্যু pdf ডাউনলোড করুন ও Koyekti Mritu pdf পড়ুন।
Koyekti Mritu pdf কয়েকটি মৃত্যু pdf নমুনাঃ
আমেনা ছোট বউকে তার কাছে রেখে দিলো। তোমরা যাও মা। ছোটভাবী আমার কাছে এখন থাকুক। একটু গল্প করবে।
মা আর দুই বউ চলে যেতে আমেনা বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। খানিকক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইলো সে। তারপর ধীরে ধীরে বললো— পুরুষ মানুষগুলো ভীষণ স্বার্থপর, তাই না ভাবী?
ছোটবউ সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লো। বললো – বিয়ের পর এইতো সেদিন আমাদের এখানে এসেছিলো শফি ভাই। আমিও ছাড়িনি। বেশ করে শুনিয়ে দিয়েছি।
কী শুনিয়েছো? উঠে আবার বসলো আমেনা। কী শুনিয়েছো বলো না ভাবী ? বললাম— আপনি একটা এক নম্বরের ধাপ্পাবাজ। খুব তো লম্বা লম্বা কথা বলতেন, মিনাকে আমি আমার প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমি এ পৃথিবীতে আর কাউকে চিন্তা করতে পারি না। ওকে না পেলে সারাজীবন আমি আর বিয়ে করবো না। এখন? এখন কী হলো?
শুনে কী বললো? আমেনার গলার স্বরে ঈষৎ উত্তেজনা।
ছোটবউ জবাব দিলো-
দাঁড়িয়ে রইলো।
কিছু বললো না?
না।কী আর বলবে। বলার মুখ আছে? মাথা নিচু করে চুপচাপ
আমেনা নীরবে কিছুক্ষণ ছোটবউয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। আসলে আমি একটা বোকা মেয়ে ভাবী। কেমন করে ওর ফাঁদে পা দিয়েছিলাম ভেবে দেখো তো। সম্পর্কে মামাতো ভাই। তাই বাড়ির মধ্যে আসা-যাওয়া আর মেলামেশায় কোনো বাধা ছিলো না। তুমি তো সব জানো ভাবী।
প্রথম প্রথম সে কী কথা বলতো?
কেমন করে তাকিয়ে থাকতো। আর আমি দুর্বল হয়ে গেলাম।
প্রেমে পড়লাম।
তোমার কাছে তো কিছুই লুকোইনি আমি ভাবী। আর হ্যাঁ ভাবী, চিঠিগুলো কোথায় রেখেছো ?
আছে।
কাউকে দেখাওনি তো?
আল্লার কসম?
আল্লার কসম।
কোথায় রেখেছো। নিয়ে এসো তো।
না এখন পারবো না। সেই ট্রাঙ্কের মধ্যে একগাদা কাপড়-চোপড়ের নিচে। কাল দুপুরে বের করে দেবো। কিন্তু ওগুলো দিয়ে এখন কী করবি তুই ?
পুড়িয়ে ফেলবো। মনে হলো এক্ষুনি কান্নায় ভেঙে পড়বে আমেনা। সত্যি, আমি একটা বোকা মেয়ে ভাবী। বাবা যখন বিয়ে ঠিক করে ফেললো- তোমরা তো দেখেছো, কত কেঁদেছিলাম আমি। তোমরা আমায় বুঝিয়েছিলে। কেঁদে কি হবে। কাঁদিসনে। Koyekti Mritu pdf পড়ুন।
এ হোর ইন দ্য ইডেন – জেমস হ্যাডলি চেজ A Hor in the Eden by James Hadley Chase
বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। আসলে কথা কী জানো ভাবী, লোকটার চরিত্র বলে কিছু নেই। একটা আস্ত ছোটলোক। সহসা চুপ করে গেলো আমেনা।
স্বামীর কথা মনে পড়লো।
কেন যেন তাকে এখন আরো বেশি করে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে আমেনার। মনে মনে ভাবলো, খেয়েদেয়ে এসে ওর কাছে একটা চিঠি লিখতে হবে।
নামাজ পড়া শেষ করে বুড়োকর্তা আহমদ আলী শেখ আবার পরিচয়-পর্ব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন । ওকে যখন তুমি দেখেছো তখন সে হাফপ্যান্ট পরে ঘুরে বেড়াতো। কিন্তু আমার সেই সেজো ছেলেটাকে বুঝলে মফিজ, বড় ইচ্ছে ছিলো সি.এস.পি. বানাবো। উল্লু কোথাকার আবার দাঁত বের করে হাসে দেখ না। তিনি এখন ব্যবসা করছেন। পাটের ব্যবসা। অবশ্য ব্যবসায় রুজি-রোজগার ভালোই হচ্ছে। Koyekti Mritu pdf পড়ুন।
সহসা বুড়োকর্তার চোখ পড়লো বাচ্চাছেলেটার দিকে। ঐ দ্যাখো। লেখাপড়া ফেলে তিনি এদিকে হা করে তাকিয়ে আছেন। কাল না তোর পরীক্ষা। ভালোমতো পড়াশোনা করো। পড়ে পড়ে পুরো বইটাকে মুখস্থ করে ফেলো। রেজাল্টটা যদি ভালো হয় তাহলে কালাচাঁদ থেকে একসের মিষ্টি কিনে খাওয়াবো তোমায় পড়ো, পড়ো।
ঠিক এমনি সময় দরজা দিয়ে চোরের মতো ভেতরে এলো দুটি চৌদ্দ-পনেরো বছরের ছেলেমেয়ে।
আহমদ আলী শেখ তাদের দিকে কিছুক্ষণের জন্যে পলকহীন চোখে তাকিয়ে রইলেন। এই যে, কোত্থেকে এলে তোমরা অ্যাঁ? কোথায় গিয়েছিলে?
বাইরে।
বাইরে তো বুঝতেই পারছি। কিন্তু কোথায়?
ছোট খালার বাসায়। Koyekti Mritu pdf পড়ুন।
এতক্ষণ সেখানে কী করছিলে? তোমাদের না সন্ধের পর বাইরে কোথাও থাকতে নিষেধ করেছিলাম। একটু সুযোগ পেলেই দুজনে ফাঁকি দিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরঘুর করো। দাঁড়াও, এবার তোমাদের দুজনকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখবো আমি। সহসা মফিজ মামার দিকে তাকালেন আহমদ আলী শেখ। মৃদু হেসে বললেন – আমার বড় নাতি। মনসুরের ছেলে রসুল। আর ওর নাম রেখেছি পেঁচি — মেজোর বড় মেয়ে। দুটিতে বড় ভাব। দাঁড়াও, তোমাদের রোজ-রোজ বাইরে যাওয়ার মজা দেখাচ্ছি আমি।
রসুল আর পেঁচি মাথা নত করে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর কারো দিকে না তাকিয়ে ধীরেধীরে ভেতরে চলে গেলো। বাচ্চাছেলেটা এতক্ষণ চেয়ে চেয়ে ওদের দেখছিলো। আড়চোখে একবার বুড়োকর্তাকে দেখে নিয়ে আবার বইয়ের প্রতি মনোযোগ দিলো :
আল্লাহতায়ালা বলিলেন, ইহাদের সেজদা করো। কিন্তু ইবলিশ তবু রাজি হইলো না । ইবলিশ বলিলো—হে রাব্বুল আলামীন। ইহারা মাটির তৈরি। আর আমাদের আপনি আগুন দ্বারা তৈরি করিয়াছেন। আমরা আগুনে তৈরি হইয়া কেন মাটির ঢেলাকে সেজদা করিবো।
জোহরা খাতুনের গলার স্বরে বুড়োকর্তার চমক ভাঙলো। কি, মেহমানকে নিয়ে সারারাত গল্প করবে নাকি ! খাবে না? সব ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।
Koyekti Mritu pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.