সৌম্যদীপের মহিষাসুর pdf ডাউনলোড করুন বা অনলাইনে পড়ুন। Mahishasur pdf writen by Soumyadeep মহিষাসুর হল হিন্দু পুরাণে বর্ণিত একটি চরিত্র। মহিষাসুর ছিলেন রম্ভার পুত্র এবং ব্রহ্মর্ষি কশ্যপের প্রপৌত্র। বিভিন্ন প্রাচীন হিন্দু কাহিনীতে মহিষাসুরকে অপদেবতা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই মহিষাসুরকে কেন্দ্র করেই Mahishasur pdf আপনাদের সামনে আনা হলো।
মহিষাসুর pdf (Mahishasur pdf) নমুনাঃ
ছোট্টবেলা থেকেই মহিষাসুরের উপর আমার খুব মায়া হত, মহালয়ার দিন রাত থাকতে রেডিয়ো চালিয়ে মা যখন ডেকে তুলত, বেজায় ঘুম-জড়ানো চোখে উৎসুক হয়ে উঠতাম, যদি অন্যরকম কিছু ঘটে—আমার ধারণা ছিল ওটা লিগ ফাইনালে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল বা ভারত-পাকিস্তানের খেলার মতো, মহিষাসুর আর দেবী দুর্গার যুদ্ধের প্রাগৈতিহাসিক ধারাবিবরণী! প্রতিবার, “বিষ্ণু দিলেন চক্র, পিনাকপাণি শংকর দিলেন শূল, যম দিলেন তাঁর দণ্ড, কালদেব সুতীক্ষ্ণ খ”…. অমনি মহিষাসুরের জন্য খুব খারাপ লাগত, আমাদের নতুন জামাকাপড় হয়ে গেছে, বাটার জুতোও, ভোরবেলায় উঠোনে শিউলি আর… আমার চোখে ঘুম নেমে আসত।
চটকা ভেঙে শুনতাম, “দেবী, কাত্যায়ন নন্দিনী কাত্যায়নী অষ্টাদশভুজা উগ্রচণ্ডা রূপে মহিষ মর্দন করেন। দ্বিতীয় ষোড়শভুজা ভদ্রকালীর হস্তে মর্দিত হয় মহিষ। আর তৃতীয়, এই বর্তমান কল্পে দশভুজা দুর্গা রূপে মহাদেবী সুসজ্জিতা মহিষমর্দিনী। অখিল মানবকণ্ঠে ধ্বনিত পুষ্পাঞ্জলি স্তোত্র বন্দনা” – শিবের বউকে কেন যে এত বার নারায়ণী বলে কে জানে… “যা দেবী সর্বভূতেষু নিদ্রারূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ”… জেগে উঠতাম ‘রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ‘ — গানের সুরে, বাইরে তখন আলো ক্রমে আসিতেছে… Mahishasur pdf
ছোটো থেকে গোঁফ গজানো শুরু হওয়া পর্যন্ত ধারণাটা খুব একটা বদলায়নি যে ওটা কোনো প্রকৃত ঘটনার বিবরণ, তারপর গোদের উপর বিষফোঁড়া কম্যুনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়বার পরে পরেই দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ভারতে বস্তুবাদ প্রসঙ্গে, লোকায়ত দর্শন দিয়ে মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন — বেদ-পুরাণ সবই শাসকশ্রেণির কায়েমি স্বার্থ বজায় রাখার প্রচেষ্টা, সমাজ বিকাশের পর্যায়(!) ঋগ্বেদ, নানা পুরাণ মায় গীতা আসুরি মতের নিন্দা করে, সেই আসুরি-মত লোকায়ত, যা তন্ত্র ও সাংখ্য-র সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ঋকবেদে উল্লিখিত হরিয়ুপিয়া একটি অসুর- নগরী যা বাস্তবের হরপ্পা হতে পারে — গাদা গাদা উদাহরণ আর পণ্ডিতদের মত প্রকাশক উদ্ধৃতি দিয়ে, কচি বয়সের উপপাদ্য আর জ্যামিতির এক্সট্রা করা মাথায় সবটুকু প্রত্যক্ষ প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যেন!
আরো হরর থ্রিলার ভূতের গল্প পড়তে ভিজিট করুন এখানে।
বইটা আমায় পড়তে দিয়েছিলেন দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী, আমার মাস্টারমশাই, কৃষ্ণনগরের ‘পাঠাগার মাস্টারমশাই’, যিনি কখনো আমার বেড়েপাকা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি, লাইব্রেরি থেকে একটা বা দুটো বই তুলে বাড়ি ফেরার সময় হাতে ধরিয়ে দিতেন—এ কথাটা উল্লেখ করলাম কারণ আমার “দেববিরোধী” হয়ে ওঠার পেছনে ‘দেব-দেবী’-দের অবদান বড়ো কম নয়। ‘লিটল-গান্ধী’ মাস্টারমশাইয়ের অসম্ভব পরিমিতিবোধের ছিটেফোঁটাও অনর্জিত রয়ে গেল—কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলেই প্রচুর জ্ঞান দিই, খেতে দিলে গাদা গাদা খাই, লিখতে বললে পত্রিকার গুচ্ছের পাতা ধ্বংসাই, অল্পেতে বেজায় রেগে যাই অর্থাৎ প্রচলিত অর্থে একটা আসুরিক ভাব স্বভাবজ বলা চলে —অতএব নান্যপন্থা! Mahishasur pdf
আমাদের সময় পর্যন্ত মার্কস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হতেই ফ্রয়েড নেড়েচেড়ে দেখাটা স্বাভাবিক পাঠক্রম ছিল, এমনকি দেবীপ্রসাদও একটা পাতলা বই লিখেছিলেন ফ্রয়েড প্রসঙ্গে, তা থেকেই হয়তো একটা ধারণা বাতাসে ভাসত – ফ্রয়েড আর মার্কসকে একটা সিন্থেসিসে আনতে পারলেই ইউনিফায়েড ফিল্ড থিওরির মতো, সব সমস্যার উত্তর পাওয়া যাবে। পড়াশোনা শুরুর মুখে এদিক- ওদিক শোনা, বিশ্বাস করা, কথাগুলো হয়তো পরবর্তীকালে সব পণ্ডিতের বেজায় বোকা-বোকা লাগে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন না আমার কিন্তু বিস্তর মজা লাগে, যাকে বলে ‘হেব্বি আনন্দ হয়’, কেন-না ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়! যাই হোক সেই ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে গিরীন্দ্রশেখর বসুর কথা জানা, তাঁর একটা বইয়ে এই লেখকের অন্যান্য গ্রন্থ’-র মাঝে শ্রীমদভাগবতগীতা আর পুরাণপ্রবেশ নাম দুটো দেখে বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, জোগাড় হয়েছিল অনেক পরে, বহুকষ্টে!
এখন অবশ্য একটি অতি ভয়ানক প্রচ্ছদ ও প্রাককথনসহ পুরাণপ্রবেশ বাজারে পাওয়া যায়। পুরাণপ্রবেশ পাঠে বিষফোঁড়াটি ফাটে এবং পুরাণকে হিস্ট্রি বা ইতবৃত্ত হিসাবে পাঠের একটি প্রবেশদ্বার ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিসহ আমার সামনে খুলে যায়, যা দেবীপ্রসাদ হতে অন্যতর—মাঝে সময় কেটেছে চোদ্দোটি বছর। Mahishasur pdf
প্রবন্ধ লিখতে বসেও এত ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ তথা মন্তব্য এসে যায় যে সেটা মাঝে মাঝে নিজের কাছেও অস্বস্তিকর ঠেকে এড়িয়ে যাওয়ার মতো হালকা বিষয়ও এটা নয়, অথচ অন্য কোনো বিশেষ পথও খুঁজে পাইনি। তবে ওরিয়েন্টালিজম-এর ভূমিকায় এডওয়ার্ড সঈদ এই personal dimension বিষয়ে গ্রামশির প্রিজন নোটবুক থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে পদ্ধতিগতভাবে এটাকেই সমর্থন বা আত্মপক্ষ সমর্থনে দাঁড় করিয়েছিলেন:
“ প্রিজন নোটবুক-এ গ্রামশি বলেছিলেন: ‘The starting-point of critical elaboration is the consciousness of what one really is, and is ‘knowing thyself’ as a product of the historical process to date, which has deposited in you an infinity of traces, without leaving an inventory.।”
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.