
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর অদ্ভুতুড়ে সিরিজের প্রথম বই Manojder Adbhut Bari pdf মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি pdf ডাউনলোড করুন ও Manojder Adbhut Bari pdf পড়ুন।

Manojder Adbhut Bari pdf সূচিপত্রঃ
১. ফটোটা কার
২. সারা উঠোনে ডালবাটা
৩. বরদাচরণের পড়ে যাওয়ার শব্দে
৪. হরিণগড়ের রাজা গোবিন্দনারায়ণ
৫. মনোজদের বাড়ির অবস্থা বেশ থমথমে
৬. ভজবাবুকে খুঁজতে বেরিয়ে
Manojder Adbhut Bari pdf নমুনাঃ
[এই উপন্যাসের শেষ দিকে একটা দৃশ্য আছে, যেখানে ভজবাবু ডাকাতের দল নিয়ে রাজবাড়ি লুট করতে যাচ্ছেন, সেই দৃশ্যে ভজবাবুর মুখে কিছু গান রয়েছে। এই গানগুলি লিখে দিয়েছেন বিখ্যাত কবি শ্রীনীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।]
মোহন রায়ের বাঁশি – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় Mohon Rayer Bashi pdf – Shirshendu Mukhopadhyay
ফটোটা কী করে যে মনোজদের বাসায় এল, তা কেউ জানে। ফটোটা কার, তাও কেউ বলতে পারে না। মনোজদের বাড়িতে অনেকের ফটোর মধ্যে এই ফটোটাও বরাবর আছে। অথচ কেউ ঠিক করে বলতে পারে না যে, এটা কোত্থেকে কবে এসেছিল, ফটোর ছেলেটাই বা কে?
ফটোটা একটা ছেলের। তার বয়স হবে আট নয় বা দশ। একটা বাংলোবাড়ির সামনের বারান্দার সিঁড়িতে সে বসে আছে। সামনের বাগান থেকে বারান্দায় উঠতে মোট তিন ধাপ সিঁড়ি। ঠিক মাঝের ধাপে ছেলেটা বসে আছে, নীচের সিঁড়িতে পা, ওপরের সিঁড়িতে কনুই রেখে সে একটু পিছনে হেলে বসে আছে। তার পায়ে বুটজুতো আর মোজা, সাদা হাফপ্যান্ট, গায়ে ফুলহাতা সোয়েটার, আর সোয়েটারের গলার কাছে সাদা শার্টের কলার বেরিয়ে আছে। ছেলেটা দেখতে ভীষণ সুন্দর। বড় বড় চোখ, লম্বাটে মুখ, চোখা পাতলা নাক, গালগুলো ভরাট, কিন্তু লুচির মতো ফোলা ফোলা নয়। তার চুলে ডানদিকে সিঁথি, আর কপালটার অনেকখানি ঢেকে চুলগুলো পাট করা। ছেলেটা অল্প একটু হাসিমুখে চেয়ে আছে।
১৬ নম্বর ফটিক ঘোষ pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় 16 Number Fotik Ghosh pdf – Shirshendu Mukhopadhyay
সেই হাসি আর তাকানো এত জীবন্ত যে, যে-কোনও সময়ে ছেলেটা যেন কথা বলে উঠবে। ছবিটার মধ্যে আরও দুটো অদ্ভুত ব্যাপার আছে। ছেলেটার পিছনে যে বারান্দা, তাতে টেরছা হয়ে রোদ পড়েছে। বারান্দার পিছনে দরজা, দরজায় একটা গোলাপ ফুলের ছাপওলা পর্দা ঝুলছে। সামনে রোদ, কিন্তু পদাটা ছায়ায়, তাই পদার গায়ে গোলাপের ছাপ একটু অস্পষ্ট। আর সেই পদাটা একটুখানি সরিয়ে একটা মুখ উঁকি মেরে আছে। মুখটা খুবই অস্পষ্ট। শুধু সেই মুখে একটু হাসি বোঝা যায়। যেন কেউ হাসিমুখে ছেলেটার ছবি তোলানো দেখছে। কিন্তু সেই মুখটা ছেলের না মেয়ের, তা বোঝা যায় না। আরও একটা মজার ব্যাপার হল, ছেলেটার বাঁ দিকে একটা কাঁচের গেলাসে তিন পোয়া ভর্তি দুধ রয়েছে।
দুধ কিনা তা ঠিক করে বলা যায় না, তবে সাদামতো তরলটা দুধ ছাড়া আর কীই বা হবে। আর সেই প্রায় পৌনে এক গেলাস দুধে মুখ ডুবিয়ে দুধটা খেয়ে নিচ্ছে একটা বেশ বড়সড় মোটা বেড়াল। বেড়ালটার লেজও খুব মোটা। বোঝা যায়, ছেলেটা দুধ খাচ্ছিল, সেই সময়ে ফটো তোলাতে গিয়ে গেলাসটা পাশে রেখেছিল, আর তখন ছেলেটাকে অন্যমনস্ক দেখে বেড়ালটা চুপিচুপি এসে চুরি করে দুধ খেয়ে নিচ্ছে। ছেলেটা টের পায়নি। ছবিটার মধ্যে আরও কিছু কিছু জিনিস লক্ষ করা যায়। যেমন, বারান্দার নীচে বাগানের একটু অংশ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বাগানে অনেক গাঁদা, ক্রিসেনথিমাম, পপি ফুল ফুটেছে। বাংলোবাড়িটার টিনের চাল। বারান্দার ওপরে টিনের চালটার একটু ঢালু অংশ দেখা যায়। বারান্দার থাম বেয়ে একটা লতানে গাছ উঠেছে চালে।
মনোজ যে কতবার ছবিটা দেখেছে তার হিসেব নেই। ছবিটা দেখতে তার বড় ভাল লাগে। কেন ভাল লাগে তাও সে জানে না। যদি কখনও তার মন খারাপ হয়, বা কখনও কারও সঙ্গে ঝগড়া হয়, বা মায়ের ওপর অভিমান হয়, তখন সে এসে একা ঘরে ছবিটা বের করে চেয়ে বসে থাকে। ছবি থেকে ছেলেটাও তার দিকে হাসিমুখে চেয়ে থাকে। তখন মনোজের মনের মধ্যে কী যেন হয়, সে ভাবে-এই তো আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। তখন তার মন ভাল হয়ে যায়। মনোজ খুব ছেলেবেলা থেকেই তাদের বাড়িতে ছবিটা দেখে এসেছে। আর ছবিটা বেশ পুরনো, একটু হলদে-হলদে পুরনো ছাপও পড়ে গেছে তাতে। অর্থাৎ ছবিটা অনেক আগে ভোলা হয়েছিল, এবং ছবির ছেলেটা নিশ্চয়ই এখন আর ছোট নেই।
সে হয়তো অনেক বড় হয়ে এখন মনোজের কাকা বা বাবার মতো বড় মানুষ হয়ে গেছে। তবু ছবির ছেলেটাকে মনোজ বন্ধু বলেই ভাবে। ভাবতে ভাল লাগে। এই ছবিটার কোনও ঠিকানা নেই, কোথায় কবে তোলা হয়েছিল কেউ জানে না। তাই বাড়ির লোকেরা এই ছবিটা দেখলেই বেশ বিব্রত হত।
Manojder Adbhut Bari pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.