মৃন্ময়ী মন্দিরের তোপদার pdf – শিশির বিশ্বাস Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf – Sisir Biswas

মৃন্ময়ী মন্দিরের তোপদার pdf - শিশির বিশ্বাস Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf - Sisir Biswas

শিশির বিশ্বাসের Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf মৃন্ময়ী মন্দিরের তোপদার pdf ডাউনলোড করুন।

মৃন্ময়ী মন্দিরের তোপদার pdf - শিশির বিশ্বাস Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf - Sisir Biswas

Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf সূচীঃ

ভূমিকা
মহেঞ্জোদরোর মানুষ
একদা দ্বিগঙ্গে নগরে
রাজপ্রহরী
হার্মাদের মুখোমুখি
পুরন্দর সেদিন ছত্রভোগে
শিলালিপি কাহিনি
মৃন্ময়ী মন্দিরের তোপদার

Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf নমুনাঃ

অদূরে মৃন্ময়ীদেবীর মন্দিরে অষ্টমী পুজোর ঢাক বাজছে। জোড়বাংলো মন্দির দেখে সঙ্গীসাথিরা সেইদিকে গেছে। আশ্বিনের রোদ আজ কিছুটা চড়া-ই বলা যায়। বিষ্ণুপরে পুরোনো নগর-দুর্গের মস্ত তোরণ-দ্বারের কাছে উঁচু এক মাটির ঢিপি। সন্দেহ নেই, গড়ের প্রাচীরের অংশ। তারই উপর ডালপালা মেলেছে নবীন এক অশ্বত্থ গাছ। নিরিবিলিতে সেই গাছের ছায়ায় বসে ভাবছিলাম খানিক আগে গাইড ছেলেটির কথা। প্রসঙ্গত জানাই, এই জাতীয় ইতিহাস কেন্দ্রিক ট্যুরিস্ট স্পটে বেশিরভাগ গাইডই গালগল্প দিয়ে সময় কাটিয়ে দেয়। ট্যুরিস্টরাও তাই চায়। Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf

বিষ্ণুপরে এর আগেও এসেছি। তখনও দেখেছি, গাইড অনেকটা সময় পার করে দেয় মদনমোহন মাহাত্ম্য আর দলমাদল কামান নিয়ে। কীভাবে ভাস্কর পণ্ডিত তার বর্গিবাহিনী নিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল বিষ্ণুপুর। খবর, সেই রাতেই বর্গিবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়বে শহরের উপর। পরিত্রাণের আশায় রাজা গোপালসিংহদেব আছড়ে পড়েছেন আরাধ্য দেবতা মদনমোহনের পায়ে। ভক্তের সেই ডাক ভগবান ফেলতে পারেননি। সেই রাতে অনেকেই নাকি দেখেছেন, তেজি এক সাদা ঘোড়ায় চড়ে ঘন নীল পোশাক পরা বছর বারো বয়সের এক কিশোর ছুটে চলেছে নগরের দিকে। তার সারা শরীরে এক অপূর্ব দ্যুতি। রাতে সেই দৃশ্য যাঁরা দেখেছিলেন, তাঁরা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন মুহূর্তেই। কিন্তু তার পরেই ঘটেছিল এক আশ্চর্য ব্যাপার।

২৫টি সেরা ভূত pdf – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় 25ti Sera Bhoot pdf – Shirshendu Mukhopadhyay

রাতের নিস্তব্ধতা খানখান করে হঠাৎ গর্জে উঠেছিল নগর-দুর্গের দলমাদল কামান। সেই অপ্রত্যাশিত আক্রমণ সামাল দিতে পারেনি বর্গিবাহিনী। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে পালিয়ে বেঁচেছিল। ভোর সকালে হয়েছিল আর এক কাণ্ড। বর্গির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে রাজা গোপালসিংহদেব সদলবলে চলেছেন মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিতে। মন্দিরের সামনে আসতেই ছুটে এসে জোড়হাতে রাজার পায়ে আছড়ে পড়ল একজন। বিনীতভাবে বলল, ‘অপরাধ নেবেন না মহারাজ।’ Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf

লোকটা প্রতিদিন মন্দিরে দুধ-দই জোগান দেয়। রাজা জিজ্ঞাসু নেত্রে তার দিকে তাকাতে সে বলল, ‘মহারাজ, প্রতিদিনের মতো আজও ভোরে দুধ-দই নিয়ে আসছিলাম। হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়াল নীল পোশাক পরা বছর বারো বয়সের এক কিশোর। বারুদের কালিঝুলি মাখা সারা শরীরে ঘাম ঝরছে। আমি চোখ তুলে তাকাতে বলল, সারা রাত বর্গিদের সঙ্গে লড়াই করে বড্ড পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছি ভাই। তেষ্টাও পেয়েছে। Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf

‘মহারাজ, সেই মুখের দিকে তাকিয়ে আমি আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। সঙ্গে হাঁড়ি-ভরতি দুধ-দই যা ছিল সব ধরে দিয়েছি তাকে। সে-ও এক নিশ্বাসে সব খেয়ে শেষ করে ফেলল। তারপর যাবার সময় একটা সোনার বালা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, তোমার দুধ- দইয়ের দাম। তারপর আমাকে কিছু বলার অবকাশ না দিয়ে মুহূর্তে ঘোড়া ছুটিয়ে চলে গেল চোখের আড়ালে।’
গোয়ালার হাতে সোনার সেই বালা দেখে রাজা মুহূর্তে তাকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে বললেন, ‘বড়ো ভাগ্যবান রে তুই। স্বয়ং মদনমোহন আজ তোর হাত থেকে দুধ-দই খেয়ে গেছেন। চিনতে পারিসনি।

রাজার অনুমান যে ভুল নয়, তা প্রমাণ হতে দেরি হল না। দ্রুত মন্দিরে এসে সবাই দেখলেন, মন্দিরের দ্বার খোলা। পূজারি গভীর ঘুমে অচেতন। মন্দিরের গর্ভগৃহে বারুদের উগ্র গন্ধ। বেদিতে মদনমোহনের নীল পোশাকে বারুদের কালি। একহাতের সোনার বালা নেই। বিষ্ণুপুরে বেড়াতে এসে গাইডের মুখে এই গল্পটাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শুনতে পান সবাই। তবু নিরিবিলিতে বসে আজ গাইড ছেলেটির কথা ভাবছিলাম অন্য এক কারণে। এবারের মতো আগের বারও ছিলাম কলেজ রোডের এক গেস্ট হাউসে। ঝকঝকে পথের দু-দিকে দোকানপাট, হোটেল। বাস স্ট্যান্ডের দিকে এগোলে চমৎকার যদুভট্ট মঞ্চ আর স্টেডিয়াম। কিন্তু সেসব নয়, আমার চোখ আটকে গিয়েছিল অন্য এক ব্যাপারে। রাস্তার উপর দোকানের সাইনবোর্ডে কলেজ রোডের পাশে ব্র্যাকেটে লেখা ‘বইলাপাড়া’। বুঝতে অসুবিধা হয় না, জায়গাটার পুরোনো নাম বইলাপাড়া। কলেজ রোড নাম সাম্প্রতিক।

এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলাম কয়েকজনকে। কিন্তু সন্তোষজনক উত্তর পাইনি। এবার প্রথম সুযোগেই গাইডের কাছে পেড়েছিলাম ব্যাপারটা। উত্তর পাওয়া গেল প্রায় সাথে সাথেই। তিনি মৃদু হেসে বললেন, ‘ভালো প্রশ্ন করেছেন স্যার। এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে ভালো লাগলেও জানতে চায় না কেউ। তাই বলা হয়ে ওঠে না। আপনি জানতে চাইলেন তাই বলি, বিষ্ণুপুরের মল্লরাজারা ঘোরতর বৈষ্ণব ছিলেন বটে, সারা রাজ্য তথা নগর জুড়ে মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অনেক। তবে রাজ্য শাসনের ব্যাপারে বৈষ্ণব ছিলেন না। রীতিমতো কড়া হাতেই সেটা পালন করতেন। অপরাধীদের অন্য শান্তির সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হত। নগর-দুর্গের পরিখার কাছেই ছিল বধ্যভূমি। সেখানে নিয়ে গিয়ে রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে কোতল করা হত তাদের। কাজটা যারা করত তাদের উপাধি ছিল, বধিলা। বাস করত আজকের এই কলেজ রোড এলাকায়।

Mrinmoyee Mondirer Topdar pdf download link

Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply