নরকের দ্বার pdf – অভীক মুখোপাধ্যায় Naroker Dwar pdf – Avik Mukhopadhyay

নরকের দ্বার pdf - অভীক মুখোপাধ্যায় Naroker dwar pdf - Avik Mukhopadhyay
নরকের দ্বার pdf - অভীক মুখোপাধ্যায় Naroker dwar pdf - Avik Mukhopadhyay

অভীক মুখোপাধ্যায় এর উপন্যাসিকা Naroker dwar pdf নরকের দ্বার pdf ডাউনলোড করুন ও Naroker dwar pdf নরকের দ্বার pdf পড়ুন।

নরকের দ্বার pdf - অভীক মুখোপাধ্যায় Naroker dwar pdf - Avik Mukhopadhyay
নরকের দ্বার pdf – অভীক মুখোপাধ্যায় Naroker dwar pdf – Avik Mukhopadhyay

Naroker dwar pdf নরকের দ্বার pdf নমুনাঃ

সন্ধে ছ’টা বাজে। অমিতাভ কাজ সেরে শহর থেকে ফিরে এসেছে। আমার সঙ্গে টুকটাক কথা বলতে বলতেই কিছু গলাধঃকরণ করে নিচ্ছে। বেল বাজিয়ে বিনয়কে ডাকল তারই মধ্যে।

বিনয় ঘরে ঢুকতেই অমিতাভ বলল, “নাইটগার্ড দিয়ে কিচ্ছু হবে না। কাল রাতে পাহারায় থাকা সত্ত্বেও এত বড় একটা কাণ্ড ঘটে গেল। এভাবে একের পর এক খুন হতে থাকলে আমাদের কী ফেস করতে হবে বুঝতে পারছ? মানুষের সিকিউরিটি প্রশ্নের মুখে পড়ছে।”

আমি, অনুপম pdf – নবনীতা দেবসেন Ami Anupam pdf – Nabanita Debsen

এবার অমিতাভ আমার দিকে ফিরল, “কাকাবাবু, যে জন্য আপনাকে আসতে বলা, দেখলেন তো কিছুই কূল- কিনারা করতে পারছি না। কিছু একটা অদ্ভুত ব্যাপার আছে এই খুনগুলোর পিছনে। আপনি কি কিছু বুঝতে পারছেন?”

“পারছি। কিছুটা হলেও পারছি।”

 “কী করা উচিত আমাদের?”

“অপারেশনের দায়িত্ব এখন সরাসরি আমাদেরই নিতে হবে। আর নগেনের ওপরে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।”

“কিন্তু ওই বুড়ো হাবড়া লোকটাকে নজরে রেখে কী করব জানি না। সব জায়গায় ওকেই কমন লিংক পাওয়া গেছে, কিন্তু লোকটা…..

“লোকটাকে নজরে রাখতে হবে গোপনে। গ্রামের কেউ যাতে জানতে না পারে।”

“ঠিক আছে, আজ রাত থেকেই আমাদের অপারেশন শুরু হোক।”

রে দুর্বল হয়ে থাকলেও অমিতাভ আমার আর বিনয়ের সঙ্গে এসেছে। রাত এগারোটা থেকে আমরা মকসাদুলের বাড়ির সামনের রাস্তাটায় বসে রইলাম। এবারে অবশ্য আর্মস আনা হয়েছে। আমরা যখন এসেছি, তখন মকসাদুল বাড়িতেই ছিল, সেই সময়ই বাড়ির বাইরে থেকে দরজাটাকে আটকে দেওয়া হয়েছে যাতে সে বেরোতে না পারে। ঠিকই করা ছিল রাত বাড়লে মকসাদুলের গতিবিধি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ আমরা উঠলাম। অমিতাভ আর বিনয় পাঁচিল পেরিয়ে বাড়ির উঠোনে নামল। পুলিশকেও চোরের মতো কতকিছু করতে হয় তা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। ওরা ভিতর থেকে দরজার আগল খুলে দিতেই আমি দরজার বাইরের বাঁধনটা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলাম। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বাড়ির মতোই মকসাদুলদের বাড়িটাও মাটির। মাথায় খড়ের ছাউনি। দুটো ঘর।

একটা ঘরের সামনের দাওয়ায় খুঁটিতে বাধা চিমনিটা জ্বলছে। সেই ঘরটার দিকেই এগোলাম আমরা। দরজাটাকে ঠেলতেই খুলে গেল বিনা বাধায়। আবছায়ায় দেখলাম ভিতরে কেউ একজন বসে আছে। অমিতাভ টর্চের স্যুইচ মারতেই সাদা আলোর বন্যায় ভেসে গেল ঘরটা। তাতে যে দৃশ্য চোখে পড়ল, তাতে মা রটন্তী কালীর নাম বেরিয়ে এল মুখ দিয়ে। নিজের বুড়ি মায়ের বুকের ওপরে বসে মায়ের বুকটাকে ফেঁড়ে কলিজা বের করে এনে চিবাচ্ছে মকসাদুল!

দরজার দিকে পিঠ করে আছে সে। মাটির মেঝে রক্ত শুষতে পারছে না আর, ভাসিয়ে দিচ্ছে তলটা। একটা আঁশটে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। উফ, সে কী ভয়ানক দৃশ্য!

আমি মায়ের নাম স্মরণ করে একটু এগিয়ে গেলাম। জানি কোনও নিম্ন শ্রেণীর পিশাচ মকসাদুলের ওপর ভর করেছে। ও আমায় কিছুই করতে পারবে না। মকসাদুলকে ডাকলাম, “মকসাদুল…’

কচকচ করে কলিজা চিবোনোর শব্দটা বন্ধ হয়ে গেল। অদ্ভুত ভাবে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে ফিরে তাকাল মকসাদুল।

তার বীভৎস মুখটা দেখলে হাড় হিম হয়ে যাবে। চোখের মণি নেই, সবটাই সাদা। দাঁতগুলো অসম্ভব তীক্ষ্ণ আর বড় হয়ে উঠেছে। দু’ কষ দিয়ে বেরিয়ে থাকা দুটি ভয়ানক শদন্তের গা বেয়ে নেমে আসছে তাজা রক্তের ধারা। হাতে থাকা মাংসের টুকরোটাকে দাঁতে ধরে সে টান মারল, হাতের পেশিগুলো ফুঁসে উঠল তেজি গোখরো সাপের মতো। গলা থেকে পৈশাচিক একটা গর্জন বেরিয়ে আসছে ‘গরগর…’ করে।

ভয়াবহ এই দৃশ্য দেখে ঠিক থাকতে না পেরে অমিতাভ একটা বোকার মতো কাজ করল। ফায়ার করে বসল পিশাচরূপী মসাদুলের ওপরে। কিন্তু হাত কেঁপে যাওয়াতেই হোক কিংবা পিশাচের ক্ষিপ্রতার কারণেই হোক সেই বুলেট নকসাদুলকে ছুঁতেও পারল না। হিংস্র পশুর মতো একটা জোরালো হুঙ্কার দিয়ে পিশাচটা একলাফে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় অমিতাভ আর বিনয় দুজনেই উলটে পড়ে গেল ঘরের মেঝেতে। রক্তে গা মাখামাখি হয়ে গেছে। আমি ছুটলাম পিশাচের পিছনে, কিন্তু পাত্তা করতে পারলাম না। প্রস্তুতি ছিল না আমার। নিমেষে সে যে কোথায় উধাও হয়ে গেল, কে জানে!

“কী বুঝছেন?” থানায় বসে অমিতাভ এখনও পর্যন্ত বিষয়টা বিশ্বাস করতে পারছে না। অতিলৌকিক ব্যাপার কিছু আছে এটা ওর সন্দেহ হয়েছিলই, কিন্তু এই বীভৎসতা ও অনুমান করতে পারেনি।

“বুঝছি অনেক কিছুই। যা আন্দাজ করেছি, তা হলে এই গ্রামের সমূহ বিপদ। এবং পরে সেই বিপদ গ্রামের বাইরেও ছড়াবে। আপাতত খুব সাবধানে পা না ফেললে যে কোনও সময় যে কেউ মারা পড়তে পারে।”

“আরও মৃত্যু?”

“যে পিশাচের মুখোমুখি কাল আমরা হয়েছিলাম, যে শয়তানি শক্তির সঙ্গে আমাদের মোকাবিলা হতে চলেছে, তা এই জগতের নয়, অমিতাভ। কেউ তাকে জাগিয়ে আমাদের জগতে ডেকে এনেছে।”

“এই জগতের নয় মানে?”

আমার উত্তর দেওয়ার আগেই বিনয় বলে উঠল, “কাকাবাবু সম্ভবত অন্য ডায়মেনশনের কথা বলছেন। আমাদের এই জগতের মাত্রার বাইরেও অন্যান্য অনেক মাত্রা বা ডায়মেনশন আছে। মাত্রাগুলো একে অপরের সঙ্গে জালের মতো জড়িয়ে রয়েছে।”

“ঠিক ধরেছ, বিনয়। যতদূর জানি, ভাগবত পুরাণের মতে মোট আঠাশখানা নরক আছে। তাদের মধ্যে নবম আর ত্রয়োদশতম নরক হল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। নবম নরকের নাম অন্ধকূপ। সেখানে সময় বিপরীতগামী। যে ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় কীট পতঙ্গদের হত্যা করে, তাকে অন্ধকূপে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয় মৃত্যুর পরে।

তার দ্বারা নির্যাতিত কীট পতঙ্গের দল তখন তাকে নির্যাতন করতে থাকে। বন্দি অবস্থায় সে দিনরাত সেই কূপে অন্ধ হয়ে ছুটে বেড়ায় আর কষ্ট পায়। বিভিন্ন লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে অন্ধকূপ থেকেই এই পৈশাচিক শক্তি উঠে এসেছে। তবে এটা ত্রয়োদশ নরকও হতে পারে, সেই নরকের নাম – কৃমিভোজন, মৃত্যুর পরে মানুষ কৃমি হয়ে জন্ম নেয়, অন্য কৃমিকে সে খায়…. অন্য কৃমিরা তাকে খায়; সেখানে সময়ের কোনও অস্তিত্ব নেই। এখন একটি নির্দিষ্ট বিষয় না জানলে আমি স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারব না। আগে সেটাই জানা দরকার।”

“তাহলে এখন কী করা দরকার?”

“কাল অত রাতে ওই পরিস্থিতিতে যে কাজটা করা সম্ভব হয়নি, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এখনই একবার মকসাদুলের বাড়ি যেতে হবে আমাদের।”

“এখনই?”

“হ্যাঁ, এখনই। বিনয়, তোমার হাতে ঘড়ি নেই না? অমিতাভ, তুমিও হাতঘড়ি ব্যবহার করো না দেখছি।”

“আজকাল মোবাইলেই কাজ চলে যায় তো। তাই…” বিনয় প্রশ্ন করল, “হাতঘড়ি কী কাজে লাগবে?” “সেটা নিয়ে গেলেই দেখতে পাবে।”

অভীক মুখোপাধ্যায় এর উপন্যাসিকা Naroker dwar pdf নরকের দ্বার pdf ডাউনলোড করুন এখান থেকে ও Naroker dwar pdf নরকের দ্বার pdf পড়ুন এখান থেকে

Be the first to comment

Leave a Reply