অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা – অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf – Abhijnan Raychowdhury

অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা - অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf by Abhijnan Raychowdhury
অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা - অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf by Abhijnan Raychowdhury

অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা pdf download by অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf by Abhijnan Raychowdhury pdf book

অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা - অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf by Abhijnan Raychowdhury
অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা – অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf by Abhijnan Raychowdhury

Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা pdf নমুনাঃ

আজ স্কুল ছুটি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অভির মনটা আজ সকাল থেকে একদম ভালো নেই। প্রথমত যে ছোট বেড়ালের বাচ্চাটা গত কয়েকদিন ধরে বাড়ির আশেপাশে ঘুরঘুর করছিল, যাকে কোলে নিয়ে অভি গতকাল মাছের কাঁটা খাইয়েছিল, সে বাচ্চাটা আজ মারা গেছে। কেন জানে না।

কিছু দূরে একটা আমগাছের নীচে বাচ্চাটা পড়ে ছিল। কিন্তু নড়ছিল না। অনেকক্ষণ সাড়া না পেয়ে রহিমচাচাকে দেখাতে রহিমচাচা বলল যে ও আর বেঁচে নেই। রহিমচাচার কথামতো কিছু দূরে মাটি চাপা দিয়ে দিয়েছে অভি। তারপরে বেশ খানিকক্ষণ কেঁদেছে ওটার জন্য।

কিশোর ভারতী ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পিডিএফ খুশিয়াল গল্প সংখ্যা Kishore Bharati 5 February 2021 Magazine pdf

সেটাই অবশ্য মনখারাপের একমাত্র কারণ নয়। মার শরীর একদম ভালো নেই।

মা এত বেলা অব্দি কোনোদিন শুয়ে থাকে না।

কিন্তু আজ সকালে অনেক বেলা অব্দি শুয়ে ছিল। মার যে একটা শক্ত অসুখ হয়েছে তা বেশ বুঝতে পারে অভি। মার হাত ধরে আজকে সকালে অনেকক্ষণ খাটের পাশে বসেছিল অভি। মার চোখ থেকে শুধু ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ছিল। অভির খিদে পেয়েছিল, কিন্তু তবু মুখে বলেনি।

পরির সে বুদ্ধি নেই। পরি অভির থেকে তিন বছরের ছোট। সারাক্ষণ পুতুল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তার মধ্যেই অভির সম্বন্ধে নালিশ করছিল- বুঝলে মা, দাদা না কাল আমার একটা পুতুল ভেঙে দিয়েছে।

তা ভাঙবে নাই বা কেন! ওর কালির পেনটা যে পরি তার খানিক আগেই ভেঙে দিয়েছিল। সেটা বুঝি তেমন কিছু নয়! ওটাই ওর একমাত্র কালির পেন ছিল। বাবার কিনে দেওয়া।

অভি সেটাই বলতে গিয়ে হঠাৎ করে অন্য ভাষায় কথা বলে উঠেছিল—ইকিচা চান পিকাই রুদা। মা শুয়ে শুয়ে ওকে লক্ষ্য করে কী যেন বলছিল। অভি সে কথা বুঝছিল না।

এখানেই অভি সবার থেকে আলাদা। ও মাঝেমধ্যে একটা অন্য ভাষায় কথা বলে ওঠে। কোথা থেকে শিখেছে কে জানে! কেউ সে কথার অর্থ বোঝে না। হঠাৎ করে মুখে চলে আসে। তখন অন্য কারও কথা বোঝে না। আজও তাই হয়েছিল বেশ কিছুদিন বাদে।

যখন অভির বাবা ছিল, তখন অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কেউ সমস্যাটা বুঝে উঠতে পারেনি। এমন এক অদ্ভুত ভাষায় তখন ও কথা বলে যে সেটা কেউই বুঝতে পারে না। কীভাবে ওই ভাষা শিখল, যা বলে তার অর্থ কী, বা আদৌ কোনো অর্থ আছে কি না, কোনো ডাক্তারই কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তবে একটা বিষয়ে সবাই একমত, এর সঙ্গে পৃথিবীর কোনো চেনাজানা ভাষারই মিল নেই।

হ্যারেৎজ – অভীক মুখোপাধ্যায় Haaretz by Avik Mukhopaddhay

অভির বয়স এখন বারো বছর। ও মাঝেমধ্যে এরকম কথা বলত বলে ওকে নিয়ে ক্লাসের কিছু দুষ্টু ছেলে আগে মজা করত। তাদের কাজই ছিল ওকে খ্যাপানোর চেষ্টা করা। আগে অভি রেগে যেত। এখন রাগে না। তাই তারাও আজকাল বিশেষ মজা পায় না। কিন্তু অভির নিজেরই অবাক লাগে ও এই ভাষাটা শিখল কী করে!

ওর শুধু মনে হয় এমন আরও কেউ নিশ্চয়ই আছে যে এ ভাষা জানে। শুধু তাকে খুঁজে বার করতে হবে। জানতে হবে কোথায় এ ভাষা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে সন্ধান ও এখনও পায়নি।

ওর সবথেকে প্রিয় জায়গা হল ওর গ্রামের লাইব্রেরি। প্রচুর বই আছে ওখানে। মাঝেমধ্যেই ওখানে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করে অভি। বিশেষ করে টিনটিনের আর বাঁটুল দি গ্রেটের কমিকসের বইগুলো ওর খুব পছন্দ।

লাইব্রেরিয়ান দেবব্রতবাবুর মতো ভালো মানুষ খুব কম হয়। গ্রামের লাইব্রেরি। আগের থেকে পাঠক অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পড়ার আগ্রহ অনেক কমে গেছে। সেখানে অভির মতো পাঠক যে স্কুলের পরে নিয়মিত আসে, সেটা দেখলেই মন ভালো হয়ে যায় দেবব্রতবাবুর। নতুন কোনো কমিকসের বই এলেই আগে থেকে অভির জন্য সরিয়ে রেখে দেন দেবব্রতবাবু।

অভি মন্ত্রমুগ্ধের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই নিয়ে বসে থাকে। এত মনোযোগ দিয়ে যে কী পড়ে, কী বোঝে কে জানে। কোনোদিন অভি লাইব্রেরি না এলেই দেবব্রতবাবু ওর বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন।

আজ সকাল থেকে মন ভালো না থাকায় অভি লাইব্রেরিও যায়নি। পরেশ কাকুদের পুকুরের পাশে বেদিতে বসে অনেকক্ষণ ধরে মাছ ধরা দেখছিল। রাজেনবাবু ওই পুকুরে মাছ ধরতে আসেন। সারাদিন ছিপ ফেলে জলের দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন। মাঝেমধ্যে বেশ বড় মাছ ধরলে অভিকে দেখান। অভির পাশে বসে দেখতে বেশ লাগে। ফাতনা ওঠা নামা, মৃদু কম্পন। একটা কিছু যেন যে-কোনো সময়ে হতে চলেছে।

আজ খুব জোর হাওয়া দিচ্ছে। দূর থেকে একটা কালো মেঘ খুব তাড়াতাড়ি মাথার উপরের আকাশে ভিড় করছে। ঝড় আসছে।

রাজেনবাবু পান খেতে খেতে বলে উঠলেন – বাড়ি ফিরে যা অভি। জোর ঝড় আসছে। এরপর পুরো ভিজে যাবি। ওই দেখ, আকাশের দিকে তাকা। বলে আকাশের দিকে আঙুল তুলে বলে উঠলেন – শিগগির পালা। এল বলে।

বলে উনি তাড়াতাড়ি করে মাছের চারা, ছিপ সব নিয়ে উঠে পড়লেন।

অভির উঠতে ইচ্ছে করছিল না। ওর মনের মধ্যেও একইরকম ঝড় চলছে। মা কি তাহলে সত্যি বাঁচবে না? ডাক্তার যেন সেদিন সেরকম কিছুই কথা বলছিল বড়মামার সঙ্গে। অভি খানিকটা দূর থেকে শুনেছে। তাহলে ওর নিজের বলতে কে থাকবে? পরি? পরি খুব দুষ্টু। শুধু পুতুল নিয়ে বসে থাকে। কোনো কিছুই খেলতে পারে না। আর সারাক্ষণ ওর নামে নালিশ করে।

তা ছাড়া এই মুকুন্দপুর ছাড়া আর কিছুই যে চেনে না অভি।

এর মধ্যে জোর ঝড় শুরু হয়ে গেল। গাছের ডাল, পাতা হঠাৎ করে উড়ে আসতে থাকল চারদিক থেকে। পুকুরের জল পাতায় ঢেকে যেতে লাগল। জোর হাওয়ায় জল যেন চঞ্চল হয়ে উঠল। একঝাঁক হাঁস মাথার উপর দিয়ে ডাকতে ডাকতে উড়ে চলে গেল।

অভির মনে হচ্ছিল যেন কেউ ম্যাজিক করে অন্ধকার করে দিয়েছে চারদিক। মাঝেমধ্যে আকাশ চিরে বিদ্যুৎ ঝলসে উঠছে। আর কড়কড় করে আওয়াজ।

হঠাৎ চমকে উঠল অভি। ও একা নেই। ওর পাশে একটা লোক এসে দাঁড়িয়েছে। তাকে যেন একটু অন্যরকম দেখতে। তার গায়ে হাঁটু অব্দি কালো পোশাক। এরকম পোশাক ও কাউকে কোনোদিন পরতে দেখেনি। মাথায় একটা কালো টুপি।

লোকটার গায়ের রংও যেন স্বাভাবিক নয়। একটু বেশি হলদেটে।

লোকটা ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল— চিকিনা বুরু বুরু জুয়া। অর্থাৎ তোমার এখানে এখন আর থাকা উচিত নয়। যে-কোনো সময় এখানে বজ্রপাত হতে পারে। বাড়ি চলে যাও।

অভি চমকে উঠল। লোকটা তো ওর সেই অজানা ভাষাতেই কথা বলল, যা অন্য কেউ বুঝতে পারে না। ও অবাক হয়ে বলে উঠল— কে তুমি?

লোকটা সেই ভাষাতেই হেসে ফের বলে উঠল— তোমার বন্ধু। যাও, আর এখানে থেকো না। তবে সামনেই তোমার অনেক বিপদ। সাবধানে থেকো। নিজের উপরে বিশ্বাস রেখো।— বলেই লোকটা আবার পুকুরধারের সরু রাস্তাটা দিয়ে চলে গেল।

সংবিৎ ফিরে পেতে অভি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পিছু পিছু গিয়েও লোকটাকে আর দেখতে পেল না। কোথায় গেল লোকটা?

খুব আনন্দ হয়েছে ওর। তাহলে অন্তত পৃথিবীতে আর-একজন আছে, যে ওর ওই ভাষা বোঝে। কিন্তু এই লোকটাকে তো আগে কোনোদিন গ্রামে দেখেনি। কোথা থেকে এল? ও এগিয়ে চলল বাড়ির দিকে।

অভিজ্ঞান রায়চৌধুরীর Ovi O Concentration Camper Achena Chaleta pdf অভি ও কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অচেনা ছেলেটা pdf download করুন এখান থেকে বা পড়ুন এখান থেকে

Be the first to comment

Leave a Reply