নবনীতা দেবসেন সম্পাদিত পঞ্চকন্যা pdf ডাউনলোড করুন। Panchakanna pdf writen by Nabanita Debsen
৷৷ পঞ্চকন্যা pdf বিষয়ে ৷৷
পঞ্চকন্যা ‘আমাদের পাঁচজন সইয়ের নির্বাচিত গল্প সংকলন। প্রতিভা বসু (১৯১৫) থেকে সুচিত্রা ভট্টাচার্য (১৯৫০) পর্যন্ত আমরা পাঁচজন এখানে উপস্থিত হয়েছি। কল্যাণীয় নিমাই গরাই প্রস্তাবটি দিয়ে বললেন ‘সইমেলা- বইমেলা ২০০৬’ এ-বইটি প্রকাশ করতে চান। অতি সম্প্রতি আমাদের জ্যেষ্ঠতমা ‘সই’ প্রতিভা বসুকে আমরা হারিয়েছি। আমার মনে হল তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এর চেয়ে সুন্দর উপায় আর হতে পারে না। প্রতিভা বসু কৌতুকভরে নিজেকে ‘হেড-সই’ বলে অভিহিত করতে ভালোবাসতেন। এ-বই আমাদের ‘হেড সই’ দেখে যেতে পারলেন না।
শ্রদ্ধেয় শিল্পী শ্রীরামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বইটি অলংকৃত করে আমাদের কৃতজ্ঞ করেছেন।
সইমেলা-বইমেলা
কলকাতা ২০০৬
বিনীত নবনীতা দেব সেন
পঞ্চকন্যা pdf রিভিউঃ
পঞ্চকন্যা বইয়ে মূলত পাঁচ কিংবদন্তি লেখিকার জীবন কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছ। তারা হলেন – প্ৰতিভা বসু, মহাশ্বেতা দেবী, নবনীতা দেব সেন, বাণী বসু, সুচিত্রা ভট্টাচার্য। এই পাঁচজন কিংবদন্তি লেখিকার প্রত্যেকেই তারা নিজ নিজ অঙ্গনে নিজেদের স্বকীয় লিখনি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে সকলের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছেন।
প্ৰতিভা বসু আধুনিক কালের জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক। এক সময়ের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীও। স্বামী বুদ্ধদেব বসু। একাধিক গল্প, উপন্যাস ও স্মৃতিকথাধর্মী রচনার অধিকারী প্রতিভা বসুর স্নিগ্ধ রচনাভঙ্গি এবং কাহিনি বর্ণনার অনায়াস সাবলীলতা পাঠকদের মুগ্ধ করেছে।
মহাশ্বেতা দেবী এ যুগের অত্যন্ত শক্তিশালী লেখক। সমাজকর্মী। লেখালেখির শুরু পঞ্চাশের দশকে। প্রথম বই ‘ঝাঁসির রাণী’ ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হয়। জনজাতি গোষ্ঠী ও সমাজের পিছিয়ে-পড়া মানুষের কাহিনিকার হিসেবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি।
নবনীতা দেব সেন জনপ্রিয় কবি, কথাসাহিত্যিক এবং চিন্তাশীল প্রবন্ধকার। দেশ-বিদেশের বহু অভিজ্ঞতা ও কৌতুকপ্রবণতা তাঁর রচনার বিশেষ আকর্ষণ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। তাঁর বিশিষ্ট রচনা ‘করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে’।
বাণী বসু আজকের দিনের অন্যতম শক্তিশালী লেখক। দক্ষ অনুবাদক। লেখালেখির জীবন অনেকদিনের নয়, কিন্তু পাণ্ডিত্য ও প্রসাদগুণে সাহিত্যজগতে অচিরেই নিজেকে অপরিহার্য করে তুলেছেন এই লেখক। তাঁর বিশিষ্ট রচনা ‘মৈত্রেয় জাতক’।
সুচিত্রা ভট্টাচার্য এখনকার অত্যন্ত জনপ্রিয় ও শক্তিশালী কথাসাহিত্যিক। কাহিনি বুননের অনায়াস স্বচ্ছন্দ গতি ও বৈচিত্র্য তাঁকে সাহিত্যজগতে স্বতন্ত্র স্থানের অধিকারী করে তুলেছে। ‘কাছের মানুষ’ ছাড়াও অনেক গল্প উপন্যাস লিখে তিনি পাঠকমন জয় করেছেন।
বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্পের ধারায় নিজস্ব স্বকীয়তা ও বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে লেখায় নিজ নিজ জায়গায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এই পাঁচ মহিষী লেখিকার কিছু ছোট গল্প নিয়েই মূলত পাঁচ কন্যা বইটি সম্পাদিত হয়েছে। বইটির চমৎকার রচনা শৈলী পাঠক মনে ব্যাপক সাড়া ফেলবে তাতে বিশ্বাসের কমতি থাকা উচিত নয়। পাঠক বইটি পড়লে এই পাঁচ মহান লেখিকা সম্পর্কে পাঠকের ছোটগল্পের ধারণা ও বৈচিত্রতা সম্পর্কে অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধিত হবে ও ছোট গল্প পড়ার আগ্রহে আরো বাড়তি মনোযোগ তৈরি হবে বলে আশা করি। সাধারণ পাঠক বইটি সাদরে গ্রহণ করেছে বলেই পঞ্চকন্যা pdf বইটির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সে জন্যই আপনাদের নিছক বিনোদনের জন্য বইটি শেয়ার করা।
পঞ্চকন্যা pdf নমুনাঃ
আমরা সেই সময়টায় চুঁচুড়া শহরে বাস করছিলাম। বাবা চাকরি করে এক বছরের ছুটি নিয়ে ব্যবসায় বড়োলোক হবার বাসনায় এর ওর তার পরামর্শ গ্রহণে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি সরল মানুষ, সৎ মানুষ এবং জাগতিক চাতুর্য বিষয়ে বিশেষভাবে অজ্ঞ। সুতরাং বলাই বাহুল্য কিছুকালের মধ্যেই নিজের সমস্ত অর্থ সমূলে অর্পণ করে ভয়ঙ্করভাবে প্রতারিত হয়ে ব্যাজার মুখে দিনাতিপাত করছিলেন।
চুঁচুড়ায় আমরা আমাদের পিসিমার বাড়িতে ছিলুম। মা আর পিসিমা গলায় গলায় বন্ধু, আর আমি পিসিমার নয়নমণি। একমাত্র মেয়ে হয়ে জন্মানোর জন্য সকল আদরই একা আমার ওপর বর্ষিত হওয়ায় আমার দিন বড়ো সুখে অতিক্রান্ত হচ্ছিল।
পিসিমার বাড়িটি বেশ বড়ো ছিল। যদ্দূর মনে পড়ে ঘরের সংখ্যা পাঁচ- ছয়খানার কম নয়। এবং সব ঘরেই পিসিমার পুষ্যি। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন, সুতরাং সকলের সন্তানই তাঁর সন্তান। ভাগ্নে ছিল, মা ডাকা একটি ছাত্র ছিল, আর ছিলাম আমরা। সেই ভরা বাড়িতে সবাই মিলেমিশে খুব আনন্দে কালাতিপাত করা যাচ্ছিল।
শুধু একজন মানুষই পিসিমার আশ্রিত না হয়ে বাইরে থেকে হই-হল্লা করে মাতিয়ে রেখে চলে যেতেন, তিনি আমার মামা। মামা হস্টেলে থাকতেন কলকাতায়। বি. এস. সি পড়তেন। শনি-রবি তো আমাদের সঙ্গেই কাটত, অন্যান্য দিনও তাঁর উপস্থিতি বাদ যেত না। মামার ধরন-ধারণ বড়ো সরব এবং নিষ্ঠুর ছিল।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.