অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত এর Premer Galpo pdf প্রেমের গল্প pdf বইটি সম্পুর্ণ ফ্রীতে ডাউনলোড এবং অচিন্ত্যকুমারের শ্রেষ্ঠ গল্প Premer Galpo pdf পড়ুন।
Premer Galpo pdf প্রেমের গল্প pdf সূচিপত্রঃ
এক রাতি
মগের মুলুকে
ধরা বিয়ে
খিল
দোলনা
যশোমতী
ঘৃণা
সরবাণ ও রোস্তম
জমি
নরেবান,
তিরী
হুইসল
প্রাসাদশিখর
Premer Galpo pdf প্রেমের গল্প pdf নমুনাঃ
রাত এখন ক’টা? গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড দিয়ে একটা মোটর চলে গেল পশ্চিমে। যত রাতেই হোক, দাঁড়াও এসে জানালার সামনে দেখতে পাবে একটা মোটর সাঁ করে বেরিয়ে গেল। কোথায় যায় কোথায় থামে কে জানে।
শীতের শেষে বসন্তের বৃষ্টি। শীতকে মনে ঝিরঝির বৃষ্টি নেমেছে। করিয়ে দেওয়ার বৃষ্টি। আকাশের করুণা।
বৃষ্টির শব্দে পায়ের শব্দটি শোনা যাবে না। যদি আসে নিশ্চয়ই খালি পায়ে আসবে।
সবাই ঘুমবে শান্ত হয়ে।
অনেক রাতে হঠাৎ-ওঠা চাঁদের হাসিটির মত আসবে। কিংবা গহন অরণ্যে ভয়-পাওয়া কৃষ্ণসার হরিণীর মত। কিন্তু আসবে কি? কেউ আসে?
আজ যদি না আসে তবে আর আসবে কবে? এমন শুভরাত্রি বিধাতা ফরমায়েস দিয়ে তৈরি করিয়েছেন। জামাইবাব্দর মায়ের অসুখের খবর পেয়ে দিদি আর জামাইবাব, চলে গিয়েছেন কলকাতা। পরাশরবাব, হাসপাতালে। তার স্ত্রী কাছাকাছি কাকার বাড়িতে। উপরে শধে, ও আর ওর মা। মাকে একট, ফাঁকি দিতে পারবে না তো মেয়ে হয়েছে কেন?
প্রথম দিনের ঝগড়ার কথাটাই মনে পড়ছে ভবদেবের। একটা গাছ এসে পড়েছিল ভবদেবের এলেকায়। ধরবি তো ধর সেই গাছেই ফল ধরল।
গোলাপ গাছ। আর সেই ফলই নাশংস হাতে ছিড়ে নিয়েছিল ক্ষণিকা। ভেবেছিল কেউ দেখতে পাবে না বুঝি। তাড়াতাড়িতে ছিড়তে গিয়ে নরম ডালটাকে জখম করে ছেড়েছে।
‘ও কি ও ফল ছিড়লেন যে?” চকিতে সামনে এসে হমকে উঠেছিল ভবদেব।
‘এ গাছ আপনাদের ভাড়া দেওয়া হয়নি।’ রড় উপেক্ষায় পিঠ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছিল ক্ষণিকা।
‘সে কি কথা! ঘরের সামনের এ ফালিজমিটুকু যদি আমাদের, জমির উপরকার এ ফলে গাছও আমাদের। হাত বাড়ালেই ধরা যায় রীতিমত।
একেবারে আমার ঘর ঘে’ষে এই গাছ-কি অপূর্ব যুক্তি। মনে-মনে হেসেছিল নিশ্চয়ই ক্ষণিকা। যেহেতু হাত বাড়ালেই ধরা যায় সেহেতু আমার অধিকার! বাঁকা ভুর, সঙ্কুচিত কবে বলেছিল ক্ষণিকা, ‘কিন্তু এগাছ আপনারা পোঁতেননি, আমরা পাইতেছি—’
‘আপনারা তো আরো অনেক পাতেছেন। বাগান সাজিয়ে বিলিতি তারের বেড়া দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ফল হয়েছে একটাতেও ? গাছ পোঁতা আর তাতে ফল ফোটানো এক কথা নয়। পকুর অনেকেই কাটে কিন্তু পণ্য না থাকলে তাতে জল হয় না।’
কি অপূর্ব উপমা! উপেক্ষার ভঙ্গিতে আবার পিঠ ঘুরিয়েছিল ক্ষণিকা। দীর্ঘবন্ত ফলটা খোঁপায় গজতে-গাজতে বলেছিল, ফল যদি ফটে থাকে তবে ভাড়াটেদের পণ্যে ফোটেনি, যাদের বাড়ি তাদের পণ্যেই ফটেছে।’
“কিন্তু ছিড়ে নেবার সময় তো পূণ্যবানের ভঙ্গি বিশেষ ছিল না হাতে- চোখে। যেন কেউ দেখতে না পায় এমনি ভাবে তাড়াতাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে চোরের মত পালিয়ে যাওয়ার মতলব।’
‘নিজের পাঁঠা যে ভাবে খুশি সে ভাবে কাটব তাতে অন্য লোকের কি।’
‘কী হয়েছে রে ক্ষণ?’ আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বাইরের বারান্দায় বেরিয়ে এসেছিল নয়নী।
এক মূহুর্তে দেরি হয়নি বুঝে নিতে। কতদিন বহ, যত্নে দুই চোখের ভালোবাসা দিয়ে যে ফলটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিল ভবদেব, তা আর নেই। মোচড় খেয়ে ডালটাও হেলে পড়েছে। কতবার বলেছে নয়নী, ফলটিকে তুলে এনে ফলদানিতে রেখে দে। উত্তরে বলেছে, তেমন কেউ যদি থাকত দেবার মত তার জন্যে তুলে আনতুম। তেমন যখন কাউকে দেখতে পাচ্ছি না তখন গাছের ফল গাছেই থাক।
‘আমিই ফলটা ছিড়েছি দিদি। পিঠ ঘুরিয়ে খোঁপাটা দেখিয়েছিল ঘষা-ঘষা ওড়া-ওড়া চুলের শুকনো খোঁপার মধ্যে টাটকা একটা রক্ত ক্ষণিকা।
গোলাপ।
‘বা, চমৎকার।’ গাল ভরে হেসে উঠেছিল নয়নী। বলেছিল, ‘কেশবতী রাজকন্যের মাথায় উঠেছে ফলের আর কি চাই।’ অচিন্ত্যকুমারের শ্রেষ্ঠ গল্প Premer Galpo pdf পড়ুন।
বারো ভূতের গপ্পো pdf – সত্যজিৎ রায় Baro Bhooter Gappo pdf by Satyajit Ray
সন্দের করে হেসে উঠেছিল ক্ষণিকা। বিজয়িনীর ভঙ্গিতে মাথা উদ্ধৃত করে চলে গিয়েছিল সমৰ্থ থেকে।
কোথায় যাবে। অহঙ্কারে মাথা চাড়া দিয়ে চলতে গেলে আলতো খোঁপায় থাকবে কেন গোলাপ ! খসে পড়ে গিয়েছিল মাটিতে।
যাক পড়ে। নেব না কুড়িয়ে। পিছন ফিরে তাকিয়েও দেখব না।
সোজা চলে গিয়েছিল গরবিনী – সকালের রোদ্দুরে সারা গায়ে যৌবনের ঝলক দিয়ে।
ছিন্নবৃন্ত বিধ্বস্ত গোলাপটার দিকে তাকিয়ে ছিল ভবদেব। বিহ্বল বতাশ্রয় ছেড়ে মাটিতে লণ্ঠিত হয়ে পড়ে থাকলেও কম সন্দর নয় গোলাপ।
ইম্পিরিয়্যাল ব্যাঙ্কের ঘড়িতে ঢং করে একটা বাজল। এখনো ঘুমাতে যায়নি ভবদেব। চেয়ারে বসে সিগারেট টানছে। পরিপাটি করে বিছানা পাতা। একটিও ভাঁজ নেই, রেখা নেই। উচ্ছ্বাসিত কোমলতায় প্রসারিত হয়ে আছে। সমস্ত ঘর অন্ধকার। খানিক আগে একটা মোমবাতি জালিয়েছিল ভবদেব। পরে কি ভেবে নিবিয়ে দিয়েছে ফং দিয়ে।
অন্ধকারেই আসকে পথ চিনে। আকাঙ্ক্ষার তাপ লেগে-লেগে অন্ধকারই তার মূর্তিতে দীপায়িত হোক।
কিন্তু সত্যি কি আসবে? মুখের কথা?
বলে গেলেও আসা কি সম্ভব?
আসা কি এখনো বৃষ্টি চলেছে ঝিরঝির। এলোমেলো হাওয়া উঠেছে। দাদিকের দ, দরজাই ভেজানো ছিল এতক্ষণ। হাওয়ায় শব্দ হতে পারে ভেবে ছিটকিনি লাগাল ভবদেব । কথা আছে, ঠেলে যদি বোঝে দরজা বন্ধ, আঙুলের টোকা মারবে। তার দরকার হবে না। এ অঞ্চলে চলে এলেই অনায়াসে বুঝতে পারবে ভবদেব। হাওয়ায় পাবে তার গায়ের গন্ধ, শুনবে তার শাড়ির খসখস। অচিন্ত্যকুমারের শ্রেষ্ঠ গল্প Premer Galpo pdf পড়ুন।
হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে আলগোছে। মা আর মেয়ে এক ঘরে শোয়, হয়তো মা-ই এখনো আচ্ছন্ন হয়নি। অন্তত নিশ্চিন্ত হতে পারছে না ক্ষণিকা। প্রতীক্ষা করছে। এদিকে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের মোমবাতি।
নিয়তির পরিহাসের কথা কে না শুনেছে। হাতের পেয়ালা মুখে তোলবার আগে হাত থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে। নিজেকে প্রস্তুত করবার জন্যে আরেকটা সিগারেট ধরাল ভবদেব। অচিন্ত্যকুমারের শ্রেষ্ঠ গল্প Premer Galpo pdf পড়ুন।
Premer Galpo pdf প্রেমের গল্প pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.