অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় এর Roddure Jyotsnay pdf রোদ্দুরে জ্যোৎস্নায় pdf ডাউনলোড করুন ও রোদ্দুরে জ্যোৎস্নায় pdf পড়ুন।
Roddure Jyotsnay pdf রোদ্দুরে জ্যোৎস্নায় pdf নমুনাঃ
ছোট দাদু বললেন, এত বেলা হল, ‘ওবা এখনও এল না দেখছি। পদ্ম বলল, কতদূর দাহু?
– তা চার ক্রোশের মতো পথ হবে বলে এসেছিলাম, রাত থাকতে বের হয়ে পড়তে। যা রোদ, খুব কাহিল হয়ে পড়বে ছেলেটা।
পদ্ম আজকাল দাদুকে নানাভাবে সাহায্য করতে ভালবাসে। সে দাদুর পূজার আয়োজন করে দেয়। ঠাকুমা নিরামিষ ঘরে তবে সকাল সকাল ঢুকতে পারে। ঠিক সময় সবাই খেতে পায়৷ সে বলল, একুশটা তুলসী-পাতা দিলাম। এবং কি যে হয়, মাঝে মাঝে কোথাও দাদু অমঙ্গলের আভাষ পেলে ঠাকুরকে তুলসী দেন। আজও দেবেন বলেছেন। বাজার থেকে বড় চাপিলা মাছ এনেছেন দাছ। কি তাজা আর রূপালী রং। মাছ এলেই পদ্মর ছুটে যাবার স্বভাব। সে পুঁটলি থেকে মাছ খুলে কাঁসার থালায় মেলে রাখতে ভালবাসে। সামান্য জল দিয়ে রাখে। তার মাছ কুটে দিতে ইচ্ছে হয়। মার জন্য পারে না। ফুলু পিশি তাকে কিছুতেই মাছ কুটতে দেয় না। সংসারে তখন তার অভিমান বাড়ে।
অন্তর্গত খেলা pdf – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় Antargata Khela pdf – Atin Bandyopadhyay
অড়হড় লোকজন কত গেলবার বার। সারাটা সকাল দুপুর পদ্ম প্রায় ঘর বার হল গাছের নিচে সে গিয়ে দাড়িয়েছে কতবার। বাজার করে যারা ফিরেছে তাদের ভেতর থেকে কেউ না কেউ হয়তো সহসা ঢুকে যাবে বাড়িটাতে। পেছনে সেই ছোট মানুষটি। তার সমবয়সী না হলেও খুব বড় নয়। এভাবে তার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে।
আর এভাবেই পদ্ম দেখল দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। দাছ কিছুটা হঁটে গিয়েছিলেন। দাদুর খালি পা, লম্বা সাদা পৈতা, চুল সাদা, হাঁটুর নিচে কাপড় নামে না দাদুব। ফিরে এসে বললেন, আসছে।
আর শোনা মাত্র, পদ্ম ছুটে এসে বলল, মা আসছে। নীলদা সোনাপিসে আসছে। ঠাকুমাকে বলল। ফুলু পিশি, দাদা সবাইকে সে ডেকেহেঁকে বলে গেল, আসছে। এর গায়ে লতাপাতা আঁকা ফ্রক, এবং ছোট্ট বিষ্ণুনি দুলছিল পিঠে। এত হৈচৈব ভেতরও সে মার কোনও শব্দ পেল না। দাদু এসে ঠাকুমাকে বলল, বৌঠান, ওরা আসছে। পদ্ম ছুটে গেল পুকুরপাড়ে, তারপর আরও দূরে। এবং দত্তদের বাড়ি পার হয়ে কাছারি বাড়িতে নেমে গেল। সেখানে সে একটা লটকন গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দেখতে পেল, খারে কাচা কাপড় জামা পরে ‘কজন ক্লান্ত মানুষ। সে চিনতে পেরেই ডাকল, পিশেমশাই। পেছনে যে আছে তাকে দেখে, পলকে চোখ ফিরিয়ে নিল। যেন সে ভারি অপরিচিত মানুষ। নীলদা বলে ডেকে উঠতে পারল না।
সাগর বলল, কিরে তুই এখানে?
পিসেমশাইয়ের মতো সে
লজ্জায় সে কেমন গুটিয়ে
পদ্ম কাছে গিয়ে পিশেমশাইর পুঁটলিটা তুলে নিতে চাইল হাতে।
সাগর বলল, তুই পারবি না।
পদ্ম বঙ্গল, দাও না। আমি পারব।
সাগর বলল, এই তো এসে গেছি। নীল, এই পদ্ম। তোমার মেজমামার মেয়ে।
অনলের নিজের মামা বেঁচে নেই। মামীমা বাপের বাড়ি ছেলেমেয়ে নিয়ে চলে গেছে। মেজ মামা ওর মার খুড়তুতো ভাই । ছোট দাদুর দুই ছেলে। ওরা কোথায় বিহারের দিকে থাকে। বড়- জন কয়লা খনিতে একটা কি বড় কাজ করে। এবং এই পরিবারসসম্পর্কে তার ধারণা এত কম যে পদ্মকে দেখে কেমন প্রথমে গুটিয়ে গেল। পদ্মর গায়ে সুন্দর ফ্রক। পদ্ম কলকাতার মেয়ে বলে ভারি ফিটফাট। আর ওর হাঁটু পর্যন্ত ধূলোতে সাদা মুখ, ভারি বিশ্রি হয়ে গেছে ঘামে ভিজে। আয়নায় সে মুখ না দেখেও টের পায়, মুখটা পুড়ে গেছে তার রোদে।
হাঁদা ভোঁদা সমগ্র pdf – নারায়ণ দেবনাথ Hada Vhoder Somogro pdf – Narayan Debnath
ঘামের গন্ধ, যেন কাছে গেলেই বলবে, কি গন্ধ গায়! সে বাবার পেছনে, যেন পদ্ম ওকে দেখতে না পায়। পদ্ম আগে আগে যাচ্ছে, পুটলিটা কাঁথে নিয়েছে, পিসেমশাই তখন বলছেন—তোরা সবাই ভালতো, তোর বাবার চিঠি হয়েছে। ওঁর তো আসার কথা ছিল। পদ্ম খুব চটপট কথা বলতে পারে, যা বলার নয়, কখনও কখনও তাও বলে ফেলে, এবং অনলের খুক খুক করে হাসি পাচ্ছিল তখন। দত্ত বাড়ির নিবারণ দত্ত দেখে বলল, কি বড়বাবু অনেকদিন পর এদিকে আসা হল। পরিচিত মারও ছু একজন মানুষ বাবার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে- এই আপনার বড় ছেলে?
বাবা বলছেন, আমার না ঈশ্বরের। যেন আমার বললেই ঈশ্বরের সঙ্গে বিবাদ লেগে যাবে। তোমার কি হে, তো নিমিত্তি মাত্র। বাবা ঈশ্বরকে খুব ভয় পায়।
হয়ে যাচ্ছে তত ঈশ্বরকে বেশি তার ভয়।
তুমি কে, তুমি বাবা যত গরীব চার পাশে খাঁ খাঁ রোদ ছিল, এখন এই গাছপালার ভেতর ঢুকে যেন জুড়িয়ে গেল শরীর। তেষ্টায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। বার বার কোথাও জল খেতে চেয়েছে অনল, সাগর বলেছে, আরে ঐ তো এসে গেলাম ! বাবা অনেক দূরের পথ ঐ তো এসে গেছি বলে হাঁটিয়ে এনেছে। ছায়ার ভেতর ঢুকে ঝুপ করে বসে পড়তে ইচ্ছে হল অনলের। এক পা আর হাঁটতে ইচ্ছে করছে না। পা দুটো কেমন ভারি আর নির্জীব।
রোদ্দুরে জ্যোৎস্নায় pdf Download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.