সমরেশ মজুমদার এর Saatkahon pdf সাতকাহন pdf ডাউনলোড করুন ও Saatkahon pdf পড়ুন।
Saatkahon pdf সাতকাহন pdf কাহিনিঃ
কাকভোর বলে কিছু নেই এখানে। রাতটাকে একটানে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে দিন এসেই জাঁকিয়ে বসে। সেই যে সূর্যের উনুন জ্বলল সারা দিন ধরে চরাচর পুড়িয়ে খাক করে দিলেও শান্ত হয় না, দিন নিবে গেলেও তেতে থাকে চারপাশ অনেকক্ষণ। ঘড়িতে যখন প্রায় পাঁচটা, ছায়া সরতে শুরু করেছে পৃথিবীতে, দীপাবলী স্নান সেরে অফিসঘরে চলে এসেছিল। এই একটু সময় প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারা যায়। তার আবাস এবং অফিস একই বাড়িতে। পেছনের তিনটে ঘরে সংসার, সামনের তিনটে ঘরে অফিস। ভেতরের উঠোনে একটি গভীর কুয়া আছে। যার জল নামতে নামতে এখন আর চোখে দেখা যায় না। দড়ি নামিয়ে বালতিতে ভরে তুললেও ছেঁকে নিতে হচ্ছে। জষ্ঠি মাসেই যদি এই অবস্থা, আষাঢ়ে কি হবে।
ভগ্ন অংশ ভাগ pdf – মনোজ সেন Bhogna Angsh Bhag pdf – Monaj Sen
এখন অফিসে কারো আসার কথা নয়। তবে এসে পড়বে। এই সময় অফিস বসে ছটায়, দশটায় যে যার বাড়িতে। আবার সাড়ে তিনটেয় এসে সাড়ে ছটায় ফিরে যাওয়া। ওই সাড়ে তিনটের সময় আসাটায় কষ্টের, শরীর পুড়ে যায়। জানলা খুলে দিয়ে চেয়ারে বসল দীপাবলী । বড়জোর নটা পর্যন্ত এটাকে খুলে রাখা যাবে। ততক্ষণ হাওয়া না আসুক, আকাশ তো দেখা যাবে। চাবি ঘুরিয়ে ড্রয়ার খুলতেই চিঠিটা নজরে এল। গতকালের ডাকে এসেছে। একটা জবাব লেখা দরকার। কাগজ টেনে নিল সে।
‘অমল : আপনার চিঠি পেয়ে আরাম লাগল। মাসীমার শরীর ঠিক নেই জেনে অবশ্য ভাল লাগেনি। কি করছেন মশাই ভাল ডাক্তার দেখাচ্ছেন তো? এইটে লিখেই অবশ্য মনে হল আমি অবান্তর ভাবছি। মাসীমার ব্যাপারে আপনি অবহেলা করার মানুষ নন।
‘আমার কথা আপনি জানতে চেয়েছেন। আমি এখন যেখানে আছি সেখানে প্রকৃতির সঙ্গে সবুজের কোন সম্পর্ক নেই। রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানগুলো এখানে বসে স্বপ্ন বলেই মনে হয়। শ্রাবণে পথ ভুলে দুই-তিন টুকরো মেঘ যদি আকাশে আসে তাহলে স্থানীয় মানুষ মুগ্ধ চেখে তাকায় বলে শুনেছি। সারা বছরে সবসমেত চব্বিশ ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে এমন কথা কেউ বলতে পারেননি। মাটি ফেটে চৌচির। হাতে নিলে ঝুরুঝুরু ধুলো হয়ে ঝরে পড়ে। মাটিকে বেঁধে রাখে যে রস তার অস্তিত্ব নেই এখানে। নাই রস নাই, দারুণ দাহনবেলা-লাইনটা এইখানে এসে বড় সত্যি বলে বুঝেছি। সবুজ নেই কারণ গাছে পাতা নেই অথচ নিষ্পত্র গাছেরা দাঁড়িয়ে আছে।
স্বনির্বাচিত শ্রেষ্ঠ গল্প pdf – সমরেশ বসু Swanirbachita Shreshtha Golpo pdf
এই প্রকৃতিতে যেসব মানুষেরা বেঁচে আছে তারা জানে না কেন বেঁচে আছে! মেদ দূরের কথা, মাংস খুঁজে পাওয়া যাবে না কারো শরীরে। আমার কাজ এদের নিয়ে। ঢাল নেই তলোয়ার নেই তবু যুদ্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমার কাজের লোক একটা চমৎকার শিক্ষা দিল। সকালে বেরিয়েছিলাম। ফিরতে দুপুর। রোদে পুড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে অফিসে ফিরে মনে পড়ল আজ সকালে ওকে বাজারের টাকা দিতে ভুলে গিয়েছি । ঘরে এক ফোঁটা তরিতরকারি নেই।
Saatkahon pdf সাতকাহন pdf review
বইয়ের সারসংক্ষেপ:
উত্তরবাংলার চা বাগানে বড় হওয়া মেয়ে দিপাবলী,বন্ধুদের সাথে আড্ডা,লুকিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া নিয়েই জীবন তার ভালোই কাটছিল।হুট করে কাল বৈশাখি ঝড়ের মতো তার জীবনে নেমে আশে অন্ধকার এক ঝড়।বিয়ের এক দিনের মাথায় স্বামীর মৃত্যুতে তাকে মানতে হয়েছিল বিধবাদের সকল নিয়ম অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও।জীবন যেন নতুন করেই শুরু হয় আবার।এখানেই কি শেষ হয়েছিল দিপাবলীর জীবন নাকি শুরু হয়েছিল?
পাঠপ্রতিক্রিয়া:
বইটা দ্বিতীয় বার শেষ করেছি।তবুও যেন নতুন পড়তেছি এমন মনে হচ্ছিল।প্রথম কিনে যখন পড়তে চেয়েছিলাম দু পাতার বেশি পড়তে পারিনি।এত বড় বই এত ছোট ছোট লেখা পড়া অসম্ভব মনে হয়েছিল।তারপর একবছর রেখে দিয়েছিলাম।যখন আবার এই বইটা পড়তে ধরেছিলাম।তখন মনের অবস্থা বারোটা বেজে ছিল কিছু সমস্যার কারণে,ধীরে ধীরে যখন পড়া শুরু করেছিলাম বের হতে পারিনি এটা থেকে।এতটা মুগ্ধ কোন বই আমায় করেনি।নতুন ভাবে চলার অনুপ্রেরণা যেন প্রতি পাতায় পাতায় ছিল।
পড়তে গিয়ে প্রথমে রাগ লেগেছিল অনেকটা, শুধুমাত্র একটা ভুলের বোঝা তাকে তার জীবনের শেষ পর্যন্ত বড়ে বেড়াতে হবে কেন।অতীত চলে গেলেও এটার রেশ থেকেই যায় আজীবন।এটাই হয়েছিল দিপাবলির সাথে।সমরেশ মজুমদারের লেখা আমার এত্ত পরিমাণ মুগ্ধ করেছে বলার বাহিরে।
ইচ্ছা আগ্রহ থাকলে যে কতদূর যাওয়া যায় বইটা পড়লেই বুঝা যায়।কিছু কিছু ঘটনা এমন ভাবে লিখেছে যে সেটা থেকে অনেক গভীর শিক্ষা নেয়া যায় চাইলেই।কিছু কিছু ভুল আমরা জেনে বুঝে আঁকড়ে ধরে রাখি আজীবন এটা ঠাম্মা চরিত্র টার মধ্যেই তুলে ধরা হয়েছে।আবার অনুশোচনা যে কতটা ভয়ানক সেটাও ভালো ভাবেই বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।সব চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি একটা চরিত্র কে নিয়ে,মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগলে যে কতটা ভয়ানক হতে পারে মানুষ। আপন মানুষ গুলাই কেমন যে পর হয়ে যায় তখন।অদ্ভুত দুনিয়ার নিয়ম। আবার আরেকটা চরিত্র অবাক করেছে কত্ত অবিলায় নিজের খারাপ দিক গুলা মানুষের সামনে তুলে ধরেও দিব্যি চলাফেরা করে,কেউ কিছু বলার সাহস ও পায়না,ক্ষমতার জোর কি এতটাই বেশি যে খারাপ কে ভালো বানিয়ে দেয়?
বইটায় এত্ত কিছু আছে যা এভাবে তুলে ধরাও যাবে না,প্রতিটা চরিত্র কথা বলেছে পুরো বই জোরে। পার্সোনাল রেটিং: ৫/৫
Saatkahon pdf সাতকাহন pdf রিভিউঃ
সমরেশ মজুমদারের জন্ম উত্তর বাংলায়, তাই ওনার বেশীরভাগ উপন্যাসই উত্তরবঙ্গভিত্তিক। সাতকাহনও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে, সাতকাহনের কাহিনী উত্তরবাংলা থেকে বয়ে এসেছে কলকাতায়। সাতকাহন দেখিয়েছে নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় মেয়েদের শিক্ষার অবস্থা, সামাজিক অবস্থান। সাতকাহন মূলত নারীকেন্দ্রিক উপন্যাস। দীপাবলির জীবনের সাতকাহন। নারীসত্ত্বার যাবতীয় বাধা পেরিয়ে দীপার আইএএস হয়ে ওঠার সাতকাহন। তবে এন্ডিং টা আরোও একটু ভালো হতে পারতো বলে আমার ব্যক্তিগত মত।
Saatkahon pdf সাতকাহন pdf review
.”ভালোবাসা হলো বেনারসি শাড়ির মতো, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ।” সমরেশ মজুমদারের লেখা সাতকাহন হলো একজন সাহসী নারীর সংগ্রামের কাহিনী। যদিও এত বড়ো উপন্যাস ব্যাখা করা কঠিন। উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র দীপাবলি। তথাকথিত সামাজিক রীতিনীতি, ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজের জন্য বেঁচে থাকার কথা বর্ণিত আছে। বইটিতে দীপাবলির শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং চাকরিজীবন কে তুলে ধরা হয়েছে। ছোট থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে হার না মেনে এগিয়ে চলা। দীপাবলি চরিত্রটির অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মানবোধও প্রবল। এছাড়াও আছে ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা, সেখানকার মানুষজনের কথা। এককথায় অসাধারণ একখানা বই।
Saatkahon pdf সাতকাহন pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.