জসীম উদদীন এর Sojon Badiar Ghat pdf সোজন বাদিয়ার ঘাট pdf ডাউনলোড করুন ও Sojon Badiar Ghat pdf পড়ুন।
Sojon Badiar Ghat pdf সোজন বাদিয়ার ঘাট pdf ভূমিকাঃ
Sojon Badiar Ghat pdf এই পুস্তক প্রকাশে অধ্যাপক বিশ্বপতি চৌধুরী মহাশয় আমাকে নানাভাবে সাহায্য করিয়াছেন। হাসিমুখে পরের কাজ করিয়া দেওয়ার লোক তাঁহার মত একজনও নাই। তাঁহাকে ধন্যবাদ দিয়া আমার প্রতি তাঁহার স্নেহকে আর স্নান করিতে চাহি না। সোগর প্রতিম শ্রীমান শোভনলাল গঙ্গোপাধ্যায় এই পুস্তকের শব্দদুটিটি প্রস্তুত করিয়া দিয়াছেন। ঐমান আসাদ উদ্দৌলা শিরাজী, মৌলবী এম আসমত আলী ও আবদুর রশীদ খাঁ সাহেব এই পুস্তক প্রকাশে আমাকে সাহায্য করিয়াছেন।
শ্রীকল্যাণকর গুপ্ত কবিতা লিখিবার জন্য আমাকে একখানা খাতা উপহার দিয়াছিলেন। সে খাতায় এই পুস্তকের প্রথম পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করি। তাহার স্মৃতির সহিত, ছাত্রজীবনের সেই ওয়াই, এম, সি, এ হোটেলের আর আর বন্ধুদের স্মৃতিও এই পুস্তকে জড়িত থাক।
এই পুস্তকের চরিত্রগুলি সবই গ্রাম্য। তাহাদের মুখ দিয়া আমি যেসব কথার অবতারণা করাইয়াছি তাহাতে মাঝে মাঝে গ্রাম্য কবিদের রচনা হইতে পদবিশেষ জুড়িয়া দিয়াছি। তাহা ছাড়া এই পুস্তকের স্থানে স্থানে আমি পল্লীর গাথা-সাহিত্যের রচনারীতি অবলম্বন করিয়াছি। দৃষ্টান্ত স্বরূপ ‘সাক্ষী থাকিও চন্দ্র সূর্য্যা’ প্রভৃতি লাইনের কথা উল্লেখ করা যাইতে পারে। ইহাতে পল্লী গ্রামের পারিপার্শ্বিক রচনায় বিশেষ সুবিশ হইয়াছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার এই রচনারীতিকে কেহ কেহ ভুল চক্ষে দেখিয়াছেন। তাহাদের অনেকের ধারণা, আমি গ্রামের নিরক্ষর পল্লী কবিদের রচনা চুরি করিয়া নিজের বলিয়া চালাইয়া দিতেছি। আমার এই চুরি হাতে কলমে ধরাইয়া দিবার জন্য কোন পত্রিকার সম্পাদক একজন লেখককে কিছু টাকা পর্যন্ত অস্বীকার করিয়াছিলেন।রবীন্দ্রনাথও তাঁহার মেঘদৃত নামক কবিতার কালিদাস হইতে অনেকগুলি কবিত্বপূর্ণ লাইন জুড়িয়া দিয়া এই কবিতায় কালিঙ্গাসের যুগের একটা অপূর্ব্ব পারিপার্শ্বিক রচনা করিয়াছেন।
এখানে অবাস্তর হইলেও আর একটা কথা বলিয়া রাখিব। আমি অনেকগুলি গ্রাম্য-গান কলিকাতার বহু গ্রামোফোন কোম্পানীতে রেকর্ড করাইয়াছি। এই গানগুলির মধ্যে কতকগুলি আমার নিজস্ব রচনা, কতকগুলিতে অশিক্ষিত গ্রাম্যকবিদের অসমাপ্ত রচনাকে আমি কতকটা সংস্কার করিয়া লইয়াছি, আবার কতকগুলি গ্রাম্য গান সংগ্রহ করিয়া সেগুলি যেভাবে পাইয়াছি হুবহু সেই ভাবেই রেকর্ড করাইয়াছি। আমি বহুদূরে ঢাকায় থাকি বলিয়া এ বিষয়ে গ্রামোফোন কোম্পানীর লোকরা অনেক সময় ভুল করিয়া বসেন। যে গান আমার সংগ্রহ করা সেই গানের উপরে রচক হিসাবে আমার নাম ছাপা হয়। এজন্য আমি বড়ই লজ্জিত। কিন্তু কোন রেকর্ড একবার বাহির হইয়া গেলে তাহার সংশোধন করা সহজ নয়। আমার রচিত ‘রঙিলা নায়ের মাঝি’ নামক গানের পুস্তকে আমি এ বিষয়ে ভুল সংশোধন করিতে চেষ্টা পাইয়াছি। এই পুস্তকের গ্রন্থকারের নিবেদনেও আমি এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করিয়াছি।
আমাদের ফরিদপুর অঞ্চলে বহু চাষী মুসলমান ও নমশূদ্রের বাস। তাহাদের মাঝে সামান্য সামার ঘটনা লইয়া প্রায়ই বিবাদের সূত্রপাত হয়। এই সৰ বিৰাদে ধনী হিন্দু-মুসলমানেরা উৎসাহ দিয়া তাহাদিগকে সর্বনাশের পথে আগাইয়া দেয়। মহাজন ও জমীদারের মধ্যে কোন জাতিভেদ নাই। শোষণকারীরা পৃথিবীতে সকলেই এক জাতের। ইহাদের প্ররোচনায় হতভাগা নমশূদ্র ও মুসলমানদের যে অবস্থা হয় তাহা চক্ষে দেখিলে অশ্রুসম্বরণ করা যায় না। এমনই একটা ঘটনা লইয়া এই পুস্তকের সূত্রপাত।
এই পুস্তক লিখিতে বহুদিন লাগিয়াছে। ইহার অধিকাংশ অধ্যায়ই রাত্রের ঘটনা বলিয়া রাত্রেই লিখিতে হইয়াছে। আমার ছোট ভাই কৰি শ্ৰীমান সোয়েদ উদ্দীনকে এজন্য বহু বিরক্ত করিয়াছি। কোন কোন দিন রাত্র তিনটায় এই পুস্তকের অধ্যায় বিশেষ শেষ করিয়া তাহাকে ঘুম হইতে জাগাইয়া সমস্তটা পড়িয়া শুনাইয়াছি। সে উৎসাহিত হইয়া উঠিয়াছে। কোন পুস্তক লিখিবার সময় এই ভাবের সমঝদার পাইলে যে কত ভাল লাগে তাহা বলিয়া বুঝাইবার নয়। পরম শ্রদ্ধাস্পদ দীনেশচন্দ্র সেন ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পুস্তকের পাণ্ডুলিপি পড়িয়া আয়াকে নানাভাবে উৎসাহিত করিয়াছেন। তাহাদের দুইজনের কাছেই আমি বহুভাবে ঋণী।
আজ সে কথা বলিবার সময় আসে নাই। নিজের জীবনকে যদি কোনদিন সুন্দর করিয়া গড়িতে পারি তবে সে কথা বলিব। সকলের যে এই পুস্তক পড়িয়া ভাল লাগিবে এগুড় দুঃসাহস আমার নাই। নানা দোষ ত্রুটির সহিত অতি সঙ্কোচে এই পুস্তক সাধারণের সম্মুখে বাহির করিলাম।
Sojon Badiar Ghat pdf সোজন বাদিয়ার ঘাট pdf সম্পর্কে কিছু কথাঃ
Sojon Badiar Ghat pdf ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাব্যোপন্যাসটি জসীম উদ্দীনের সেরা বহুলপঠিত বই। ১৯৩৩ সালে কবির মাত্র তিরিশ বছর বয়সে লেখা এই বইটি বাংলা কাব্যোপন্যাসের জগতে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। Sojon Badiar Ghat pdf ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ সর্বাধিক বিদেশী ভাষায় অনূদিত বাংলা বই। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “তোমার ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ অতীব প্রশংসার যোগ্য। এ বই যে বাংলার পাঠক সমাজে আদৃত হবে, সে বিষয়ে আমার লেশমাত্র সন্দেহ নেই।” মুসলমান চাষীর ছেলে সোজন আর নমুর মেয়ে দুলীর অপূর্ব প্রেমকাহিনী। তার সঙ্গে বিগত সামন্ত যুগের জমিদারী প্রথার নিষ্ঠুরতার আলেখ্য।
নমু- মুসলমানের দাঙ্গা-ঝিন্ ঝন্ ঝন্ কাইজার থালা বাজিল।’ অন্ধকার রাতে দুলালীকে সঙ্গে নিয়ে সোজনের পলায়ন, গড়াই নদীর তীরে পাখির মত সোজন-দুলীর নীড় রচনা, তারপর সোজনের বিচার…. দুলীর অন্যত্র বিবাহ। জেল থেকে ফিরে বেদের ঝালি মাথায় নিয়ে দেশে দেশে সোজনের দুলীর অন্বেষণ, নানা ঘটনাবৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে সোজন বাদিয়ার ঘাটে এনে কবি এই কাব্যের পরিসমাপ্তি ঘটান।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন পন্ডিত চেকোশ্লাভাকিয়ার ভাষাবিদ প্রফেসর ডঃ দুশন জভিতেল জসীম উদ্দীন সম্পর্কে বলেন, “…জসীম উদ্দীনের বই যখন পড়ি তখনই তাতে নতুন নতুন সৌন্দর্য আবিষ্কার করি। ….কবি জসীম উদ্দীন এইসব গ্রাম্য সাহিত্য ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন, লম্বা লম্বা বছর ধরে নিজেই গামা গান সংগত করেছিলেন। উনি কৰি বাল্যকাল থেকে এইসব গ্রাম্য সাহিত্য ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন, লম্বা লম্বা বছর ধরে নিজেই গ্রাম্য গান সংগ্রহ করেছিলেন। উনি কবি, বাল্যকাল থেকে কবিশিষ্যের মত সবচেয়ে বড় কবির পায়ে বসেছিলেন যার নাম হচ্ছে জনসাধারণ। আমার বিশ্বাস ওর থেকে উনি তাঁর ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ ‘সকিনা’ ইত্যাদি বইগুলির বাইরের রূপ পেয়েছেন, গ্রাম্য কবিদের সঙ্গে একই অতল সৌন্দর্যের সাগর থেকে পান করতে শিখেছেন।…
জনসাধারণের প্রতি জসীম উদ্দীনের অপরিসীম মমতা ও সমবেদনাবোধ যাকে বলা যায় Poetic Humanism. … উনি তো গ্রামের মানুষ, মাটির মানুষ, বাংলা জনসাধারণের সঙ্গে অসংখ্য বন্ধন দিয়ে বাঁধা কবি। তাদের সুখ দুঃখ বুঝতে পারেন, তাদের আনন্দ-বেদনা মুখরিত করতে জানেন।” Sojon Badiar Ghat pdf পড়ুন।
Sojon Badiar Ghat pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.