শ্রীপান্থ এর পৃথিবীর নৃশংসতম ভয়ঙ্করতম খুনীদের কাহিনী Thogi pdf ঠগী pdf ডাউনলোড করুন ও Thogi pdf ঠগী pdf পড়ুন।
Thogi pdf ঠগী pdf কাহিনিঃ
“এই বইয়ের স্থান কাল পাত্র কিছুই কাল্পনিক নয়। প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি চরিত্র, এমনকি পরিবেশ এবং সংলাপও ঐতিহাসিক সত্য। অবশ্য উদ্ধতিগুলি কোন কোন ক্ষেত্রে-শব্দ নয়, বক্তব্যের দিক থেকেই আক্ষরিক। যে সব পুথিপত্ৰ এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে এ-কাহিনী রচিত হয়েছে পরিশিষ্টে তার উল্লেখ আছে। সুতরাং পুনর্কথন উপলক্ষ্যে আপন বাচনভঙ্গী এবং নতুন করে ঘটনা-বিন্যাস ছাড়া লেখক হিসেবে আমার কৃতিত্ব অতি সামান্য। যাদের উৎসাহ এবং আন্তরিক সহযোগিতায় এই সামান্যটুকুও অবশেষে নিষ্পন্ন হল তাঁদের মধ্যে সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য স্ত্রীরমাপদ চৌধুরীর নাম। তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
বন্ধুবর শ্রীঅমলেন্দু চৌধুরীর সক্রিয় উদ্যোগে নির্ঘন্টটি যোগ করা সম্ভব হল। তাঁকেও আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।
শ্ৰীপান্থ
Thogi pdf ঠগী pdf নমুনাঃ
ভূপাল থেকে আউরঙ্গাবাদের পথে হাঁটছিলেন দুই মুসলমান পথিক। দুই জনের হাতে দুই গাদা বন্দুক। সঙ্গে একটি ছোট্ট আরবী ঘোড়া। ঘোড়ার পিঠে সওদা।
রুক্ষ পাহাড়িয়া পথ। মাইলের পর মাইল জনহীন উপত্যকা। দিনান্তে কখনও কাটাগুল্মের ঝোপের মত এক-আধখানা গ্রাম। চলতে চলতে ওঁরা তাপ্তী নদীর তীরে এসে হাজির হলেন।
তাপ্তীর সেই নামহীন ঘাটে সেদিন যেন কোন পীরের মেলা। এখানে ওখানে গাছতলায় রাশি রাশি মানুষ। কেউ রসুই পাকাচ্ছে, কেউ তামাক খাচ্ছে, কেউ গলা ছেড়ে গান গাইছে। বিন্ধ্যাচলের গান। তাদেরই একজন এগিয়ে এসে সালাম জানাল। বলল, আমার নাম বোসন জমাদার, দেশ ঝাঁসীর পুরা গা। দলে আমরা পাঁচ কুড়ি তিন গণ্ডা। আমরাও আউরঙ্গাবাদের যাত্রী। আর একজন দু’থালা খাবার নিয়ে এগিয়ে এল। বলল, খেতে বসেছিলাম, আপনারা মেহমান, বহু দূর হেঁটে এসেছেন, আপনাদের না দিয়ে খেলে গুনহ হয়!
দেখতে দেখতে দু’দলে বন্ধুত্ব হয়ে গেল। খাওয়া-দাওয়া সেরে নিশ্চিন্ত পথিকেরা একসঙ্গে চলতে আরম্ভ করলেন। তাই ভাল। নির্জন পথ-ঘাট, দিনকাল ভাল নয়, দল যত বড় হয় ততই মঙ্গল। বোরহানপুর পেছনে পড়ল। ঝাঁসীর একশ’ বারো মানুষের বিরাট বাহিনীর সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন ভূপালের কারবারী- যুগল। এবার আর কোন ভয় নেই তাদের, কোন দুশ্চিন্তা নেই। যেখানেই রাত হোক, রাত্রি নিয়ে কোন ভাবনা নেই।
সন্ধ্যা যখন নামল ওঁরা তখন আরও ছ’ক্রোশ দক্ষিণে, একটি গাঁয়ের বাঁয়ে। গায়ের নাম—তানকোলি। বোসন জমাদার বলল, সেই ভাল, রাতটা এখানেই কাটান যাক। অদূরে সন্ধ্যার শান্ত গ্রাম। কালো কালো কুঁড়েগুলোর পিঠ ফুড়ে ধীরে ধীরে ধোঁয়া উঠছে। রাত্তিরের খাবারের আয়োজন হচ্ছে। ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বলছে। যেন এক ঝাঁক জোনাকী স্থির হয়ে আছে। চারদিকে তাকিয়ে ভূপালের মানুষ দু’জনও সায় দিলেন, হ্যা, সেই ভাল।
ঘোড়ার পিঠ থেকে বোঝা নামান হল। আম্রকুঞ্জের ধারে ছাউনি পড়ল। কেউ রুটি বানাতে বসল, কেউ তামাক সাজাতে, কেউ ধারে কাছে শুকনো ডালপালা কিছু পাওয়া যায় কিনা! তাই দেখতে বেরিয়ে গেল।
হাতে হাতে কাজ। দেখতে দেখতে আয়োজন শেষ। সন্ধ্যার দুই ঘড়ি পরেই খাওয়া-দাওয়া সম্পূর্ণ। রোসন জমাদার নিজে অতিথি দু’জনের পাশে বসে এক সঙ্গে খেল। খাওয়া শেষে নিজে গিয়ে তামাক সেজে নিয়ে এল। তারপর বসল গল্পে।
নানা রাজ্যের নানা গল্প। শুনতে শুনতে চোখ জড়িয়ে আসে। তবুও জোর করে জেগে বসে থাকতে ইচ্ছে করে। বহু দেশ দেখেছেন ভূপালের এই দুই কারবারী। কিন্তু এমন মিষ্টি গলা, গল্প বলার এমন ভঙ্গী—আর কোনদিন শুনেছেন বলে মনে পড়ে না। ওঁরা ঠায় জেগে বসে রইলেন। মাঝে মাঝে তামাক আসছে, জমাদার গুর গুর করে তাই টানছে; বাতাসে মিষ্টি গন্ধ, ওঁরা তন্ময় হয়ে বোসন জমাদারের মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন।
তাই ছিলেন। রাত ক’ঘড়িত কেউ তা জানে না, কিন্তু রোসন জমাদার নিজে বলেছে, ভূপালের কারবারী দু’জন তার মাদুরে বসেই গল্প শুনছিলেন। বোরহানপুর থেকে ছ’ ক্রোশ দূরে তানকোলি গাঁয়ের বাঁয়ে আমগাছতলায় বিছান সেই মাদুরটিতে।
তবুও পরদিন ভোরে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না মানুষ দু’টিকে। ওঁরা হারিয়ে গেলেন। কোন্ যাদুবলে যেন উধাও হয়ে গেলেন। দুটো বন্দুক, একটি ঘোড়া, এক ঘোড়া সওদা, জ্বলজ্যান্ত দুটি মানুষ কোথাও কোন চিহ্ন নেই তার। ভোর হল। উদ্বিগ্ন বোসন জমাদার চারদিক ভাল করে তাকিয়ে দেখল। তারপর সূর্য ওঠার আগেই পা বাড়াল দক্ষিণের পথে। তার ঝাঁসীর দলে এবার আর ভূপালের কারবারীরা নেই। ওঁরা হারিয়ে গেছেন। কোথায় কেউ জানে না। বুড়ো রোসন জমাদারের মুখের দিকে তাকালে মনে হয় – সেও না।
Thogi pdf ঠগী pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.