বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf – শিবরাম চক্রবর্তী Bari Theke Paliye pdf – Shibram Chakraborty

বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf - শিবরাম চক্রবর্তী Bari Theke Paliye pdf - Shibram Chakraborty
বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf - শিবরাম চক্রবর্তী Bari Theke Paliye pdf - Shibram Chakraborty

শিবরাম চক্রবর্তীর Bari Theke Paliye pdf বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf ডাউনলোড করুন ও Bari Theke Paliye pdf বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf পড়ুন। Bari Theke Paliye pdf বইটি ‘চিরায়ত বাংলা গ্রন্থমালা’র অন্তর্ভুক্ত।

বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf - শিবরাম চক্রবর্তী Bari Theke Paliye pdf - Shibram Chakraborty
বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf – শিবরাম চক্রবর্তী Bari Theke Paliye pdf – Shibram Chakraborty

Bari Theke Paliye pdf বাড়ি থেকে পালিয়ে pdf বাড়ি থেকে পালিয়ে ও শিবরাম চক্রবর্তী

একটা সময় ছিল যখন সাহিত্যরসিক মাত্রেই শিবরাম চক্রবর্তী বা শিব্রাম চক্রবরতিকে চিনতেন। বিচিত্র প্রকৃতির ছিল তাঁর লেখাগুলো। তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি কথা আপাতত থাক। সে-সব এমন বিচিত্র যে বলে শেষ করা যাবে না! সাহিত্যের ক্ষেত্রে তাঁর নামটা যে কারণে ছড়িয়ে আছে সে-কথাই আগে বলে নেয়া যাক। কারণটা হল প্রধানত হাস্যরসের স্রষ্টা হিসেবেই বাংলা সাহিত্যে তাঁর খ্যাতি। জীবনের শুরুর দিকে তিনি ছিলেন কবি। সেই ১৯২৯ সালে মানুষ নামের কবিতার বইটিই তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই। পরের বইটিও কবিতার, বেরিয়েছিল। একই বছর, চুম্বন নামে। শরৎচন্দ্রের লেখা দেনা-পাওনা উপন্যাসের নাট্যরূপ দিয়েছিলেন ষোড়শী নামে। বই যে তাঁর কতগুলো বেরিয়েছিল তার ঠিকঠাক হিসাব কারো কাছে নেই। আর লেখার সংখ্যা? সাধ্য কার খুঁজে বের করে। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

জীবন রহস্য pdf – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় Jibon Rohosso pdf – Shyamal Gangopadhyay

চেষ্টা করেছিলেন রসিক হায়াৎ মামুদ তাঁর শিবরাম কিশোর সমগ্র আর কিশোর উপন্যাস সমগ্র সম্পাদনা করতে গিয়ে। তাতে তাঁর কী হাল হয়েছিল দেখা যাক:

শিবরাম চক্রবর্তীর উপন্যাস সংখ্যায় মোট ক’টি এবং সে-সবের ভিতরে কিশোরপাঠ্য আর বয়পাঠ্য-ই বা কোনগুলো ইত্যাদি ভারি এক অঙ্ক কষার ব্যাপার। কিন্তু তারও পূর্বে সমস্ত বই চাক্ষুষ নেড়েচেড়ে দেখা দরকার না? অথচ, তা প্রায় অসম্ভব; কারণ তাঁর বই দুষ্প্রাপ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে বলা চলে। আরও এক সমস্যার কথা বলি। তিনি অনেক গল্প পরপর জোড়া দিয়ে উপন্যাসের আকার দিয়েছেন, তাঁর গল্প বা উপন্যাসের চারিত্র্য এমন যে তা খুবই সম্ভবপর এবং তাতে কাহিনীর গল্পরস ক্ষুণ্ণ হয় না।তবে এর ফলে একটা অসুবিধে খুব ন্যায্যভাবেই দেখা দেয় তাঁর গল্পপাঠকের কাছে কোনো বিশেষ উপন্যাস মনে হতে পারে পূর্বপঠিত, যদিও আগে পড়া হয় নি। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।
(সম্পাদকের কথা, উপন্যাস সমগ্র, শিবরাম চক্রবর্তী; হায়াৎ মামুদ সম্পাদিত)

সংক্ষেপে তাঁর জীবন-তথ্যের ওপর একবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক। কিন্তু তাই বা কী করে সম্ভব? নিজেই যে তিনি বলেছেন,

সার্কাসের ক্লাউন যেমন। সব খেলাতেই ওস্তাদ, কিন্তু তার দক্ষতা হোলো দক্ষযজ্ঞ ভাঙার। সব খেলাই জানে, সব খেলাই পারে, কিন্তু পারতে গিয়ে কোথায় যে কী হয়ে যায়, খেলাটা হাসিল হয় না; হাসির হয়ে ওঠে। আর হাসির হলেই তার খেলা হাসিল হয়। কিন্তু আমি তা পেরেচি কি? Bari Theke Paliye pdf পড়ুন। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।
(নিজের সম্পাদিত পাঁচ খণ্ডের শিরাম রচনাবলী বইয়ের ভূমিকা!)

নিজেকে নিয়ে যা-ই লিখেছেন তার মধ্যে যে কোনটা ছিল ব্যঙ্গ আর কোনটা ছিল সত্য তা বলা কঠিন। তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই আছে দুটি। একটি ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা (১৯৭৪), অন্যটি ভালোবাসা পৃথিবী ঈশ্বর (১৯৯৬)। আয়তনে মহাকায়ই বলা যেতে পারে। তা সত্ত্বেও হায়াৎ মামুদের মতে,

তারপরেও তাঁর জীবন একরকম অজ্ঞাতই থেকে যায় আমাদের কাছে। কারণ তাঁর যাপিত জীবনের আনুপূর্বিক বয়ান সেখানে নেই। আরও মুশকিল, ঐ বই দুখানি থেকে কালানুক্রমিক ঘটনা-পরম্পরা তৈরি করাও সম্ভব নয়— ধারাবাহিকতার ফাঁক-ফোকর এতখানিই যে অলীক কল্পনার আশ্রয়েও সে-সব ভরাট করা যায় না। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

অর্থাৎ নিজেকে কীভাবে জাহির করতে হয় তা চিরকালের অবৈষয়িক শিবরাম চক্রবর্তী জানতেনই না। তা হলে কী করে তাঁর সত্যিকারের জীবনপঞ্জি গড়ে তোলা যাবে? তা সত্ত্বেও তাঁর একটা সংক্ষিপ্ত জীবনপঞ্জি তৈরি করার চেষ্টা করা যাক। আর এ ব্যাপারে প্রথমেই শরণ নেয়া যাক তাঁর সাত্ত্বিক, ভবঘুরে, সন্ন্যাসী ধরনের মানুষ পিতা শিবপ্রসাদ চক্রবর্তীর লেখা জন্মবৃত্তান্তের। শিবরামের জন্ম সম্পর্কে তিনি লিখেছেন :

বঙ্গাব্দ তের শ দশ প্রাতে রবিবার
সাতাশে অগ্রহায়ণ শিবের কুমার
শিবরাম জনমিল লীলা শঙ্খ বাজাইল
শিবহৃদে উপজিল আনন্দ অপার

অর্থাৎ ১৩১০ বঙ্গাব্দের ২৭ অগ্রহায়ণ রবিবার খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জিকাতে ১৯০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর হয়। শিবরামের মায়ের নাম শিবরাণী দেবী। তিন ভাইয়ের মধ্যে শিবরামই বড়। বোন ছিল না। মালদহের সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনে পড়েছেন। সেখানে ১৯১৯ সালে টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছিলেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। চলে এলেন কলকাতায়। তাই ওখান থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেয়া হয়ে ওঠেনি। ম্যাট্রিক অবশ্য পাস করেছিলেন পরে কলকাতার ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন-এর অন্তর্গত গৌড়ীয় সর্ববিদ্যায়তন থেকে। এই স্কুলটি গড়ে তুলেছিলেন বিপ্লবীরা। এর প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। এখানে তাঁর থাকা-খাওয়া-লেখাপড়া সবই ছিল ফ্রি। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন বইয়ের পোকা, খেলাধুলায় তেমন উৎসাহী ছিলেন না। স্কুলে পড়বার সময়ই হাতে-লেখা পত্রিকা বের করতেন।

রাখার কাজ চলত দেয়াললিখন দিয়ে। চুনকাম করা সাদা দেয়ালে ঠিকানা আর ফোন নম্বর লিখে রাখতেন। দুবার জেল খেটেছেন। একবার স্বদেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে, আর একবার যুগান্তর’ সম্পাদনার দায়ে। মৃত্যুশয্যায় থাকাকালেও কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দিয়েছেন ‘ফাসকেলাস, মারভেলাস’। জীবনের একেবারে শেষদিকে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার তাঁর সাহায্যে এগিয়ে এলেও তিনি গ্রহণ করেননি। তাঁর জীবনের যেসব তথ্য দেয়া গেল তার বেশিরভাগই পাওয়া গেছে অন্যদের লেখা থেকে। সব তথ্য ভালোভাবে যাচাই করবার উপায় নেই। কোনো অভিনিবিষ্ট গবেষক হয়তো তাঁর জীবনের সঠিক তথ্যগুলো একদিন খুঁজে বের করবেন। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

শিবরাম চক্রবর্তী নিঃসন্দেহে বিশ শতকের একজন সেরা লেখক। তাঁর ভাবুক সত্তাকে শিবনারায়ণ রায়ের মতো পণ্ডিত ব্যক্তিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন। তিনি শিবরামের মস্কো বনাম পণ্ডিচেরী (১৯৪৩), আজ ও আগামীকাল (১৯২৯), দেবতার জন্ম [ও অন্যান্য গল্প) (১৯৪৭) ইত্যাদি রচনাকেও খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু হাসির গল্পের লেখক হিসেবে পাঠকদের এত নৈকট্য তিনি লাভ করেছেন যে ভাবুক সত্তা আড়ালে পড়ে গিয়েছে। তাঁর হাস্যরসিক সত্তার অনুরাগীদের একযোগে খুঁজে পাওয়া যাবে পণ্ডিত ও কিশোর সকল শ্রেণীর পাঠকের মধ্যেই।
আগেই বলেছি শিবরামের বইয়ের সংখ্যা ঠিক কয়টি তা বলা শক্ত। হায়াৎ মামুদ একটা অসম্পূর্ণ কিন্তু গুরুত্ববহ কাজ সমাপ্ত করেছেন, চেষ্টা করেছেন তাঁর বইগুলোর হদিস খুঁজে বের করতে। তিনি বলেছেন,

‘যেমন জীবন সম্পর্কে তেমনি নিজের লেখা ব্যাপারে তিনি নির্মোহ মানুষ ছিলেন।… আসলে রুটিনমাফিক কাজ, অনুপুঙ্খতা, বিন্যাস পারিপাট্য ইত্যাদি সম্ভবত তাঁর ধাঁচে ছিল না। তা ছাড়া, কেবলমাত্র লেখার সম্মানী দিয়ে তাঁর পঞ্চভৌতিক দেহ টিকিয়ে রাখতে হয়েছিল বলে অজস্র রচনা তাঁকে নিত্য লিখতে হয়েছে: ছোট-বড়-মাঝারি, গুরুগম্ভীর বা হালকা চালের, গদ্য-পদ্য-রম্যরচনা ফিচার ইত্যাদি কত কী; আর সে- সবের হিসেব রাখা আত্মরচনাপ্রেমে মত্ত মানুষ ছাড়া কার পক্ষেই বা সম্ভব!’ Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

অনেক চেষ্টায় তিনি তার একটা মোটামুটি গ্রন্থপঞ্জি রচনা করেছেন। এখন পর্যন্ত এটাই নির্ভরযোগ্য। তবে আমরা এখানে সব বইয়ের নাম দিচ্ছি না। মোটামুটিভাবে পরিচিত অধিকাংশ বইয়েরই নাম দিচ্ছি। কারণ আগেই বলা হয়েছে তাঁর রচনা নিয়ে নিজেই নানা রূপের কারুকর্ম তো করেছেনই, সুযোগ পেয়ে ব্যবসায়ীরা করেছেন আরো বেশি : কয়েকটি বই থেকে রচনা বেছে নিয়ে। গড়ে তুলেছেন আরেকটি বই। এমনি করে অনেক বই বেরিয়েছে তাঁর। এখানে যে কটি বইয়ের নাম উল্লেখিত হবে তার মধ্য থেকে তাঁর বইয়ের নামকরণের পরে সংবাদপত্র হয়ে উঠেছিল তাঁর গ্রাসাচ্ছাদনের উৎস। কিন্তু ঘড়ি ধরে নিয়ম মানা চাকরি কখনো করেননি। সে অর্থে বলতে গেলে সাংবাদিকতাও করেননি। 1 ১৯৭২ সালে এক সাক্ষাৎকারে দেয়া তাঁর বক্তব্য তুলে দিয়েছেন হায়াৎ মামুদ তাঁর সম্পাদিত কিশোর উপন্যাস-সমগ্র বইয়ে। সেখানে শিবরাম বলছেন,

সাংবাদিকতা নয়, সংবাদপত্রকে ঘিরেই আমার জীবন। বাড়ি পালানো ছেলে আমি, খুব ছেলেবেলা থেকেই বসুমতী ফিরি করতাম। মনে পড়ে এক পয়সা করে দাম ছিল। বসুমতীর। আমি সোজা চলে যেতাম বেথুন কলেজের সামনে। জানতাম, মেয়েদেরও প্রাণ মায়েদের মতো। নিমেষে সব বসুমতী বিক্রি হয়ে যেত। সোজা চলে যেতাম সিমলার রাবড়ির দোকানে। সেখানে ছাপয়সার রাবড়িতে পেট ভরিয়ে তবে যেতাম বসুমতী অফিসে। নেশা যদি করতে হয় তবে রাবড়ির নেশা করাই ভালো। হায় এখন আর তেমন রাবড়ি পাওয়া যায় না। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

শিবরাম একবার একটা বইয়ের দোকান দিয়েছিলেন, নাম ‘শিবরাম চক্কোত্তির বইয়ের দোকান’। নিজে বসতেন না, চালাতেন তাঁর পুত্রকন্যাপ্রতিম কেউ কেউ। পশ্চিমবঙ্গে এখনো বহুল প্রচারিত, এককালের বিপ্লবী ভাবধারার দৈনিক ‘যুগান্তর’ পত্রিকা তিনিই বের করেছিলেন। পরে মাত্র পাঁচশো টাকার বিনিময়ে তুষারকান্তি ঘোষের কাছে বিক্রি করে দেন। অবশ্য শিরোনাম শিবরাম নামে শিবরাম-বিষয়ক বই সম্পর্কে শিবনারায়ণ রায় তাঁর নিজের সম্পাদিত ‘জিজ্ঞাসা’ পত্রিকায় আলোচনা করতে গিয়ে ‘তুষারকান্তি যে শিবরামের কাছ থেকে টাকা দিয়ে “যুগান্তর” নামটি কিনে নিয়েছিলেন তার কি কোনো প্রমাণ আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। চিত্তরঞ্জন দাসের সাপ্তাহিক ‘আত্মশক্তি’ সম্পাদনা করেছিলেন। কিছুকাল। কিছুদিন চালিয়েছেন ‘কৃষিতত্ত্ব’ নামে একটি পত্রিকা। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

কৈশোরকালের প্রেম পরিণতি পায়নি। আর বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি। পোশাক-পরিচ্ছদে ছিলেন সৌখিন। ছিলেন ভোজনরসিকও। শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসতেন। চাঁচল রাজপরিবারের সন্তান ছিলেন, কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে সে বিষয়-সম্পত্তির কিছুই জোটেনি। কিন্তু কোনো বঞ্চনাই তাঁকে কাঁদাতে পারেনি। উল্টো সকলকে সারাজীবন হাসিয়েছেন। থাকতেন ১৩৪ নং মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের এক মেসবাড়িতে, দোতলার একটি ঘরে, ১৯২৯-এর আশপাশের কোনো এক সময় এসে উঠেছিলেন, এখানেই কাটিয়েছেন মৃত্যুর আগে কলকাতার শেঠ শুকলাল কার্নানি মেডিকেল হাসপাতালে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত, (মৃত্যু : ১৯৮০ সালের ২৮ আগস্ট, বিকেল ৩.৩৫-এ), জীবনের প্রায় পঞ্চাশ বছর। পরিহাস করে লিখেছিলেন: মুক্তারামে থাকা, তক্তারামে শোওয়া আর শুক্তারামে ভক্ষণ’।

বিলাসিতা যদি কিছু থেকে থাকে তবে তা আলস্য আর নিদ্রা। প্রচুর সিনেমা দেখতেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডায়েরি আর টেলিফোন নম্বর টুকে বৈশিষ্ট্য, তাঁর যমকালঙ্কারপূর্ণ গদ্যভাষার অসাধারণ রূপের কিছুটা পরিচয় পাওয়া যাবে। যেমন [গল্প] : পঞ্চাননের অশ্বমেধ (১৯৩৫), শুঁড়-ওলা বাবা (১৯৩৫), মন্টুর মাস্টার (১৯৩৬), কালান্তক লাল ফিতা (১৯৩৭), ঘোড়ার সঙ্গে ঘোরাঘুরি (১৯৩৭), মালাইবরোফ (১৯৩৮), যুদ্ধে গেলেন হর্ষবর্ধন (১৯৩৮), পাত্রপাত্রী সংবাদ (১৯৩৯), বিশ্বপতিবাবুর অশ্বত্বপ্রাপ্তি (১৯৩৯), মামার জন্মদিন (১৯৩৯), হর্ষবর্ধন অপহরণ (১৯৩৯), হর্ষবর্ধনের হর্ষধ্বনি (১৯৩৯), ফুটবলের দৌড় (১৯৪০), মধুরেণ সমাপয়েৎ (১৯৪০), অমার ভূত দেখা (১৯৪১), বুবুম বুম বুম (১৯৪১), মেয়েদের মন (১৯৪১), প্রেমের বি-চিত্র গতি (১৯৪২), ভারী বিপর্যয় ব্যাপার (১৯৪২), শঙ্কর আমাদের সব পারে (১৯৪২), হাওড়া-আমতা রেলের দুর্ঘটনা (১৯৪২), মানুষের উপকার করো (১৯৪৩), মৃত্যুর মুখোমুখি (১৯৪৪),

শিবরাম চক্রবরতির মতো কথা বলার বিপদ (১৯৪৫), আত্মীয় বজায় রাখা সোজা নয় (১৯৪৭), প্রেমের পথ ঘোরালো (১৯৪৭), বিনির কাণ্ড কারখানা (১৯৪৭), বিশ্বপতির অশ্বমেধ (১৯৪৭), প্রেমের প্রথম ভাগ (১৯৪৮), বন্ধু চেনা বিষম দায় (১৯৪৮), ভূত অদ্ভূত (১৯৪৯), লাকড়ি আউর লক্কর (১৯৪৯), বড়দের হাসিখুশি (১৯৫১), হারানো প্রাপ্তি নিরুদ্দেশ (১৯৫১), নিখরচায় জলযোগ (১৯৫৩), প্রাণকেষ্টর কাণ্ড (১৯৫৪), ভুতুড়ে অদ্ভুতুড়ে (১৯৫৪), হামুহানা (১৯৫৪), চকরবর্তিরা কঞ্জুস হয় (১৯৫৭), যত হাসি তত মজা (১৯৫৭), আমার ভালুক শিকার (১৯৫৮), জন্মদিনের হাসিখুশি (১৯৫৮), ফাঁকির জন্য ফিকির খোঁজা (১৯৫৮), মামা ভাগ্নে (১৯৫৮), রসময় যার নাম (১৯৫৮), প্রেমের কথামালা (১৯৫৯), ভালবাসার ইতিকথা (১৯৫৯), ভালো ভালো গল্প (১৯৫৯), পঞ্চরঙ (১৯৬০), হিপ হিপ হুররে (১৯৬০), পেয়ারার স্বর্গ (১৯৬০), হাসির গল্প (১৯৬১), হর্ষবর্ধন আর গোবর্ধন (১৯৬২),

আজ কি মজার দিন (১৯৬৩), তোতাপাখির পাকামি (১৯৬৩), স্ত্রী মানেই ই-স্ত্রী (১৯৬৩), দুর্ঘটনা বলতে নেই (১৯৬৪), মনের মতো মেয়ে (১৯৬৪), চোরের পাল্লায় চকরবরতি (১৯৬৬), হাসির টেক্কা (১৯৬৬), অদ্বিতীয় পুরস্কার (১৯৬৬), নাক নিয়ে নাকাল (১৯৬৭), প্রজাপতয়েঃ (১৯৬৭), গল্প বলি গল্প শোনো (১৯৬৭), অনেক হাসি (১৯৬৮), দুষ্টু প্রজাপতি (১৯৬৮), ভালোবাসার অনেক নাম (১৯৬৮), হর্ষবর্ধনের নানান কাণ্ড (১৯৭৭), করেককাশির গোয়েন্দাগিরি (১৯৭৯), লাভের বেলায় ঘণ্টা (১৯৭৯), [উপন্যাস] কলকাতার হালচাল (১৯৩৬), বাড়ি থেকে পালিয়ে (১৯৩৭), কাকাবাবুর কাণ্ড (১৯৩৭), বাঁটুলের ভবনে হর্ষবর্ধন ও গোবর্ধন (১৯৩৮), কৃতান্তের দন্তবিকাশ (১৯৪০), মেয়েদের ফাঁদ (১৯৪৭), কে হত্যাকারী (১৯৪৪), বর্মার মামা (১৯৪৪), মনের মতো বউ (১৯৪৬), গরু ছিল ঋষি (১৯৫১), চুরি গেলেন হর্ষবর্ধন (১৯৬২),

দাদু নাতির দৌড় (১৯৬২), অর্থ বিবাহ ঘটিত (১৯৬৩), খুনীকে নিয়ে খুনোখুনী (১৯৬৭), ইতুর থেকে ইত্যাদি (১৯৬৮), পথ থেকে হারিয়ে (১৯৬৮), প্রাণ নিয়ে টানাটানি (১৯৬৮), কলকাতায় এলেন হর্ষবর্ধন (১৯৭০), প্রণয় বিচিত্রা (১৯৭২), বাড়ি থেকে পালিয়ে পর (১৯৭২), এক মেয়ে ব্যোমকেশের কাহিনী (১৯৭৫), গুক্ষবর্তী (১৯৭৫), (রম্যরচনা] আপনি কি হারাইতেছেন আপনি জানেন না (১৯৫১), [নাটক] বাজার করার হাজার ঠেলা (১৯৪০), যখন তারা কথা বলবে (১৯৪৯) পণ্ডিত বিদায় (১৯৫৫), শিবরাম চক্রবর্তীর শিশুনাট্য (১৯৬৬) [ কিশোর সংকলন] জন্মদিনের উপহার (১৯৫৩) (প্রবন্ধ) ফানুস ফাটাই (১৯৬০)। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

শিবরামের সমগ্র সৃষ্টিকর্মের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এই রচনাটির অভিমুখ্য নয়, বাড়ি থেকে পালিয়ে উপন্যাসের সূত্রে হাস্যরসিক শিবরামের সাহিত্যিক সত্তাকেই অংশত এখানে অনুসন্ধান করা হবে। শিবরামের প্রথম উপন্যাস বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৩৭ সালে। উপন্যাসটিকে অবলম্বন করে বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। ঐ ছবিটিও বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ছবি হয়ে টিকে আছে। এই উপন্যাস যখন লেখা হচ্ছে যে-সময়ে নগর জীবন নিয়ে, গ্রাম ও নগর জীবনের সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে বাংলা সাহিত্যে উপন্যাস ও গল্প লেখা চলছে। কিন্তু শিশুসাহিত্য তখনো প্রধানত রূপকথা-উপকথা- কিংবদন্তি-রহস্যকাহিনীতে বৃত্তাবদ্ধ। আধুনিক জীবনের সংকট বাংলা ভাষার শিশুসাহিত্যে তখনো তেমন ভাবে আসতে শুরু করেনি।

বাড়ি থেকে পালিয়ে-র প্রথম প্রকাশের সময়ই বোঝা গিয়েছিল এর জাত সম্পূর্ণ আলাদা। একটি শিশুর বিস্ময়ভরা চোখ দিয়ে এই উপন্যাসে গ্রাম ও শহর, জীবনকে দেখেছেন শিবরাম। গ্রামের সরল প্রকৃতির মধ্যে জন্ম নেয়া ও বেড়ে উঠতে থাকা একটি শিশুর জীবনকে উপলক্ষ করে গড়ে উঠেছে উপন্যাসটি। পটভূমিতে রয়েছে বিশ শতকের তিরিশের দশকের কলকাতা নগর। শহর কলকাতা তখনই একটি সম্পন্ন নগরের রূপ পেয়ে গেছে। জীবন আক্রান্ত হতে শুরু করেছে নাগরিক জটিলতায়। গ্রাম ও নগরে জীবনযাপনের বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানের উন্নতির স্পর্শে উজ্জীবিত কলকাতা সম্পর্কে গ্রামের মানুষের মনে যেমন জেগে উঠছে বিস্ময় তেমনি নগরজীবনের মানুষের মধ্যে তাচ্ছিল্য। এই মানসিকতারই পরিচয় পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।

বাড়ি থেকে পালিয়ে উপন্যাসে নাগরিক এই জটিলতাকে দেখা হয়েছে যেন। পাশ থেকে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কাঞ্চন খুব ডানপিটে একটি ছেলে। কলকাতা তার কাছে নতুন একটি জায়গা। গ্রামের সরল দৃষ্টিতে নগরজীবন তার কাছে সম্পূর্ণ নতুন ঠেকেছিল। নগরের অনেক কিছুই তার মধ্যে জাগিয়েছিল বিস্ময়। দুষ্টুমি ও বিস্ময়ভরা চোখে তার দেখা গ্রামজীবনের সঙ্গে নগরজীবনের সুন্দর ও কুৎসিতকে মিলিয়ে নিতে পেরেছিল। এরই মধ্য দিয়ে রসঘন হয়ে উঠতে পেরেছে উপন্যাসটি। শিশুর বিস্ময়ভরা চোখে দেখা জীবন হয়তো বাংলাসাহিত্যে আরো পাওয়া যাবে, কিন্তু গ্রাম ও নগরজীবনকে এমন কৌতুকরসপ্রবাহী সমালোচক-সত্তার দৃষ্টিতে দেখা উপন্যাসে সম্ভবত আর পাওয়া যাবে না। সে কারণে হয়তো এ-কথাও বলা চলে যে, বাংলা সাহিত্যে এই উপন্যাসের কোনো পূর্বসূরি যেমন নেই, তেমন নেই উত্তরসূরিও। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

এই উপন্যাসের ঘটনাবলিতে রয়েছে অনেক আকস্মিকতার ছড়াছড়ি। এইসব আকস্মিকতাকে হয়তো কেউ সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। তাদের কাছে মনে হতে পারে অতিকল্পনা। কিন্তু একটু ভালোভাবে লক্ষ করলেই অনুভব করা যাবে যে ছোটদের জন্য রচিত সাহিত্যে এই ধরনের আকস্মিকতা থাকাই স্বাভাবিক। জীবনের নিষ্ঠুরতাগুলোকে সাধারণত শিশুসাহিত্যে খুব বেশি রকম বীভৎসভাবে দেখানো হয় না। সঙ্গত কারণেই শিবরামও কলকাতা শহরে উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কিশোরবয়সী কাঞ্চনকে সহজেই সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে বের করে এনেছেন। মিলনাত্মকভাবেই শেষ হয়েছে কাহিনী। Bari Theke Paliye pdf পড়ুন।

কাঞ্চনের যা চরিত্রটি সরল হৃদয়ের স্নেহোৎকণ্ঠাপূর্ণ পুত্রবৎসল এক জননী । বাবা-মায়ের মনে যেমন তার সন্তানের জন্য বাৎসল্য উছলে পড়ে তেমনি সন্তানের মনেও থাকে বাবা-মায়ের প্রতি গভীর মমতা ও ভালোবাসা। একটা কিশোরের কয়েকটি দিনের জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে এই উভমুখি মানবিক প্রবণতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। অবশ্য যমক অলঙ্কারপূর্ণ যে ভাষার জন্য শিবরাম বিখ্যাত সেই ভাষা এই উপন্যাসে পুরোপুরি দেখা না গেলেও মৃদু হাস্যরসের ধারা বহমান থেকেছে।

 Bari Theke Paliye pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply