শিবরাম চক্রবর্তীর রম্যরচনা Apni Ki Haraitechen Apni Janen Na pdf আপনি কি হারাইতেছেন আপনি জানেন না pdf ডাউনলোড করুন ও পড়ুন।
Apni Ki Haraitechen Apni Janen Na pdf আপনি কি হারাইতেছেন আপনি জানেন না pdf নমুনাঃ
ঢাকায় আমাদের সব কিছুই খোলাখুলি। এমন কি, ঐ খুন-খারাপিও। এই তো সেদিন, ছোটখাট একটা দাঙ্গা হয়ে গে—সকলের চোখের ওপরেই। কোনো ঢাক ঢাক গুড় গুড় নেই।
(বলা দরকার, আমার এই কাহিনীটা নেহরু-লিয়াকৎ-ঘটনার আগেকার। কিম্বা, নেহরু-লিয়াকৎ-কাহিনীর আগের দুর্ঘটনা— এভাবেও বলা যায়।)
আমি তখন ঢাকায়।
হাতে কোনো কাজ না থাকলে দাঙ্গা বাধানোই এখানকার ফ্যাসান। সেই সনাতন পরার্থপরতা-খুড়োর গঙ্গাযাত্রার। তবে স্মরণ রাখবেন, পরের খুড়োর-নিজের চাচার নয়।
ব্যাপারটা এমন কিছুই অস্বাভাবিক নয় এখানে। হৈ-চৈ করবার মতও না। সেকালের নবাবদের শহর-সাবেকী আমলের সেই ঠাট সবই বজায় রয়েছে এখনো। কথায় কথায় ‘শিবু লাও!’ সেকেলে নবাবী ঠাট্টা। অতএব, দাঙ্গা ঘটেই। মাঝে মাঝেই ঘটে। তাহলেও তা নিয়ে হাঙ্গামা করার মতো কিছু নেই। মাঝামাঝি ভালোই কাটে আমাদের।
কেননা, তা সত্ত্বেও দুটো দাঙ্গার দাঙ্গাতেও নেহাত মন্দ কাটে না।
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল pdf – চিত্রা দেব Thakurbarir Andarmahal pdf – Chitra Deb
কচুর মতই কেটে যায়। সেই জন্যেই আমরা বলি, দাঙ্গা না কচু! আর, তার পরেও কাটে বেশ। দাঙ্গা করেও (বলা উচিত, রুত হয়েও) তারপরেও আমরা চাঙ্গা থাকি। প্রচুর দুধ, মাছ, ডিম—ইসলাম আর ইলিশ। হজম করতে হিমশিম্ খেতে হয়।
তাছাড়া, দাঙ্গাটাকেও খাপিয়ে নেয়া যায়। অকুদিনে অকুস্থানে না থাকলেই চলে,—তাহলেই মিটে যায়। ঢাকাই বন্ধুরা আগেভাগেই জানিয়ে দেন—ওহে চকরবরতি, অমুক দিনের এ সময়ে এ পথে বেরিয়ো না। এসো না এ মহল্লায়। সেদিন আমাদের একটু—ইয়ে, কী বলে গিয়ে—এই একটু হল্লা-টল্লা আছে।
ব্যস্, তাহলেই হয়। দয়া করে তারা জানান দিলেই বেঘোরে আর জানটা দিতে হয় না এবং দেখেছি, কী নির্ভুল এঁদের দিনক্ষণ। আর কী আশ্চর্য পাংচুয়ালিটি। যদি সকাল সাতটায় দাঙ্গা বাধার কথা থাকে, তাহলে যতই ঘনঘটা হোক না, ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সব সেরেসুরে নাস্তার সময় সবাই মজুদ। অদ্ভুত Show-শৃঙ্খলা, দাঙ্গা করেও কাউকে নাস্তানাবুদ হতে হয় না।
এখন, সেদিনের কথা বলি। বিকেলে হাওয়া খেতে বেরিয়েছি, খাচ্ছি, হঠাৎ মনে হোলো আবহাওয়া কেমন যেন! দুপাশের দোকান- পসারের ঝাঁপ ফেলা। মুসলমানী চা-খানা গুলি খোলা কেবল। একটা পাঠান পুলিস আমার পাশ দিয়ে চলে গেল গা ঘেঁষে, বাশের মোটা লাঠি হাতে। হাবভাবে বেশ ব্যস্ততাই।
অন্ধকারের আগন্তুক pdf – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় Andhakare Agantuk pdf – Narayan Gangopadhyay
বড়ো রাস্তা ছেড়ে গলির পথ ধরলাম। গলিটা ফাকা। বাসিন্দারা সব গেল কোথায় ? অন্য পাড়ায় বিষয়কর্মে নাকি ? শুধু এক ভদ্রলোককে দেখতে পাওয়া গেল— একজনমাত্র গোটা গলিটায় । পরণে সিল্কের লুঙ্গি, বুশ, সার্ট গায়, হাতে আধখানা ইট। আমাকে দেখে কি করবেন, তিনি ভাবতে লাগলেন ।
ইটটা ছাড়বেন, না, ছুড়বেন বোধহয় এই ছিল তাঁর ভাবনা। ঠাহর পাচ্ছিলেন না ঠিক- আমাকে দেখে।
আমারও তথৈবচ। কি করবো আমিও ভেবে পাচ্ছিনে।
খুন করে নয়, ফাঁসি মকুব হয়ে না, অগ্নিযুগের দাদাগিরির দৌলতে ও নয়—দ্বীপান্তর ছিলো আমার অদৃষ্টে। কোনো ফেরেব বাজি না করে ও…… কপালের ফেরে আন্দামানে যেতে হোলো আমায়……
এই তো সেদিন দেশ স্বাধীন হবার অ্যাদ্দিন পরে…রবীন সেন বাত্যাতাড়িত হয়ে এলো ঢাকার থেকে এসে না থেমেই, সেই তাড়নার মুখে কুটোর মতন ভাসিয়ে নিয়ে গেল আমার ধারণাতীত ভাডমি— ‘মান আন্দাজের বাইরে—একেবারে আন্দামানে।
সে বল্লে, না ভাই, সভ্যতার এই পাপ- স্পর্শে আর নয়। কলি- যুগের এই কলুসতা — বিংশ শতাব্দীর এই বিধ— এই রিরংসা, এই সংঘাত, এই সঙ্কটের থেকে এসো আমরা সুদূরপরাহত হয়ে যাই। রাজধানীর এত সব হানাহানির মধ্যে কেন আব ? নাগরিক জীবনের ছোঁয়াচ থেকে এসে। আমরা পালিয়ে যাই—চলে যাই দূরে—অতি দূরে অন্য কোথাও।
আর কোথাও নাগরিক জীবনের কথা বলছো? কিন্তু এখানকার এই জীবনের মান—’ বলতে যাই আমি।
‘জীবনের মান? মান আছে, কিন্তু মর্যাদা কই? হাই স্ট্যাণ্ডার্ড অব লিভিং-এর কথা তুলচো তুমি? কিন্তু এই মানদণ্ডেই তো এর প্রাণদণ্ড হয়েচে ভাই, টের পেয়েছো সেটা ? জীবনের মান নয়, জীবনের মানে। তাই খুঁজতেই বেরুনো যাক এবার।
রবীন সেন যেভাবে, আমার ভাষার আমাকে পরাস্ত করলো তারপর আস্ত থাকা গেল না আর। কালাপাণি পার হতে হোলো তার সঙ্গে।
Apni Ki Haraitechen Apni Janen Na pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.