সমরেশ বসুর সেই Shei Garir Khoje pdf গাড়ির খোঁজে pdf এক প্রানবন্ত, বৈচিত্র্যময়, গোয়েন্দা ও রহস্যময় কাহিনীতে ভরপুর একটি উপন্যাস। Shei Garir Khoje pdf টি পড়ুন এখান থেকে।
Shei Garir Khoje pdf কাহিনী
উপন্যাসের থেকেও জীবন নাকি বেশি বৈচিত্র্যময়। কিন্তু কখনো- কখনো জীবনও হয়ে ওঠে অবিকল উপন্যাস। যেমন হল এই সেদিন। স্কুলের কয়েকটি ছাত্র ব্যাঙ্ক- ডাকাতদের গাড়ির নম্বর টা কে রেখেছিল, সেই সূত্র থেকে পালিশ ধরে ফেলল ডাকাতদলের পাণ্ডাদের। Shei Garir Khoje pdf
হইচই-ফেলা এই খবর কাগজে দেখে সব থেকে বেশি চমকে ওঠার কথা নিঃসন্দেহে গোগোল ও তার স্কুলের বন্ধুদের। কেননা, এমন একটা ব্যাপার হবহ, তারাই ঘটিয়েছিল। সে আরও আগে। স্কুলের উল্টোদিকে ব্যাঙ্ক-ডাকাতির গাড়ির নম্বর দেখে রেখেছিল তারা, আর সন্দেহজনক সেই গাড়ির খোঁজে বেরিয়ে পড়েছিল ক্ষুদে গোয়েন্দা গোগোল ও বিজিত। বিরাট ঝংকি নিয়ে হানা দিয়েছিল তারা ডাকাতদের আস্তানায়। প্রাণ নিয়ে যখন ফিরল, ধরা পড়েছে ডাকাতদল। Shei Garir Khoje pdf
এই নতুন ঘটনা কি তারই প্রেরণায় ? কে জানে। তবে ঘটনা হিসেবে সত্যি দারুণ। আরও দারুণ খবর হল, সমরেশ বসরে কলমে গোগোলদের সেই দম-বন্ধ-করা অ্যাডভেনচার এখন বই হয়ে বেরল। নাম, “সেই গাড়ির খোঁজে’।
Shei Garir Khoje pdf নমুনা
গোগোলের চোখের সামনেই ঘটনাটা ঘটে গেল।
বেলা তখন দশটা বেজে দশ মিনিট। সাড়ে দশটায় স্কুলের ক্লাস শুরু হবে। ও স্কুলের বাসে যাচ্ছিল। ভিতরে ওর স্কুলের ছাত্রবন্ধুরা। ওদের গল্পে আর হাসাহাসিতে বাসের ভিতরটাকে মনে হচ্ছিল, খাঁচার ভিতর এক দঙ্গল পাখি-পাখালিরা কিচির-মিচির করছে। তার মধ্যে কেউ-কেউ যে হাতাহাতিও না করছিল, তা নয়। তবে সেটা মারামারি নয়। নিজেদের মধ্যে একটু খুনসুটির ঝগড়া। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তো গেটের কাছে খবরদারি দাদা আছেই। স্কুলে গিয়ে নালিশ ঠুকে দেবে। তারপর শাস্তি। সেরকম মারকুটে ছেলে যে নেই, তা নয়। তবে, তারা শাস্তিও পায়।
একবার তো তিমির নামে একটি ছেলেকে স্কুল থেকে তাড়িয়েই দেওয়া হয়েছিল গোগোলের মনে হয়েছে, সেটা অন্যায় কিছু হয়নি। তিমির খেলতে খেলতে রেগে গিয়ে, বিজিত নামে একটি ছেলের চোখে ছুঁচলো” “পেন্সিলের ডগা ঢুকিয়ে দিয়েছিল। বিজিতের সেই চোখটা আর কোনোদিন ও ভাল হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না।
চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পারেননি।
একটা চোখেই ওকে পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। Shei Garir Khoje pdf
ওর সার্টিফিকেটে খুব খারাপ মন্তব্য করা হয়েছিল। সেই সার্টিফিকেট দেখে কি কলকাতার কোনো স্কুলে ওকে নিয়েছে? না নেবারই কথা। কিন্তু বিজিত এক চোখেই বেশ পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজিতও এই বামে আছে। গোগোলের বাড়ির কাছেই ওদের বাড়ি। Shei Garir Khoje pdf
বাসটা তখন প্রায় স্কুলের কাছাকাছি এসে গেছে। বড় রাস্তা থেকে, বাঁ দিকে একটু কম চওড়া রাস্তার ওপরে ওদের স্কুল। হঠাৎ দুম্-দুম্ করে দু’বার এমন শব্দ হল, সমস্ত বাসটা যেন কেঁপে উঠল । বাসটাও একটা বিশ্রী শব্দ করে হঠাৎ থেমে গেল। ঝাঁকুনি খেয়ে অনেকের মাথা ঠুকে গেল সিটের গায়ে।
গোগোল বসে ছিল জানালার ধারে। বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখল, রাস্তার লোকজন যে-যেদিকে পারছে ছুটে পালাচ্ছে। কোনো কোনো গাড়ি ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। দু’জায়গায় ধোঁয়া উঠছিল। তার মধ্যেই দেখা গেল, কালো কাপড় দিয়ে চোখের নীচে থেকে মুখ-ঢাকা কয়েকটা লোককে । তারা বেরিয়ে আসছিল, ওপারের ফুটপাথের একটা একতলা বাড়ি থেকে। একজনের হাতে রিভলভার স্পষ্ট দেখতে পেল। কারণ সে গুলি করার ভঙ্গিতে রিভলভারটা বাগিয়ে তুলে ধরেছিল। আবার একটা বোমা ফাটল একতলা বাড়িটার দরজার সামনে। গোগোল একটা আগুনের ঝিলিক দেখতে পেল। আর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ল। মুখে কালো কাপড়-ঢাকা লোকগুলো তখন ছুটে, ওপারের ফুটপাথের গাড়িতে উঠতে লাগল। লোকজন অনেক লোক এক জায়গায় ভিড় করে ছুটোছুটি করছে।
ট্রাফিক পুলিশকে দৌড়ে আসতে দেখা গেল। তার কোমরে বেল্টের সঙ্গে রিভলভার ঝোলানো। ব্যাঙ্কের দরজার কাছে তখনও কিছু লোক ভিড় করে ছিল। ট্রাফিক পুলিশ ভিড় ঠেলে ভিতরে গেল। আর তখনই গোগোলের স্কুলের বাস খানিকটা এগিয়ে, বাঁ দিকের রাস্তায় ঢুকে গেল।
বাসের ভিতর সব ছেলেই তখন বেশ উত্তেজিত। গোগোলেরই মতো সকলের অবস্থা। কেউ চোখের সামনে আগে এরকম ব্যাঙ্ক ডাকাতি দেখেনি। বাস থেকে নেমে স্কুলের গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতেই শোনা গেল, সবাই ব্যাঙ্ক-ডাকাতির কথা বলাবলি করছে। খবরটা এর মধ্যেই আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। গেটের দরোয়ান সুরজিৎ সিং আজ কারোর দিকে তাকিয়ে দেখছে না। লম্বা চওড়া মোটাসোটা নীল উনিফর্ম পরা সুরজিৎ সিংয়ের গোঁফজোড়া যেন খাড়া হয়ে উঠেছে। গোগোলরা তাকে সুরজিৎ-চাচা বলে ডাকে। গাড়ি চালায় যে ড্রাইভার, তার নাম বিশু সামন্ত। সব ছাত্রছাত্রীরই সে বিশুদা। বিশুদা সব ছেলেদেরই ভালবাসে। হেসে কথা বলে। কিন্তু গাড়ির মধ্যে কেউ বেশি দুষ্টুমি করলে, খুব গম্ভীর করে বকুনিও দেয়। সুরজিৎ-চাচা ছুটে গেল বিশুদার কাছে, ডাকাতির খবর শোনবার জন্য।
গোগোল স্কুলের উঠোনে ঢুকেই দেখল, বৃদ্ধ রেকটর দাঁড়িয়ে আছেন। পুরো হাতা সাদা শার্ট আর সাদা ট্রাউজার পরে আছেন। তিন চারজন পুরুষ মহিলা টিচারের সঙ্গে কথা বলছেন। কথা বলতে বলতে গোগোলদের দিকেও তাকিয়ে দেখছিলেন। মনে হল, তিনি দিকেও ও ব্যাঙ্ক-ডাকাতির বিষয়েই কথা বলছেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.