সমরেশ বসুর Adi Madhya Anta আদি মধ্য অন্ত pdf ডাউনলোড করুন। সমরেশ বসু pdf আদি মধ্য অন্ত পড়ুন। Adi Madhya Anta pdf সমরেশ বসুর উপন্যাসগুলোর অন্যতম।
Adi Madhya Anta pdf নমুনাঃ
“আমি, অস্বীকার করছিনে, আমরা এ যুগের ছেলেমেয়েরা…” স্থপূর্ণ। দুহাত বাড়িয়ে, শৈবালের ঠোঁটের ওপর চেপে ধরলো, “দোহাই তোমার বুড়ো বাবা ঠাকুর্দার মতো জ্ঞানের বাক্য শুনিও না। কোথায় একটা মজার গল্প বলতে এলুম, শুনে এনজয় করবে। তা না, সেলফ, ক্রিটিসিজম শুরু করে দিলে।” Adi Madhya Anta pdf
“তুমি আমাকে ভুল বুঝলে মধু।” শৈবাল সুপূর্ণার ডাক নামে ডেকে, ওর নিখুঁত ম্যানিকিওর করা পারফিউমের নেশা ধরানো গন্ধমাখা কোমল ফরসা হাত দুটি মুখ থেকে টেনে বুকে রাখল, “তোমার মজার গল্পের নায়ক নায়িকা, অরিন্দম আর কৃষ্ণা সম্পর্কে তা হলে লোভের কথা বললে কেন ? আর ওদের করুণা করার কথাই বা তোমার মনে এলো কেন ?” স্থপূর্ণ। ঘরের বন্ধ দরজাটার দিকে একবার দেখে নিল। কারণ শৈবাল যে কেবল ওর হাতদুটো টেনে বুকের ওপর নিল, তা নয়। ওকেও টেবিলের পাশ দিয়ে বুকের অনেকটা কাছে টেনে নিল। ঈষৎ বাধা দেবার চেষ্টা করলো। ফলে সবুজ বনে লাল ফুল ছাপানো পিওর সিল্কের শাড়ির আঁচল খসলো।
শাড়ির সঙ্গে অভিন্ন রঙের মেশানো জামায়, উদ্ভিন্ন বুকের । একধিক উদাস। অতি অনুজ্জ্বল ওষ্ঠরঞ্জনী মাথা পুষ্ট ঠোঁট টিপে, ওর স্বাভাবিক সরু ভ্রুকুটি চোখে শৈবালকে হানলো। কপালের সামনে, ছাঁটাই করা নরম কালো চুলের গোছা এসে পড়েছে প্রায় ওর দীর্ঘায়ত কালো চোখের ওপর। “কী করছো? এটা তো তোমার অফিস ঘর বলেই জানি। দরজাটাও খোলা।”
“ভুল কথা একটাও বলোনি।” শৈবাল ওর ঝকমকে দাঁতে হেসে, স্থপূর্ণাকে
কোনো অবকাশ না দিয়েই ঝটিতি প্রায় বুকের সংলগ্ন করলো, “কেবল ভুলে গেছ, দরজার বাইরে একজন বেয়ারা আছে। আর দরজার বাইরে, লাল বাতিটার সুইচ আমি আগেই অন করে দিয়েছি। যাকে বলে রক্ত চক্ষুর নিষেধ-সংকেত।” Adi Madhya Anta pdf
স্থপূর্ণা দেখল, ওর বুকে ঠেকেছে শৈবালের কপাল। পোশাকে-আশাকে আর বাকচাতুর্যে যতো আধুনিকই হোক, বুকের স্পর্শে একটা শিহরিত লজ্জাকে চাপা দায়। বদ্ধ ঘরে তৃতীয় ব্যক্তি না থাকলেও কোনোরকমে শৈবালের হাত থেকে, একটা হাত ছাড়িয়ে, ওর মাথাটা সরিয়ে দিল । ঢেউ খেলানো চুলের মুঠি আলগা করে ধরলো । মুখে ততক্ষণে লেগে গিয়েছে রক্তচ্ছটা, “মতলবটা কি তোমার বল দিকিনি? আমি তো তোমাকে ওরকম প্রভোক করতে চাইনি। তবে কেন…” Adi Madhya Anta pdf
“আমার ইংরেজি বাঙলা, দুই-ই খুব খারাপ।” শৈবাল চেয়ার থেকে মুখ তুলে সুপূর্ণার লজ্জা আর অস্বস্তিভরা মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো। “আসলে, তুমি তো সমস্ত দিক দিয়ে আমার চোখে মুর্তিমতী প্রোভোকেটর। কিন্তু ঘরে ঢুকে দু’কথার পরেই তুমি আমাকে বলেছিলে, আমার মধ্যে তুমি অরিন্দনের পাগলা দাপানিটা দেখতে পাও না।…আহা, না না, আমি অবিশ্যি ও কথাটার জবাব দিতে বা শোধ নিতেই, এসব কিছু করছিনে। তুমি ভালোই জানো, অরিন্দমের পাগলা দাপানি আমার সত্যি নেই, কারণ আমার স্থান কাল পাত্রী নিয়ে হারানোর ভয় আর ছটফটানি নেই। অফিসের কামরায়, এমন অসময়ে, তোমার সদ্য লাগিয়ে আসা ঠোঁটের রঙ চুষে নেবো, এতোটা কাণ্ডজ্ঞানহীনও আমি নই । তবু যে কেন তোমাকে কাছে টেনে নিলুম—মানে — ”
শৈবাল কথাটার শেষ খুঁজে পেলো না। মুখের হাসিতে একটা অসহায় অভিব্যক্তি। ওর হাত থেকে মুক্ত হয়ে, সুপূর্ণা দুহাত সরে দাড়ালো। ঘাড় ঝটকা দিয়ে কপালের চুলের গুচ্ছ সরাতে গিয়ে, নতুন করে তার এক গুচ্ছ চুল কপালে এসে পড়লো। বয়েজ কাট থেকে কয়েক ইঞ্চি বড় চুল, ঘাড়ের কাছে বন্ধনহীন অবাধ্য হয়ে যেন ফুঁসছে । ঘাড় ওর সোজা হলো না। সূক্ষ্ম কাজলটানা আয়ত কালো চোখে ভ্রূকুটি দৃষ্টি। সবুজবনে লাল ফুল ছাপানো রেশমী শাড়ির আঁচল টানল বুকে। Adi Madhya Anta pdf
কিন্তু যতটা টানলো, ততটাই খসলো । টানা চোখ, টিকলো নাক, ঈষৎপুষ্ট ঠোঁট, প্রায় ফরসা রঙ, সব মিলিয়ে ওকে রূপসী বলা যাবে কি না সন্দেহ। তবে দৃষ্টি আকর্ষণ করার সমস্তরকম রমণীয় সৌন্দর্যই ওর আছে। স্বাস্থ্যে আছে দীপ্তি । বাড়তি মেদ বলে কিছুই নেই, অথচ প্রায় দীর্ঘ শরীরের গঠন নিখুঁত। কাঁধে ঝুলছে কাজের মেয়েদের মতোই বড় ব্যাগ। বাঁ হাতে ঘড়ি। কানে দুটো ছোট মুক্তো। বয়েসটা বাড়িয়ে বলতে ভালবাসে। কারণ জানে, ওর বয়সটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। ঘামাতে হলে ওকে নিয়েই ঘামাতে হয়। চব্বিশটাকে আটাশ বললেও, আটাশে টসটস্ই করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.