Download Aapon Kheyale Cholen Raja pdf by Chittra Deb চিত্রা দেব এর ইতিহাস নিয়ে লেখা আপন খেয়ালে চলেন রাজা pdf ডাউনলোড করুন ও Aapon Kheyale Cholen Raja pdf পড়ুন।
আপন খেয়ালে চলেন রাজা pdf Aapon Kheyale Cholen Raja pdf কাহিনীঃ
রাজারাজড়াদের যুগ বিগত, কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে কৌতূহল আজও জাগ্ৰত। বিশেষত তাঁদের রাজকীয় মেজাজ, আমোদপ্রমোদ, শখ-বাতিক, সাধ-আহ্লাদ কি খামখেয়ালিপনার গল্প এখনও আগ্রহ জাগায়। ভারতীয় রাজাদের, বিশেষ করে দেশীয় রাজন্যবর্গদের নিয়ে এই ধরনের কতিপয় বই লেখা হলেও ভিন ভাষার সেসব বই এখন দুষ্প্রাপ্য। আর বাংলা ভাষায় এ-জাতীয় বই নেই বললেই চলে । বহু-অনুভূত সেই অভাব মেটাবে চিত্রা দেবের এই গ্রন্থ।
শুধু দেশীয় রাজন্যবর্গের কথাই নয়, এ-গ্রন্থে শোনানো হয়েছে মুঘল সম্রাটদের, হিন্দু রাজাদের এবং নবাব ও রাজা খেতাবপ্রাপ্ত ধনীদের কথাও। তাঁদের জীবনী নয়, জীবন-উপভোগের নানান পদ্ধতি ও বৈচিত্র্যই এ-গ্রন্থের প্রধান বিষয়। গবেষণার ধাঁচে একেবারেই লেখা হয়নি। বিভিন্ন গ্রন্থে ও পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা উপাদানের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ গল্পের ভঙ্গিতে শোনানো হয়েছে কাহিনী। বর্ণনার গুণে প্রতিটি কাহিনীই যেন জীবন্ত। তাকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে সুব্রত চৌধুরীর পাতায় পাতায় ছড়ানো চোখ জুড়োনো অসংখ্য ছবি।
রাজাদের যুগ চলে গিয়েছে, তাঁদের সম্বন্ধে কৌতূহল যায়নি। বিশেষ করে তাঁদের রাজকীয় মেজাজ, আমোদ-প্রমোদ, সাধ-আহ্লাদ, শখ ও বাতিক বিষয়ক খামখেয়ালের গল্প আমাদের টানে। ভারতীয় রাজাদের বিশেষ করে দেশীয় রাজাদের উত্থান-পতন, প্রবণতা, আমোদ-প্রমোদ নিয়ে বেশ কিছু বই লেখা হলেও সহজে সে-সব বই হাতের কাছে বিশেষ পাওয়া যায় না। বাংলায় এ ধরনের বইয়ের সংখ্যা কম। দেওয়ান জারমানিদাসের মহারাজা ও মহারানির অনুবাদ ছাড়া প্রায় কিছুই চোখে পড়ে না। সেজন্যই এই সামান্য প্রয়াস। এখানে শুধুমাত্র দেশীয় রাজন্যবর্গ নয়, আছেন মুঘল সম্রাটেরা, হিন্দু রাজারা, নবাব ও রাজা খেতাব পাওয়া ধনী ব্যক্তিরাও। তাঁদের জীবনকথা নয়, জীবনোপভোগের বৈচিত্র্যই এখানে প্রাধান্য লাভ করেছে। কারও মনে আঘাত করাও আমার উদ্দেশ্য নয়।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাহিনী থেকেই ঘটনাগুলি আহরণ করা হয়েছে। গবেষণা করে সত্যাসত্য অনুসন্ধান করা হয়নি। তবে কোনটাই মনগড়া নয়, যদিও আজ এসবই শুধু গল্প। পুরনো গল্প। মুজতবা আলী সাহেব বলতেন, ‘পুরনো গল্পের পুনরাবৃত্তি না করলে সেটি বেঁচে থাকবে কি করে? সেকথা ভেবেই রাজারাজড়াদের গল্প সংগ্রহে মন দিয়েছিলাম। যদিও অনেক সময় মনে হয়েছে, সবই স্মরণযোগ্য কাহিনী নয়, উত্তরপুরুষদের মনে হতে পারে কোন কোন গল্প হারিয়ে গেলেই ভাল। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে পরবর্তী ব্যক্তিরা এসব রাজকাহিনীকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেননি, তাঁদের সাহায্যেই বিদেশীয় এবং এদেশীয় লেখকেরা জানাতে পেরেছেন বহু অকথিত-অবিস্মরণীয় কাহিনী। তাঁরা সকলেই ধন্যবাদার্হ।
রচনাটি প্রথমে শারদীয় আনন্দবাজার পত্রিকায় (১৯৮৯) সংক্ষেপে প্রকাশিত হয়। সেসময় অনেকের আগ্রহ, অভিনন্দন ও গ্রন্থাদি দিয়ে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিষয়টিকে আরও পূর্ণাঙ্গ করার ইচ্ছে হয়েছিল। বর্তমান বইটি তারই ফসল। কিন্তু যত রাজা তত গল্প, কাজেই সব রাজার কথা নিশ্চয় বলা গেল না। হয়ত বাদ পড়লেন অনেকে। যদি সুযোগ পাই, পরবর্তীকালে সেই অসম্পূর্ণতা দূর করার চেষ্টা করব। যাঁরা নানাভাবে সাহায্য করেছেন তাঁদের সকলকেই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
চিত্রা দেব
আপন খেয়ালে চলেন রাজা pdf Aapon Kheyale Cholen Raja pdf নমুনাঃ
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, ১৯৫৯ সাল। দিল্লিতে শেষ নিঃশ্বাস ফেললেন বস্তারের মহারাজা প্রফুল্লকুমার ভঞ্জদেও। শোক সংবাদ এসে পৌঁছলো বস্তারে, মহারাজার বড় ছেলে কুমার না, কুমার কেন, এখন তো তিনিই মহারাজা। স্বাধীন ভারতে এই খেতাবটির অস্তিত্ব সম্বন্ধে ষোলো আনা সন্দেহ থাকলেও রস্তারের আদিবাসী সমাজের কাছে মহারাজা নরদেহী দেবতা। এঁরা সাধারণত আইন-কানুনের অস্তিত্ব নিয়ে মাথা ঘামান না কিন্তু মহারাজার অস্তিত্বে অবিশ্বাস, সে যে দেবী দণ্ডেশ্বরীকে অবজ্ঞা করার মতোই মহাপাপ । তাই, খামখেয়ালি নতুন মহারাজা প্রবীরচন্দ্র ভঞ্জদেও কাকতীয় যখন ঘোষণা করলেন, ‘না, তাঁর সঙ্গে আমার কোন ‘সম্পর্ক নেই’ অতএব বস্তারে প্রফুল্লকুমারের মরদেহ আনা বা শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হবে না।
দিনের পরে দিন pdf – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Diner Pore Din pdf – Bibhutibhushan Bandhopadhyay
তখন সকলে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেও কোন প্রতিবাদ জানাল না। দিল্লিতে যমুনার তীরে নিতান্ত অনাড়ম্বরভাবেই মহারাজার মরদেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেল। প্রফুল্লকুমার সম্পর্কে ময়ূভঞ্জের রাজার সহোদর, বিবাহ করেছিলেন কাকতীয়রাজ রুদ্রপ্রতাপের কন্যা প্রফুল্লকুমারীকে। সজ্জন, শিক্ষিত ও অমায়িক মানুষটিকে সকলেই ভালবাসতেন। তাঁর শ্রাদ্ধ বা অনুরূপ কোন শ্রদ্ধানুষ্ঠান কিছুই হল না বস্তারে। অথচ দিন কয়েক বাদেই দেখা গেল বিশাল এক শোক মিছিল বেরোচ্ছে নতুন মহারাজার বাসভবন থেকে। তারপর? সারা শহর মাড়িয়ে সেই মিছিল এগিয়ে গেল শ্মশানের দিকে। কী হল? কী হল? কে গেলেন? সকলের চোখে মুখে আর্ত প্রশ্ন। শেষে জানা গেল, মহারাজার প্রিয় কুকুরটি মারা গিয়েছে। পুরোপুরি রাজকীয় মর্যাদায় তাকে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানে। শোকস্তব্ধ পরিবেশে শেষকৃত্যের সব অনুষ্ঠান ঠিক ঠিক পালিত হল।
শুধু তাই নয়, রাজার পোষা কুকুরের শ্রাদ্ধও হল ঘটা করে। ভরপেট নেমন্তন্ন খেয়ে গেলেন কয়েক হাজার মানুষ! ছি-ছি করলেন অনেকেই তবে আড়ালে। রাজার খেয়াল বলে কথা! উনিশশো বাহাত্তর সালের আগে এদেশে কতজন রাজা ছিলেন? শুধু রাজা নয়, মহারাজা, মহারানা, মহারাওল, নবাব, নিজাম, জামসাহেব — সব নিয়ে পাঁচশো পঁয়ষট্টিজনের মতো হবে। এঁদের কারও রাজ্য ফ্রান্সের মতো বড়, কারও বা রুমালের মতো ছোট্ট। কেউ একুশটি তোপধ্বনি বা গানস্যালুট পাওয়ার অধিকারী কেউ বা মাত্র নটি।
Aapon Kheyale Cholen Raja pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.