শ্রীপান্থ এর পশ্চিমবঙ্গের উপন্যাস Harem pdf হারেম pdf ডাউনলোড করুন ও Harem pdf হারেম pdf পড়ুন। মূলত দাস দাসী, খুজাদের জীবন-যাপনের কথা উঠে এসেছে। বেশ চমকপ্রদ কিছু তথ্য রয়েছে বইটিতে।
Harem pdf হারেম pdf নমুনাঃ
ঘরে পা দিয়েই থমকে দাঁড়াল বাঁদী। ধবধবে শয্যায় একটা দলিত ফুলের মত পড়ে আছেন সুলতানা। বেশবাস বিস্রস্ত চুল এলোমেলো, অঙ্গ শিথিল, কাজলের ছায়ায় বিস্ফারিত স্থির দুটি চোখ। আতঙ্কে চীৎকার করে উঠল বাঁদী। সঙ্গে সঙ্গে ছায়ার মত ক’জন মানুষ ঘিরে দাঁড়াল ওকে। দ্বিতীয় আর্তনাদ গলা থেকে বের হওয়ার আগেই একজন চেপে ধরল মুখটা। তারপর ব্যস্ত কয়েকটি মুহূর্ত। ইশারা, ফিসফিস। দরবারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা— সুলতানা মৃত।
হাজার চুরাশির মা pdf – মহাশ্বেতা দেবী Hajar Churashir Maa pdf – Mahasweta Devi
এমন দৃশ্য এই প্রাসাদে কেউ কখনও দেখেনি। স্বপ্নেও না। নিজের হাতে সাজানো বাগানটি আপন হাতেই তছনছ করছেন সুলতান সুলেমান। পরীর মত মেয়েগুলোকে তিনি দু’হাতে বিলিয়ে দিচ্ছেন। যে হাত বাড়াচ্ছে সেই ঘরে ফিরছে টকটকে লাল গোলাপ হাতে। কাঁটা নেই, কেবলই গোলাপ। সুলতানের এই বদান্যতার হেতু কী কেউ জানে না! প্রজারা ভাবিত। ভাবিত রাজ্যের শুভাকাঙ্ক্ষীরাও।
—কী হল সুলতানের? সে উত্তর তখনও জানে মাত্র একজন। পুরানো প্রাসাদের একটি কক্ষে বসে হাতের আর্শিতে মুখ দেখছিল মেয়েটি। রাঙা ঠোটের কোণে মৃদু হাসি।—তাহলে কথা রেখেছে সুলেমান!
কারাকক্ষের দুয়ারে হঠাৎ তুমুল হট্টগোল। হাতের কোরাণশরিফ বন্ধ করে সামনের বিশাল দরজাটির দিকে তাকালেন দ্বিতীয় সুলেমান। কারাগার, অতএব দুয়ার বাইরে থেকে বন্ধ। তাকালে কিছুই দেখা যায় না। কিন্তু স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে কারা যেন বাইরে চীৎকার করছে। দরজায়ও করাঘাত পড়ল যেন। ইব্রাহিম শঙ্কিত। তাঁর বিবর্ণ মুখখানা আরও বর্ণহীন। তবে বুঝি জীবনের শেষ প্রহরটি এল! বছরের পর বছর ধরে এরই প্রতীক্ষায় ছিলেন বন্দী ইব্রাহিম। তবু আতঙ্কে শিউরে উঠলেন তিনি, এই কি ছিল নিয়তি? নিজের সমস্ত শক্তিকে এক করে কোন মতে উঠে দাঁড়ালেন ইব্রাহিম। দুয়ারে প্রচণ্ড আঘাতের শব্দ। শিকারকে সামনে পেয়ে উল্লাসে চীৎকার করছে যেন একদল নেকড়ে।
ইব্রাহিম ভেবে পাচ্ছেন না কী করবেন তিনি, — পালাবেন? কারাগারের অন্দরে ছুটে যাবেন? তার আগেই সশব্দে ভেঙে পড়ল সামনের দরজাটি। এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই খেলনার মত একটি মৃতদেহ ছুঁড়ে দিল ওরা তাঁর পায়ে। জল্লাদ আর বেঁচে নেই! সগৌরবে ঘোষণা করল উল্লসিত জনতা। দেহটির দিকে তাকালেন ইব্রাহিম। মুরাদ মুরাদ নয়, জল্লাদ তাঁর স্বগতোক্তিটিও যেন শুনে ফেলেছে জনতা।—মুরাদই না আপনাকে নিক্ষেপ করেছিলেন কারাগারে। আমতা-আমতা করে কী যেন বলতে চাইলেন ইব্রাহিম। তার আগেই ধ্বনি তুলল ওরা-আপনিই আমাদের সুলতান!
বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিন্তু এই কক্ষটিতে দিনের রোশনাই। ঘরের চারদিকে আয়না। মাথার ওপরে ঝুলছে সার সার ঝাড়। মেঝেয় বাহারি গালিচা। তারই মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন অটোমান সাম্রাজ্যের বর্ষীয়ান সুলতান। তাঁর সোনার অঙ্গে কোথাও একফালি বস্তু নেই। উগ্র আতরগন্ধে কক্ষ ভরপুর। তারই মধ্যে উন্মাদের মত একাকী পায়চারী করছেন সুলতান। থেকে থেকে থমকে দাঁড়িয়ে আয়নায় নিজেকে দেখছেন। হঠাৎ দুয়ারে নূপুরনিক্কণ। ভারি পর্দা ঠেলে ঘরে ঢুকল একদল মেয়ে। তারাও সম্পূর্ণ বিবসনা। লুব্ধ সুলতান ক্ষুধার্ত চোখে তাকালেন তাদের দিকে। তারপর সুলতানী ভঙ্গিতে ঘোষণা করলেন—আজ তোমরা সবাই বনের হরিণী, আমি হরিণ!
সম্রাট বললেন-জ্যান্ত পুঁতে ফেল ওকে। হ্যাঁ, আজই, এক্ষুনি। দুর্গ থেকে জিঞ্জির বাঁধা বন্দিনীকে বের করে আনা হল বাইরে, ঘুমন্ত রাত্রির অঙ্গনে। ইট এল, পাথর এল। মশালের আলোয় ওরা রাত ভর কাজ করল। চোখের জলে চুন আর বালি মেশাল, বুকের আর্তনাদকে মুখে গান করে ফোটাল। দেখতে দেখতে ডালিম কুঁড়ির মত সপ্তদশী একটি তরুণীর দেহ ঘিরে গড়ে উঠল আট দেওয়ালের অনুচ্চ সৌধ। নিষ্ঠুর, নিশ্ছিদ্র। ভোরের আগেই মাথার উপরে শেষ তারাটি ঝপসা হয়ে এল, শেষ ইঁট হাতে উঠল। ভেতরে যেন ডানা ঝাপটাচ্ছে পাখি। আলোর বৃত্তে শেষ পাক অসম্পূর্ণ রেখেই বোধহয় মাঝপথে মুখ থুবড়ে পড়েছে পতঙ্গ। ওরা কান পাতল। কোন সাড়া নেই। ওরা আল্লার নাম নিল। তারপর ধীরে ধীরে নামিয়ে দিল হাতের শেষ পাথরটি। রাত্রি তখনও শেষ হয়নি।
Harem pdf হারেম pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.