মহাশ্বেতা দেবীর জ্ঞানপীঠ পুরস্কার এ ভূষিত উপন্যাস Hajar Churashir Maa pd হাজার চুরাশির মা pdf ডাউনলোড করুন ও Hajar Churashir Maa pd হাজার চুরাশির মা pdf পড়ুন।
Hajar Churashir Maa pd হাজার চুরাশির মা pdf review
” সবচেয়ে কঠিন নিজের মত হওয়া।”
আজ্ঞে হ্যাঁ, এই পৃথিবীতে এর চেয়ে কঠিন কাজ আর নেই বলেই মনে হচ্ছে।
একটু তালগোল পাকিয়ে গেল না? আচ্ছা একটু ধরিয়ে দিচ্ছি, হ্যাঁ উচ্চমাধ্যমিক এ ভাত গল্পের রচয়িতা মহাশ্বেতা দেবী’র লেখা ‘হাজার চুরাশির মা’ গল্পের কথা বলছি।
উপন্যাসটি ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৭০-এর দশকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নকশাল আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই উপন্যাসটি রচিত হয়।
এখানে বলে রাখি, গল্পের নায়িকা সুজাতা এক মা ও গৃহিনী, স্বাধীন, চাকুরেরেতা, পাঁচ সন্তানের মা স্বামীর এক বিরাট ব্যাবসা, আপাত দৃষ্টিতে আমরা এটাকেই সুখের সংসার বললেও, লেখিকা এই সুন্দর ফুলের ভেতর কদর্য গুলো কে বের করেছেন খুঁটিয়ে। সেখানে নিষ্ঠুরতার চরম নিদর্শন রুপে নিজের রক্তবাহিত ছেলে ব্রতির হত্যায় মৃত্যুর খবরে, তাকে দেখতে যাওয়ার থেকেও গ্রুরুত্বপুর্ণ হয়ে ওঠে কিভাবে এই খবর চাপা দেওয়া যাবে তা নিয়ে ব্যস্ততা।
গল্পের নায়িকা সুজাতা নিজেই ছেলের লাশ দেখতে যান, অথচ সমাজে তিনি এক কুলশিত, ঋদয়হেনা এর অপবাদ পেয়েছেন। যিনি প্রতিমুহূর্তে সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু ভাবে সমাদিত হননি নিজের স্বামীর কাছে। যার নাম দিব্যনাথ, গল্পের পার্শ্চরিত্র ব্রতি (সুজাতার ছোটছেলে, যে খুন হয়) তার খুন হওয়ার কারন ও একইসাথে লেখিকা একজন সো কলড “গৃহিনী”র বাইরের আড়ম্বর এর মোড়ক ফেলে দিয়ে সেখানকার সত্তিকারের চিত্র তুলে ধরেছেন, গল্প যতই এগোতে থাকে ততই আমরা জানতে পারি যে কিভাবে একজন সৎ, দরদী, প্রতিবাদী, যার সাথে মতামত মিলে না তাকে কিভাবে প্রতিটা ভাবে হেয় করা হয়, এটি অন্য কেই হলে মানা যেত, কিন্ত বিখ্যাত ধনী পরিবারের কনিষ্ঠ ছেলের হত্যার খবরেও সেটা বেড়িয়ে এলে, এবং তার দায় সর্বদা পুত্রের শোকে ব্যস্ত, মগ্ন মা য়ের নিতে হয়।
অপমান, লাঞ্ঝনা, ঘৃণা সত্বেও একজন মহিলা কিভাবে কর্ত্যব্যে ফাঁকি না দিয়ে নিজের সুখের কথা চিন্তা না করে, সারাজিবন লাগিয়ে দেয় কতকগুলি নরমুন্ড দের জন্যে। গল্প এগোনোর সাথে তা আরো প্রকাশিত হতে থাকে। লেখিকা খুবই সহজ সরল অথচ তাদের নোংরা জিভ ও বিষ দাঁত বের করিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, বোধ করী এরম সাহস বাংলা সাহিত্যে হাতে গোনা সাহিত্যিক ছাড়া দেখা যায়নি।
১৯৯৬ সালে মহাশ্বেতা দেবী এই উপন্যাসটির জন্য জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা তার হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেন।
অবশেষে এই কথায় বলবো, এই বিশ্বে এক দল আছে যারা সমস্ত কিছু নিজের হাতের মুঠোয় পেতে চাই, তার জন্য তারা সর্ব পথ অবলম্বন করতে প্রস্তুত। তেমনই কদাচিৎ আছে, যাহারা জন্মায় নিজেদের রক্তের ভাসানে ছড়িয়ে দেয় অঙ্গহীন দের কাছে। আর এই সব ভূলে যাওয়া, কেও মনে রাখেনার কথার প্রতিবাদে জেগে থাকে শোকাহত হাজার চুরাশি মায়ের মন! বইটি অবশ্যই কিনে পড়বেন।
তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া ও নিজ পড়ার অভিজ্ঞতা।
মহাঃ দীপু আলনূর
ফেসবুক প্রোফাইল লিঙ্ক – www.fb.com/dipu.alnur
Hajar Churashir Maa pd হাজার চুরাশির মা pdf বইয়ের ভূমিকাঃ
মহাশ্বেতা দেবী। তিনি উপন্যাসিক। তিনি লেখেন গণতান্ত্রিক জটিলতা নিয়ে। তিনি প্রশ্ন তোলেন প্রতিটি বিবেকবান মানুষের প্রতি, জিজ্ঞাসা করেন পাঠককে, গণতন্ত্রের পাঠককে গণতন্ত্রের পথিককে, রাষ্ট্রযন্ত্রের জটিলতা নিয়ে। নগর উন্নয়ণের পশ্চাতে যে সু-গভীর অন্ধকার খাদ তৈরি হচ্ছে তিনি সেখানে আলো ফেলেন। তিনি তখন মহাশ্বেতা নন কখনো তিনি দেবী ও মাতা- যখন কলমের মতো অস্ত্র নিয়ে প্রতিরক্ষার যুদ্ধে নেমে পড়েন বঞ্চিতদের পক্ষে; ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের পক্ষে। মহাশ্বেতা আদিবাসীদের কাছে দেবী ও মা। তিনি সুবিধা ও প্রাপ্য বঞ্চিত সকল মানুষের লেখক।
তিনি মার্ক্সীয় ধারার সাহিত্য রচনার প্রতি বিশেষ মনোযোগী। সমাজের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতেই তার গল্পের উপস্থাপনা ও শরীর নির্মাণ। তিনি ফিরে যান উৎসের কাছে, কৃষির কাছে, আদিবাসীদের কাছে আর তা না হলে যেন তিনি জীবন ফিরে পান না। প্রকৃতি বিজ্ঞান তাকে কেন্দ্রের দিকে টানে, গভীরভাবে টানে। তিনি যেন মার্কসের এই কথাগুলোই বলেন- আর সত্য সত্যই প্রতি দিনে-দিনে। আমরা এই নিয়মগুলোকে আরও নির্ভুলভাবে জানতে শিখি, প্রকৃতির চিরাচরিত গতিধারার মধ্যে হস্তক্ষেপের অপেক্ষাকৃত আশু বা অপেক্ষাকৃত সুদূর ফলাফল কী হবে তা আমরা বুঝতে পারি …। … আর যতই তা ঘটতে থাকবে ততই প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা মানুষ শুধু অনুভব নয়, উপলব্ধিও করবে, ততই অসম্ভব হয়ে উঠবে মানুষ আর বস্তু, মানুষ আর প্রকৃতি, দেহ আর আত্মার মধ্যে বিরোধের অর্থহীন অস্বাভাবিক সেই ধারণা….।
হাজার চুরাশির মা’ উপন্যাসটি একটি লাশের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত। একজন সৎ, বিবেকবান বিপ্লবী সন্তানের মৃতদেহের পরিচয় দিতে অবশেষে কেউ আর রইল না। পরিবারে অন্যান্য সদস্য থেকে এমনকী কোনও আত্মীয়-স্বজনও নয়। তিনি মা। তিনিই হাজার চুরাশি নম্বর লাশটির মা হয়েই মর্গের দরজায় অপেক্ষা…। উপন্যাসটির শরীরের এক প্রান্তের সংলাপ এমনই—
মিঃ কাপাডিয়া নিখুঁত বাংলায় বলতে লাগলেন, দেশের সমস্যা কি বলুন? ইনটিগ্রেশন হচ্ছে না। বহু ধর্ম, জাতি, ভাষা হবার দরুণ দেশটা ভেঙে যাচ্ছে। ফুড কোনও সমস্যাই নয়। ফুডয়েটে হচ্ছে কি? চাষীরা অত্যন্ত ওয়েল অফ। সবাই রেডিও কিনছে।… “বিশ্বদেব চৌধুরী”
Hajar Churashir Maa pd হাজার চুরাশির মা pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.