লায়লী আশমানের আয়না pdf – মহাশ্বেতা দেবী Layli Ashmaner Ayna – Mahasweta Devi pdf

লায়লী আশমানের আয়না pdf - মহাশ্বেতা দেবী Layli Ashmaner Ayna - Mahasweta Devi pdf
লায়লী আশমানের আয়না pdf - মহাশ্বেতা দেবী Layli Ashmaner Ayna - Mahasweta Devi pdf

মহাশ্বেতা দেবীর লায়লী Layli Ashmaner Ayna pdf আশমানের আয়না pdf ডাউনলোড করুন ও Layli Ashmaner Ayna pdf আশমানের আয়না pdf পড়ুন।

লায়লী আশমানের আয়না pdf - মহাশ্বেতা দেবী Layli Ashmaner Ayna - Mahasweta Devi pdf
লায়লী আশমানের আয়না pdf – মহাশ্বেতা দেবী Layli Ashmaner Ayna – Mahasweta Devi pdf

Layli Ashmaner Ayna pdf আশমানের আয়না pdf নমুনাঃ

‘আয়নাটি লায়লী আশমানের। হ্যাঁ, লক্ষ্ণৌওয়ালী লায়লী আশমানের। আলি শাহ ওকে উপহার দিয়েছিলেন।’
কুদনলাল দেওয়ালে টাঙানো আয়নাটার দিকে তাকাল। বড় আয়না। ডিমের মতো লম্বাটে। আয়নার কাঁচটি বহুমূল্য। ফ্রেমটি রুপোর এবং কারুকাজ খচিত পাতার মাঝে মাঝে এক-একটি গোলাপ উৎকীর্ণ।
কুন্দনের মনে পড়ল সে কেমন ছুটতে ছুটতে চীনেবাজারে গিয়েছিল। রহমত নিলামওয়ালাকে কত খুঁজে খুঁজে বের করতে পেরেছিল সে। প্রথমে রহমত একটি কথাও বলতে চায়নি। তারপর কুন্দনলালের পরিচয় জানবার পর সে ভয় পায়।
সভয়ে শরীরটি নুইয়ে সেলাম ক’রে সে মাপ চায়। তারপর বলে, কেমন ক’রে জানব বলুন, ও লোকটা আপনার বাড়ী থেকে জিনিসপত্তর লুট করে এনেছে?’
‘সব কি বিক্রি হয়ে গেছে?’ কথাটা জিগ্যেস করতে কুন্দনের গলায় ব্যথা করছিল।
সব! নিলামে তুলে দিয়েছিলাম কি না!’ Layli Ashmaner Ayna pdf আশমানের আয়না pdf পড়ুন।

২৫ শে মার্চ pdf – রবিন জামান খান 25 Se March pdf – Robin Zaman Khan

তারপর রহমত চাকরদের ডাকে। কুন্দনকে বসায়, নিজে পাশে বসে। পান ও শরবত আনে। কুন্দন কিছুই নেয় না। শুধু কপালটা ধরে বসে থাকে ও চিন্তা করে লায়লীর ব্যবহারের, শখের ও খেয়ালের জিনিসগুলোর। সেই আতরদান, আলবোলা, পোশাক এবং আসবাবপত্র কিছুই তবে নেই! সেগুলোকে দেখতে পেলে এবং নাড়াচাড়া করতে পেলে কুন্দন একটু সান্ত্বনা পেত।
রহমত সাগ্রহে কুন্দনের মুখের দিকে চেয়ে থাকে। সম্ভবত সে বুঝতে চেষ্টা করছে ঐ মানুষটি কি ভাবছে।
একটু পরে কুণ্ঠিত স্বরে সে বলে, ‘কুন্দনবাবু, একটা জিনিস-ই রয়ে গেছে।’ কুন্দন চোখ তুলে চায়।
রহমত বলে ‘ঐ আয়নাটি। দেখুন, ওটা আপনি নিয়ে যান।’

কুন্দন কথা না বলে পকেটে হাত দেয়। রহমত বলে, না না! দাম আমি নিতে পারব না। ওটা আপনি নিয়ে যান।’
সে আয়নাটি নিয়ে এল চিকনের কাজ করা ঢাকনিটি ময়লা হয়ে গেছে। নিজেই আয়নাটি মুড়ে কুন্দনের হাতে দিল এবং বলল, ‘জিনিসগুলো কে কে কিনেছে আমার খাতায় তাদের নাম-ঠিকানা লেখা আছে। আমি কি……..
কুন্দন হাত নেড়ে তাকে নিষেধ করল। আয়নাটি নিয়ে সে যখন গাড়ীতে উঠছে তখন রহমত একটু ইতস্তুত করে বলল, ‘কুন্দনবাবু, আয়নাটা কি আপনি ব্যবহার করবেন?”

কুন্দন আরক্ত চোখে তাকাল। রহমত একটা সাহসের কাজ ক’রে বসল। সে কুন্দনের হাতটা ধরে বলল, ‘মাপ করবেন। একলা……ধরুন রাত-বিরেতে আয়নাটা না দেখাই বোধহয়…..। হঠাৎ কুন্দনের চোখদুটো একটা অস্বাভাবিক আলোয় জ্বলে উঠল। সে বলল, ‘কেন? এ কথা কেন?’
রহমত গলার তাবিজটা ছুঁয়ে বলল, ‘আমি জানি না। তবে একদিন একজন বাবু এসেছিলেন। তাঁকে ঘরে বসিয়ে আমি অন্য ঘরে গিয়েছিলাম।’ সে গলা নামিয়ে বলল, ‘বাবুটি হঠাৎ ভয় পান। বেরিয়ে আসেন। আমাকে কিছুই না বলে ছুটে বেরিয়ে গেলেন।’
কুন্দন এবার হাসল। কুন্দনের মুখে হাসি দেখলে সবাই ভয় পায়, রহমতও ভীত হলো। কুন্দন বলল, ‘এই টাকাটা রাখ। আমি খুশী হয়েছি।’

কুন্দনের গাড়ীটা যখন খিদিরপুরের বাগানবাড়ীতে ঢোকে, তখন সন্ধ্যে হচ্ছে। বিকেলের আলোটা তখন শুধু আকাশের পশ্চিম কোণে লেগে আছে। আষাঢ়ের বেলা। সময় হলেও যেতে চায় না। আকাশের কোণে কোণে ম্লান আলো ছড়িয়ে করুণ ও বিষণ্ণ মিনতির মতো লেগে থাকে।
কুদ্দনকে দেখে মালী ও চাকররা ছুটে এল। সকলকে সরে যেতে বলল কুন্দন। তারপর ওপরে উঠে এল। লায়লীর ঘরটা খুলল।
মন্তু ঘর। অন্ধকার। গালিচা এবং পর্দায় ধুলো। দেওয়ালের গায়ে কুন্দন আয়নাটা টাঙাল। সে দেওয়ালে মাথা রেখে দাঁড়িয়ে রইল। তারপর চোখটা তুলে দেওয়ালের দিকে চাইল। তার বুকের ভেতর যন্ত্রণা হচ্ছে। সে মোটা-মোটা আঙুলগুলো দিয়ে বুকটা ঘষলো। তারপর ভাঙা গলায় অস্ফুট স্বরে বলল, ‘লায়লী!’
তারপর কুদ্দন গভীর হতাশায় মাথা নাড়ল। লায়লী নেই, লায়লী নেই, লায়লী নেই, লায়লী কোথাও নেই। কুন্দন মাথার চুলগুলো টেনে ধরল।

সে কাঁচাপাকা চুলগুলোকে কিছুক্ষণ টানল। তারপর গালিচার ওপর হাঁটতে শুরু করল। একটু পরে মনে হলো তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। সে তাকাল। তার পায়ের আঘাতে গালিচা থেকে ধুলো উড়ছে। সে একটি জানালা খুলল।
বাইরে বিষ্টি পড়ছে। ঝিরঝির করে। গুঁড়ো গুঁড়ো বিষ্টি। কুন্দন জানলা দিয়ে বাইরে চাইল। তারপর সে ফিরে এল। আয়নার সামনে একটি চৌকি টেনে বসলো।
এই ঘর, এমনি আষাঢ়ের সন্ধ্যা, কত কথাই যে মনে পড়ে।

মনে পড়ে, শুধু মনে পড়ে। স্মৃতি বড় যন্ত্রণা দিতে পারে। দিনে দিনে, একটু একটু করে মানুষকে দগ্ধ করতে পারে।
আজ অনেক কথা মনে পড়ছে। স্মৃতিতে ডুব দিয়ে সে কি শান্তি পাচ্ছে? না। শান্তি নয়, দহন, শুধু দহন-দাহ। কিন্তু এই দহনে জ্বলবার একটা আকর্ষণ আছে বই কি।
লায়লীর কথা মনে পড়ে। এই আয়নার সামনে বসে লায়লী আশমান তাকে গান শোনাতো। কত সন্ধ্যায়, কত সকালে। কিন্তু শুধু লায়লী নয়। আর একজনের কথাও যে মনে পড়ে।
‘বজরঙ্গী, বজরঙ্গী, বজরঙ্গী!’
কুন্দনের অন্তর থেকে এক বোবা আহ্বান গুমরে উঠল।

Layli Ashmaner Ayna pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply