মহাযুদ্ধের ঘোড়া সকল খন্ড pdf – প্রফুল্ল রায় Mohajuddher Ghora pdf – Prafulla Roy

মহাযুদ্ধের ঘোড়া সকল খন্ড pdf - প্রফুল্ল রায় - Mohajuddher Ghora pdf - Prafulla Roy

প্রফুল্ল রায়ের Mohajuddher Ghora pdf মহাযুদ্ধের ঘোড়া সকল খন্ড pdf (প্রথম খন্ড, দ্বিতীয় খন্ড, তৃতীয় খন্ড) ডাউনলোড করুন।

মহাযুদ্ধের ঘোড়া সকল খন্ড pdf - প্রফুল্ল রায় - Mohajuddher Ghora pdf - Prafulla Roy

Mohajuddher Ghora pdf ‍নমুনা

Mohajuddher Ghora pdf part 01

নাম-করা ডেকরেটরদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ফুল-লতা-পাতা আর নানা রঙের কুচনো কাপড় দিয়ে ইউনিভার্সিটির বিশাল হল ঘরটাকে তারা উৎসবের সাজে সাজিয়ে দিয়ে গেছে। সীলিং থেকে, দেয়াল থেকে, পিলারগুলোর গা থেকে ফোয়ারার মতো আলো বেরিয়ে আসছিল এই মুহূর্তে। লাইটগুলোও ডেকরেটররাই লাগিয়ে দিয়ে গেছে।

আজ ইউনিভাসিটির কনভোকেসন অর্থাৎ সমাবর্তনের দিন। হলের একধারে বিরাট উঁচু মঞ্চ। মঞ্চের সামনের দিকে অগুনতি চেয়ারে কনভোকেসন গাউন গায়ে কয়েক শো টাটকা টগবগে তরুণ-তরুণী এবং তাদের মা-বাবা বা বন্ধু-বান্ধবরা বসে রয়েছে। সবার চোখমুখ দারুণ উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল । শিক্ষাজীবনে ওরা কমবেশি সকলেই সফল। সাফল্যের ট্রফি হিসেবে প্রত্যেককে একটি করে ডিগ্রি দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউণ্ডারি ছাড়িয়ে জীবনের আসল সদর রাস্তায় পা ফেলার জন্য এই ডিগ্রিটা হল পাশপোর্ট। সবাই ভেতরে ভেতরে এক ধরনের উত্তেজনা অনুভব করছিল। তাদের চোখ সামনের মঞ্চের দিকে।

এই ভিড়ের ভেতর একটা পিলারের গা ঘেঁষে বসে ছিল অশোক । সেও এ বছরের একজন সফল ছাত্র; আজ তারও একটি ডিগ্রি পাওয়ার কথা। কিন্তু অন্য ছেলেমেয়েদের মধ্যে তাকে একেবারেই মানাচ্ছিল না; ভীষণ বেখাপ্পা লাগছিল। তার গায়ে উৎসবের সাজ নেই। পরনের ট্রাউজারটা ভয়ানক নোংরা আর চিটচিটে। শার্টটা কোঁচকানো মোচকানো, তার ওপর দুটো বোতাম নেই। তিন চারদিন শেভ করে নি; সারা গালে দাড়ি পিনের মতো ফুটে আছে। চুল অবহেলায় পিছন দিকে উল্টে দেওয়া। চোখে-মুখে এক ধরনের বেপরোয়া উদাসীনতা।

হঠাৎ দেখলে তাকে সাঁনিক মনে হতে পারে। দুই পা সামনের দিকে ছড়িয়ে ক্রস করে রেখেছে সে। অথচ একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে, অশোক রীতিমত সুপুরুষ। ছ’ ফুটের কাছাকাছি হাইট, মেরুদণ্ড টান টান, নাক- মুখ কাটা কাটা। রোদে পুড়ে, জলে ভিজে গায়ের চামড়া তামাটে। হাত-পা এবং চোয়ালের হাড় বেশ মজবুত। কিন্তু অশোকের কথা এখন নয়।

Mohajuddher Ghora pdf part 2
আজ রবিবার। ছুটির দিন হলেও অশোকের মত ফোরমোস্ট ইণ্ডাস্ট্রিয়ালিস্টের ডেইলি রুটিনে ঢিলেঢালা কোন ব্যাপার থাকে না। অন্যদিনের মতই ভোর পাঁচটায় বেয়ারা বেড-টী দিয়ে গেল। বিছানায় কাত হয়ে অনেকটা সময় লাগিয়ে আস্তে আস্তে চা খেল অশোক । এভাবে চা খাওয়াটা তার অনেককালের অভ্যাস।

চায়ের পর ব্যালকনিতে এসে মর্নিং এডিসানের খবরের কাগজগুলো দেখতেই সুন্দরী চীনা যুবতীটি এসে গেল। ম্যাসাজের সময় হয়ে গেছে । এক সেকেণ্ডও দেরি না করে চীনা মেয়েটাকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ল অশোক । তারপর স্লিপিং গাউন-টাউন খুলে শুধুমাত্র একটা জাঙিয়া পরে ফোমের ম্যাট্রেসের উপর শুয়ে পড়ল।

আগে অচেনা যুবতীদের সামনে এভাবে শুয়ে পড়তে ভয়ানক অস্বস্তি হত। আজকাল তেমন আর কোন ফীলিং হয় না। সমস্ত ব্যাপারটাই এখন মেকানিক্যাল। হ্যাবিট, হ্যাবিট ইজ দ্য সেকেণ্ড নেচার। এখানে আসার পর ম্যাসাজের এই নতুন অভ্যাসটা রপ্ত হয়ে গেছে। এই ইণ্ডাস্ট্রিয়াল হাউস থেকে কোনদিন চলে যেতে হলে এই অভ্যাসটার কী হবে ? ভাবতেই একটু হাসি পেল অশোকের।

ম্যাসাজের পর স্নান, স্নানের পর ড্রেস-ট্রেস করে ব্রেকফাস্ট টেবলে যখন অশোক যাবে সেই সময় চন্দ্ৰকান্ত রাহেজা এলেন। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে সকাল ছ’টার মধ্যেই রাহেজা গ্রাউণ্ড ফ্লোর থেকে ওপরে উঠে আসেন। কিন্তু রবিবার আসেন দু’ঘণ্টা দেরি করে, আটটা নাগাদ। চন্দ্রকান্তকে সঙ্গে করে ডাইনিং রুমে চলে এলো অশোক। বেয়ারা বাবুর্চিরা ব্রেকফাস্ট রেডি করেই অপেক্ষা করছিল।

Mohajuddher Ghora pdf part 3
মিনিট দশবারো পর মাথার পেছন দিকের চিনচিনে ব্যথাটা আর নেই। হার্টবিটও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। অশোক চোখ মেলে সোজা হয়ে বসল। তারপরেই কী ভেবে পার্লের দিকে তাকাল।

পার্ল তার দিকে পলকহীন, উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে আছে। অশোক একটু হাসল, টেনশন করবেন না মিস শেঠনা। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড তো আপনি ভালোই জানেন। পার্টিশনের পর রিফিউজি হয়ে কলকাতায় এসেছিলাম। তারপর থেকে স্লামডোয়েলার— বস্তিবাসী। কত স্ট্রাগল করে বেঁচে থাকতে হয়েছে, ইউ জাস্ট কান্ট ইমাজিন। অসুখ টসুখ যে আমাদের হয়নি। তা নয়। কিন্তু প্রেশার, সুগার, হার্ট প্রবলেম—এসব বস্তির ধারেকাছে ঘেঁষে না।’ বলতে বলতে হাত নাচাতে লাগল, ‘তিন মাস কয়েকদিন আমি এই হাউসে এসেছি। আমার স্টেটাসও পালটে গেছে।

বেকার, সিনিক, আশাহীন, ভবিষ্যৎহীন বস্তির এক যুবক থেকে বিশাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাম্রাজ্যের চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আমার অসুখ টসুখও বদলে গেছে। ডোন্ট ওরি। রিল্যাক্স রিল্যাক্স -এই হাউসে আসার আগে আরও তিন চারটে বড় কোম্পানিতে কাজ করেছে পার্ল। কিন্তু অশোকের মতো আর কারওকে কখনও দেখিনি। দু’চার জন ছাড়া বেশির ভাগ শিল্পপতিই ভয়ঙ্কর রকমের গুরুগম্ভীর। এমপ্লয়িদের পোকামাকড় মনে করেন। সবসময় নাক-উঁচু কথা তো বলেনই না, যদিও বা দু’চারটে শব্দ তাঁদের মুখ থেকে বেরয়, মনে হয় অনেক, অনেক উঁচু লেভেল থেকে বলছেন।

অশোক আজ যা পার্লকে বলল, আগেও দু’একবার মজা করে করে এসব বলেছে। এক টপমোস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এমন অকপট, সরল, মজাদার মানুষ হতে পারে ভাবা যায় না। পার্ল তাকে খুবই শ্রদ্ধা করে।
অশোক বলল, ‘আজ আমার কী কী প্রোগ্রাম আছে?”

অফিসে রোজ কখন কাদের সঙ্গে মিটিং, কোন কোন ডকুমেন্টে সই করতে হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি ডায়েরিতে নোট করে রাখে পার্ল আর অফিসের বাইরের প্রোগ্রামগুলো রাহেজা মনে করিয়ে দেন। সেসব তাঁর ডায়েরিতে আগে থেকেই লিখে রাখেন।

Mohajuddher Ghora pdf Part 01 Download link
Download

Mohajuddher Ghora pdf Part 02 Download link
Download

Mohajuddher Ghora pdf Part 03 Download link
Download

Be the first to comment

Leave a Reply