পদ্মা নদীর মাঝি pdf – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় Padma Nadir Majhi pdf – Manik Bandopadhyay

পদ্মা নদীর মাঝি pdf - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় Padma Nadir Majh pdf - Manik Bandopadhyay

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি Padma Nadir Majhi pdf ব্যাপক জনপ্রিয় একটি আঞ্চলিক উপন্যাস। পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাস PDF পড়ে জেনে পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের সারাংশ। পদ্মা নদীর মাঝি প্রশ্ন উত্তর pdf পেতে অনেকেই আগ্রহী। পদ্মা নদীর মাঝি কুবের কপিলা সম্পর্ক জানার শেষ নেই। রহসময় এক নারী কপিলা। পদ্মা নদীর মাঝি ছোট প্রশ্ন উত্তর পাঠ্য বইয়েই সংযোজিত হয়েছে। পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতা বুঝতে উপন্যাসটি পড়তে হবে।

পদ্মা নদীর মাঝি pdf - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় Padma Nadir Majhi pdf - Manik Bandopadhyay

পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনটি?

পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কুবের নাকি কপিলা না হোসেন মিয়া, এ নিয়ে তর্কবিতর্ক থাকলেও কুবেরকেই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ধরা হয়।

পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের চরিত্র কুবের, কপিলা, হোসেন মিয়া সবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের উপজীব্য নিয়ে তৈরি করা পদ্মা নদীর মাঝি চলচ্চিত্রের পরিচালক কে তা অনেকেই জানতে চান।

Padma Nadir Majhi pdf ভূমিকা

বহির্বিশ্বে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তোড়জোড় তথা ভারতবর্ষের রাজনৈতিক অস্থিরতা যখন উত্তাল- তরঙ্গময় ঠিক সেই সময় এই শ্রেণী সচেতন, জীবনঘনিষ্ঠ সাহিত্যকর্মে নিবেদিতপ্রাণ লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮-১৯৫৬)-এর জন্ম হয়। তাঁর আসল নাম হচ্ছে প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। Padma Nadir Majhi pdf

তবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় হিসেবেই তিনি সর্বাধিক পরিচিত। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতা হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় চাকুরি সূত্রে সাঁওতাল পরগনার দুমকায় গমন করেন। এখানেই মানিকের জন্ম হয়; কিন্তু পূর্ববঙ্গের নদীনালা, খালবিল, তেলে-জলেই তিনি মানুষ। তাই ঐ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবনচিত্রকে অপূর্ব দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তিনি। বহুবিচিত্র অভিজ্ঞতার ভারে নুইয়ে পড়া মানিক পাঠককে তাঁর অভিজ্ঞতার ভাগ দেয়ার জন্যই লেখা শুরু করেন। শ্রেণীবৈষম্য, শোষণ, সামাজিক অসংগতির বিরুদ্ধে শোচ্চার মানিকের মার্কসবাদে দীক্ষা নেয়া জীবনের একটা পর্বান্তর হিসেবে ধরে নেয়া হয়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৩৫ সাল থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। তিনি যখন সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন তখন ফ্রয়েডীয় মনোবিকার তত্ত্ব সাহিত্যমহলে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর একশ্রেণীর উপন্যাসে বিশাল বিস্তীর্ণ নদ-নদীর পটভূমিকায় সাধারণ মানুষের যেমন বস্তুনিষ্ঠ জীবনচিত্র অঙ্কন করেছেন তেমনি মানুষের কাম-পিপাসার জীবন্ত চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে আদিমতার অন্ধকারে ফিরে গেছেন বারে বারে। অদ্ভুত নিরাসক্তভাবে তিনি মানুষের জীবন ও সমস্যাকে দেখেছেন, সমাধানের চেষ্টাও করেছেন নিজের নিয়মে। নর-নারীর জৈবসত্তা বিকারের নানা দিক লেখককে আকৃষ্ট করেছিল। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উপন্যাসে জৈবসত্তা ও দৈহিক বর্ণনায় ছিলেন কিছুটা বে-আব্রু ও বেপরোয়া। Padma Nadir Majhi pdf

দৈহিকভাবে অসুস্থ হলেও মানসিকভাবে যথেষ্ট বলিষ্ঠ ছিলেন লেখক। সেই বলিষ্ঠতা, রক্তের উষ্ণস্রোত উত্তাপ টের পাওয়া যায় তাঁর গল্প-উপন্যাসের চরিত্রের বর্ণনায়, পেশায়, কাজে-কর্মে। জননী (১৯৩৫), দিবারাত্রির কাব্য (১৯৩৫), পদ্মানদীর মাঝি (১৯৩৬), পুতুলনাচের ইতিকথা (১৯৩৬), অহিংসা (১৯৪৮), চতুষ্কোণ (১৯৪৩) প্রভৃতি উপন্যাসগুলো পাঠক সাদরে গ্রহণ করেছেন। পাঠকের চেতনাকে নাড়া দিতে পেরেছেন বলেই এগুলো পাঠকের কাছে আদরণীয়।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষারীতির পর্যালোচনা করলে দেখা যায় প্রচলিত সাধু-চলিত রীতির ধার তিনি ধারেননি। চরিত্রের মুখের আঞ্চলিক ভাষার রীতি সাধু না চলিত তা বোঝা কখনো-কখনো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। লেখকের নিজস্ব বর্ণনাও গুরুচণ্ডালী দোষে দুষ্ট। তথাপি যুগ, শ্রেণী পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী উপযুক্ত ভাষার প্রয়োগ মানিকের লেখনীতে মোক্ষম অস্ত্রের মতো কাজ করেছে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর গল্প-উপন্যাসে মানুষকে অতিমানব কিংবা মহামানব করেননি, সাধারণ রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে তুলে ধরেছেন, যার জৈব চাহিদা আছে, কামনা-বাসনা আছে। একই চরিত্রের ভিতরে ভালো ও মন্দ এ-দুটোর সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন।

এটাই বাস্তবতা, মানিক তা অস্বীকার করেননি। সংসার ও সমাজজীবনে পোড় খাওয়া মানুষের জীবনের চিত্রণে তিনি শব্দ ও বাক্যের পরতে পরতে তাই কোনো দর্শনতত্ত্বের জাল বোনেননি। আদর্শ নিয়ে মাতামাতি করে সূক্ষ্ম ভাবরসে নিমজ্জিত হতে চাননি। ফলে কোনো কোনো উপন্যাসের চরিত্রের অন্তর্নিহিত মনস্তাত্ত্বিক রূপটি হয়তো বা বিশৃঙ্খল, এলোমেলো হয়ে পড়েছে এবং যা কিছুটা হলেও উপন্যাসের শিল্পরসকে ক্ষুণ্ণ করেছে।

Padma Nadir Majhi pdf পদ্মানদীর মাঝি

ফ্রয়েড থেকে মার্কসবাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়ের জীবনের একটা বড় পরিবর্তন। মার্কসীয় দর্শনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ব্যক্তি-মানুষের জৈব চাহিদা যত সর্বগ্রাসীই হোক না কোন সমাজকে কোনোভাবে অস্বীকার করতে পারে না। তাই কুবের ও কপিলার নতুন সংসার হয়েছিল ময়না দ্বীপে। পদ্মার পটভূমিতে কুবের- কপিলার ভালোবাসা উপন্যাসে কবিত্বময় সৌন্দর্য ছড়িয়েছে। স্ত্রী মালারও অনেক গুণ। তার ত্বকের মসৃণতা কুবেরকে আকৃষ্ট করে, ছেলেকে ভাত খাওয়াতে বসে সে চমৎকার রূপকথা বলে। পঙ্গু বলেই বাহিরের জগতের সঙ্গে তার পরিচয় কম——“জেলে পাড়ার রূঢ় বাস্তবতা তাই তাকে অনেকটা রেহাই দিয়েছে।”

অকর্মণ্য পঙ্গু মালার সন্তানবাৎসল্য তাই জেলেপাড়ার ছোঁয়া বাঁচিয়ে উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের কেনো রমণীর ন্যায় নিখুঁত ~~“চারদিকে অসভ্যতার আবেষ্টনী, অভিনয় সুমার্জিত সভ্যতা।” তবুও মালার শারীরিক পঙ্গুতার মধ্যেই নিহিত ছিল কুবের কপিলার অবৈধ ভালোবাসার বীজ। এ সমাজ-সংসারে লেখক তাদেরকে জায়গা দিতে পারেননি। কমিউনিজম শুধু রাজনৈতিক জীবনেই নয় শিকড় গেড়েছিল তাঁর পারিবারিক জীবনে, সমাজ জীবনে, রক্তে, মাংসে, চিন্তায়, চেতনায়, মেধা ও মননে। দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে পর্যুদস্তু হয়েও তিনি ‘পদ্মানদীর মাঝি’তে হোসেন মিয়ার চোখে স্বপ্ন দেখেছেন নতুন পৃথিবীর, নতুন মানুষের। Padma Nadir Majhi pdf

যেখানে ধনী দরিদ্রের কোনো প্রভেদ নেই, শাসক-শোষণ নেই, মৌলবি পুরুত নেই। সকলে মিলে সেখানে একটি ধর্মপালন করবে— সেটা হচ্ছে মানবধর্ম। লেখক তাঁর স্বপ্নকে সফল করতে গিয়ে হোসেন মিয়ার অবৈধ কারবারকে পর্যন্ত প্রশ্রয় দিয়েছেন। তার অবৈধ কাজগুলোকে পাঠকের কাছ থেকে সযত্নে আড়াল করার চেষ্টা পর্যন্ত করেছেন। Padma Nadir Majhi pdf

পদ্মার মতো রহস্যময়ী কপিলা কখনো অবাধ্য বাঁশের কঞ্চির মতো নুয়ে পড়েছে কুবেরের দিকে। আবার কখনো সোজা হয়ে সরে গেছে শ্যামা দাসের কাছে, আর দশটা সাধারণ রমণীর মতো গৃহস্থালির কাজ করেছে। পদ্মার গভীরতার মতোই তার মতের তল খুঁজে পাওয়া কুবেরের মতো পাকা মাঝিরও অসাধ্য হয়ে পড়ে। মালা ও কপিলা ছাড়াও অপ্রধান চরিত্রের মধ্যে যুগীও এ উপন্যাসে নক্ষত্রের ন্যায় দ্যুতি ছড়িয়েছে। শীল বাবুর রক্ষিতা যুগীর হৃদয়ের ভিতের যে দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তরের সন্ধান পাওয়া যায় তাতে উপন্যাসের স্বল্প পরিসর পেলেও পাঠকের হৃদয়ে বৃহৎ আসন দখল করে নেয়। Padma Nadir Majhi pdf

পদ্মানদীর মাঝি পদ্মার তীরবর্তী জেলেদের জীবনচিত্র। এসব অবহেলিত, বঞ্চিত, শোষিত মানুষগুলোর জীবনবৈচিত্র্য সরলতায়, জটিলতায়, কুটিলতায়, পঙ্কিলতায় পদ্মার মতোই রহস্যময় হয়ে একই সমন্তরালে বয়ে গেছে, বিশ্বসাহিত্যের দরবারে যা অবিস্মরণীয় উৎকর্ষে উজ্জ্বল।

Padma Nadir Majhi pdf download

Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply