বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর চিরায়ত উপন্যাস Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf ডাউনলোড করুন ও Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf পড়ুন।
Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf Review
বই প্রেমি মানুষদের মধ্যে বেশিরভাগই এর বইটি পড়েছেন, তবুও সেই চেনা বইটি আরেকবার পড়ার ইচ্ছা হয়নি, এমন মানুষ হয়ত কমই আছেন, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর এই উপন্যাসটি, চিরচারিত শৈশব আর চিরসবুজ গ্রামের প্রতিচ্ছবি বলেই আমার মনে হয়, অনেক অভাব অভিযোগের মধ্যে বেড়ে ওঠা দুই ভাইবোন, অপু আর দূর্গা, তাদের চাওয়া হয়ত অনেক কিন্তু সামর্থ্য নেই বললেই চলে, এক অতি পুরাতন বাড়িতে তাদের বাস, সামর্থ্য নেই বলেই হয়ত বনদেবি তাদের জন্য নানা অজানা ফল আঁচলে নিয়ে পসরা সাজিয়ে রাখে, অপু-দূর্গার মা সর্বজয়া।
আরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Aranyak pdf by Bibhutibhushan Bandyopadhyay
তার সাধ্যমত করে যায়, আগোছালো সংসার গুছাতে, দুরন্ত দূর্গা নিয়মিত মার খায় মায়ের হাতে তার দুরন্তপনার জন্য, আর অপু চেয়ে দেখে, আর দিদিকে বাঁচানোর পথ খোঁজে, তাদের বাবা কাজের খোঁজে শহর গেলে, এক বর্ষায় মৃত্যু ঘটে দূর্গার, সেই মৃত্যু, বালক অপুকে যেন এক লহমায় বড় করে তোলে। এই বইটি নিয়ে চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী এই উপন্যাসটি চিরদিনি থাকবে অমলিন।
Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf রিভিউ
একজন অতি সাধারণ ব্রাহ্মণ হরিহর রায় ও তার স্ত্রী সর্বজয়া আর শিশু কন্যা দুর্গাকে নিয়ে নিশিন্দিপুর গ্রামে থাকেন। তাদের সাথে আরও থাকতেন ইন্দিরা ঠাকুর, তিনি একজন বৃদ্ধা মহিলা এবং তার দেখাশোনার কেউ আর আশ্রয় ভিটা না থাকায় তিনি আশ্রয় নেন হরিহরের বাড়িতে। তিনি হরিহরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন দূর সম্পর্কের আত্মীয় সূত্রে। তাঁর কিছুদিন পরই সর্বজয়ার একটি ছেলে সন্তান হয়।
কিন্তু, সর্বজয়া বৃদ্ধাকে পছন্দ করতেন না এবং তাকে হিংসা করতেন। সর্বজয়া ভাবতেন তার কন্যা দুর্গা, ইন্দিরা ঠাকুরকে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসে। তাই, সামান্য একটি কারণে বৃদ্ধাকে বের করে দেয়া হয় তার কুঁড়েঘর থেকে; আর অসহায় বৃদ্ধাটি তার মৃত্যুর মুহূর্তে যখন আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে, কিন্তু সর্বজয়া তাকে কোনরকম আশ্রয় দিতে নারাজি হয়।
শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা ঠাকুরের নির্মম মৃত্যু হয় চালের গুদামে। এর চার-পাঁচ বছর পর; সর্বজয়ার ছেলে অপু প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি কৌতুহলি হতে থাকে আর সংবেদনশীল হতে থাকে। দুর্গা আর অপু বেশির ভাগ সময় জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো, আদিবাসী খেলায় অংশগ্রহন আর চুরি করে ফুল ও ফল পারার মতো দুঃসাহসিক কাজের জন্য বাইরে ঘুরে ঘুরে বেড়াত।
রূপসী বিহঙ্গিনী pdf – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় Rupashi Bihangini pdf – Tarasankar Bandyopadhyay
এরপর অপু তার গ্রামের একটি পাঠশালায় ভর্তি হয়, আর সেখানে মূলত গ্রামের বেশ কিছু প্রবীণরা জড়ো হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতো। এরপর, হরিহর একদিন অপুকে সাথে নিয়ে গেল তার এক মক্কেলের বাড়িতে আর সেখানে যাওয়ায়; অপু প্রথম দেখতে পায় বাইরের জগতের ঝলক আর তার মন আনন্দে আর উত্তেজনায় ভরে উঠেছিল।
এছাড়াও একচেটিয়া গ্রামীণ জীবনের প্রবাহে বৈচিত্র্য আনে গ্রাম্য উৎসব, মেলা, এবং যাত্রা ইত্যাদি। এরপর, হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসের মতো সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে মারা যায় অস্থির চিত্তের নিরীহ এক শিশু নারীসত্তা দুর্গা। একা হয়ে যায় অপু, হয়ে পড়ে সঙ্গীহীন। জীবিকা অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে হরিহর দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে যায় আর সংগ্রাম করতে থাকে।
তারপর, একদিন বাড়ী ফিরে হরিহর সিদ্ধান্ত নিলো সে শহরের দিকে যাবে সপরিবারে গমন করে নতুন জীবিকা করবে। তাই, তারা সব গোছগাছ করে রওানা হল ষ্টেশনের দিকে। এরপর কলকাতার ট্রেন-এ করে যাওয়ার সময় তারা ফেলে গেল তাদের জীবনে নিশ্চিন্দিপুরের সব দুঃখ আর সুখের স্মৃতি।
Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf নমুনাঃ
জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি সর্বজয়া চাহিয়া-চিন্তিয়া কোনো রকম অপুর উপনয়নের ব্যবস্থা করিল। পরের বাড়ী, ঠাকুর দালানের রোয়াকের কোণে ভয়ে ভয়ে কাজ সারিতে হইল। বাম্নী মাসী নাড়ু ভাজিতে সাহায্যে করিল, দু’একজন রাঁধুনী বামুনঠাকুরকে নিমন্ত্রণ করিয়া আসিল, বাহিরের সম্ভ্রান্ত লোকের মধ্যে বীরু গোমস্তা ও দীনু খাতাঞ্জি। উপনয়ন মিটিয়া যাওয়ার দিনকতক পরে অপু নিজের ঘরটিতে বসিয়া বসিয়া লীলার দেওয়া বাঁধানো মুকুল পড়িতেছিল। খোলা দরজা দিয়া কে ঘরে ঢুকিল। অপু যেন। নিজের চোখকে বিশ্বাস করিতেই পারিল না, তাহার পরই বলিয়া উঠিল—এ কি, বাঃ– কখন—
লীলা কৌতুক ও হাসিভরা চোখে দাঁড়াইয়া। অপু বলিল-বাঃ বেশ তো তুমি। ব’লে গেলে সোমবারে আসবো কলকাতা থেকে, কত সোমবার হয়ে গেল— ফিরবার নামও নেই—
লীলা হাসিয়া মেজেতে বসিয়া পড়িল। বলিল-আসবো কি করে? স্কুলে ভর্তি হয়েচি, বাবা দিয়েচেন ভর্তি ক’রে, বাবার শরীর খারাপ, এখন আমরা কলকাতার বাড়ীতেই থাকব কি না? এখন ক’দিন ছুটি আছে তাই মার সঙ্গে এলাম আবার বুধবারে যাবো।
অপুর মুখ হইতে হাসি মিলাইয়া গেল। বলিল –থাক্বে না আর তোমরা এখানে?
লীলা বলিল—বাবার শরীর ভালো হ’লে আবার আসবো —
পরে সে হাসিমুখে বলিল– চোখ বুজে থাকো তো একটু?
অপু বলিল—কেন?
– থাকো না?
অপু চক্ষু বুজিল ও সঙ্গে সঙ্গে হাতে কি একটা ভারী জিনিসের স্পর্শ অনুভব করিল। চোখ খুলিতেই লীলা খিল্ খিল্ করিয়া হাসিয়া উঠিল। একটা কার্ড বোর্ডের বাক্স তাহার কোলের উপর। বাক্সটা খুলিয়া ফেলিয়া লীলা দেখাইল দেশী ধুতি-চাদর ও রাঙা সিল্কের একটা পাঞ্জাবি। লীলা হাসিমুখে বলিল—মা দিয়েচেন— কেমন হয়েছে? তোমার পৈতের জন্যে
ধুতি-চাদর বিশেষ করিয়া পাঞ্জাবিটা দরের জিনিস, ব্যবহার করা দূরের কথা এ বাড়ীতে পা দিবার পূর্বে অপু চক্ষেও কখনো দেখে নাই।
লীলা অপুর মুখের দিকে চাহিয়া বলিল—এক মাসে তোমার মুখ বদলে গিয়েছে? আরও বড় দেখাচ্চে, দেখি নতুন বামুনের পৈতে? তারপর কান বিধতে লাগলো না? আমার ছোট মামাতো ভাইয়ের পৈতে হোল কিনা, সে কেঁদে ফেলেছিল—
হঠাৎ অপু একখণ্ড মুকুল দেখাইয়া বলিল— পড়েছো এ গল্পটা?
লীলা বলিল—কি দেখি?
অপু পড়িয়া শোনইল। সমুদ্রের তলায় কোন স্থানে স্পেনদেশের এক ধনরত্ন পূর্ণজাহাজ দুই তিনশত বৎসর পূর্বে ডুবিয়া যায় – আজ পর্যন্ত অনেক খোঁজ করিয়াছে, কেহ স্থানটা নির্ণয় করিতে পারে নাই। গল্পটা এইমাত্র পড়িয়া সে ভারী খুশী হইয়াছে।
বলিল—কেউ বার কর্তে পারেনি-কত টাকা আছে জানো? একক, দশক, শতক, সহস্র, অযুত, লক্ষ পঞ্চাশ লক্ষ পাউণ্ডের সোনা-রূপা…..এক পাউণ্ডে তের টাকা—গুণ করো দিকি?* তাহার পরে সে তাড়াতাড়ি একটু কাগজে আঁকটা কষিয়া দেখাইয়া বলিল—এই দ্যাখো এত টাকা !
Pother Pachali pdf পথের পাঁচালী pdf download link
Download / Read Online
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.