বিন্দুর ছেলে pdf – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Bindur Chele pdf – Sarat Chandra Chattopadhyay

বিন্দুর ছেলে pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Bindur Chele pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay
বিন্দুর ছেলে pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Bindur Chele pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর চিরায়ত উপন্যাস Bindur Chele pdf বিন্দুর ছেলে pdf ডাউনলোড করুন ও Bindur Chele pdf বিন্দুর ছেলে pdf পড়ুন।

বিন্দুর ছেলে pdf - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Bindur Chele pdf - Sarat Chandra Chattopadhyay
বিন্দুর ছেলে pdf – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Bindur Chele pdf – Sarat Chandra Chattopadhyay

Bindur Chele pdf বিন্দুর ছেলে pdf নমুনাঃ

যাদব মুখুয্যে ও মাধব মুখুয্যে যে সহোদর ছিলেন না, সে কথা নিজেরা ত ভুলিয়াই ছিলেন, বাহিরের লোকও ভুলিয়াছিল। দরিদ্র যাদব অনেক কষ্টে ছোটভাই মাধবকে আইন পাশ করাইয়াছিলেন এবং বহু চেষ্টায় ধনাঢ্য জমিদারের একমাত্র সন্তান বিন্দুবাসিনীকে ভ্রাতৃবধূরূপে ঘরে আনিতে সক্ষম হইয়াছিলেন। বিন্দুবাসিনী অসামান্যা রূপসী। প্রথম যেদিন সে এই অতুল রূপ ও দশ সহস্র টাকার কাগজ লইয়া ঘর করিতে আসিয়াছিল, সেদিন বড়বৌ অন্নপূর্ণার চোখে আনন্দাশ্রু বহিয়াছিল। বাড়িতে শাশুড়ী- ননদ ছিল না, তিনিই ছিলেন গৃহিণী। ছোটবধূর মুখখানি তুলিয়া ধরিয়া প্রতিবাসিনীদের কাছে সগর্বে বলিয়াছিলেন, ঘরে বৌ আনতে হয় ত এমনি।

আমি রাইকিশোরী pdf – সুচিত্রা ভট্টাচার্য Ami Raikishori pdf – Suchitra Bhattacharya

একেবারে লক্ষ্মীর প্রতিমা। কিন্তু দু’দিনেই তাঁহার এ ভুল ভাঙ্গিল। দু’দিনেই টের পাইলেন, ছোটবৌ যে ওজনে রূপ ও টাকা আনিয়াছে, তাহার চতুর্গুণ অহঙ্কার- অভিমানও সঙ্গে আনিয়াছে।
একদিন বড়বৌ স্বামীকে নিভৃতে ডাকিয়া বলিলেন, হাঁ গা, রূপ আর টাকার পুঁটুলি দেখে ঘরে বৌ আনলে, কিন্তু এ যে কেউটে সাপ!
যাদব কথাটা বিশ্বাস করিলেন না। মাথা চুলকাইয়া বার-দুই ‘তাই ত’, ‘তাই ত’, করিয়া কাছারি চলিয়া গেলেন।
যাদব অতিশয় শান্ত-প্রকৃতির লোক। জমিদারী সেরেস্তায় নায়েবি এবং ঘরে আসিয়া পূজা-অর্চনা করিতেন। মাধব দাদার চেয়ে দশ-বারো বছরের ছোট, উকিল হইয়া সম্প্রতি ব্যবসা শুরু করিয়াছিল।
সে আসিয়া কহিল, বৌঠান, টাকাটাই কি দাদার বেশী হ’ল? দুদিন সবুর করলে আমিও ত রোজগার করে দিতে পারতাম। অন্নপূর্ণা চুপ করিয়া রহিলেন।

এ ছাড়া আরও একটা বিপদ এই হইয়াছিল, ছোটবৌকে শাসন করিবার জো ছিল না। তাহার এমনি ভয়ঙ্কর ফিটের ব্যামো ছিল যে, সেদিকে চাহিয়া দেখিলেও বাড়িসুদ্ধ লোকের মাথা ঝিমঝিম করিতে থাকিত এবং ডাক্তার না ডাকিলে আর উপায় হইত না। সুতরাং সাধের বিবাহটা যে ভুল হইয়া গিয়াছে, এই ধারণাই সকলের মনে বদ্ধমূল হইয়া গেল। শুধু যাদব হাল ছাড়িলেন না। তিনি সকলের বিরুদ্ধে দাঁড়াইয়া ক্রমাগত বলিতে লাগিলেন, না গো না, তোমরা পরে দেখো। মায়ের আমার অমন জগদ্ধাত্রীর মত রূপ, সে কি একেবারে নিষ্ফল যাবে? এ একদিন কি একটা কথার পরে ছোটবৌ মুখ অন্ধকার করিয়া স্থির হইয়া বসিয়া আছে দেখিয়া ভয়ে অন্নপূর্ণার প্রাণ উড়িয়া গেল।

হঠাৎ তাঁহার কি মনে হইল, ঘরের মধ্যে ছুটিয়া গিয়া তাঁহার দেড়-বছরের ঘুমন্ত ছেলে অমূল্যচরণকে টানিয়া আনিয়া বিন্দুর কোলের উপর নিক্ষেপ করিয়াই তিনি পলাইয়া গেলেন।
অমূল্য কাঁচা ঘুম ভাঙ্গিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল।
বিন্দু প্রাণপণ-বলে নিজেকে সংবরণ করিয়া মূর্ছার কবল হইতে আত্মরক্ষা করিয়া ছেলে বুকে করিয়া ঘরে চলিয়া গেল।
অন্নপূর্ণা আড়ালে দাঁড়াইয়া তাহা দেখিলেন এবং ফিটের ব্যামোর এই অমোঘ দৈব- ঔষধ আবিষ্কার করিয়া পুলকিত হইলেন।

সংসারের সমস্ত ভার অন্নপূর্ণার মাথায় ছিল বলিয়া তিনি ছেলে মানুষ করিতে পারিতেন না। বিশেষ, সমস্তদিনের কাজকর্মের পর রাত্রে ঘুমাইতে না পাইলে তাঁহার বড় অসুখ করিত; তাই এই ভারটা ছোটবৌ লইয়াছিল।
মাসখানেক পরে একদিন সকালবেলা সে ছেলে কোলে লইয়া রান্নাঘরে ঢুকিয়া বলিল, দিদি, অমূল্যধনের দুধ কৈ?
অন্নপূর্ণা তাড়াতাড়ি হাতের কাজটা ফেলিয়া রাখিয়া ভয়ে ভয়ে বলিলেন, এক মিনিট সবুর কর বোন, এখনি জ্বাল দিয়ে দিচ্চি।

বিন্দু ঘরে ঢুকিয়াই তাহা দেখিয়া রাগিয়া গিয়াছিল, তীক্ষ্ণকণ্ঠে বলিল, কালও তোমাকে বলেছি, আমার আটটার আগে দুধ চাই, তা সে ত নটা বাজে! কাজটা তোমার যদি এতই ভারী ঠেকে দিদি, পষ্ট করে বললেই ত পার, আমি অন্য উপায় দেখি। হাঁ বামুনমেয়ে, তোমারও কি একটু হুঁশ থাকতে নেই গা, বাড়িসুদ্ধ লোকের পিণ্ডি-রান্না না হয় দু’মিনিট পরে হ’ত।
বামুনঠাকরুন চুপ করিয়া রহিলেন।
অন্নপূর্ণা বলিলেন, তোর মত শুধু ছেলেকে টিপ পরানো আর কাজল দেওয়া নিয়ে থাকলে আমাদেরও হুঁশ থাকত। এক মিনিট আর দেরি সয় না, ছোটবৌ?

ছোটবৌ তাহার উত্তরে বলিল, তোমার অতি বড় দিব্যি রইল, দিদি, যদি কোনদিন আর অমূল্যের দুধে হাত দাও; আমারও দিব্যি রইল, আর কোনদিন যদি তোমাকে বলি।
এই বলিয়া সে মেঝের উপর অমূল্যকে দুম্ করিয়া বসাইয়া দিয়া, দুধের কড়া তুলিয়া আনিয়া উনানের উপর চড়াইয়া দিল। এই অভাবনীয় ব্যাপারে অমূল্য চীৎকার করিয়া উঠিতেই, বিন্দু তাহার গাল টিপিয়া বলিল, চুপ কর হারামজাদা, চুপ কর, চেঁচালে একেবারে মেরে ফেলব। বিন্দুর ব্যাপারে বাড়ির দাসী কদম ছুটিয়া আসিয়া খোকাকে কোলে লইতে গেলে বিন্দু তাহাকে ধমকাইয়া উঠিল, দূর হ, সামনে থেকে দূর হ!
সে আর অগ্রসর হইতে পারিল না, ভয়ে আড়ষ্ট হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল।

বিন্দু আর কাহাকেও কিছু না বলিয়া রোরুদ্যমান শিশুকে কোলে তুলিয়া লইয়া দুধ জ্বাল দিতে লাগিল।
অন্নপূর্ণা স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া রহিলেন। খানিক পরে বিন্দু দুধ লইয়া চলিয়া গেলে তিনি পাচিকাকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, শুনলে মেয়ে, ওর কথা? সেই যে একদিন হাসতে হাসতে বলেছিলুম, অমূল্যকে তুই নে। ছোটবৌ সেই জোরে আজ আমাকেও দিব্যি দিয়ে গেল!

Bindur Chele pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply