বিষহরি pdf – তমোঘ্ন নস্কর Bishhari pdf – Tamoghna Naskar

বিষহরি pdf - তমোঘ্ন নস্কর Bishhari pdf - Tamoghna Naskar

তমোঘ্ন নস্কর এর Bishhari pdf বিষহরি pdf পড়ুন।

বিষহরি pdf - তমোঘ্ন নস্কর Bishhari pdf - Tamoghna Naskar

Bishhari pdf রিভিউঃ

শ্রীশচন্দ্র ন্যায়বান পেশায় ডাক্তার, স্বসম্বোধনে দাদু। পেশার সুবাদে ঘুরে বেড়িয়েছেন ব্রিটিশ ভারতবর্ষের বহুস্থানে। নাতি-নাতনিরা আড়লে-আবডালে বলে তাদের দাদুর গোঁফ গল্পের ভারে ঝুলে গেছে। যাইহোক তাঁর শৈশবও কম রোমাঞ্চকর নয়। নানাবিধ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরপুর তাঁর গল্পের ঝুলিটি উপুড় করেন কখন বাড়ি ফিরে নাতি-নাতনীদের গল্পের আড্ডায়, কখনো পাড়ার চণ্ডীমণ্ডপে বয়স্যদের কাছে।

আগের পর্বে দাদুর ভাণ্ডার থেকে তুলে আনা হয়েছিল মা বনবিবি, পাঁচু ঠাকুর, মা নারায়ণী, বসন্ত রায়, ভৈরব, ইঁদ, বাংসক প্রভৃতি তেইশজন ভিন্ন ভিন্ন লৌকিক দেবদেবী ও অপদেবতার রোমহষর্ক কাহিনী। এইপর্বে তুলে আনা হল আরও পনেরো জন লৌকিক দেবদেবীর কথা ও কাহিনিকে। যা এর আগে শোনা যায়নি।

Bishhari pdf ভূমিকা

আদিম সমাজের গোষ্ঠীজীবন যে সকল কারণে বিপর্যস্ত হইয়া থাকে, তাহাদের মধ্যে একটি প্রধান কারণ, কৃষিনির্ভরতা। যে সকল আদিম সমাজ যেকোনো প্রকারেই হউক কৃষিকর্মদ্বারা জীবন যাপন করে, কৃষিভূমির উপর এমন একটি আসক্তি সৃষ্টি হয় যে, তাহাদের সাংস্কৃতিক জীবন বিসর্জন দিয়াও তাহারা ইহার প্রতি আকর্ষণ প্রকাশ করে। Bishhari pdf

বাংলাদেশেও যে আদিম জাতিই ইহার যে অঞ্চলেই বসতি স্থাপন করুক না কেন, কৃষিভূমির সঙ্গে তাহাদের অতি সহজেই সম্পর্ক স্থাপিত হইত বলিয়া তাহারা কোনো কারণেই তাহা পরিত্যাগ করিয়া যাইতে চাহিত না তাহার ফলে নিজেদের আদিম জীবনের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য অনেক ক্ষেত্রে বহুলাংশে পরিবর্তন করিয়া বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে তাহারা সংমিশ্রণ লাভ করিয়াছে। তাহাতে এদেশে মিশ্র জাতির যে সমাজ-জীবন গঠিত হইয়াছে, তাহাই ক্রমে পল্লী-সমাজের রূপ লাভ করিয়াছে।”

(ডক্টর আশুতোষ ভট্টাচার্য লিখিত ‘পল্লীসমাজ ও পল্লীর সাহিত্য’ থেকে উদ্ধৃত) সোনার বাংলা হাজার-হাজার বছর ধরেই কৃষিভিত্তিক। তার জল, জঙ্গল, মাটি, আকাশে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আদিম দেবতারা। মুশকিল হল, নগরায়ণ এবং তথাকথিত আধুনিকীকরণের ধাক্কায় পল্লিজীবন এবং গ্রামীণ/আরণ্য/জলজ পরিবেশ ক্রমেই অতীত হয়ে যাচ্ছে। ডোডো বা নীল তিমির মতো এদের কথা কিছুদিন পর শুধুই পাঠ্যবইয়ে পড়ার মতো জিনিস হয়ে থাকলে আশ্চর্য হব না।

কৃষিভিত্তিক এই দেশের অর্থনীতি আর সমাজের মতো আসল ইতিহাসও রয়ে গেছে পল্লিজীবনে। কিন্তু সেই ইতিহাস চাপা পড়ে থাকে মানদণ্ড আর রাজদণ্ডের ঝনঝনানি এবং মুষ্টিমেয় ক’জনের সিংহাসনে আরোহণ অবরোহণের তারিখের নীচে। আজ যদি সেই ইতিহাস, তথা তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সমৃদ্ধির আখ্যানকে খুঁজে পেতে চাই, তাহলে আমাদের অনুসন্ধানের অভিমুখ হওয়া উচিত ওই পল্লিসমাজ ও তার মধ্যে প্রচলিত কাহিনিগুলির প্রতি।

সেই লক্ষ্যে অনুসন্ধান চালালে সমাজের স্তরবিন্যাস এবং তার মধ্যে চাওয়া-পাওয়ার নানা ঘাত-প্রতিঘাত চোখে পড়ে। দেখা দেয় বিশ্বাস সংস্কার, আচার ও সংকীর্ণতার এক আশ্চর্য দোলাচল। তবে সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়ে এক লৌকিক ধর্ম। Bishhari pdf

এই ধর্মের ভিত্তি এতটাই গভীর এবং প্রসার এতটাই মানবিক। একে সম্প্রদায়ের গণ্ডির মধ্যে ফেলা অসম্ভব। কিন্তু সেইসব দেবদেবীদের মধ্যে দুটি প্রকাশ দেখা দেয়। Bishhari pdf

একদিকে থাকেন পুরুষ দেবতারা, যাঁরা অসহায়ের পাশে দাড়া তাকে আপদে-বিপদে রক্ষা করেন। এরা মূলত কৃষিরক্ষক দেবতা— যাঁদের ভিত্তি হল গ্রামীণ সমাজের এক আদর্শ সাম্য ও সহমর্মিতা। সেই আবহ বিনষ্ট হলে তাঁরা ব্যথিত ও ক্রুদ্ধ হন। তাঁদের ব্রহ্মা, বিষ্ণু বা মহেশ্বরের পরিবর্তে একটি বৃহৎ পরিবারের প্রধান পুরুষ বলেই মনে হয়। সেই পুরুষ আমাদের দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন করেন, সদাচরণের পথ দেখান, তারপর নিজের মতো করে এগিয়ে যান। Bishhari pdf

অন্যদিকে থাকেন এক মা- যাঁর কোনো বিশেষণ দরকার হয় না। আমরা জানি, ঘরে-ঘরে মায়েরা একইসঙ্গে কল্যাণী এবং ভয়ংকরী স্নেহময়ী এবং ক্রোধে সর্বনাশিনী, রূপলাবণ্যময়ী হয়েও দেহাতীত হন। এই দেবীরা ঠিক তেমনই। বিভিন্ন নামের অন্তরালে এঁদের আমরা শক্তির নানা প্রকাশ বলে ভাবতে পারি। এই শক্তি মানে কিন্তু শুধুই ধ্বংসাত্মক কোনো ভাব নয়। নিগূঢ়ানন্দের ‘পৃথিবীর মাতৃসাধনা’-র অনুসরণে বলি, শব্― অর্থাৎ কাজ করার ক্ষমতা থেকে এসেছে ‘শক্তি’-র ভাবনা। Bishhari pdf

এই শক্তি-র অর্থ মন যা না থাকলে মানুষের কোনো ‘আত্ম’-বোধ হয় না, সে কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। শক্তির ঘনীভূত প্রকাশ হল ‘কাম’- যা দিয়ে সৃষ্টি প্রক্রিয়া শুরু হয়। মানুষের কার্যের ফলে উৎপন্ন বস্তুসত্তার মধ্যে শক্তিই নিহিত হন ঘনীভূত আকারে। লৌকিক জীবনে প্রচলিত নানা গাথাতেও আমরা দেখি, মায়ের রূপে শক্তি কিন্তু অলৌকিক বা দৈব কার্যকলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেননি। বরং তিনি মানুষের মনে জাগিয়ে তুলেছেন এক সৃজনাত্মক ভাবনা তথা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনা। মানুষই দুঃখীর চোখের জল মুছিয়েছে, মানুষই অন্যের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। সেই কৃতী সন্তানদের গরবিনী মা হয়ে নরম আঁচলের তলায় আমাদের ঠাঁই দিয়েছেন তাঁরা।

নীহাররঞ্জন রায় তাঁর ‘বাঙালির ইতিহাস: আদি পর্ব’-তে বলেছেন, “অনেকে নিশ্চয়ই জানেন, বাঙলার পাড়াগাঁয়ে সর্বত্রই গ্রামের বাহিরে জনপদসীমার বাহিরে ‘থান’ বা ‘স্থান’ বলিয়া একটা জায়গা নির্দিষ্ট থাকে; কখনও কখনও এই থান উন্মুক্ত আকাশের নিচে গাছের ছায়ায়; কোথাও কোথাও গ্রামবাসীরা তাহার উপর একটি আচ্ছাদনও দেয়। এই ‘থান’ বা ‘স্থান’ সংস্কৃতরুপে দেবস্থানে বা দেওথানে মূর্তিরূপী কোনও দেবতা অধিষ্ঠিত কোথাও থাকেন কোথাও থাকেন না।

কিন্তু থাকুন বা নাই থাকুন সর্বত্রই তিনি পশু ও পক্ষী বলিয়া গ্রহণ করিয়া থাকেন। গ্রামবাসী তাহার নামে মানত করিয়া থাকেন. তাহাকে ভয়ভক্তি করেন এবং তাহাকে যথারীাত তুষ্ট রাখার চেষ্টাও করেন সকলেই। কিন্তু লক্ষণীয় এই যে গ্রামের ভিতর বা লোকালয়ে তাঁহার কোনও স্থান নাই। ‘গ্রাম-লোকালয় সর্বত্র একই নামে বা একই রূপে পরিচিত নহেন; সাম্প্রতিক কোথাও তিনি কালী, কোথাও ভৈরব বা ভৈরবী, কোথাও বনদুর্গা বা অন্য কোনো স্থানীয় নামে পরিচিত। “

তমোঘ্ন নস্করের লেখা ‘দেও’ নামক গ্রন্থের বিভিন্ন আখ্যানে বাংলার এই লৌকিক দেবদেবীরা ইতিমধ্যেই ধরা দিয়েছেন। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সঙ্গেও পাঠকেরা পরিচিত। তাই নতুন করে তাঁদের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া একান্তই অবাঞ্চক। শুধু বলি, এই বইয়ের একগুচ্ছ কাহিনি আপনাদের নতুন করে বাংলার জল, জঙ্গল, মাটি আর সেই বিস্মৃত অথচ শুভংকর দেব- চীনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে।
এরা কুসংস্কার বা অপবিশ্বাসকে প্রশ্রয় দেয় না; অন্যের ধর্ম বা বিশ্বাসকে অশ্রদ্ধা করতে শেখায় না। এরা শুধু আমাদের মনে করিয়ে দেয় নিজেদের শিকড়ের কথা— যা আজও ছড়িয়ে রয়েছে ধুলোয়-ধুলোয়, ঘাসে ঘাসে।
ভালো থাকুন। ভালো রাখুন।

নমস্কারসহ
ঋজু গাঙ্গুলী
সম্বলপুর, ওডিশা

Bishhari pdf download link

Read Online

দেও – তমোঘ্ন নস্কর Deo pdf by Tamaghna Naskar

Be the first to comment

Leave a Reply