শামিম আহমেদ pdf এর Murshidabad Rahasya pdf মুর্শিদাবাদ রহস্য pdf একটি ইতিহাস আশ্রিত রোমহর্ষক কাহিনি।
Murshidabad Rahasya pdf কাহিনীঃ
মুর্শিদাবাদের কেল্লার ভিতর থেকে হাওয়া হয়ে যায় একটি হাতে লেখা পবিত্র গ্রন্থ। তার ওজন আটাশি কেজি। ছোটে নবাব অত্যন্ত ভালো মানুষ ও সরল মানুষ। তিনি হারানো ঐতিহ্য খুঁজে পেতে উদগ্রীব। ওদিকে জগৎ শেঠদের গুপ্তধন খুঁজে পেতে আর একটি দল মরিয়া। রাত বিরেতে কারা সব খোঁড়াখুঁড়ি করে নবাব ফেরাদুন জাহর কবর! ওদিকে দুষ্কৃতিরা শিশুবলি দেয় কীসের লালসায়? শেষ অবধি কি খুঁজে পাওয়া যায় পবিত্র কিতাব? লালনের গান সেই মাসহাফে কিতাব খুঁজতে কতখানি সাহায্য করে? শেষ পর্যন্ত জগৎ শেঠের গুপ্তধন পাওয়া গেল কি? মোহনলাল ও জগৎ শেঠের উত্তরসূরির মধ্যে কাজিয়া, কাটরা মসজিদ নিয়ে উত্তেজনা…এই সব রোমহর্ষক কাহিনি নিয়ে ‘মুর্শিদাবাদ রহস্য’।
Murshidabad Rahasya pdf নমুনাঃ
দেহ খুনে লাল হয়ে গিয়েছে। আমিই তাঁর শিরের মালিক, যিনি কারবালাতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। হে এজিদ, তোমার স্বৈরাচারের শাস্তির জন্য তৈরি হও।
ছোটে নবাব কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমরাও ওই বংশের মানুষ।
কেল্লার অন্দরে তখন প্রত্যেকে শোবার ঘরে। মাতম আর আজাদারি চলছে ইমামবাড়ায়। ফজরের নমাজের সময় কেল্লায় ফিরে আসেন ছোটেনবাব। প্রার্থনা সেরে একটু ঘুমিয়ে আবার যেতে হবে। আজ সন্ধ্যার মগরিবের নমাজের আগেই হবে তাজিয়া বিসর্জন। তার আগে ইমামবাড়া থেকে শহরের কারবালা ময়দান পর্যন্ত তাজিয়া মিছিল।
দুপুরের মধ্যেই কেল্লায় চলে এলেন জেলার পুলিশ সুপার সুধাকর, হাজারদুয়ারি প্রাসাদের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অলোকনাথ জেনা, অধ্যাপক ভক্তিভূষণ ঝা, প্রিন্সিপাল রহমত উল্লাহ ও রাণা আলম। ছোটে নবাব চলে গিয়েছেন ইমামবাড়া। রাকিব তাঁদের একটু আগেই কেল্লায় এসে গিয়েছেন। মধ্যাহ্নভোজনের জন্য সকলে বসে পড়লেন বাইরের ঘরে। এলাহি টেবিল। চলে এল নানাবিধ ফল দিয়ে তৈরি সুলতা, যাকে স্যালাড বলা হয়। তারপর এল সেই অমোঘ বিরিয়ানি।
অধাপক ঝা বললেন, এত সুন্দর গন্ধ! এই বিরিয়ানির নাম কী ?
হামিদ বললেন, হাবসি বিরিয়ানি।
রহমত-উল্লাহ উৎসুক হয়ে প্রশ্ন করেন, এই সুখাদ্যের রন্ধনপ্রণালী কেমন? Murshidabad Rahasya pdf
হামিদ জবাব দেন, তা জানি না। খেতে হয়, খাই। তবে দাদিজানের কাছে শুনেছি, ফেরাদুন জাহ-র হাসিনা নামের যে বাঁদি বিবি ছিলেন, তিনি ছিলেন হাবসি, মানে আবিসিনীয়। তাঁর পুত্র হাসান আলি মির্জা ফেরাদুন জাহ-র পর নবাব হন। হাসান আলি মির্জার ভাই হোসেন আলি মির্জা আমার পিতার ঠাকুরদা, আর নবাব হাসান আলি হলেন নবাব ওয়াসিফ আলির পিতা ও আমার দাদিজানের পিতামহ। বংশপরম্পরায় এই বিরিয়ানি আমাদের পরিবারে হয়ে আসছে। Murshidabad Rahasya pdf
পরদার আড়াল থেকে ছোটে নবাবের বেগম বললেন, দশজনের জন্য হাবসি বিরিয়ানি করতে গোস্ত লাগে পাঁচ কেজি। লাল গোস্ত হওয়া চাই। ভেড়া বা দুম্বা কিংবা বকরার মাংস হলে উত্তম। হরিদ্বারের চাল আড়াই কেজি। দাড়িম্বের দানা আধ সের। সাত পোয়া গাওয়া ঘি, চিনি আধ সের, সুপারি নয় তোলা, দারচিনি আট মাসা, এলাচ দশ মাসা, লবঙ্গ দশ মাসা, মরিচ বিশ মাসা, পেঁয়াজ দুই সের, আদা দশ তোলা, ধনে পাঁচ তোলা, হাব্বাত উল বারকাহ অর্থাৎ কালো জিরে দশ মাসা, নমক পাঁচ তোলা, কিশমিশ দশ তোলা আর বাদাম বারো তোলা। এই হল উপকরণ।
রাণা আলম বললেন, অর্ধেক জিনিসের মানে বুঝলাম না। যাক গে, সামনে এই বেহেশতের সুখাদ্য রেখে আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
পরিচারক খাবার দিতে থাকেন।
হামিদ আলি রাণাকে বলেন, একটা ভালো বাংলা অভিধান খুললেই শব্দগুলোর মানে পেয়ে যাবেন।
রাণা বলেন, আপাতত খেয়ে মানে বুঝি! Murshidabad Rahasya pdf
পরদার আড়াল থেকে পরভিন বানুর গলার আওয়াজ পাওয়া যায়। তিনি বেরিয়ে এসে বলতে থাকেন, শুনুন। প্রথমত মাংসখণ্ড ধনে পেঁয়াজ আদা নুন ও পানিসমেত সেদ্ধ করে জল আলাদা করবেন। ওই মাংস এইবার লবঙ্গ ও ঘি দিয়ে ভেজে রেখে দেবেন। পরে পাত্রে জিরে দিয়ে মাংস সাজাবেন। এইবার দাড়িম্ব মানে ডালিমের রস নিংড়ে সুপারি ভস্ম ও গোটা পাঁচেক লেবুর রস নিংড়ে মাংস ভবরসে মিশিয়ে দেবেন। একটু ঝোল শুকিয়ে এলে অর্ধসিদ্ধ চাল ফ্যান ঝরিয়ে ওই মাংসে দিয়ে সিদ্ধ করবেন। তার পর দম পোক্তের পালা। ওইটে হল রাঁধুনির কারসাজি। ঘি দিয়ে দমে পাকানো। সব শেষেকাজু বাদাম ভেজে তার সঙ্গে কিশমিশ ছড়িয়ে দিতে হবে।
খাওয়া শেষ হলে পরভিন বানু অলোকনাথ জেনাকে জিজ্ঞাসা করেন, আচ্ছা, বনওয়ারিবাদের কুমার বনওয়ারি বীরেন্দ্র দেব বাহাদুর কীভাবে জানতে পারেন এই মাসহাফে কিতাবের কথা? তাঁর সঙ্গে নবাববাড়ির যোগ কোথায় ?
অলোকনাথ বলেন, ঠিক কথা। আমাকেও এই প্রশ্নটা ভাবিয়েছে। কাল সারারাত ধরে অনেক পড়াশুনা করে খুঁজে পেলাম যে কুমার বনওয়ারি বীরেন্দ্র দেব বাহাদুর ছিলেন নবাব ওয়াসিফ আলি মির্জার বন্ধু। তিনি মাঝেমধ্যে মুর্শিদাবাদের প্রাসাদে আসতেন। তাঁর সঙ্গে নবাবের ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কুমার বনওয়ারি বীরেন্দ্র দেব বাহাদুরকে নবাব ওয়াসিফ মির্জা খুব বিশ্বাস করতেন।
Murshidabad Rahasya pdf download link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.