রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf – অমিয়কুমার মজুমদার

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf - অমিয়কুমার মজুমদার

অমিয়কুমার মজুমদার এর রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf এ রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান চেতনা, বিশ্বপরিচয় প্রবন্ধ অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান ভাবনার পরিচয়, রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শন, বিজ্ঞান নিয়ে উক্তি, বিজ্ঞান বিষয়ক ছোট কবিতা সবই পাবে রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf এ।

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf - অমিয়কুমার মজুমদার

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf সংক্ষেপঃ

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস এক সময় জগদীশচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে বলেছিলেন, “তুমি যদি কবি ন! হইতে তো শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক হইতে পারিতো’। সত্যতা প্রমাণের কোন সুযোগ পাওয়া মারিনি সত্য, কিন্তু তিনি যে আমৃত্যু বৈজ্ঞানিক মেজাজের অধিকারী ছিলেন এবং বিজ্ঞান যে তাঁর মনীষাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহে প্রদীপ্ত করেছে তার উজ্জ্বল আভাস মেলে রবীন্দ্রনাথের কাব্য, সাহিত্য, উপন্যাস, গল্প ও নাটকের সুবিস্তীর্ণ এলাকায়। রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান-চিন্তার এই দিকটি সাধারণ পাঠকের কাছে প্রায় অজ্ঞাতই ছিল, কিন্তু তরুণ বিজ্ঞানী ডক্টর অমিয়কুমার মজুমদার ডুবুরির মত রবীন্দ্রসাহিত্য-সমুদ্রের অতলান্ত প্রদেশে ডুব দিয়ে বিপুল পরিশ্রমে বিজ্ঞানের মণিমাণিক্যগুলিকে আহরণ করে এই গ্রন্থে সঞ্চয় করেছেন। যে কোন কৌতূহলী পাঠক এই গ্রন্থ থেকে রবীন্দ্র-সাহিত্যের অন্তর্গত সামগ্রিক বিজ্ঞান-ভাবনার একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf ভূমিকাঃ

অধ্যাপক সতীশরঞ্জন খাস্তগীর, পি. এইচ. ডি, ডি. এস. সি. (এডিন), এফ. এন. আই., অধ্যক্ষ, পদার্থ বিদ্যা বিভাগ, বসু বিজ্ঞান-মন্দির কলিকাতা, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ-বিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ‘ডীন’।
বোস ইনস্টিটিউট
১৩ ১ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড,
কলিকাতা—
১লা আগষ্ট, ১৯৬৫

বিজ্ঞানকেও তার পরিধির বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের সর্বতোমুখী প্রতিভা অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছিল একথা সর্বজনবিদিত। বাল্যকাল থেকেই বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে তাঁর অনুসন্ধিৎসার অন্ত ছিল না। তাঁর পূজনীয় পিতৃদেব পুত্র-কন্যাদের যে ব্যাপক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন, তাতে ভাষাসাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, শিল্প, সংগীত প্রভৃতি শিক্ষণীয় বিষয়গুলির সঙ্গে জ্যোতি- বিদ্যা, ভূতত্ত্ব, পদার্থ-বিদ্যা, গণিত, উদ্ভিদ, ও প্রাণিবিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিজ্ঞানের বিষয়ও পাঠ্যতালিকাভুক্ত ছিল। শৈশবে মুখে-মুখে পিতৃদেবের কাছ থেকে গ্রহ-নক্ষত্রের কথা শুনে তিনি তাঁর তখনকার কাঁচা হাতে যে বড় প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন, সেটিই তাঁর প্রথম ধারাবাহিক প্রবন্ধ। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-সাধনার সূচনাতেই বিজ্ঞান যে গভীরতম প্রভাব বিস্তার করেছিল, সে বিষয়ে কিছুমাত্র সন্দেহ নেই। বিজ্ঞানের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অনুরাগ ‘ও বিজ্ঞান-চর্চা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছিল।

শান্তিনিকেতনে তিনি যে নিজের স্থাপিত বিদ্যালয়ে প্রাথমিক বিজ্ঞান শিক্ষার আয়োজন করেছিলেন, তার কারণ—শিক্ষা যারা আরম্ভ করেছে, গোড়াথেকেই বিজ্ঞানের ভাণ্ডারে না হোক, বিজ্ঞানের আঙ্গিনায় তাদের প্রবেশ করা ‘অত্যাবশ্বক’—এই ছিল তাঁর গভীর বিশ্বাস। তাঁর কাব্য রচনার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম বয়স থেকেই রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞান বিষয়ে নানা মনোজ্ঞ প্রবন্ধ লিখেছিলেন সাহিত্যে যার স্থান আছে। তাঁর শেষ বয়সের লেখা ‘বিশ্ব পরিচয়’ বাংলা বিজ্ঞান-সাহিত্যে এক অমূল্য সম্পদ। বলা বাহুল্য শুধু বৈজ্ঞানিক কৌতূহল- তৃপ্তি নয়, সাহিত্যরস সৃষ্টিই ‘বিশ্ব পরিচয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য। রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf

রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও কাব্য প্রসঙ্গে তাঁর কবি-মানস ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বহু সুচিন্তিত প্রবন্ধ ও পুস্তক রচিত হয়েছে কিন্তু তাঁর বৈজ্ঞানিক মানস সম্বন্ধে বিক্ষিপ্তভাবে কোনও কোনও প্রবন্ধ সাময়িক পত্রে প্রকাশিত হলেও রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মনোভাব ও বিজ্ঞান প্রীতি তাঁর সমগ্র সাহিত্য সাধনায় কি গভীর ভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল তার সূক্ষ্ম বিচার ও বিশ্লেষণ সুসংবদ্ধভাবে কোনও পুস্তকেই এ-যাবৎ আলোচিত হয় নি। তরুণ সাহিত্যসেবী ও কৃতবিদ্য বিজ্ঞানী ডঃ অমিয়কুমার মজুমদার প্রণীত ‘রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস’ গ্রন্থটি এ-অভাব পূরণ করেছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনে বিজ্ঞানকে কি আসন দিয়েছিলেন, তাঁর কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে ও প্রবন্ধে নানাবিধ দৃষ্টান্ত, উপমা, যুক্তিতর্ক ও নায়ক-নায়িকার কথা-বার্তার মাধ্যমে, বিজ্ঞানের প্রভাব কি গভীর রেখাপাত করেছিল, রবীন্দ্র-সাহিত্য পরিক্রমার পর্বে পর্বে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা কিভাবে অভিব্যক্ত হয়েছে, তরুণ গ্রন্থকার তাঁর সুলিখিত গ্রন্থখানিতে তার বিশদ আলোচনা করেছেন।

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf গ্রন্থটিতে দশটি অধ্যায়, যথা— এক: কবির জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব দুই : রবীন্দ্রকাব্যে বিজ্ঞান – প্রথম পর্ব তিন: রবীন্দ্র কাব্যে বিজ্ঞান — দ্বিতীয় পর্ব চার: রবীন্দ্র কাব্যে বিজ্ঞান — তৃতীয় পর্ব পাঁচ: বিজ্ঞানে কবির বিস্ময়কর ব্যাপ্তি ছয় : কর্ম জীবনে বিজ্ঞান সাত কবির দৃষ্টিতে যন্ত্র ও যন্ত্র-সভ্যতা আট : রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ নয় : কবি ও বিজ্ঞানী দশ : ১—জগদীশচন্দ্র বসু ২-আইনষ্টাইন ৩—সত্যেন্দ্রনাথ বসু, শেষ পর্ব  রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf

গ্রন্থকার রবীন্দ্র-জীবনের পরিসরকে তিনটি পর্বে ভাগ করেছেন। প্রথম পর্বে কবির সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক ছিল বিক্ষিপ্ত—কতকগুলি বৈজ্ঞানিক তথ্যের অনুসরণ করে তাঁর চিন্তা গড়ে উঠেছিল এবং তাঁর কবি-প্রতিভা বিজ্ঞানের এই চিন্তাধারাকে এক বিশিষ্ট রূপ দিয়েছিল। দ্বিতীয় পর্বে এই রূপায়ন ব্যাপকতর হয়েছিল, গতি-তত্ত্বের মধ্য দিয়ে। শেষ পর্বে আধুনিক যুগের অভিব্যক্তিবাদ ও বিজ্ঞান সম্মত জড়বাদ রবীন্দ্র-সাহিত্যে সুস্পষ্টভাবে পরিব্যক্ত হয়েছে। গ্রন্থকার রবীন্দ্র-রচনা থেকে নানা উদ্ধৃতির সাহায্যে তাঁর এই মন্তব্য সমর্থন করতে প্রয়াস পেয়েছেন। রবীন্দ্র-রচনার এই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ স্বীকার করে নিলেও একথা বলা প্রয়োজন যে রবীন্দ্র- নাথের সমগ্র সাহিত্য সাধনায় তাঁর জীবন-দর্শনের যে মূলভাবটি তাঁর রচনাবলীর স্তরে স্তরে পরিব্যাপ্ত হয়ে পরিণতি লাভ করেছে, সে হল তাঁর বিশ্বানুভূতি। প্রতীকের সীমা ছাড়িয়ে নৈর্ব্যক্তিক মানবতা ও বিশ্বজনীন চিরন্তন সত্যের সম্বোধ রবীন্দ্রনাথের জীবন দর্শনের প্রধান কথা ৷

বিজ্ঞান এই সত্যের সম্বোধে সহায়তা করেছিল বলেই বিজ্ঞানকে তাঁর জীবনে তিনি বড় আসন দিয়েছিলেন। প্রকৃতিতে, পরিদৃশ্যমান বিশ্বচরাচরে বিজ্ঞানের প্রদীপ্ত আলোকে তিনি ‘বৃহৎ প্রাণে’র সন্ধান পেয়েছিলেন বলেই বিজ্ঞানকে তিনি বরণ করেছিলেন। পার্থিব বস্তুর মাধ্যমেই অপার্থিব ঐশী সত্তার সন্ধান পাওয়া যায়—একথা রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানী আইনষ্টাইনকে একদিন বলেছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞানে যন্ত্র শিল্প যখনই বিশ্বানুভূতিকে প্রতিহত করেছে—তখনই তার বিরুদ্ধে তিনি দাঁড়িয়েছেন। এই জন্যই রবীন্দ্রনাথ যন্ত্রশিল্পের সুচিন্তিত সদ্ব্যবহারের কথা জোর দিয়ে বলেছিলেন। ‘কর্মজীবনে বিজ্ঞান’ ও ‘কবির দৃষ্টিতে যন্ত্র ও যন্ত্র-সভ্যতা’- এই দুই অধ্যায়ে গ্রন্থকার এই প্রসঙ্গের সুন্দর আলোচনা করেছেন।

‘কবি ও বিজ্ঞানী’ অধ্যায়ে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু, বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন এবং আমাদের দেশের গৌরব আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সহিত রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধের কথা সর্বসাধারণের কাছে বিশেষভাবেই উপভোগ্য। রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf

গ্রন্থকার বাংলা সাহিত্যে অপরিচিত নন। তাঁর লিখিত অনেক প্রবন্ধ সুধিজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁর সহজ ও সরল ভাষা এবং রচনাভঙ্গী প্রশংসার যোগ্য। ভারতসরকারের প্রতিরক্ষা বিভাগে ব্যাপৃত থাকা সত্ত্বেও তিনি যে সাহিত্য চর্চার মন দিতে সক্ষম হয়েছেন এ অতি আশা ও আনন্দের কথা।
১৯৫৮ সনে ‘জনসেবক’ পত্রিকায়, ১৯৬১ সনে ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান’ এবং ‘লোকসেবক’ পত্রিকায় এবং পরে ১৯৬১ সনে নতুন আকারে ‘সমকালীন’ পত্রিকায় এই গ্রন্থের বিষয় বস্তু ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থের বহুল প্রচার কামনা করি।
১লা অগাষ্ট, ১৯৬৫
বসু বিজ্ঞান-মন্দির, কলকাতা
সভীশরঞ্জন খাস্তগীর

রবীন্দ্রনাথের বৈজ্ঞানিক মানস pdf ডাউনলোড লিংক
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply