বেতালপঞ্চবিংশতি pdf ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা pdf, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছোটদের রচনা, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী রচনা, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী pdf, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচনাবলী pdf পাবেন এখানে। বেতাল পঞ্চবিংশতি কেন বিখ্যাত? জানতে পড়তে থাকুন বেতালপঞ্চবিংশতি pdf
Betal Panchabinsati pdf মূলকথা
কালেজ অব ফোর্ট উইলিয়ম নামক বিদ্যালয়ে তত্রত্য ছাত্র- গণের প্রথম পাঠার্থে বাঙ্গালা ভাষায় হিতোপদেশ নামে যে পুস্তক নির্দিষ্ট ছিল তাহার রচনা অতি কদর্য্য। বিশেষতঃ কোন কোন অংশ এমন দুরূহ ও অসংলগ্ন যে কোন ক্রমেই অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ হইবার বিষয় নহে। তৎপরিবর্ত্তে পুস্তকান্তর প্রচলিত করা উচিত ও অবিশ্যক বিবেচনা করিয়া উক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মহামতি শ্ৰীযুত মেজর জি টি মার্শল মহোদয় কোন নুতন পুস্তক প্রস্তুত করিতে আদেশ করেন। তদনুসারে আমি বৈতালপচীসী- নামক প্রসিদ্ধ হিন্দী পুস্তক অবলম্বন করিয়া এই গ্রন্থ লিখিয়া- ছিলাম।
যৎকালে প্রথম প্রচারিত হয় আমার এমন আশা ছিল না বেতালপঞ্চবিংশতি সর্ব্বত্র পরিগৃহীত হইবেক। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বাঙ্গালা ভাষার অনুশীলনকারী ব্যক্তিমাত্রেই আদরপূর্ব্বক গ্রহণ করিয়াছেন এবং এতদ্দেশীয় প্রায় সমুদয়বিদ্যালয়েই প্রচলিত হইয়াছে। ফলতঃ দুই বৎসরের অনধিক কালমধ্যেই প্রথম মুদ্রিত সমস্ত পুস্তক নিঃশেষ রূপে পর্য্য- বসিত হয়।
প্রায় সংবৎসর অতিক্রান্ত হইল পুস্তকের অসদ্ভাব হইয়াছে। কিন্তু কোন কোন কারণবশতঃ আমি পুনর্মুদ্রাকরণে এ পর্যন্ত পরাজুখ ছিলাম। পরিশেষে গ্রাহকমণ্ডলীর অগ্রহা- তিশয় দর্শনে দ্বিতীয় বার মুদ্রিত ও প্রচারিত করিলাম। যে যে স্থান অসঙ্গত ও অপরিশুদ্ধ ছিল সুসঙ্গত ও পরিশোধিত হইয়াছে এবং অশ্লীল পদ বাক্য ও উপাখ্যানভাগ সকল পরিত্যাগ করা গিয়াছে। এক্ষণে বেতালপঞ্চবিংশতি পূর্ব্ববৎ সর্বত্র পরিগৃহীত হইলে শ্রম সফল বোধ করিব।
Betal Panchabinsati pdf উপক্রমণিকা
উজ্জয়িনী, নগরে গন্ধর্বসেন নামে রাজা ছিলেন। তাঁহার চারি মহিষী ছিল। তাহাদের গর্ভে রাজার ছয় পুত্র জন্মে। রাজকুমারেরা সকলেই সুপণ্ডিত ও অভিশয় বলবান ছিলেন। কালক্রমে নৃপতির লোকান্তর প্রাপ্তি হইলে সৰ্ব্বজ্যেষ্ঠ শঙ্কু সিংহাসনে অধিরোহণ করিলেন। তৎকনিষ্ঠ বিক্রমাদিত্য বিদ্যানুরাগ নীতিপরতা ও শাস্ত্রানুশীলন দ্বারা বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন তথাপি রাজ্যতেেিগর লেভিসংবরণে অসমর্থ হইয়। জ্যেষ্ঠের প্রাণ সংহারপূর্ব্বক স্বয়ং রাজ্যেশ্বর হইলেন এবং ক্রমে ক্রমে নিজ বাহুবুলে সমস্ত দিগ্বিজয় করিয়া লক্ষযোজন বিস্তীর্ণ জম্বুদ্বীপের অধীশ্বর হইয়া আপন নামে অব্দ প্রচলিত করিলেন। Betal Panchabinsati pdf
কিয়দ্দিন নস্তুর রাজা মনে মনে বিবেচনা করিলেন জগদীশ্বর আমাকে নানা জনপদের অধিপতি করিয়া অসংখ্য হিতাহিতচিন্তার ভার দিয়াছেন .. কিন্তু আমি আত্মমুখে নিৰ্বত হইয়া তাহাদের অবস্থার প্রতিক্ষণ মাত্রও দৃষ্টিপাত করি না। কেবল অধিকৃতবর্গের বিবেচনার উপর নির্ভর করিয়া নিশ্চিন্ত রহিয়াছি। তাহারা প্রজাগণের সহিত কিরূপ ব্যবহার করিতেছে অন্ততঃ এক বারও পরীক্ষা করিয়া দেখা উচিত। অতএব আমি প্রচ্ছন্ন বেশে দেশভ্রমণ করিয়া প্রজাগণের অবস্থা অবলোকন করিব।
অনন্তর নিজ অনুজ ভর্তৃহরির হস্তে সমস্ত সাম্রাজ্যের ভার সমর্পণ করিয়া স্বয়ং সন্ন্যাসীর বেশে দেশে দেশে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। উজ্জয়িনী নগরে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ বহুকালাবধি তপস্যা করিতেছিলেন। এক দিন তিনি আপন উপাস্য দেবতার নিকট বরস্বরূপ এক অমর ফল পাইয়া আনন্দিত মনে গৃহে আসিয়া ব্রাহ্মণীর নিকট কহিলেন দেখ দেবতা তপস্যায় তুষ্ট হইয়া আজি আমাকে এই ফল দিয়াছেন এবং কহিয়াছেন ইহা ভক্ষণ করিলে নর অমর হয়। ব্রাহ্মণী শুনিয়া অতিশয় খেদ করিয়া কহিলেন আর কত কাল এ যন্ত্রণা ভোগ করিব।
হায় অমর হইয়া তুমি কি মুখে অমর হইবার অভিলাষ কর বুঝিতে পারি না। বরং এই দণ্ডে মৃত্যু হইলে সংসারের ক্লেশ হইতে পরিত্রাণ হয়।
গৃহিণীর এইরূপ বাক্যে হতবুদ্ধি হইয়া ব্রাহ্মণ কহি লেন আমি তৎকালে না বুঝিয়া দেবতার নিকট ফল লইয়াছিলাম এক্ষণে তোমার কথা শুনিয়া আমার চৈতন্য হইল । এখন তুমি যেরূপ কহিবে তাহাই করিব। ব্রাহ্মণী কহিলেন এই ফল রাজা ভর্তৃহরিকে দিয়া ইহার পরিবর্ত্তে পারিতোষিক স্বরূপ কিঞ্চিৎ অর্থ লইয়া আইস। Betal Panchabinsati pdf
তাহা হইলে অনায়াসে সংসারযাত্রা নির্বাহ করিয়া পরমার্থসাধনে যত্ন করিতে পারিবে। ইহা শুনিয়া ব্রাহ্মণ রাজার নিকটে উপস্থিত হইলেন এবং যথাবিধি আশীর্বাদ প্রয়োগের পর দেবদত্ত ফলের গুণব্যাখ্যা ও পূর্ব্বাপর সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণন করিয়া বিনয়পূর্বক নিবেদন করিলেন মহারাজ আপনি এই ফল লইয়া আমাকে কিঞ্চিৎ অর্থ প্রদান করুন।Betal Panchabinsati pdf
আপনি চিরজীবী হইলে সমস্ত রাজ্যের মঙ্গল। রাজা ফল গ্রহণ করিয়া লক্ষ মুদ্রা প্রদানপূর্ব্বক ব্রাহ্মণকে বিদায় করিলেন এবং নিতান্ত স্ত্রৈণতা প্রযুক্ত মনে মনে বিবেচনা করিলেন যে ব্যক্তির চির জীবন ও স্থির যৌবন হইলে আমি যাবজ্জীবন সুখী হইব তাহাকেই এই ফল দেওয়া কৰ্ত্তব্য।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.