সৌরভ চক্রবর্তীর রহস্য, গোয়েন্দা, ভৌতিক, থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার ভৈরব সিরিজ pdf এর উপন্যাস Chandrahas 2 pdf Mohakal চন্দ্রহাস ২ মহাকাল pdf পড়ুন ও Chandrahas 2 pdf Mohakal ডাউনলোড করুন।
Chandrahas 2 pdf Mohakal চন্দ্রহাস ২ মহাকাল pdf review
ঐতিহাসিক, পৌরাণিক, নরবলি, নৃশংসতা, ভয়াল-ভয়ংকর বর্ণনা, বংশানুক্রমিক অভিশাপ, পুনর্জন্ম, অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতা, শ্বাসরুদ্ধকর সাবলীল লেখনী এই সবগুলিকে একসাথে মিশিয়ে যে রেসিপিটা তৈরী হয়, তারই নাম চন্দ্রহাস, যার সৃষ্টি পৌরাণিককালে, যার কোনও ধ্বংস নেই, যে অস্ত্র বহু প্রাণ নিয়েছে, সেই হল এই গল্পের মূল চরিত্র।
গ্রেভ ইয়ার্ড শিফ্ট – সৌম্য সাহা Grave Yard Shift pdf by Soumya Saha
উজ্জয়িনী নগরে দেবী দন্তেশ্বরীর সামনে রাজা প্রতাপ নারায়ণ যুদ্ধবন্দীদেরকে নরবলি দিতেন এই চন্দ্রহাস দিয়ে দেবীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য। ব্রিটিশদের কাছে সেই খবর গেলে তারা এই প্রথা বন্ধ করে দেয়। সত্যিই কি তা বন্ধ হয়? ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় যে নরবলি হতো, তাদের মধ্যেও কি যোগাযোগ ছিল? বর্তমান দিনে ইতিহাসের অধ্যাপক রাঘবের সাথে কি যোগাযোগ অতীতের এই ঘটনাগুলির সাথে? সত্যিই কি রাজা প্রতাপ নারায়ণ এবং মূল খলনায়ক ভৈরবের কি যমজ সন্তান হয়ে জন্মগ্রহণ করে বর্তমান সময়ে?
যে ভৈরবকে শেষ করে প্রথম খণ্ড শেষ হয় তার নবজন্মই কি শুরু করে দ্বিতীয় খণ্ডের? নরবলি কিভাবে বদলে যায় নারীবলিতে? ঐতিহাসিক এবং পৌরাণক কাহিনী চলে হাত ধরাধরি করে। লেখক অবশ্য সতর্কতা দিয়েছেন দুর্বল হৃদয়ের পাঠক নিজ দায়িত্বে পড়বেন এই কাহিনী। টানা দুইদিনে দুটি খণ্ড শেষ করেও হ্যাংওভারটা কোনওভাবেই কাটছে না। আসলে পাঠকমাত্রেই কোনও কাহিনী পড়ার সময় নিজের মনে মনে এক চলচ্চিত্র নির্মাণ করে আর সেটাই পাঠক মনে ভয়, আনন্দ, ভালো লাগা, মন্দ লাগাতে পরিণত হয়।
শারদীয়া নবপত্রিকা ১৪২৯ (২০২২) পিডিএফ Sharadiya Nabapatrika Pujabarshiki 1429 (2022) pdf
যারা এখনও এই কাহিনী পড়েননি, তাদের কাছে আমার অনুরোধ, এই কাহিনী পড়ার সময় কাহিনীর মানসিক চলচ্চিত্রায়ণ (Visualization) যত কম করবেন তত মঙ্গল। নইলে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে মন প্রবলভাবে ভারাক্রান্ত হবে, হয়তো সেখানেই লেখকের লেখনীর সার্থকতা। তবে এটুকু বলতে পারি, এই কাহিনী থেকে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ তৈরী হলে আমি অন্ততঃ দেখবো না।
‘চন্দ্রহাস’ প্রথম পর্বের সারসংক্ষেপ
‘চন্দ্রহাস’ কাহিনির সূত্রপাত বস্তারের দত্তেশ্বরী মন্দিরে, যেখানে সতীর দাঁত পড়েছিল। সেখানকার নররক্ত পিপাসু মহারাজ প্রতাপ নারায়ণ এক রাতে নরবলির আয়োজন করেছিলেন। ছাগবলি, মহিষবলির পাশাপাশি নরবলি সংঘটিত হয়েছিল সেই কাল রাত্রিতে। মহারাজের বিশ্বস্ত মন্ত্রী সুভদ্র সমগ্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। নরবলির পূর্বে মহারাজ কুলপুষ্প হিসেবে সংগ্রহ করেছিলেন তিন কুমারীর যোনিনিঃসৃত শোণিত। দেবীকে সেই কুলপুষ্প অর্পণ করা হয়েছিল। তারপর শুরু হয় নরবলি। শিব যে চন্দ্রহাস খড়্গা রাবণকে প্রদান করেছিলেন, সেই চন্দ্রহাস অস্ত্রকেই মহারাজা প্রতাপ নারায়ণ নরবলি দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন। এই চন্দ্রহাস এক দৈবিক অস্ত্র।
সেই রাতে মন্দিরে নরবলি চলাকালীন বৃটিশ সিপাহিরা হানা দেয়। সুভদ্রের মৃত্যু হলেও মহারাজা প্রতাপ নারায়ণ চন্দ্রহাস নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
উপরোক্ত কাহিনির শেষটা জানতেন না অধ্যাপক রাঘব চক্রবর্তী। তিনি নরবলি বিষয়ে কলকাতার এক কলেজে অধ্যাপনা করেন। প্রতি বছর ক্লাসের প্রথম দিন তিনি তাঁর লেকচারে মহারাজা প্রতাপ নারায়ণের উপরোক্ত কাহিনিটি ছাত্রদের শোনাতেন। তাঁর আশা ছিল কোনোদিন কোনো ছাত্র হয়তো তাঁকে এই কাহিনির শেষ ভাগ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। নতুন বছরে তাঁর এক ছাত্র তনুশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করল। সে জানায় হয়তো তার কাছে এরকম একটা কাহিনি আছে যার যোগসূত্র রাঘবের কাহিনির পরিপূরক। তনুশ ত্রিপুরার ছেলে। সে ত্রিপুরা ফিরে গেল সেই কাহিনি সংবলিত বইটা নিয়ে আসার জন্য। ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিলেন স্বয়ং রাঘব।
পরবর্তীকালে তনুশের যমজ ভাই রিশান রাঘবের ছাত্র হিসেবে কলেজে ভরতি হয়। রাঘব এবং রিশান মিলে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে এই কাহিনির শেষ অংশ। যত বেশি তারা খোঁজার চেষ্টা করে তত বেশি তারা জড়িয়ে পড়ে এই কাহিনির চক্রব্যূহতে। একসময় এই কাহিনি তাদের সত্তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। বিভিন্ন লৌকিক, অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে তারা কাহিনির জট ছাড়াতে লাগলেন এবং এভাবেই একদিন তারা চন্দ্রহাস মহলে এসে উপস্থিত হলেন।
চন্দ্রহাস মহলের চৌধুরী পরিবার ভৈরবের শাপগ্রস্ত। এই সেই চৌধুরী বংশ যার পূর্বপুরুষ ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী মহারাজা প্রতাপ নারায়ণ। তিনি পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসেও নরবলির ধারা অব্যাহত রাখেন। সেই সূত্রেই তার পরিচয় হয় ভৈরবের সঙ্গে। ভৈরব নিজেকে বলিপ্রদত্ত করার ইচ্ছে নিয়েই রাজ্যে এসেছিল। ভৈরব চন্দ্রহাস মহলে উচ্ছিষ্ট গণপতির মতো দুর্ধর্ষ তান্ত্রিক দেবতার পুজো শুরু করে। ভৈরব নিজেও ছিল উচ্চকোটির সাধক। এই ভৈরবের কারণেই মহারাজের পুত্রসন্তান লাভ হয়। এরপর মহারাজের মধ্যে পরিবর্তন শুরু হল এবং তিনি ভৈরবের বলি রদ করলেন। ক্রমে ক্রমে এই ভৈরবই হয়ে ওঠেন মহারাজের অতি ঘনিষ্ঠ এবং একদিন সুযোগ বুঝে এই ভৈরব মহারাজের সর্বস্ব হরণ করলেন। হত্যা করলেন তার দুধের শিশুপুত্র-সহ পত্নী বিম্ববতীকে।
মহারাজ তৎক্ষণাৎ ভৈরবের মৃত্যুদণ্ড দিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর উত্তরপুরুষদের জন্য বয়ে নিয়ে এলেন কালো অভিশাপ। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সন্ধিপুজোর লগ্নে ভৈরবকে নররক্ত ভোগ দিতে হত। প্রতি ঊনপঞ্চাশতম বছরে দিতে হত অস্থিমজ্জা-সহ নরমাংস এবং প্রতি পঞ্চাশতম বছরে আস্ত নরবলি। এই প্রথা দেড়শো বছর ধরে চলে এসেছে এই চন্দ্রহাস মহলে। চন্দ্রহাস মহলের নীচে এক অন্ধকার সুড়ঙ্গে বাস করত ভৈরব। তার সঙ্গী ছিল এক বিশালাকার হিংস্র জন্তু। সুড়ঙ্গে এক অদ্ভুত বাস্তুতন্ত্র সৃষ্টি করেছিল ভৈরব।
সেই চন্দ্রহাস মহলে পদার্পণ ঘটল রিশান ও রাঘবের। তারপর একে একে কীভাবে জানতে পারল তারা সমস্ত কাহিনি সেই নিয়েই চন্দ্রহাসের উপাখ্যান। সেই কাহিনি জানার সূত্র ধরে একে একে ঘটতে থাকে নানান বিপর্যয়। চৌধুরী বংশের বংশধর আদিত্য নারায়ণ চৌধুরীও জড়িয়ে পড়লেন এই অভিযানে। শেষ পর্যন্ত তারা পৌঁছেছিলেন এই সুবিশাল কাহিনির এক প্রান্তে। কিন্তু সেখানেই পৌঁছোনোর পর তাঁরা বুঝতে পারলেন চন্দ্রহাসের কাহিনি এখন আর সেই প্রান্তে আবদ্ধ নেই, ঠিক বিপরীত প্রাস্তে অবস্থান করছে ভৈরব এবং চন্দ্রহাস।
এই কাহিনির বিভিন্ন সূত্র ধরে সময়ে সময়ে এসেছে নানা বিরল পুজো, তন্ত্রাচার এবং ইতিহাস। সমস্ত লিপিবদ্ধ আছে প্রথম পর্বের কাহিনিতে, ‘চন্দ্রহাস’ গ্রন্থে।
যদি প্রথম পর্ব চন্দ্রহাস মহলের অভিশাপ খণ্ডনের চেষ্টা হয়, তবে দ্বিতীয় পর্ব ভৈরব জাগরণের পর্ব। ঠিক যেখানে প্রথম পর্বের কাহিনি শেষ হয়েছিল ঠিক সেখান থেকেই পুনরায় শুরু হতে চলেছে এই দ্বিতীয় পর্ব। পাঠকের সুবিধার্তে প্রথম পর্বের অংশবিশেষ এই সার সংক্ষেপে লিখলাম বটে, কিন্তু তা মূল কাহিনির পাঁচ শতাংশও নয়। গ্রন্থটির লেখক হিসেবে আপনাদের জানাই, দ্বিতীয় পর্ব সবিস্তারে বুঝতে হলে প্রথম পর্বের পূর্ণাঙ্গ পাঠ প্রয়োজন।
Chandrahas 2 pdf Mohakal চন্দ্রহাস ২ মহাকাল pdf link
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.