চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf – Sourav Mukhopadhyay pdf

চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf - Sourav Mukhopadhyay pdf
চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf - Sourav Mukhopadhyay pdf

সৌরভ মুখোপাধ্যায় এর Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf ডাউনলোড করুন ও  Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf পড়ুন।

চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf - সৌরভ মুখোপাধ্যায় Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf - Sourav Mukhopadhyay pdf
চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf – সৌরভ মুখোপাধ্যায় Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf – Sourav Mukhopadhyay pdf

Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf সূচি

বিনির্মাণ-বিষয়ক
মধুরেণ না-গল্পের খোঁজে
শোধ
রক্তগোলাপ
সুজাতার গল্প অযান্ত্রিক
সেনসর
সাঁকো যৌতুক
এক্স
অতিক্রম
ঊর্মি
ফিরে এসো,
স্মাইলি
শিকল
আলোয় ঢাকা অন্ধকার
শ্রাবণধারা
মোড়
ভাঙা চাঁদ
প্রথম যেদিন

Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প pdf জবানবন্দি

প্রেম-ভালবাসার গল্প আজকাল লোকে পড়ে কম, ও-জিনিস একেবারে হ্যাক হয়ে গেছে। কথাটা আমার নয়। চলতি সময়ের বৃহৎ এক পাঠকগোষ্ঠীই এমন বলেন, বাজারে কান পাতলে শোনা যায়। সত্যি বলতে কী, কথাটাতে আমারও সায় আছে। যুক্তিসঙ্গতই মনে করি। আজকের দিনকালই এমন, ফিকটিশাস লঙ্-স্টোরির প্রয়োজন ফুরিয়েছে অধিকাংশ লোকের। বিপরীত-লিঙ্গের মন বা শরীর— কোনওটাই আর ‘সহস্রবর্ষের সাধনার ধন’ বলে সেই বহুযুগ-আগের আকুলিবিকুলি নেই এ-জমানায়। ফলে, গল্পেটল্পেও তার সূচক পড়তির দিকেই হওয়ার কথা। খুলে বলা যাক।

ঠাকুরবাড়ির আঙিনায় pdf – জসীম উদদীন Thakur Barir Anginay pdf – Jasim Uddin

গল্পে পাওয়া প্রেম-পিরিতি তখনই পাঠকের কাছে প্রিয় ছিল— যখন তার সাদামাটা হেটো-মেঠো জীবনে সে-বস্তুটির নিতান্ত অমিল। তখন তার অপূর্ণ অনুরাগ- বাসনার তাড়নায় সে সাহিত্য, গান আর সিনেমার দুয়ারে হত্যে দিত। সেই একই লাজে- ভয়ে-ত্রাসে মাখা আধো-ফোটা বাসনাকুসুম, সেই একই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-জড়ানো সমর্পণ ও গ্রহণ-প্রত্যাখ্যানের কাহিনি, ক্বচিৎ এসে-পড়া জটিল ত্রিকোণ-সঙ্কট— সবশেষে বহু- ব্যবহৃত মিলনের হাসি অথবা বিচ্ছেদের অশ্রু!

লাজে ভয়ে ত্রাসে আধো-বিশ্বাসে গড়ে ওঠা এক ইউটোপিয়া, তার ফরমুলা-নকশা থেকেই দিনের পর দিন ভোক্তা পেয়ে যেত তার বঞ্চিত আবেগ-জ্বালার উপশম। অভিভাবকের বেছে-দেওয়া কাঠখোট্টা স্ত্রীর সঙ্গে নীরস দাম্পত্য কাটাতে-থাকা আমার এক স্বল্প-শিক্ষিত আত্মীয় কীভাবে তাঁর অন্তরের মুক্তি খুঁজে নিতেন ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়-নিমাই ভট্টাচার্যের গল্প-উপন্যাসের মধ্যে, কিংবা দায়িত্বভার ওঠাতে গিয়ে বিয়ের সুযোগ না-পাওয়া এক প্রৌঢ়া প্রতিবেশিনী কেমন ডুবে থাকতেন শ্যামল মিত্র-সন্ধ্যা মুখোপাধায়ের প্রেমের গানে আর উত্তম-সুচিত্রার রুপোলি রোমান্সে সে আমি স্বচক্ষে দেখেছি। আর, ছিল— বা এখনও আছে, রবীন্দ্রনাথের গানের আশ্রয়। যেখানে এক অলৌকিক ঝরনাতলা তৈরি করে রাখা আছে, শূন্য রিক্ত বঞ্চিত কলসীগুলিকে অসীম প্রশমন-ধারায় পূর্ণ করে নেওয়ার আয়োজন।

বোধি ও সংস্কৃতির বিভিন্ন হায়ারার্কি অনুযায়ী প্রাচীন আমলের বাঙালি ভদ্রসমাজ, এই সব মিলিয়েই, একটা কল্প-প্রেম-রাজ্যে চমৎকার খাপে খাপ হয়ে যেত। ‘কল্প’ শব্দটাই আন্ডারলাইন করা জরুরি এখানে, ওটাই আলোচনার মূল চাবি। মধ্যবিত্ত বাঙালির ঘরকন্নায় প্রাক্-বিবাহ প্রেমের অবকাশ কম ছিল একদা, কেননা নারীপুরুষ উভয়েরই বিয়ে হত সকাল-সকাল। সেকালে বাস্তবিক প্রেমের রূপ ছিল অতএব একটাই : দাম্পত্য-প্রেম! তা, সেটি কিন্তু জিরে-হলুদ-লঙ্কার মতো, ঘোরতর ডাউন-টু-আর্থ এবং নিত্যব্যবহার্য ছিল শুধু। তাতে স্নেহ মায়া উদ্বেগ দায়িত্ববোধের কমতি ছিল না, কিন্তু ওই পর্যন্তই। পিত্রালয়বাসিনী আমার ঠাকুমাকে লেখা দাদুর পুরোনো চিঠি দেখেছি, দুজনেই তখন তরুণ-তরুণী, সদ্য শিশুসন্তান এসেছে— কিন্তু চিঠির আগাগোড়াই সাংসারিক কথায় ভরা।

জমিজিরেত চাষবাস গাইবাছুর আবহাওয়া আত্মীয়কুটুম পাড়াপ্রতিবেশি। শুধু খোকার মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে চোরা একটা দুশ্চিন্তার আঁচ, আর এক্কেবারে শেষে ‘কবে যে তোমার সেজে দেওয়া পানে আবার এই ঠোঁট লাল হবে’ – টাইপের একলাইনের রোমান্টিকতা। এবং এইটাই ছিল সেকালের টিপিক্যাল গেরস্থালি প্রেম, মোটা ভাতকাপড়ের মতো— চলে গেলেই হল, সুক্ষ্মতা নিয়ে মাথা ঘামানোর চলই ছিল না।

‘প্রেম’ যা নিয়ে এত কুরুক্ষেত্র কাণ্ড, সে-চীজটির তবে আদত নিবাস কোথায়? যাকে বলে কেতাবি রোমান্স, অর্থাৎ নায়ক-নায়িকা-সুলভ পূর্বরাগ কোর্টশিপ আকুলিবিকুলি, প্রেম-বিরহের দহন-উপশম-শিহরন— ছাপোষা বাঙালি-জীবনে এ সবই ছিল অলীক-বিমূর্ত-লার্জার দ্যান লাইফ; ওই কাব্য-নভেল-গান-ফিলিমের দান। সংসারে নেই, কিন্তু কল্প-জগতে আছে, ‘আহা এমন হলে কী অপরূপ’ এই অভিভূত- করা বোধ। স্বাভাবিক কারণেই প্রেমের গল্পের বা রোমান্টিক নভেলের মূল্য ছিল চড়া, অনুকরণযোগ্য মডেল হয়ে উঠত সেগুলি, বিয়োগান্ত হলে তো মারহাব্বা। বস্তুত, কলেজ-পড়ুয়া কিংবা পাড়াতুতো যুবকযুবতীদের মধ্যে যে হৃদয়ের দুকূল-ভাসাভাসির রেওয়াজ— সেটির নিরানব্বই ভাগই সংক্রমিত উপসর্গ, এমন বলা চলে। এবং, প্রদত্ত মডেল মেনেই, সে সব অনুশীলন ছিল ‘মলয় বাতাসে ভেসে যাব শুধু’-মার্কা-লাগানো; কাছে আসার চেয়ে দূরে-থাকা, এমনকী, পাওয়ার চেয়েও না-পাওয়ার মহিমাই ছিল গরীয়ান, হাফসোল খাওয়া ব্যর্থ প্রেমিক মোটের ওপর পরমবীরচক্রের কাছাকাছি সম্মান পেত।

তারপর এল বিশ্বায়ন। সংবাদমাধ্যমের বিস্ফোরণ, প্রযুক্তির প্লাবন। মুক্ত অর্থনীতি, তুমুল ভোগ, হাতের তেলোয় দুনিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া ঢুকে পড়ল হুড়মুড়িয়ে। জানলা খুলে গেল সব মোড়ে-মোড়ে ফাস্ট ফুড জয়েন্ট এসে যেমন মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলে দিল, প্রায় তেমন করেই নরনারী-সম্পর্কেও লাগল পেরেস্ত্রৈকার রঙ। ‘সেই নার্সারি থেকে শুরু’ করে সব বয়স-স্তরেই, মেলামেশা হয়ে উঠল মসৃণ ও ‘বোল্ড’; গ্রন্থিবন্ধন ও গ্রন্থিছেদন উভয়ই, যথাসম্ভব স্মার্ট এবং ভূমিকাবর্জিত। একটু আগেই যে ‘কল্প’ ব্যাপারটায় জোর দিচ্ছিলাম, ইউটোপিয়ান নিরালম্ব দর্শন— সেটা এই সন্ধিক্ষণে মুছে গেল বেবাক। মানুষের ভাবনার ও মূল্যবোধের জগতে অনেকগুলো বিস্ফোরণ প্রলয় জলোচ্ছ্বাস ভূকম্পন ঘটে গেল স্বল্পদিনেই।

খুব সহজেই দাম্পত্যের মধ্যে তৈরি হতে থাকল অজস্র সুড়ঙ্গ, প্রাক-বিবাহ প্রেম-সম্পর্কের রসায়ন তথা বর্ণালীও বদলাতে লাগল রাতারাতি। ছাপোষা মধ্যবিত্তের সব্জিসেদ্ধ-মার্কা যাপন সহসাই চোরা আমিষগন্ধে ম ম করে উঠল এই নয়া যুগে। পাতি কলেজ-ছাত্রটিরও মুঠোয় আজ একটি বাইকের সঙ্গে তিনটি প্রেয়সী, শপিং মলের রোগা সেলসগার্লটি এক বছরে চারটি প্রেমিক জুটিয়ে অঢেল উপহার বাগিয়েছে, দুই সন্তানের জনক কেরানিবাবু জমিয়ে পরকীয়া করছেন অফিস- কলিগের সঙ্গে, তাঁর গৃহকর্মনিপুণা ধর্মপত্নীটিও যে ফেসবুক মারফৎ ডেট করছেন না এমন কথা হলফ করে বলা যায় না। অভিজাত স্কুলের পড়ুয়াদের ব্যাগে ব্যাগে ঘুরছে গর্ভনিরোধক; কখন কাজে লেগে যায়।

তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১৪২ pdf – শামসুদ্দীন নওয়াব Tin Goyenda Vol 142 pdf Shamsuddin Nawab Tin Goyenda all Best pdf

কেউ কেউ হয়তো এই জায়গায় এসে ভুরু কুঁচকে মতদ্বৈধ প্রকাশ করবেন। হয়তো তাঁদের মনে হবে, নতুন জমানার এই সব উপাদানের সঙ্গে প্রেম নয়, কামের সম্পর্কই নিবিড়তর। কারণ, অনেকেরই দৃঢ় বিশ্বাস— প্রেম বলতে একটা ইথিরিয়াল পবিত্রতাই বোঝায় শুধু; একধরনের সান্নিমিটি, যা পূর্বে-উল্লিখিত ওই শ্যামল-সন্ধ্যা- উত্তম-সুচিত্রা ব্র্যান্ডে কিংবা রবীন্দ্র-গানে মিলত বলে তাঁরা মনে করেন। যেখানে শরীরের দরকারই পড়ত না— শুধুই প্রাণের আকুলতা, পবিত্র পূজার মতো— ওই হল আলি প্রেম, শুদ্ধ প্রেম! একটা প্লেটোনিক ব্যাপার, মানে নিকষিত হেম, কামগন্ধহীন।

এ-বিষয়ে নিজের স্পষ্ট অবস্থানটা বলে রাখাই শ্রেয়, যেহেতু আমারই প্রেমের- গল্প সংকলনের ভূমিকা লিখছি। নরনারীর প্রেম যে শরীরবর্জিত বায়বীয় বাসনামাত্র, কিংবা দয়িতের দেহসংস্পর্শ কামনা করলেই ওমনি প্রেমের মহাভারতটি অশুদ্ধ— এমনধারা ইনহিবিশন আমি অবিশ্বাস করতে শুরু করেছি সামান্য বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গেই। ইথিরিয়াল সাব্লাইম যাই বলা হোক, পূর্বোক্ত ওই ‘শুদ্ধ’ ব্র্যান্ডেও— আত্মিক পিপাসার সঙ্গে জড়ানো দেহসান্নিধ্যের আকুতিও ছিল নির্ঘাত; হয়তো লোকলজ্জা, সামাজিক ট্যাবু, ভিক্টোরিয়ান শুচিবোধ, ক্বচিৎ কোথাও প্রচ্ছন্ন কোনও মর্ষকামী আত্ম-বঞ্চনা, অথবা আর কিছু না হোক নেহাতই সুযোগের অপ্রতুলতার কারণে, তার প্রকাশটা প্রকট হতে পারেনি।

চিরে দেখলে ওখানেও মিলবে বিস্তর চোরা টান, চাপা ইঙ্গিত; হ্যাঁ, অন্ধকারে ঢাকা, অস্পষ্ট, নরম করে-রাখা। কিন্তু যখনই অচলায়তনে একজটা দেবীর জানলা খুলে গেল, আলো এল, মানুষ দেখতে পেল হয়তো বিস্মিত হল, বা প্রফুল্ল, অথবা ক্রুদ্ধ-মর্মাহত – কিন্তু সত্যিটা অস্বীকার করা গেল না যে, প্রেমে আর কামে তেমন বিরোধ নাই রে ভাই! অন্তত বাইনারি তো তারা নয়ই।

স্বাভাবিকভাবেই, প্রেমের গল্প-উপন্যাসেও এল বাঁকবদল। পরিবর্তিত দুনিয়ার, ওলটপালট হয়ে যাওয়া চিন্তনজগতের জটিল ছবি প্রতিফলিত হতে লাগল সাহিত্যে। আর প্লেটোনিজমের ঘোমটা-টানা মধুর প্রতারণা নয়, ফ্রয়েডিজমের অনাবৃত কাটাছেঁড়া। আগেকার দিনে চোখে চোখ রেখে, বড়জোর আঙুলে আঙুল ছুঁইয়েই প্রেমের হদ্দমুদ্দ হয়ে যেত; নতুন জমানায় প্রেমিক-প্রেমিকারা চিনতে চাইল আস্ত শরীর। ‘জন্মজন্মান্তরের বন্ধন’ কিংবা ‘আমরণ বিশ্বস্ততা’-টাইপের উনিশ শতকীয় সরল মূল্যবোধগুলিও ভেঙেচুরে গিয়ে নানা বক্র-জটিল মাত্রা চলে এল প্রেম-সম্পর্কের বিন্যাসে। নতুন দিনের প্রেমের গল্পে তাই আলো কম, ছায়াই বেশি ধরা দিল।

কিন্তু, এইখানেই আয়রনি— মানুষ এবার আর তেমন কদর করল না তাদের! প্রাচীনপন্থীরা যে নাক সিঁটকোবেন, সেটা একরকম স্বাভাবিকই— কিন্তু দেখা গেল, নবীন পড়ুয়াদের মধ্যেও বাস্তবতার এই জটিল মাত্রাগুলি তেমন আদৃত হল না। দু’একজন ব্যতিক্রমী লেখক সরলরৈখিক টিন-এজ লাভ বা কলেজ-প্রেমের বৃত্তটি আঁকড়ে কিছু পুনরাবৃত্ত ফর্মুলায় বাজার-সাফল্য পেলেন ঠিকই, কিন্তু একুশ শতকের গোড়ার দিক থেকেই জঁর হিসেবে প্রেমের গল্প-উপন্যাসের প্রতি একটা সাধারণীকৃত তাচ্ছিল্য, বিতৃষ্ণা, নিন্দার হাওয়া উঠতে শুরু করেছিল পাঠকমহলে। প্রেমের গল্পে নিছক আবেগী রোমান্স বা হৃদয়বৃত্তান্ত থাকলে সেটা ‘ন্যাকা গল্প’, খোলাখুলি শরীরী আঁচ এসে পড়লে সেটা ‘ভালগার’, পরকীয়া এলেই ‘নাগরিক কেচ্ছা’! দাগিয়ে দেওয়া শুরু হল একটা মহল থেকে।
কেন হল এমন?

সামান্য তলিয়ে দেখলেই ব্যাখ্যা মিলবে এই পাঠক-বিরাগের। এর মধ্যে মনস্তত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, রাজনীতি সবই আছে। কিছু লোকের চটে-ওঠার সম্ভাবনা আছে, তবু নিজের গ্রন্থের ভূমিকায় নিজের পর্যবেক্ষণ রেখে যাওয়ার হক থাকেই লেখকের— · সেই অধিকারে কথাগুলো বলে রাখি।

প্রথমত, নতুন সহস্রাব্দের শুরু থেকেই নজরে পড়ে— একটা বড়-সংখ্যক ‘আধুনিক’ পড়ুয়ার ক্ষেত্রে, একটা নতুন যুগধর্মই হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ‘আমি স্রোতের বাইরে’ বা ‘আমি কঠিন ঠাঁই’ গোছের কিছু একটা প্রতিপন্ন করা। এঁরা ‘কন্টেন্ট’- বাদী। ফিকশনে গুরুতর ওজনদার সাবজেক্ট-ম্যাটার না থাকলে— এবং সেই ম্যাটারের সোশিও-পোলিটিক্যাল-হিস্টোরিক্যাল জিওগ্রাফিক্যাল-আর্কিওলজিক্যাল আদি গম্ভীর ‘কনটেক্সট’ না থাকলে, তেনারা কাঠি দিয়েও ছুঁয়ে দেখবেন না। পাতি প্রেমের গল্পের চতুর্দশ পুরুষের সাধ্য নেই এঁদের কাছে ঘেঁষে।

কিন্তু, এই বোদ্ধাদের বাদ দিয়েও, সেই সনাতন প্রেমোপাখ্যান-বিলাসী পাঠকরা গেল কোথায়? তারাও কেন মুখ ফেরাল? তার কারণটাই আগে অত ফেনিয়ে বলেছি। স্যাচুরেশন-ফ্যাক্টর যাকে বলে। কয়েক দশক আগের বাস্তবে যা ছিল রোমাঞ্চকর ব্যতিক্রম, শুধু ছাপার অক্ষরে বা পর্দার কল্পলোকে সীমাবদ্ধ— আজ তা নিত্যনৈমিত্তিকের করমর্দন-দূরত্বে এসে দাঁড়িয়েছে যে! প্রেম-বিরহ, ত্রিকোণ-চতুষ্কোণ, পরকীয়া, শরীরী বাসনার আশ্লেষ খুঁজতে এখন আর গপ্পো বা ফিলিমের দরকার পড়ে না পাবলিকের। একান্ত নিজের ঘরে না হোক, পাশের বাড়িতে বা উল্টোদিকের ফ্ল্যাটেই ফিকশনকে জ্যান্ত হতে দেখা যাচ্ছে হরবখত।

তাই, ছাপা-হরফের রোমান্সের প্রতি আম পাঠকের উৎসাহ নষ্ট হয়েছে। ও-বস্তু দিয়ে এখন সে কুলকুচি করে রোজ, ওর স্বাদ জিভ থেকে ঘুচে গেছে কবেই। এখন চাই ‘এই অ্যাক নোতুন’ কিছু। পাঠক এখন ভূত প্রেত ডাকিনি অপদেবতা তন্ত্রমন্ত্র— কিংবা আন্ডারওয়ার্লড ক্রাইম ভায়োলেন্স— অথবা বিলিতি মডেলের ‘ইনফো’-ঠাসা গূঢ় গুপ্ত রহস্যজালের মধ্যে খুঁজে পেয়েছে সেই বাস্তবাতিশায়ী উপাদান, যা তার চার-আনা দৈনন্দিনতার বাইরের জিনিস। ওর মধ্যে সে ‘চার্ম’ পাচ্ছে, অনাস্বাদিতের রোমহর্ষ।
একদা প্রেমের গল্পে যা পেত।

শুধু এই নয়, আছে আরেকখান কথাও। সেটা বলায় একটু বেশিই ঝুঁকি আছে, তবু রেকর্ডেড থাক। আজকের বাংলা সাহিত্যের পাঠকগোষ্ঠীকে যদি একটু গরুড়াবলোকনে দেখা যায়, একটা নতুন ব্যাপার ধরা পড়বে। নব্য প্রজন্মের একটা বিশালসংখ্যক সাহিত্য- ভোক্তা চলে এসেছে সেই আঙিনায় যারা মূলত ইংরাজি ভাষায় সড়গড়, ‘ফাস্ট লাইফে’ অভিযোজিত, পাঠাভ্যাস হিসেবে লঘু ইংরাজি পেপারব্যাক থ্রিলারই যাদের ‘মীট অ্যান্ড ড্রিংক’। বহুজাতিক কর্পোরেটে কর্মরত ও উচ্চ-উপার্জন-বৃত্তের এইসব নব্য পাঠক হালে দেদার বাংলা বই কেনায় উৎসাহী হয়েছে বটে, এমনকী বাংলা গ্রন্থের জন্মদানেও আগ্রহ ক্রমবর্ধমান; কিন্তু, যেহেতু বঙ্গসাহিত্যের ধ্রুপদী ধারাটির বিষয়ে এদের বৃহদংশই প্রায় গোল্লাজ্ঞানী- ফলে এদের আগ্রহের তথা ব্যয়ের স্রোতটিও বয়ে চলেছে এদের নিজস্ব কমফর্ট-জোনের খাত ধরেই। আর, কে না জানে, সরস্বতীর হাঁসটি বরাবর সেই দিকটির পানেই পাখা মেলতে চায়— লক্ষ্মী যেখানে ঝাঁপিটি দোলান!

আজকের সাহিত্যে তাই, থ্রিল ইন, প্রেম আউট। সুতরাং, ‘প্রেমের গল্প আর চলে না’ এই তাচ্ছিল্যোক্তির বিপক্ষে বলার কিছু খুঁজে পাই না। পাঠকদের একটা বড় অংশ, এমনকী শক্তিমান সাহিত্যিকও যখন ‘বস্তাপচা মেয়ে-মদ্দর গপ্পো’-লিখিয়েদের কটাক্ষ করেন, সেও সঙ্গতই মনে হয়।

তবু, কিমাশ্চর্যম্, এখনও পত্রিকাগুলি যখন-তখন ‘প্রেমের গল্প-সংখ্যা’ বের করে! প্রকাশকরা বাজারে আনেন ‘প্রেমের গল্প সংকলন’, মাঝেমধ্যেই। লোকে না পড়লে, না কিনলে কি আর এমনটা হতে পারত?
কেনেও লোকে, পড়ে হয়তো গাল দেয়, কিন্তু ফের কেনে নির্ঘাত। নচেৎ এঁরা কেনই বা উৎসাহ নিয়ে ছাপিয়ে চলছেন? যক্ষ-যুধিষ্ঠির সংবাদ মনে পড়ে যায়। প্রতিদিন জীবকুল যমালয়ে চলেছে তবু মানুষের কেবলই বাঁচার ইচ্ছে— কিমাশ্চর্যমতঃপরম!

‘দ্য কাফে টেবল’ থেকে যখন আমার লেখা প্রেমের গল্পের একটি সংকলন করার প্রস্তাব আসে, আমি প্রথমটায় বিস্মিত হয়েছিলাম। বিস্ময়ের কারণ ছিল দুটি, তার প্রথমটাই এতক্ষণ সবিস্তারে বললাম।
কিন্তু তারপরেও ভেবে দেখেছি, এই বাস্তবতাটি নিয়ে আমার মাথা ঘামানোরও কিন্তু বিশেষ মানে হয় না। প্রকাশক যদি মনে করেন বিকোবে, তিনি খরচা করে বই বানাবেন— বাজার বা লাভক্ষতির হিসেব নিয়ে আমি ভাবিত হই কেন?

দ্বিতীয় বিস্ময়টি ছিল এই ভেবে যে, শুধু আমার লেখা প্রেমের গল্প নিয়েই কোনও আস্ত সংকলন হতে পারে এমন অদ্ভুত কথা এঁদের মাথায় এল কী করে? আমি সচরাচর প্রেমের গল্প লিখি না, আরও সোজা করে বললে- লিখতে পারি না, এমনই আমার ধারণা ছিল। কখনসখনও দু’চারটে ফরমায়েশি লেখা লিখেছি, হ্যাঁ, ওইরকম কিছু ‘বিশেষ প্রেমের গল্প সংখ্যা’-গোত্রেরই; কিন্তু তাতে কি আর এক্সক্লুসিভ একটা সংকলন দাঁড়ায়?

প্রকাশক, একটি আত্মবিশ্বাসী হাসি ভাসিয়ে দিয়ে, আমাকে বললেন নিজের সমস্ত গল্প একবার ঝাঁকিয়ে ছানবিন করতে। তাঁর হিসেবমতো, তথাকথিত প্রেম-সংখ্যা- ছাপ ছাড়াও আমার নাকি বিস্তর গল্প আছে— যার অন্যতম উপজীব্য হল প্রেম! বটে?
নিয়ে বসলাম ফাইল-বস্তা নিয়ে। বিগত দেড় দশকে যত গল্প লিখেছি, অর্ডারি প্রেমের গল্প ছাড়াও তার মধ্যে প্রেম-উপাদান আছে?

চরিত্রগতভাবে আলস্য, আত্মমগ্নতা ও অনমনীয়তা আমার প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং এই তিনটিই প্রেম নামক নাজুক জিনিসটির পরম শত্রু বলে কথিত; ব্যক্তিগত জীবন- অভিজ্ঞতা থেকেও, আমি নিজেকে এই বিষয়টি নিয়ে লেখালিখির পক্ষে নিতান্ত অনুপযুক্ত বলে জেনেছি বরাবর, এড়িয়েই চলেছি একপ্রকার। মূলত সামাজিক, রাজনৈতিক বা গূঢ় মনস্তাত্ত্বিক বিষয়বস্তু নিয়েই আমার কারবার বলে জানি, অনেকে অভিযোগ করেন তার বেশিরভাগই নেতিবাচক সংকট নিয়ে গড়ে ওঠে। তদুপরি, ইতোমধ্যেই আমার একটি গল্প-সংকলন প্রকাশিত হয়ে গেছে, দ্য কাফে টেবলই তা ছাপিয়েছেন, তারও নিরানব্বইভাগ ওই ঘরানার জিনিসেই ঠাসা। বাকি পড়ে-থাকা গল্পগুলির মধ্যেও এতসংখ্যক এমন জঁরের আখ্যান আছে যাদের আলাদাভাবে প্রেমের গল্প বলে সংকলিত করা সম্ভব? প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে, প্রকাশক ভুল করছেন।

কিন্তু, সমস্ত পুরনো লেখা ঘাঁটতে বসে তৃতীয়বার বিস্মিত হতে হল আমাকে। দেখলাম, প্রকাশকই ঠিক। অন্তত এক-কুড়ি গল্প আমি লিখেইছি সব মিলিয়ে, যাদের মূল আবেগ- কারও প্রকট কারও প্রচ্ছন্ন, কারও প্রাথমিক কারও অত্তিম স্তরে ফুটে ওঠা— কিন্তু ওই মূল অনুভবটি, অভ্রান্তভাবে, প্রেমেরই। এবং, সত্যের খাতিরে মানতেই হয়, তাদের রেঞ্জও বেশ বিস্তৃত। অজ পাড়াগাঁয়ের নিরক্ষর ঘরামি পরিবার থেকে চূড়ান্ত শহুরে অভিজাত যুগল, রাস্তার ধারের বেশ্যা থেকে নরমসরম ভূগোল-দিদিমণি, হাল আমলের খোলামেলা ইউনিভার্সিটি- রোমান্স থেকে সেই কবেকার রবীন্দ্র-যুগের ভীরু সসংকোচ হৃদয়বেদনা। মোবাইল-স্ক্রিন উপচে ওঠা শূন্য দশকের ভারচুয়াল প্রেমও লিখেছি, আবার মানুষের উৎপত্তি-আখ্যানের আদিম লগ্নেও ঘুরে এসেছি— পৃথিবীর প্রথম প্রেমটি জন্ম নিচ্ছে সবে যখন!

ত্রিকোণ, চতুষ্কোণ, পরকীয়া— এমনকী, সমলৈঙ্গিক প্রেমকেও বাদ দিইনি। অনেক গল্পেই ডার্ক উপাদান তীব্র হয়ে উঠেছে, মধুর পাশাপাশি বিষও সরবরাহ করেছি দরকারমতো। শিল্প হিসেবে, বা নিছক বিনোদন হিসেবেই— কতটা সার্থক হয়েছে, সে তো আপেক্ষিক বিচারের বিষয়। কিন্তু কন্টেন্টের বা লেয়ারের বৈচিত্র্য যে তৈরি হয়েছে, এটা অস্বীকার করার মতো অতি-বিনয় দেখানোর মানে হয় না। অনেক গল্পের কথা একেবারে স্পষ্ট করে মনে ছিল না দেখলাম। অনেক গল্পকে আগে প্রেমের গল্প বলে নিজেই চিনতে পারিনি, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লেখা হয়েছিল- আজ দেখছি সেই অভিপ্রায়ের স্রোত সরে গিয়ে যে সোনালি বালিটুকু পড়ে আছে তাতে চিকচিক করছে অন্য আলো।

‘ভাঙা চাঁদ’ যেমন। ভূতের গল্প লেখার আমন্ত্রণে ওই কাহিনি লিখতে বসা। হরর গ্রটেস্ক সাসপেন্স সব পেরিয়ে, শেষ কয়েকটি লাইন যেন নিজেরাই নিজেদের গড়েপিটে নিয়ে লাফ মেরে অন্য রাস্তায় ঢুকে যায়। এ-যাবৎ নিজের যতগুলো গল্পকে ন্যূনতম খুঁতযুক্ত মনে করেছি, তার মধ্যে ওটা ওপরের দিকে থাকবে।

‘শোধ’ও, রহস্য-গল্পের ফরমায়েশে লেখা, খুনখারাপি থানাপুলিশ ইত্যাদি —মসালা’-উপাদান নিয়েই— কিন্তু পড়তে গিয়ে দেখলাম এখন ওটাকে তীব্র একটা প্রেমের গল্পই মনে হল। সায়েন্স-ফ্যান্টাসি ‘অযান্ত্রিক’কেও। ফরম্যাট যেমনই হোক, অন্তর্লীন সুর নরনারীসম্পর্কেরই, হৃদয়বৃত্তান্তেরই।
‘সাঁকো’ লিখেছিলাম একেবারে প্রথমের দিকে, যদিও ছাপা হয়েছে অনেক পরে। চোখের সামনে দেখা জ্যান্ত মানুষদের তুলে এনেছিলাম, একেবারে মাটির গন্ধ সমেত। এক টুকরো সমাজচিত্রই হয়তো, স্রেফ। কিন্তু ওতে অমন এক আশ্চর্য করুণ প্রেমকথা বলে ফেলেছি— কাঁচা বয়সে লেখার সময়েও বোধহয় এতটা টের পাইনি, যা এই বুড়ো বয়সে পেলাম।

নিজের খুব প্রিয় গল্প “বিনির্মাণ-বিষয়ক’, সেটাও চেনা লোকেদের প্রেমকাহিনি নিয়ে— আদতে হাসির গল্প লিখতে চেয়েছিলাম। বন্ধুদের পড়ে শোনাচ্ছি যখন, কী বিপুল অট্টরোল উঠেছিল আড্ডায় কানে বাজে। এখনও পাঠক সেটাতে কৌতুকের স্বাদই পাবেন। কিন্তু আজ পড়তে গিয়ে নিজের জীবনের কয়েকটা পাতা যখন ফরফর করে পিছনের দিকে উলটে গেল দমকা বাতাসে টাকরার কাছে একটা হালকা ব্যথাও কি চলে এল না?
বহু আলোচিত ‘শ্রাবণধারা’ গল্পটা শুরুতে রবীন্দ্রনাথের গান-নির্ভর একটা অন্যরকম প্রেমের গল্প হয়েই কাগজে নেমেছিল। খানিকটা পিরিয়ড-পিস। পরে ফরম্যাট বদলে ওটা স্টোরি-উইদিন-স্টোরি’র রূপ নেয়, স্বাদ একেবারে পালটে যায়।

মহাভারত-আধারিত কয়েকটি গল্প লেখার পর, একটু মুখ বদলানোর জন্য ওল্ড টেস্টামেন্টের একটা কাহিনিকে আশ্রয় করেছিলাম। ঈষৎ বিনির্মিত একটা আখ্যান তৈরি করতে নেমেই বুঝতে পারি, এমন একটা অচেনা অভিমুখে যাচ্ছে চেনা গল্পটাই— যা লেখকের কলমকেই ঝাঁকিয়ে দিয়ে চলেছে বার বার। প্রায় ভরে-পাওয়া, সম্মোহিতের মতো লিখে-বসা সেই গল্প ‘প্রথম সেদিন’; হ্যাঁ, ওটা যে এক অপরূপ প্রেমের গল্প তা নিয়ে সন্দেহ নেই আজ ‘আলোয় ঢাকা অন্ধকার’ গল্পটা ফরমায়েশি ছিল। ওতে বিশাল বিপুল কিছু গভীরতা নেই। তবু, লিখে মজা হয়েছিল খুব। গোড়া থেকে পাঠকের সঙ্গে একটা বোকা- বানানোর খেলা আছে ওখানে, যেটায় অধিকাংশ পাঠকই হেরেছেন বলে শুনতে পাই — এবং তারপর ফের দ্বিতীয় পাঠে গিয়ে তাঁরাও মজাটা দ্বিগুণ উপভোগ করেন।

নিজের তেমন প্রিয় নয়, পাঠকদেরও মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে এমন অল্প কয়েকটা গল্পকে অনেক ভাবনাচিন্তার পর তালিকায় রেখেই দিলাম। ‘সেনসর’ ঠাঁই পেল তার সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক বার্তাটির দৌলতেই— ঠিক যেটিকে সমালোচকরা ওর দুর্বলতা বলে চিহ্নিত করেন। ‘অতিক্রম’কে বেশ অপরিণত লেখা বলে জেনেও আমি প্রাণে ধরে ফেলতে পারি না, এতটাই ব্যক্তিগত আবেগ জড়িয়ে আছে ওতে! ‘স্মাইলি’ও, তাই; সেন্টিমেন্ট-ভেজা গল্প, কিন্তু বাস্তব থেকে খুব দূরে নয় বোধহয়। বেশ মনে আছে, ওই গল্পটি পড়ে কত কমবয়সী মানুষ জনান্তিকে স্বীকার করেছিলেন কীভাবে ওটি রক্তাক্ত করেছে তাঁদের! বাদ দিতে পারিনি তাই। কয়েকটি গল্প ছাপা হওয়ার পরেও অতৃপ্তিজনিত কারণে আমি পুনর্লিখন করেছি, তার হদিশ এখানে রেখেছি উৎস-নির্দেশ অংশে। আর, শুধু এই সংকলনে অন্তর্ভুক্তির উপলক্ষেই কয়েকটিকে হালকা সংশোধন করেছি- সচেতন পাঠক অনেকটাই ধরতে পারবেন হয়তো।

আশা রাখি, সংবেদী পাঠক এও ঠিক বুঝে নেবেন— কোনটা ‘গড়ে-তোলা’ প্রেমের গল্প, আর কোনটা ‘হয়ে-ওঠা’। শেষে সেই গোড়ার কথাটাতেই ফিরি। ‘প্রেমের গল্পের দিন গিয়াছে। প্রকাশককে কথাটা বলতে তিনি ফের মুচকি হেসে বললেন, তা যাউক। আমরা ‘প্রেমের গল্প’ বলে নাম দেবই না এ বইয়ের। বাজারচলতি প্রেমের গল্প বলতে যা বোঝায় তার থেকে ঢের আলাদা হবে এ বই । অতঃপর? ঠিক হল, এ সংকলনের নাম হবে ‘চৈত্রমাস আর সর্বনাশের গল্প’। ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন তো বটেই। …তার চেয়েও বড় কথা হল, চৈত্রমাসের তো আর ‘দিন যায় নাই’। সর্বনাশেরও না।
আমার এই সংক্ষিপ্ত লেখক-জীবন, তার প্রহর শেষের একটুখানি রাঙা আলো ধরা রইল এই দু’মলাটে।
– সৌরভ মুখোপাধ্যায়

Chaitramas Ar Sorbonasher Golpo pdf download link
Download / Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply