নীলাম্বরের খিদে pdf – দেবারতি মুখোপাধ্যায় Neelambirer Khide pdf – Debarati Mukhopadhyay

নীলাম্বরের খিদে pdf - দেবারতি মুখোপাধ্যায় Neelambirer Khide pdf - Debarati Mukhopadhyay
নীলাম্বরের খিদে pdf - দেবারতি মুখোপাধ্যায় Neelambirer Khide pdf - Debarati Mukhopadhyay

দেবারতি মুখোপাধ্যায় এর Neelambirer Khide pdf নীলাম্বরের খিদে pdf ডাউনলোড করুন ও Neelambirer Khide pdf পড়ুন।

নীলাম্বরের খিদে pdf - দেবারতি মুখোপাধ্যায় Neelambirer Khide pdf - Debarati Mukhopadhyay
নীলাম্বরের খিদে pdf – দেবারতি মুখোপাধ্যায় Neelambirer Khide pdf – Debarati Mukhopadhyay

Neelambirer Khide pdf নীলাম্বরের খিদে pdf নমুনাঃ

লোকটা দিব্যি উবু হয়ে বসে চায়ের পেয়ালায় সুদ্ভুত সুড়ুত করে চুমুক দিচ্ছিল, হঠাৎ আমার প্রশ্নে চোখ দুটো তুলে তাকাল। আমি লক্ষ করলাম ওর সামনের দাঁত দুটো স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই যেন বড়, ঠোঁট দুটো ফাঁক করলেই সে দুটো চোয়ালের দুদিক থেকে একরকম আগ বাড়িয়ে বেরিয়ে আসছে।
লোকটা কিছুক্ষণ সেভাবেই নিঃশব্দে হাসল, তারপর কেমন ঘ্যাসঘেসে গলায় খাঁটি বাংলাদেশি টানে বলল, “রাজামশাই যে এখনও এইসব দেখছেন না, কী করে জানলেন কর্তা আপনি?”
আমি অস্বস্তিটা দূরে ঠেলে দিয়ে হেসে বললাম, “হে হে, সেই আর কি! ইতিহাস তো এভাবেই চাপা পড়ে যায়, সাক্ষী থাকে পুরোনো ইট, কাঠ, পাথর। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হলে…!”

গ্লানির্ভবতি ভারত pdf – দেবারতি মুখোপাধ্যায় Glanibhabati Bharat pdf by Debarati Mukhopadhyay

লোকটা আমাকে মাঝপথেই থামিয়ে দিল, আশপাশে একবার তাকিয়ে নিয়ে একনাগাড়ে বেজে যাওয়া সাপের বীণের মতো অদ্ভুত ঝিমধরানো লয়ে বলল, “ইতিহাস নয় কত্তা, জ্যান্ত মানুষ!” ‘মানুষ’ কথাটার শেষটা এমন একটা সাপের মতো হিসহিস টান দিয়ে শেষ করল লোকটা যে আমি এরপর আর কী বলব বুঝতে না পেরে ওর দিকে তাকালাম।
বেশভূষা দেখে একটু ছিটগ্রস্ত মনে হচ্ছে, কিন্তু তা অভাবের তাড়নাতেও হতে পারে ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন ভাবলাম, যেচে বাড়িতে ডেকে আনলাম, মাথার গোলমাল-টোলমাল নেই তো!
এমনিতে লোকটাকে মাঝেমধ্যেই আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে দেখতাম। একমুখ খোঁচা খোঁচা সাদা দাড়ি, কোটরের অনেকটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া দুটো ঘোলাটে চোখ। Neelambirer Khide pdf পড়ুন।

অপরিচ্ছন্ন ঠোঁট, লম্বাটে গোলাকার মাথায় কেমন ধু-ধু মরুভূমির বুকে দু-একটি পাতাবিহীন গাছের মতো কয়েকগাছি কেশ তালগাছের মতো খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
কিছু মানুষকে দেখলেই মনে হয় এ নামেমাত্র বেঁচে আছে, আসলে ভেতরে ভেতরে মরে গেছে অনেকদিন। এই লোকটাও যেন তেমনই। বারান্দা থেকে লক্ষ করতাম, সামান্য কুঁজো হয়ে লোকটা যখন হাঁটে, চোখের ভেতরের ধূসর নেত্রবলয় দুটো দিকশূন্য মরা মাছের মতো তাকিয়ে থাকে সামনের দিকে। কয়েক পা করে হেঁটেই কুকুরের মতো জিভ বের করে হাঁপায়। তারপর আমার বাড়ির দিকে একবার আলগোছে তাকিয়েই আবার হাঁটতে শুরু করে।

রহস্য সন্ধানী দময়ন্তী সমগ্র ২ pdf – মনোজ সেন Rahashya Sandhani Damayanti Samagra 2 pdf – Manoj Sen

সেই তাকানোর মধ্যে অবশ্য সন্দেহের কিছু ছিল না, আমার ভাড়া নেওয়া এই বাড়িটা গ্রামের একদম শেষ প্রান্তে, কাছেপিঠে কোনো গৃহস্থ আবাস নেই। তাই রাস্তা দিয়ে চলার সময় কৌতূহলে এদিকে তাকানো কোনো পথচারীর পক্ষে খুব স্বাভাবিক। তা ছাড়া গ্রামের লোকেদের কৌতূ হল একটু বেশিই হয়, খেয়াল করে দেখেছি।

লোকটাকে সাধারণত দেখতাম সকালবেলা, নটা-দশটা নাগাদ। আর যখনই দেখতাম, ঊর্ধ্বাঙ্গে কোনো পোশাক থাকত না। নিম্নাঙ্গে শুধুমাত্র পাতলা সুতির একটা লুঙ্গি পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে পরা। পা দুটো ভেজা, কপালে লম্বা সিঁদুরের একখানা তিলক। কাঁধের একদিক থেকে ঝোলে শতচ্ছিন্ন ভিজে গামছা। দেখলেই মনে হয় কাছের কোনো পুকুর থেকে স্নান সেরে ফিরছে। তিলক দেখে পুজোর কথাও মনে হয়। আমার বাড়ি শেষ হতেই ওদিকে শুরু হয়ে যাচ্ছে পরিত্যক্ত অরণ্য। সেখানে যে শুধুই আগাছা এবং বড় বড় গাছপালা রয়েছে তাই নয়, হ্যাঁচোড় প্যাঁচোড় করে খুঁজলে পুরাকালের কিছু ইট বা ভাঙা দুর্গের ধ্বংসাবশেষও চোখে পড়বে। আর চোখে পড়বে অজস্র ছোট বড় পুকুর। কোনোটা মজে গিয়েছে, কোনোটায় এখনও জল টলটল করছে।

এখানে এসেছি ঠিক এক সপ্তাহ হল। তবে এর মধ্যেই আমার কাজ বলতে গেলে পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। সকালে জলখাবার সেরে বেরিয়ে পড়ি, হাঁটা দিই সাইটের দিকে। সেখানে কুড়িজন স্থানীয় লোক নিয়ে আপাতত পরিষ্কার করার কাজ চলছে। ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে তাদের তদারক করি। কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরি, তখনও ব্যস্ততা থেকে রেহাই নেই, হেড অফিসের সঙ্গে ল্যাপটপে ইমেল চালাচালি চলে ঘন ঘন। দুই দেশের যৌথ কাজ বলে কথা, আলোচনা হয় গোটা প্রোজেক্টটার প্ল্যান, প্রোগ্রেস, বাজেট নিয়ে। Neelambirer Khide pdf পড়ুন।

সকালে বেরোনোর আগে যখন বাড়ির সামনের খোলা রোয়াকে একটু আয়েশ করে বসতে আসি, তখনই রোজ লোকটাকে খেয়াল করি। আশ্বিন মাস শেষ হতে চলেছে, শীত এখনও উঁকি না দিলেও বাতাসে ঠান্ডা ঝলক মাঝেমধ্যেই শিরদাঁড়ায় কাঁপুনি ধরায়।
সেখানে এই লোকটার কি শীতও করে না?

আজ শুক্রবার। জুম্মাবার বলে এই তল্লাটে আজ সব ছুটি রয়েছে, শ্রমিকেরা কেউ কাজ করবে না। কাজেই আমারও ছুটি। গায়ে পাতলা একটা চাদর জড়িয়ে এসে বসেছিলাম বাইরের রোয়াকে। আমার চার বছরের পুরোনো ভৃত্য ইকবাল বেশ বড় একখানা মাগ ভর্তি কফি দিয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে একগোছা স্যান্ডউইচ। আলু, গাজর এবং আরও নানারকম সবজি দিয়ে বানানো। স্যান্ডউইচে একটা করে কামড় দিচ্ছিলাম আর উপভোগ করছিলাম বাইরের প্রকৃতিকে। শীতের আগমন না হতেই চারপাশের গাছগাছালিতে কেমন একটা ধূসর রং লেগেছে, দূরে পাখির কলতান শোনা যাচ্ছে বেশ জোরে। দেখতে দেখতে আমার ছোটবেলায় বড় হয়ে ওঠা বীরভূমের সেই গ্রামের কথাই মনে পড়ে যাচ্ছিল বারবার।

সত্যি, দেশ আলাদা হতে পারে, মানুষ দেশ ভেঙে দু-টুকরো করতে পারে, কিন্তু প্রকৃতি সে কথা শুনবে কেন? সে তো সব জায়গাতেই চিরন্তন, অবিনশ্বর।
যখন এইসব দার্শনিক কথা মনে মনে ভাবছি, ঠিক তখনই পিছনের জঙ্গলের দিক থেকে খকখক করে কাশতে কাশতে আসতে দেখেছিলাম লোকটাকে। বসে বসে একঘেয়ে লাগছিল, তাই ভাবলাম সেভাবে তো কারও সঙ্গে এখানে পরিচয় হয়নি, এর সঙ্গেই একটু আলাপ করা যাক।

Neelambirer Khide pdf link

Read Online

Be the first to comment

Leave a Reply