সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের Sapludo pdf এর কাহিনী সংক্ষেপঃ Sapludo pdf এর কাহিনী অনুসরণে বলা যায়, উপল-তটিনীর সম্পর্ক কি ভাঙবে? চুনী-প্রীতমের স্বপ্নের মধ্যে কেন ঢুকে আসে হিমাংশু? কেউ ছক্কা নেড়ে-নেড়ে পাল্টে দিচ্ছে ঘুঁটিদের ভাগ্য। মই, না সাপ– কি বরাদ্দ রেখেছে জীবন? সব জানতে পড়ুন সাপলুডো pdf।
সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের Sapludo pdf নমুনাঃ
আয়না তো কতই আছে বাড়িতে। বাথরুমে, বেসিনে, প্যাসেজে, ড্রেসিং কাউন্টারে। সব দামি বেলজিয়াম গ্লাস। সে তুলনায় বরং শোবার ঘরের স্টিল আলমারিতে লাগানো এই লম্বাটে আয়নাটা একটু কম দামিই বলা চলে। এর মধ্যে কোণগুলো একটু ঝাপসা হয়ে এসেছে, মধ্যে মধ্যে একটু-আধটু ঘষা দাগও। সেদিনই চূর্ণীর মা অমিতা বলছিল, লোক ডেকে ওটা পালটে দেবে। চূর্ণী রাজি হয়নি। বলেছে, “দিব্যি কাজ চলছে, এখনই ঝামেলা কোরো না তো ও নিয়ে!”
অমিতা তো নয়ই, কেউই জানে না এই আয়নাটার কতটা গুরুত্ব চূর্ণীর কাছে। রোজ রাতে শোবার আগে চূর্ণী এই আয়নাটার সামনে দাঁড়ায়। অন্য সব আয়নায় অবিকল ঝকঝকে প্রতিবিম্ব ফোটে, কিন্তু এটাতে ওই আবছা ঘষা ফুটকি দাগগুলোর দরুণ কেমন একটা অন্যরকম ছবি। কিছুটা বুঝি সুররিয়্যালিস্টিক, যেন অন্য এক চূর্ণী। ওই অন্য-চূর্ণীর সঙ্গে অনেক কথা বলতে পারে সে। রাগ- দুঃখ-আনন্দ উগরে দিতে পারে। আয়নার মধ্যেকার আধো-ঝাপসা মেয়েটাও নিঃশব্দে অনেক কথা ফেরত দেয়। তর্ক করে, সান্ত্বনা দেয়, পথ দেখায়। মাঝে মাঝে ওর সঙ্গে তুমুল ঝগড়াঝাঁটিও করে চূর্ণী। যখন এঁটে উঠতে পারে না, ফ্লোরাল প্রিন্টের মোটা কভারটা টেনে ঢেকে দেয়।
আজ রাতে দরজা বন্ধ করে যখন আয়নার সামনে দাঁড়াল চূর্ণী, সে টের পেল ওই অন্য মেয়েটা খুব খুঁটিয়ে দেখছে তাকে। “কী? এরকম দেখছ কেন?” চূর্ণী প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। ভাবছি। যা করতে যাচ্ছ, সামলাতে পারবে তো? Sapludo pdf
“খুব পারব। জীবনটা আমার। যেটা ঠিক মনে হবে করব, ব্যস।” না কি, তোমার বাবার সেই বেল্ট সব কিছু উলটে পালটে দেবে আবার ?
চূর্ণী চোয়ালটা শক্ত করল “একবার বেল্টটা পেড়ে দেখুক না। হি উইল লার্ন আ লেসন। ” Sapludo pdf
আরো পড়ুনঃ সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের সকল বইয়ের পিডিএফ পেতে এখানে ভিজিট করুন।
আবার ভাবো। ও কিন্তু বস্তিতে থাকে চূর্ণী। বস্তি কেমন হয়, জানো তুমি? একটা বেলা কাটাতে পারবে বস্তির ঘরে? রুপোর চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছ, মার্বেলের উপর হামাগুড়ি দিয়েছ। গাড়ি চেপে ব্র্যান্ডেড দোকান থেকে মার্কেটিং করে তোমার পরিবার। তোমার আত্মীয়স্বজনেরা কেউ কোনও জন্মে বস্তির ধার মাড়ায়নি। তোমার গায়ে থুতু দেবে তারা।
চূর্ণী একটু ভুরু কুঁচকে তাকাল। কড়া গলায় বলল, “দিক। হু কেয়ার্স? আমি এই সো-কলড অ্যারিস্টোক্র্যাসির ফোঁপরা দিকগুলো জানি। আমি বরাবর এই বড়লোকিয়ানা, এই ঐশ্বর্য- আরামের দেখানেপনাগুলো অপছন্দ করে এসেছি। এই অটোক্র্যাসিতে ঠাসা বাড়ির পরিবেশে দম বন্ধ হয়ে আসে আমার… পদে-পদে বাবার খবরদারি, মায়ের ভুরু কোঁচকানো…! আমি বাইরের খোলস দেখে-দেখে ক্লান্ত। তাই এমন একটা মানুষকে খুঁজে নিয়েছি যার কোনও খোলসই নেই। জাস্ট একটা খাঁটি মানুষ!”
“ভাবা হয়ে গিয়েছে। যেদিন থেকে ওইরকম টর্চার করে দিদিকে বিয়ের পিড়িতে বসাল বাবা, সেদিন থেকেই আমি নিজের কাছে একটা প্রমিস করেছি। আই উইল ফলো মাই হার্ট। মন যা বলবে, হৃদয় যা নির্দেশ দেবে, তার বাইরে কোনও যুক্তি শুনব না। হ্যাঁ, প্রীতম বস্তিতে থাকে, প্রীতম একটা কারখানায় সামান্য কাজ করে, প্রীতম দেখতে-শুনতে খুব সাধারণ, তবু আমি ওকে ভালবাসি। এবং ওর পাশেই আমি থাকব। কেউ রুখতে পারবে না।” আর একবার তলিয়ে দ্যাখো, চূর্ণী। এটা তোমার কোনও রোমান্টিক অ্যাডভেঞ্চারিজম হয়ে যাচ্ছে না তো? ক্লাস-ডিফারেন্স অগ্রাহ্য করার নেশা পেয়ে বসেনি তো? পরে কিন্তু কঠোর বাস্তবের ধাক্কায় নেশা ছুটে যাবে, আফসোস করতে হবে তখন।
“কী বলতে চাইছ?” চূর্ণী স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
বলছি, প্রীতমের জন্যে তোমার বুকের একদম ভিতর থেকে নিংড়ে-নেওয়া, ছটফটিয়ে ওঠা কোনও কান্না টের পাও কি? মানুষ যখন অন্য কারও জন্য আকুল হয়ে কাঁদতে পারে…. সেটাই হল হলমার্ক। Sapludo pdf
চূর্ণী উত্তর দিতে পারল না। ঠোঁট নাড়তে গিয়ে দেখল, থরথর করে কাঁপছে সেগুলো। আচম্বিতেই হু হু করে প্রবল বন্যাবেগের মতো জল উপচে এল দু’চোখে। এখন প্রায় মধ্যরাত … কী করছে প্রীতম এখন? খুপরি ঘরের এক কোণে সরু তক্তপোশের উপর অঘোরে ঘুমোচ্ছে হয়তো। ঘুপচি লোহা-কারখানায় সারাদিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেশিন ঘোরায় প্রীতম।
সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের Sapludo pdf ডাউনলোড লিংক
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.